
সাইফুর এম রেফুল, ওসমানীনগর (সিলেট)

মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মসজিদ। প্রাচীনকাল থেকেই মসজিদের সঙ্গে এই দেশের মানুষের জীবনাচার নিবিড়ভাবে জড়িত। এখানকার মসজিদগুলো সামাজিক সংহতি, ন্যায়বিচার ও আধ্যাত্মিক বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে যুগ যুগ ধরে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। অতীতকালে গ্রামীণ জনপদে মসজিদ ছিল সমাজ জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। নামাজ আদায়ের পাশাপাশি ধর্মীয় জ্ঞান, আধ্যাত্মিক দিক-নির্দেশনা ও সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় মুসল্লিরা এক সময় মসজিদনির্ভর ছিলেন।
মোগল আমলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল স্থানীয় প্রভাবশালী জমিদার ও পীর-মাশায়েখদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। সে সময় আশপাশের কয়েকটি গ্রাম একটি মসজিদের আওতায় থাকত। মসজিদ তখন কেবল নামাজের স্থান ছিল না, ছিল শিক্ষাকেন্দ্র ও স্থানীয় সালিশি কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল। পীর-মাশায়েখ ও আলেম সমাজ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে তখন যথেষ্ট প্রভাব রাখতেন।
ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসন ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে প্রাচীন বাংলাদেশে মুসলিম সংস্কৃতির প্রভাব কমতে থাকে। এছাড়া, স্থানীয় জমিদারি ও সামাজিক কাঠামোতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন শুরু হয়। কিন্তু আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটপরিবর্তনের যুগেও বাংলাদেশের মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতি গভীরভাবে নিষ্ঠাবান ছিল। আর সে ক্ষেত্রে মসজিদ ছিল তাদের আশ্রয়কেন্দ্র।
শাহজালালের (রহ.) পুণ্যভূমি সিলেটের আনাচে-কানাচে অনেক প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ রয়েছে। সিলেটের ওসমানী নগরে অবস্থিত ‘দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ’ সে রকমই একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। মোগল সাম্রাজ্যের পতনোত্তর যুগ থেকে আধুনিক কালে এসেও স্থানীয় মুসলিম সমাজের ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু এই মসজিদ। স্থানীয় বাসিন্দা ধর্মপ্রাণ শেখ আলী বখশ ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে (১২০৪ হিজরি, ১১৯৭ বঙ্গাব্দে) প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মসজিদটি এই অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতিতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও সাপ্তাহিক জুমার নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় স্থানীয় মুসল্লিদের মিলনকেন্দ্র ছিল দয়ামীর জামে মসজিদ। এছাড়া, আশপাশের কয়েকটি গ্রামের সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, বিচার ও সালিশি কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এই মসজিদকে কেন্দ্র করে।
দুই শতাব্দী অতিক্রমের পর মসজিদটির কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে দয়ামীর জামে মসজিদের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসন থেকে মুক্তির পর স্বাধীন বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটে। সামাজিক বিবর্তন ও আধুনিক শিক্ষার প্রসার সত্ত্বেও মসজিদটি স্থানীয় মুসল্লিদের ধর্মীয়, নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে অব্যাহতভাবে ভূমিকা রাখতে থাকে।
সর্বশেষ, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও উন্নত নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করে মসজিদটি পুনরায় সংস্কার করা হয়। স্থানীয় মুসল্লিদের অনুদানে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদটি আধুনিকায়ন করা হয়। ৩০ শতক জমিতে দোতলা ভবনে রূপান্তরিত মসজিদটি দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় আকার দেওয়া হয়। পাশাপাশি মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে ‘দয়ামীর জামে মসজিদ’ থেকে ‘দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ’ নামকরণ করা হয়।
আধুনিক সংস্কারের পর মসজিদে দুই মিনারবিশিষ্ট গম্বুজ নির্মাণের পাশাপাশি প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট দেয়াল জুড়ে মার্বেল পাথর ও টাইলস সংযোজন করা হয়। বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। ২৩৫ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি এখনো স্থানীয় মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র ও মিলনস্থল হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
মসজিদের বর্তমান মুতাওয়াল্লী আব্দুর রুপ আব্দুল জানান, ১৭৯০ সালে এর প্রথম নির্মাণ থেকে শুরু করে ১৯৮৫ ও ২০১৫ সালের সংস্কার পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ প্রমাণ করে, স্থানীয় মুসলমানরা যুগে যুগে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে ধারণ করেছে। এছাড়া সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে মসজিদকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন পরিচালনা করেছে।
মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা ইয়াহইয়া বলেন, দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়, বরং মুসলিম সমাজের ধারাবাহিকতা, ধর্মীয় চেতনা ও সামাজিক সংহতির প্রতীক। মোগল আমলের প্রভাব এবং ঐতিহ্যগত নির্মাণশৈলী থেকে শুরু করে বর্তমানে আধুনিককাল পর্যন্ত মসজিদটি স্থানীয় মুসলিম সমাজের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐক্যের এক অমূল্য নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

মুসলিম সংস্কৃতির অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা মসজিদ। প্রাচীনকাল থেকেই মসজিদের সঙ্গে এই দেশের মানুষের জীবনাচার নিবিড়ভাবে জড়িত। এখানকার মসজিদগুলো সামাজিক সংহতি, ন্যায়বিচার ও আধ্যাত্মিক বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু হিসেবে যুগ যুগ ধরে মুখ্য ভূমিকা পালন করে আসছে। অতীতকালে গ্রামীণ জনপদে মসজিদ ছিল সমাজ জীবনের কেন্দ্রবিন্দু। নামাজ আদায়ের পাশাপাশি ধর্মীয় জ্ঞান, আধ্যাত্মিক দিক-নির্দেশনা ও সামাজিক সমস্যা সমাধানের জন্য স্থানীয় মুসল্লিরা এক সময় মসজিদনির্ভর ছিলেন।
মোগল আমলে বৃহত্তর সিলেট অঞ্চল স্থানীয় প্রভাবশালী জমিদার ও পীর-মাশায়েখদের নিয়ন্ত্রণাধীন ছিল। সে সময় আশপাশের কয়েকটি গ্রাম একটি মসজিদের আওতায় থাকত। মসজিদ তখন কেবল নামাজের স্থান ছিল না, ছিল শিক্ষাকেন্দ্র ও স্থানীয় সালিশি কার্যক্রমের কেন্দ্রস্থল। পীর-মাশায়েখ ও আলেম সমাজ স্থানীয় জনগোষ্ঠীর নৈতিক ও আধ্যাত্মিক জীবনে তখন যথেষ্ট প্রভাব রাখতেন।
ঐতিহাসিক পলাশীর যুদ্ধের পর ব্রিটিশ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার শাসন ক্ষমতা দখল করে। এরপর থেকে প্রাচীন বাংলাদেশে মুসলিম সংস্কৃতির প্রভাব কমতে থাকে। এছাড়া, স্থানীয় জমিদারি ও সামাজিক কাঠামোতে ধীরে ধীরে পরিবর্তন শুরু হয়। কিন্তু আর্থ-সামাজিক ও সাংস্কৃতিক পটপরিবর্তনের যুগেও বাংলাদেশের মুসলমানরা তাদের ধর্মীয় ও আধ্যাত্মিক জীবনের প্রতি গভীরভাবে নিষ্ঠাবান ছিল। আর সে ক্ষেত্রে মসজিদ ছিল তাদের আশ্রয়কেন্দ্র।
শাহজালালের (রহ.) পুণ্যভূমি সিলেটের আনাচে-কানাচে অনেক প্রাচীন ও ঐতিহাসিক মসজিদ রয়েছে। সিলেটের ওসমানী নগরে অবস্থিত ‘দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ’ সে রকমই একটি প্রাচীন ও ঐতিহাসিক নিদর্শন। মোগল সাম্রাজ্যের পতনোত্তর যুগ থেকে আধুনিক কালে এসেও স্থানীয় মুসলিম সমাজের ঐক্যের কেন্দ্রবিন্দু এই মসজিদ। স্থানীয় বাসিন্দা ধর্মপ্রাণ শেখ আলী বখশ ১৭৯০ খ্রিষ্টাব্দে (১২০৪ হিজরি, ১১৯৭ বঙ্গাব্দে) প্রথম মসজিদটি নির্মাণ করেন।
প্রতিষ্ঠার পর থেকেই মসজিদটি এই অঞ্চলের সমাজ ও সংস্কৃতিতে তাৎপর্যপূর্ণ অবদান রেখে আসছে। প্রতিদিন পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ ও সাপ্তাহিক জুমার নামাজ আদায়ের পাশাপাশি বিভিন্ন ধর্মীয় উৎসবের সময় স্থানীয় মুসল্লিদের মিলনকেন্দ্র ছিল দয়ামীর জামে মসজিদ। এছাড়া, আশপাশের কয়েকটি গ্রামের সামাজিক বিভিন্ন সমস্যার সমাধান, বিচার ও সালিশি কার্যক্রমও পরিচালিত হতো এই মসজিদকে কেন্দ্র করে।
দুই শতাব্দী অতিক্রমের পর মসজিদটির কাঠামো সংস্কারের প্রয়োজনীয়তা দেখা দেয়। স্থানীয় পঞ্চায়েতের উদ্যোগে ১৯৮৫ খ্রিষ্টাব্দে দয়ামীর জামে মসজিদের সংস্কার কাজ সম্পন্ন হয়। ব্রিটিশ ও পাকিস্তান শাসন থেকে মুক্তির পর স্বাধীন বাংলাদেশের সমাজ ও সংস্কৃতিতে অনেক পরিবর্তন ঘটে। সামাজিক বিবর্তন ও আধুনিক শিক্ষার প্রসার সত্ত্বেও মসজিদটি স্থানীয় মুসল্লিদের ধর্মীয়, নৈতিক, আধ্যাত্মিক ও সাংস্কৃতিক জীবনের প্রাণকেন্দ্র হিসেবে অব্যাহতভাবে ভূমিকা রাখতে থাকে।
সর্বশেষ, ২০১৫ খ্রিষ্টাব্দে আধুনিক স্থাপত্যশৈলী ও উন্নত নির্মাণ প্রযুক্তির ব্যবহার করে মসজিদটি পুনরায় সংস্কার করা হয়। স্থানীয় মুসল্লিদের অনুদানে প্রায় চার কোটি টাকা ব্যয়ে মসজিদটি আধুনিকায়ন করা হয়। ৩০ শতক জমিতে দোতলা ভবনে রূপান্তরিত মসজিদটি দৃষ্টিনন্দন এবং আকর্ষণীয় আকার দেওয়া হয়। পাশাপাশি মসজিদটির নাম পরিবর্তন করে ‘দয়ামীর জামে মসজিদ’ থেকে ‘দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ’ নামকরণ করা হয়।
আধুনিক সংস্কারের পর মসজিদে দুই মিনারবিশিষ্ট গম্বুজ নির্মাণের পাশাপাশি প্রায় ১০ হাজার বর্গফুট দেয়াল জুড়ে মার্বেল পাথর ও টাইলস সংযোজন করা হয়। বর্তমানে শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত এই মসজিদে একসঙ্গে প্রায় দেড় হাজার মুসল্লি নামাজ আদায় করতে পারেন। ২৩৫ বছর আগে নির্মিত মসজিদটি এখনো স্থানীয় মুসলমানদের প্রধান ধর্মীয় কেন্দ্র ও মিলনস্থল হিসেবে ভূমিকা রাখছে।
মসজিদের বর্তমান মুতাওয়াল্লী আব্দুর রুপ আব্দুল জানান, ১৭৯০ সালে এর প্রথম নির্মাণ থেকে শুরু করে ১৯৮৫ ও ২০১৫ সালের সংস্কার পর্যন্ত প্রতিটি ধাপ প্রমাণ করে, স্থানীয় মুসলমানরা যুগে যুগে তাদের ধর্মীয় বিশ্বাসকে ধারণ করেছে। এছাড়া সমাজকে ঐক্যবদ্ধ রাখতে মসজিদকে কেন্দ্র করে জীবনযাপন পরিচালনা করেছে।
মসজিদের ইমাম ও খতিব হাফেজ মাওলানা ইয়াহইয়া বলেন, দয়ামীর মদিনা জামে মসজিদ কেবল একটি স্থাপনা নয়, বরং মুসলিম সমাজের ধারাবাহিকতা, ধর্মীয় চেতনা ও সামাজিক সংহতির প্রতীক। মোগল আমলের প্রভাব এবং ঐতিহ্যগত নির্মাণশৈলী থেকে শুরু করে বর্তমানে আধুনিককাল পর্যন্ত মসজিদটি স্থানীয় মুসলিম সমাজের ইতিহাস, সংস্কৃতি ও ঐক্যের এক অমূল্য নিদর্শন হিসেবে প্রতিষ্ঠিত।

কুমিল্লার তিতাস উপজেলায় অস্ত্র ও গুলিসহ চার নারীকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ও সেনাবাহিনী। শনিবার (২৫ অক্টোবর) দিবাগত রাত থেকে শনিবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার মজিদপুর ইউনিয়নের শাহপুর এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের আটক করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে
শনিবার রাতে বাগান বন্ধ ঘোষণা করে ব্যবস্থাপকসহ সকল কর্মকর্তা বাগান ছেড়ে চলে যান এবং একই সঙ্গে শ্রমিকদের কাজে না আসতে জানিয়ে দেয়া হয়। তাছাড়া বাগানের ব্যবস্থাপক শামসুদ্দিন হক ভুইয়া জীবনের নিরাপত্তা চেয়ে থানায় সাধারণ ডায়েরি করেছেন। বাগান বন্ধ ঘোষণা করায় পাঁচ শতাধিক চা শ্রমিক বিপাকে পড়েছে।
১ ঘণ্টা আগে
মাদক প্রতিরোধে ঐক্যবদ্ধ কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলার আলকরা ইউনিয়নের ঘিনাগাজী গ্রামবাসী। "মাদককে না বলি, আসুন সবাই মিলে মাদকমুক্ত সমাজ গড়ি, নতুন জীবন গড়ি" এই প্রতিপাদ্যে রোববার ঘিনাগাজী সড়কে এলাকার সর্বস্তরের নারী পুরুষের অংশগ্রহণে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
১ ঘণ্টা আগে
এবার চাঁদপুরের ফরিদগঞ্জে এই প্রথম সর্বোচ্চ গাঁজার চালান ধরা পড়েছে গ্রামবাসীর হাতে। শনিবার সকালে উপজেলার সকদীরামপুর গ্রামের কৃষক খলিলুর রহমানের বাড়ি থেকে ২৬টি প্যাকেটে থাকা ৫২ কেজি গাঁজা আটক করা হয়।
১ ঘণ্টা আগে