বিজিএমইএ-ইউএসটিআর বৈঠক

আইএলও গাইডলাইন অনুসরণ করে শ্রম আইন সংশোধনের পরামর্শ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৫ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২১: ২৮

আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থার (আইএলও) গাইডলাইন অনুসরণ করে বাংলাদেশের শ্রম আইন, ২০০৬ সংশোধনের পরামর্শ দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধি (ইউএসটিআর) দল। প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, আন্তর্জাতিক মানদণ্ডের সঙ্গে সংগতি বজায় রেখে বাংলাদেশে শ্রম আইন সংস্কার করা হবে, এটি অত্যন্ত প্রত্যাশিত।

সোমবার রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত চিফ অব মিশন রেসিডেন্সে প্রতিনিধি দলের পক্ষ বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) বৈঠকে শ্রম আইন সংস্কারের বিষয়টি আলোচনায় ওঠে আসে। ঢাকা মার্কিন দূতাবাসের উদ্যোগে এ আলোচনা সভাটি অনুষ্ঠিত হয়। বাণিজ্য প্রতিনিধিদলের নেতৃত্বে ছিলেন ব্রেন্ডন লিঞ্চ।

বিজ্ঞাপন

বিজিএমইএ সভাপতি মাহমুদ হাসান খান প্রতিনিধিকে আশ্বস্ত করে বলেন, ইতোমধ্যে বিজিএমইএ শ্রম-সংক্রান্ত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে ৮১টি শ্রমিক সংগঠনের সঙ্গে সংলাপ করেছে। শিল্প ও কর্মসংস্থান সুরক্ষিত রাখতে দেশের বাস্তবতা, শিল্পের প্রেক্ষাপট, প্রাতিষ্ঠানিক সক্ষমতা এবং বাস্তবায়ন যোগ্যতাকে গুরুত্ব দিয়ে স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে আলোচনাক্রমে শ্রম আইন সংশোধনের বিষয়ে সুনির্দিষ্ট প্রস্তাবনা দেওয়া হয়েছে।

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, আমরা ২০ শতাংশ ট্যারিফ সুবিধা অর্জন করেছি। তবে, প্রকৃতপক্ষে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানির ওপর গড় এমএফএন শুল্ক ১৬ দশমিক ৫ শতাংশ এবং এর সঙ্গে ২০ শতাংশ পাল্টা শুল্ক মিলিয়ে মোট শুল্কের পরিমাণ প্রায় ৩৬ দশমিক ৫ শতাংশ, যা বাংলাদেশের জন্য যুক্তরাষ্ট্রে পোশাক রপ্তানির ক্ষেত্রে নতুন চ্যালেঞ্জ তৈরি করেছে। তিনি বেসরকারি খাতে সর্ববৃহৎ কর্মসংস্থান সৃষ্টিকারী খাত, পোশাক শিল্পের যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে রপ্তানির ধারা অব্যাহত রাখতে শুল্ক আরো কমানোর বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সহকারী বাণিজ্য প্রতিনিধির দৃষ্টি আকর্ষণ করেন।

এ প্রসঙ্গে বিজিএমইএ সভাপতি অভিমত প্রকাশ করে বলেন, স্ট্যাকিং মেথড ব্যবহার করে অন্যান্য পণ্যের সঙ্গে এই শুল্কের সমন্বয় করা যেতে পারে। এই কৌশলটি কেবল শুল্কের বোঝা কমাবে না, বরং মার্কিন বাজারে বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্যের প্রতিযোগিতামূলক সক্ষমতা আরো বাড়িয়ে দেবে।

আলোচনায় যুক্তরাষ্ট্রের একটি নির্বাহী আদেশ নিয়েও কথা হয়, যা অনুসারে বাংলাদেশ থেকে রপ্তানি করা পোশাকে যদি ২০ শতাংশ বা তার বেশি যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহৃত হয়, তবে সেই পণ্যের ওপর আরোপিত ২০ শতাংশ অতিরিক্ত শুল্ক থেকে আনুপাতিক হারে অব্যাহতি পাওয়া যাবে। বিজিএমইএ নেতারা এই উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়ে বলেন, বাংলাদেশের পোশাকশিল্প এই সুযোগকে কাজে লাগাতে অত্যন্ত আগ্রহী।

তবে এর জন্য কোনো প্রক্রিয়া বা ফর্মুলায় যুক্তরাষ্ট্রের কাঁচামাল ব্যবহারের মূল্যায়ন এবং ট্রেসেবিলিটি তা নিশ্চিত করা হবে, তা তারা জানতে চান। প্রত্যুত্তরে মার্কিন প্রতিনিধিদল জানান, ইউএস কাস্টমস বিষয়টি নিয়ে বর্তমানে কাজ করছে। আশা করা যায় যে, নির্ধারিত সময়ের মধ্যে এটি সম্পন্ন হবে।

বৈঠকে ঢাকা মার্কিন দূতাবাসের ভারপ্রাপ্ত রাষ্ট্রদূত ট্রেসি অ্যান জ্যাকবসন এবং লেবার অ্যাটাশে লীনা খান, বিজিএমইএ সহসভাপতি রেজওয়ান সেলিম, পরিচালক ফয়সাল সামাদ, আবদুস সালাম এবং বিজিএমইএ স্ট্যান্ডিং কমিটি অন এফটিএ অ্যান্ড পিটিএ এর চেয়ারম্যান, লুৎফে এম আইয়ুব উপস্থিত ছিলেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত