
সোহেল রহমান

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করছে। টানা কয়েক মাস ধরেই চলছে অস্থিরতা। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। দামের এই টালমাটাল অবস্থা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে আগাম পূর্বাভাস করতে পারছে না খোদ ব্যবসায়ীরাও।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অক্টোবর জুড়ে অস্থির ছিল দেশের স্বর্ণের বাজার। এই এক মাসেই বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম ১২ বার বেড়েছে এবং ১০ বার কমেছে। প্রতি আউন্সের দাম মাসের শুরুতে ছিল চার লাখ ৭০ হাজার ৬২০ টাকা, যা মাস শেষে দাঁড়ায় চার লাখ ৮৯ হাজার ৩৯১ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে মোট ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর মোট ৭৩ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫০ বার আর কমেছে ২৩ বার। এছাড়া গত বছর পুরো সময়ে দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার।
এদিকে দেশের বাজারে গত ২৮ অক্টোবর একলাফে ভরিতে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। ঘোষণার একদিন না যেতেই ২৯ অক্টোবর স্বর্ণের দাম আবারও বাড়িয়ে দেয়। তাতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে আট হাজার ৯০০ টাকা। এতে এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় দুই লাখ দুই হাজার ৭০৯ টাকা।
সবশেষ গত শনিবার রাতে দেশের বাজারে নতুন করে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে দেয় বাজুস। সেই দামেই গতকাল রোববার থেকে স্থানীয় মার্কেটে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে দাম নির্ধারণ করছে জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন। সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি স্বর্ণের দর দুই লাখ এক হাজার ৭৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেট এক লাখ ৯২ হাজার ৫৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট এক লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের ভরি বিক্রি হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ টাকা।
এদিকে ভারতেও গত ছয় মাসে স্বর্ণের দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। পার্শ্ববর্তী দেশটির বাজারে এ সময়ে স্বর্ণের দাম মোট ৮৯ বার বেড়েছে এবং ৭২ বার কমেছে, বাকি দিনগুলোতে দাম অপরিবর্তিত ছিল।
দৈনিক বাজার সূচি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ মে ভারতে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের গ্রামপ্রতি দাম ছিল আট হাজার ৮০৪ রুপি। ১ নভেম্বরে তা দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪১০ রুপিতে। অর্থাৎ ছয় মাসে ভারতে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সময় দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম দাঁড়ায় প্রতি আউন্স চার হাজার ১ দশমিক ৭৪ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ কম। চলতি বছরের শেষে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ফিউচারসের দামও শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স তিন হাজার ৯৯৬ দশমিক ৫ ডলারে স্থির হয়েছে। যদিও মাস জুড়ে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাজুস জানিয়েছে, দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি একদিনেই কমেছে ১০ হাজার টাকারও বেশি। আবার সেটি বাড়িয়ে নতুন করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বর্ণের দামের এই উত্থান-পতন বিশ্ববাজারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বলে জানিয়েছেন বাজুসের এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্ত তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম যেভাবে হঠাৎ বাড়ছে বা কমছে, তার প্রতিফলন আমরা দেশীয় বাজারেও দেখতে পাচ্ছি। তবে আমদানি ব্যয় ও মুদ্রা বিনিময়ের হার বিবেচনায় বাংলাদেশের দাম এখনো বেশি।
আন্তর্জাতিক বাজারে আগস্টের মাঝমাঝি সময় থেকে স্বর্ণের দাম বাড়া শুরু হয়। তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও দাম বাড়িয়ে চলে বাজুস। এই আড়াই মাসে দু-একবার ছাড়া প্রতিবারই দাম বাড়ানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী আমার দেশকে জানান, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নতির ইঙ্গিত পাওয়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সাধারণত বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চিত থাকলে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের দিকে ঝোঁকেন, কিন্তু পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা বিকল্প খাতে অর্থ সরিয়ে নেন। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে স্বর্ণের দামে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছিল। সেই সময় বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে সোনা কিনেছিলেন। ফলে এখন অনেকেই মুনাফা তুলে নিচ্ছেন—যা স্বর্ণের দাম কমার অন্যতম কারণ।
তিনি আরো বলেন, স্বর্ণের দামের এই অস্থিরতা আরো কিছুদিন চলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ এখনো সুদের হার কমায়নি। সুদহার কমলে আবারও স্বর্ণের প্রতি চাহিদা বাড়বে—তখন দাম বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিশ্ব অর্থনীতি, মুদ্রা বিনিময় হার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আন্তর্জাতিক চাহিদা—সব মিলিয়ে স্বর্ণের বাজারে এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম সাধারণত উপমহাদেশের ভারত, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি হয়। এর কারণ দেশে সোনা মূলত আমদানি করা হলেও বৈধপথে আমদানির সুযোগ সীমিত। ফলে জুয়েলারি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায় না। এতে অবৈধ পথে সোনা
আমদানির প্রবণতা বেড়েছে, যা দাম বাড়িয়ে দেয়।
বাজার বিশ্লেষকরা জানান, টাকার অবমূল্যায়নও বড় একটি কারণ। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকার মান কমে গেলে খরচ বেড়ে যায়। বাংলাদেশে বর্তমানে ডলার সংকট চলায় ব্যবসায়ীরা উচ্চ বিনিময় হারে ডলার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা স্বর্ণের দামে প্রতিফলিত হচ্ছে। এছাড়া দেশের কর কাঠামোও স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলছে। এখানে ভ্যাট, ট্যাক্স ও মেকিং চার্জ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। তারা জানান, স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের চাহিদা প্রতি বছর বাড়ছে, বিশেষ করে বিয়ের মৌসুমে। কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ সীমিত। ফলে চাহিদা–সরবরাহের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে দাম বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশে যদি স্বর্ণের বৈধ আমদানি সহজ করা যায়, তাহলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে। পাশাপাশি ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরলে স্বর্ণের ব্যয়ও কমবে। তারা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের ওঠানামার প্রধান কারণ—বাণিজ্যচুক্তির অগ্রগতি, শক্তিশালী ডলার, বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলা ও বাজার সংশোধন। অন্যদিকে বাংলাদেশের বাজারে দাম বেশি থাকার পেছনে দায়ী সীমিত আমদানি, টাকার অবমূল্যায়ন, কর কাঠামো ও সরবরাহ সংকট।

সাম্প্রতিক সময়ে আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম অস্বাভাবিকভাবে ওঠানামা করছে। টানা কয়েক মাস ধরেই চলছে অস্থিরতা। এর প্রভাব পড়েছে বাংলাদেশেও। দামের এই টালমাটাল অবস্থা শেষ পর্যন্ত কোথায় গিয়ে ঠেকবে তা নিয়ে আগাম পূর্বাভাস করতে পারছে না খোদ ব্যবসায়ীরাও।
বাংলাদেশ জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশনের (বাজুস) তথ্য বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববাজারের সঙ্গে তাল মিলিয়ে অক্টোবর জুড়ে অস্থির ছিল দেশের স্বর্ণের বাজার। এই এক মাসেই বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম ১২ বার বেড়েছে এবং ১০ বার কমেছে। প্রতি আউন্সের দাম মাসের শুরুতে ছিল চার লাখ ৭০ হাজার ৬২০ টাকা, যা মাস শেষে দাঁড়ায় চার লাখ ৮৯ হাজার ৩৯১ টাকায়। অর্থাৎ এক মাসে মোট ৩ দশমিক ৯৯ শতাংশ বৃদ্ধি পেয়েছে। চলতি বছর মোট ৭৩ বার দেশের বাজারে সমন্বয় করা হলো স্বর্ণের দাম। যেখানে দাম বাড়ানো হয়েছে ৫০ বার আর কমেছে ২৩ বার। এছাড়া গত বছর পুরো সময়ে দাম সমন্বয় হয়েছিল ৬২ বার।
এদিকে দেশের বাজারে গত ২৮ অক্টোবর একলাফে ভরিতে ১০ হাজার ৪৭৪ টাকা কমানোর ঘোষণা দিয়ে ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম এক লাখ ৯৩ হাজার ৮০৯ টাকা নির্ধারণ করেছিল বাজুস। ঘোষণার একদিন না যেতেই ২৯ অক্টোবর স্বর্ণের দাম আবারও বাড়িয়ে দেয়। তাতে সবচেয়ে ভালো মানের বা ২২ ক্যারেটের প্রতি ভরি স্বর্ণের দাম বাড়ানো হয়েছে আট হাজার ৯০০ টাকা। এতে এক ভরি স্বর্ণের দাম দাঁড়ায় দুই লাখ দুই হাজার ৭০৯ টাকা।
সবশেষ গত শনিবার রাতে দেশের বাজারে নতুন করে স্বর্ণের দাম নির্ধারণ করে দেয় বাজুস। সেই দামেই গতকাল রোববার থেকে স্থানীয় মার্কেটে বিক্রি করছে খুচরা ব্যবসায়ীরা।
প্রায় প্রতিদিনই নতুন করে দাম নির্ধারণ করছে জুয়েলার্স অ্যাসোসিয়েশন। সবচেয়ে ভালো মানের ২২ ক্যারেটের ভরিপ্রতি স্বর্ণের দর দুই লাখ এক হাজার ৭৭৬ টাকা, ২১ ক্যারেট এক লাখ ৯২ হাজার ৫৯৬ টাকা, ১৮ ক্যারেট এক লাখ ৬৫ হাজার ৮১ টাকা। এছাড়া সনাতন পদ্ধতির স্বর্ণের ভরি বিক্রি হবে এক লাখ ৩৭ হাজার ১৮০ টাকা।
এদিকে ভারতেও গত ছয় মাসে স্বর্ণের দামে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন ঘটেছে। পার্শ্ববর্তী দেশটির বাজারে এ সময়ে স্বর্ণের দাম মোট ৮৯ বার বেড়েছে এবং ৭২ বার কমেছে, বাকি দিনগুলোতে দাম অপরিবর্তিত ছিল।
দৈনিক বাজার সূচি অনুযায়ী, চলতি বছরের ১ মে ভারতে ২৪ ক্যারেট স্বর্ণের গ্রামপ্রতি দাম ছিল আট হাজার ৮০৪ রুপি। ১ নভেম্বরে তা দাঁড়ায় ১১ হাজার ৪১০ রুপিতে। অর্থাৎ ছয় মাসে ভারতে স্বর্ণের দাম বেড়েছে প্রায় ৩০ শতাংশ।
গত শুক্রবার আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম প্রায় ১ শতাংশ হ্রাস পেয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রের সময় দুপুরে স্পট গোল্ডের দাম দাঁড়ায় প্রতি আউন্স চার হাজার ১ দশমিক ৭৪ ডলার, যা আগের দিনের তুলনায় শূন্য দশমিক ছয় শতাংশ কম। চলতি বছরের শেষে সরবরাহের জন্য যুক্তরাষ্ট্রের গোল্ড ফিউচারসের দামও শূন্য দশমিক পাঁচ শতাংশ কমে প্রতি আউন্স তিন হাজার ৯৯৬ দশমিক ৫ ডলারে স্থির হয়েছে। যদিও মাস জুড়ে এখন পর্যন্ত স্বর্ণের দাম বেড়েছে ৩ দশমিক ৭ শতাংশ।
বাজুস জানিয়েছে, দেশের বাজারে ২২ ক্যারেট স্বর্ণের ভরি একদিনেই কমেছে ১০ হাজার টাকারও বেশি। আবার সেটি বাড়িয়ে নতুন করে দর নির্ধারণ করা হয়েছে। স্বর্ণের দামের এই উত্থান-পতন বিশ্ববাজারের সঙ্গে সরাসরি সম্পর্কিত বলে জানিয়েছেন বাজুসের এক কর্মকর্তা।
নাম প্রকাশ না করার শর্ত তিনি বলেন, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের দাম যেভাবে হঠাৎ বাড়ছে বা কমছে, তার প্রতিফলন আমরা দেশীয় বাজারেও দেখতে পাচ্ছি। তবে আমদানি ব্যয় ও মুদ্রা বিনিময়ের হার বিবেচনায় বাংলাদেশের দাম এখনো বেশি।
আন্তর্জাতিক বাজারে আগস্টের মাঝমাঝি সময় থেকে স্বর্ণের দাম বাড়া শুরু হয়। তার সঙ্গে সমন্বয় করে দেশের বাজারেও দাম বাড়িয়ে চলে বাজুস। এই আড়াই মাসে দু-একবার ছাড়া প্রতিবারই দাম বাড়ানো হয়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ সাহাদাত হোসেন সিদ্দিকী আমার দেশকে জানান, সম্প্রতি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য সম্পর্ক উন্নতির ইঙ্গিত পাওয়ায় নিরাপদ বিনিয়োগ হিসেবে স্বর্ণের প্রতি আগ্রহ কিছুটা হ্রাস পেয়েছে। সাধারণত বৈশ্বিক অর্থনীতি অনিশ্চিত থাকলে বিনিয়োগকারীরা স্বর্ণের দিকে ঝোঁকেন, কিন্তু পরিস্থিতি স্থিতিশীল হলে তারা বিকল্প খাতে অর্থ সরিয়ে নেন। তিনি বলেন, গত কয়েক মাসে স্বর্ণের দামে অস্বাভাবিক বৃদ্ধি ঘটেছিল। সেই সময় বিনিয়োগকারীরা ব্যাপকভাবে সোনা কিনেছিলেন। ফলে এখন অনেকেই মুনাফা তুলে নিচ্ছেন—যা স্বর্ণের দাম কমার অন্যতম কারণ।
তিনি আরো বলেন, স্বর্ণের দামের এই অস্থিরতা আরো কিছুদিন চলতে পারে। কারণ যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ এখনো সুদের হার কমায়নি। সুদহার কমলে আবারও স্বর্ণের প্রতি চাহিদা বাড়বে—তখন দাম বাড়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে। বিশ্ব অর্থনীতি, মুদ্রা বিনিময় হার, রাজনৈতিক অনিশ্চয়তা ও আন্তর্জাতিক চাহিদা—সব মিলিয়ে স্বর্ণের বাজারে এই অস্থিরতা তৈরি হয়েছে।
ব্যবসায়ীরা জানান, বাংলাদেশে স্বর্ণের দাম সাধারণত উপমহাদেশের ভারত, পাকিস্তান ও অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি হয়। এর কারণ দেশে সোনা মূলত আমদানি করা হলেও বৈধপথে আমদানির সুযোগ সীমিত। ফলে জুয়েলারি শিল্পের কাঁচামাল হিসেবে পর্যাপ্ত সরবরাহ পাওয়া যায় না। এতে অবৈধ পথে সোনা
আমদানির প্রবণতা বেড়েছে, যা দাম বাড়িয়ে দেয়।
বাজার বিশ্লেষকরা জানান, টাকার অবমূল্যায়নও বড় একটি কারণ। আমদানিনির্ভর পণ্যের ক্ষেত্রে টাকার মান কমে গেলে খরচ বেড়ে যায়। বাংলাদেশে বর্তমানে ডলার সংকট চলায় ব্যবসায়ীরা উচ্চ বিনিময় হারে ডলার কিনতে বাধ্য হচ্ছেন, যা স্বর্ণের দামে প্রতিফলিত হচ্ছে। এছাড়া দেশের কর কাঠামোও স্বর্ণের দামে প্রভাব ফেলছে। এখানে ভ্যাট, ট্যাক্স ও মেকিং চার্জ অন্যান্য দেশের তুলনায় অনেক বেশি। তারা জানান, স্থানীয় বাজারে স্বর্ণের চাহিদা প্রতি বছর বাড়ছে, বিশেষ করে বিয়ের মৌসুমে। কিন্তু সেই তুলনায় সরবরাহ সীমিত। ফলে চাহিদা–সরবরাহের ভারসাম্য নষ্ট হয়ে দাম বেড়ে যায়।
বিশেষজ্ঞরা জানান, বাংলাদেশে যদি স্বর্ণের বৈধ আমদানি সহজ করা যায়, তাহলে দাম কিছুটা স্থিতিশীল হতে পারে। পাশাপাশি ডলার বাজারে স্থিতিশীলতা ফিরলে স্বর্ণের ব্যয়ও কমবে। তারা জানান, আন্তর্জাতিক বাজারে স্বর্ণের ওঠানামার প্রধান কারণ—বাণিজ্যচুক্তির অগ্রগতি, শক্তিশালী ডলার, বিনিয়োগকারীদের মুনাফা তোলা ও বাজার সংশোধন। অন্যদিকে বাংলাদেশের বাজারে দাম বেশি থাকার পেছনে দায়ী সীমিত আমদানি, টাকার অবমূল্যায়ন, কর কাঠামো ও সরবরাহ সংকট।

এই প্রশিক্ষণ কর্মসূচির উদ্দেশ্য ছিল নারী উদ্যোক্তাদের ব্যবসায়িক দক্ষতা এবং আর্থিক ব্যবস্থাপনা ও বাজার সম্প্রসারণ বিষয়ে ধারণা বাড়ানো। প্রশিক্ষণ কর্মসূচিতে অংশগ্রহণকারী নারী উদ্যোক্তাদের এসএমই খাতে আরও সক্রিয় অংশগ্রহণে উৎসাহিত করা হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
আইসিবি ইসলামিক ব্যাংকের ১৫ দিনব্যাপী ‘সেবাপক্ষ ২০২৫’ উদ্বোধন হয়েছে। শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারের টিসিবি মিলনায়তনে এ সেবাপক্ষ উদ্বোধন করেন বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক এবং ব্যাংকের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক মজিবুর রহমান।
৯ ঘণ্টা আগে
হু হু করে বাড়ছে পেঁয়াজের দাম। সপ্তাহের ব্যবধানে কেজিতে ৩০ থেকে ৪০ টাকা পর্যন্ত বেড়ে গতকাল বৃহস্পতিবার পেঁয়াজ বিক্রি হয় ১১০ থেকে ১২০ টাকা দরে। অতি প্রয়োজনীয় এ নিত্যপণ্যের কেজি দেড়শ টাকা ছাড়িয়ে যেতে পারে বলে ব্যবসায়ীরা আশঙ্কা করছেন।
১ দিন আগে
শীতকালীন সবজি বাজারে আসতে শুরু করায় কয়েকদিনের ব্যবধানে সব ধরনের সবজির দাম কমতে শুরু করেছে। এতে জনমনে ফিরে আসছে স্বস্তি। তবে অস্বস্তি তৈরি করেছে আটা ও পেঁয়াজের দাম। এ দুটি পণ্যের দাম হঠাৎ করে অস্বাভাবিকভাবে বেড়েছে।
২ দিন আগে