ড. শমসের আলীর স্মরণসভায় বক্তারা

ইসলামপন্থি ট্যাগ দিয়ে জাতীয় অনুষ্ঠানে দাওয়াত দিতো না

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ৩৯

জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ অনুষ্ঠানে ইসলামপন্থি ট্যাগ দিয়ে দাওয়াত দিতে দেওয়া হতো না বলে মন্তব্য করে ইস্টার্ন ইউনিভার্সিটির উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফরিদ এ. সোবহানী বলেন, বর্তমান মুসলিম বিশ্বে ইসলামপন্থি বা চিন্তার বুদ্ধিজীবী খুব একটা নেই।

তিনি আফসোস করে বলেন, মুসলমানের দেশে সেরা স্কলারদের কোরআনের জ্ঞান থাকবে এটাই তো স্বাভাবিক হওয়া দরকার ছিল অথচ কোরআনের জ্ঞান থাকায় অবহেলা করা হতো, স্যারের প্রাপ্ত সম্মান থেকে বঞ্চিত করা হয়েছে বলেও তিনি অভিযোগ করেন।

বিজ্ঞাপন

শুক্রবার সরকারি টিচার্স ট্রেনিং কলেজে জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদ (জাশিপ) আয়োজিত  আন্তর্জাতিক খ্যাতিসম্পন্ন পরমাণুবিজ্ঞানী ও প্রফেসর ইমেরিটাস ড. এম শমসের আলীর মৃত্যুতে এক স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিষ্ঠাকালীন রেজিস্ট্রার ড. আবুল বাশার খান বলেন, আজকে ড.এম. শমসের আলীর স্মরণ সভা। বিষয়ে আমাদের নতুন প্রজন্ম খুব বেশি কিছু জানেনা। জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদ স্যারের কর্মযজ্ঞ এবং অবদান নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরবে বলে আমি আশাবাদী।

কোরআনকে আধুনিক বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা এবং বিজ্ঞানের সাথে কুরআনের সম্পর্ক তুলে ধরা তার বিশেষ দক্ষতা ছিল।

উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. আবু তালেব বলেন, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে আমি যখন শিক্ষক হিসেবে নিয়োগ পেয়েছিলাম তখন তিনি প্রথমদিন আমাদের বলেছিলেন, আমি তোমাদের নিয়োগ দিয়েছি কে কোন দলের সেটা দেখি নাই বরং তোমাদের অ্যাকাডেমিক যোগ্যতা দেখে।

সুতরাং তোমরা মানুষের জন্য দেশের জন্য কাজ করবে। আমি আরও দুইটা বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক হিসেবে ডাক পাওয়ার পরও শমসের আলী স্যারের এই একটা কথা মনে পড়ায় আমি আর যেতে পারি নাই।

স্মরণ সভা ও দোয়া মাহফিলে স্মৃতি চারণ করে  আলোচকরা বলেন, রেডিও ও টেলিভিশনে বিজ্ঞান ও ধর্মের সম্পর্ক ব্যাখ্যায় তিনি ছিলেন অসাধারণ। কুরআনকে বিজ্ঞানের আলোকে ব্যাখ্যা এবং বিজ্ঞানের সাথে কুরআনের সম্পর্ক তুলে ধরা তার বিশেষ দক্ষতা ছিল। জ্ঞানকে সাধারণ মানুষের কাছে সহজভাবে পৌঁছে দিতে তিনি পথিকৃৎ ছিলেন।

আন্তঃধর্মীয় সম্প্রীতি ও বৈশ্বিক শান্তির জন্য কাজ করেছেন এবং অসংখ্য শিক্ষার্থীর মেন্টর হিসেবে আজীবন প্রেরণা জুগিয়েছেন। বক্তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, দেশ তার যোগ্যতার যথাযথ মূল্যায়ন করতে পারেনি।

জাতীয় শিক্ষা-সেবা পরিষদের বোর্ড অফ ট্রাস্টিজের চেয়ারম্যান ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের সাবেক অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামানের সভাপতিত্বে  ও জাতীয় শিক্ষা সেবা পরিষদের ভারপ্রাপ্ত সেক্রেটারি জেনারেল ডা. মো. জাকির হোসেন তালুকদারের সঞ্চালনায় আরও উপস্থিত ছিলেন সরকারি তিতুমীর কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ অধ্যাপক মিজানুর রহমান, উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রারার অধ্যাপক আনিছুর রহমান, কিং ফয়সাল বিশ্ববিদ্যালয় সৌদি আরবের সাবেক শিক্ষক অধ্যাপক আবু সুফিয়ানসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকরা ।

কুষ্টিয়ার ভেড়ামারায় ১৯৩৭ সালের ২১ নভেম্বর জন্মগ্রহণকারী ড. এম.শমসের আলী ২০২৫ সালের ২ আগস্ট ৮৭ বছর বয়সে ঢাকায় ইন্তেকাল করেন । তিনি পাকিস্তান আণবিক শক্তি কমিশনে কর্মজীবন শুরু করে পরবর্তীতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক, বাংলাদেশ উন্মুক্ত বিশ্ববিদ্যালয় ও সাউথইস্ট ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা উপাচার্য, বিআইআইটি’র প্রতিষ্ঠাতা প্রেসিডেন্ট এবং বাংলাদেশ একাডেমি অব সায়েন্সেস-এর সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত