টেকসই ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণ মৎস্যখাতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ

প্রকাশ : ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১৮: ৫৩

মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ উপদেষ্টা ফরিদা আখতার বলেছেন, অ্যাকুয়াকালচার শিল্প মূলত ফিডের উপর নির্ভরশীল, তাই ফিডের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। নিরাপদ ফিড ব্যবহার মানে নিরাপদ মাছ উৎপাদন, যা শুধু উৎপাদন নয়, টেকসই ও নিরাপদ খাদ্য নিশ্চিতকরণেও গুরুত্বপূর্ণ।

রোববার উখিয়ার ডেরা রিসোর্টে নেদারল্যান্ডস দূতাবাস ও ফিসটেক বিডি লিমিটেডের যৌথ উদ্যোগে প্রতিষ্ঠিত অ্যাকুয়াকালচার সেন্টার অব এক্সিলেন্স উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন।

বিজ্ঞাপন

তিনি বলেন, টেকসই বলতে শুধু শিল্পে টিকে থাকা নয়; বরং পরিবেশ রক্ষা, মানুষের জীবিকা নিশ্চিত এবং সমাজের সঙ্গে সুসম্পর্ক বজায় রাখাও গুরুত্বপূর্ণ।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, মৎস্যখাতের সামাজিক ও অর্থনৈতিক প্রভাব বোঝার জন্য শুধুমাত্র উৎপাদনের পরিমাণ নয়, খাতে কতজন মানুষ যুক্ত রয়েছে—এটাই প্রকৃত সূচক। তাই মৎস্য অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্টদের এ খাতে কঠোর নজরদারি বাড়াতে হবে।

উপদেষ্টা বলেন, অ্যাকুয়াকালচারে তরুণ প্রজন্মের জন্য সুযোগ তৈরি করা জরুরি, যাতে তারা আগ্রহী হয় এবং ভালো আয় ও টেকসই কর্মসংস্থানের সম্ভাবনা দেখতে পায়।

তিনি আরও উল্লেখ করেন, মাছ উৎপাদন বৃদ্ধিতে IPRS (In-Pond Raceway System) প্রযুক্তি বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত কার্যকর। এই প্রযুক্তি প্রয়োগ ও বিকল্প ব্যবস্থা রাখা ভবিষ্যতের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।

অনুষ্ঠানে গেস্ট অব অনার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশে নিযুক্ত নেদারল্যান্ডসের রাষ্ট্রদূত জরিস ভ্যান বমেল (Joris van Bommel)।

তিনি বলেন, কক্সবাজারে ফুডটেক বাংলাদেশ কর্মসূচির আওতায় প্রতিষ্ঠিত CoE বাংলাদেশ ও নেদারল্যান্ডসের অংশীদারিত্বের উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত। কেন্দ্রটি সরকারি ও বেসরকারি খাত এবং উন্নয়ন সহযোগীদের একত্রিত করে জ্ঞান বিনিময়, আধুনিক প্রযুক্তি প্রদর্শন এবং কৃষক ও মৎস্যচাষিদের সহায়তা করবে।

রাষ্ট্রদূত আরও বলেন, বাংলাদেশ যখন ব্লু ইকোনমি অ্যাজেন্ডা এগিয়ে নিচ্ছে, তখন এই ধরনের উদ্যোগ দেশের অগ্রযাত্রায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে। প্রযুক্তির ব্যবহার, আন্তর্জাতিক অংশীদারিত্ব এবং কৃষকের সক্রিয় অংশগ্রহণের সমন্বয়ে খাত আরও টেকসই, উৎপাদনশীল ও প্রতিযোগিতামূলক হবে।

অনুষ্ঠানে মৎস্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ড. মো. আবদুর রউফ বলেন, IPRS প্রযুক্তির মাধ্যমে মাছ উৎপাদন পুকুরে চাষের তুলনায় তিন থেকে পাঁচগুণ পর্যন্ত বৃদ্ধি করা সম্ভব এবং একই সাথে জমি ও পানির দক্ষ ব্যবহার নিশ্চিত হবে। এটি ক্রমবর্ধমান নিরাপদ ও পুষ্টিকর মাছের চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ।

ফিশটেকের চেয়ারম্যান খন্দকার ফরহাদ হোসেন স্বাগত বক্তব্য দেন এবং প্রতিষ্ঠানের ভিশন তুলে ধরেন। লারিভ ইন্টারন্যাশনাল প্রকল্পের ব্যবস্থাপক রজিয়ার বেকটর (Rogier Bector) মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন— মৎস্য অধিদপ্তরের পরিচালক এস. এম. রেজাউল করিম, নেদারল্যান্ডস দূতাবাসের প্রথম সচিব (অর্থনৈতিক বিষয়ক) টিম স্প্যানস (Tim Spaans), প্রথম সচিব (মানবিক ও জেন্ডার বিষয়ক) ইয়ান সুইলেন্স (Jan Swillens), দেশের বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, সি-ফুড প্রসেসিং ও অ্যাকুয়াকালচার খাতের উদ্যোক্তা, মৎস্যচাষীসহ অন্যান্য অতিথিবৃন্দ।

উপদেষ্টা এদিন বিকেলে কক্সবাজারের কলাতলীতে মৎস্য অধিদপ্তরের কাঁকড়া হ্যাচারি ও নার্সারি কমপ্লেক্স পরিদর্শন করেন। এসময় তিনি সাসটেইনেবল কোস্টাল অ্যান্ড মেরিন ফিশারিজ প্রকল্পের (PCR) ল্যাব ও নির্মাণাধীন স্থাপনাগুলো ঘুরে দেখেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত