জাতীয় সেমিনারে বিশিষ্টজনরা

জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করে নভেম্বরেই গণভোট করতে হবে

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ১৬ অক্টোবর ২০২৫, ২১: ২৮

জুলাই জাতীয় সনদ অন্তর্ভুক্ত করে নভেম্বরের মধ্যেই গণভোট সম্পন্ন করার দাবি জানিয়েছেন বিশিষ্ট ব্যক্তি ও রাজনৈতিক নেতারা। বৃহস্পতিবার রাজধানীর ইন্সটিটিউশন অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স মিলনায়তনে অনুষ্ঠিত ‘জুলাই জাতীয় সনদের আইনি ভিত্তি: গণভোট ও পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন’ শীর্ষক জাতীয় সেমিনারে তারা এ কথা বলেন।

সেমিনারে কী-নোট স্পিকার হিসেবে বিষয়বস্তুর ওপর বক্তব্য উপস্থাপন করেন সুপ্রিম কোর্টের সিনিয়র আইনজীবী ব্যারিস্টার মুহাম্মদ বেলায়েত হোসেন। এতে বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের জাতীয় নেতা, সাবেক সচিব, ভিসি ও বিভিন্ন পেশাজীবী সংগঠনের নেতারা বক্তব্য রাখেন।

বিজ্ঞাপন

প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগের সাবেক বিচারপতি ফরিদ আহমেদ বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি দিতে না পারলে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ব্যর্থ। জুলাইয়ে হাজার হাজার মানুষের রক্ত বৃথা যাবে। পিআর পদ্ধতির নির্বাচন প্রসঙ্গে তিনি বলেন, পিআর পদ্ধতিতে নির্বাচন হলে স্বামী-স্ত্রী দুজন এমপি হওয়ার সুযোগ থাকবে না। অতীতে দেখা গেছে, মনোনয়ন বাণিজ্যের কারণে একই পরিবারের, একই ঘরের দুজনকে মনোনয়ন দেওয়া হয়েছে, এমপি বানানো হয়েছে। ফলশ্রুতিতে এই ব্যবস্থার নির্বাচনে স্বৈরাচার প্রতিষ্ঠা হয়েছে। দেশের জনগণ এই ব্যবস্থার পরিবর্তন চায়।

বিশেষ অতিথির বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর সেক্রেটারি জেনারেল অধ্যাপক মিয়া গোলাম পরওয়ার বলেন, জুলাই সনদ বাস্তবায়ন বিষয় সংসদ কিংবা আদালতে নেওয়ার কথা বলে ‘ঘোলা পানিতে মাছ শিকার’ করার চেষ্টা করে একটি দল। তারা অবশেষে জুলাই সনদের আইনি ভিত্তির জন্য গণভোটের পক্ষে একমত হলেও সময় নিয়ে তারা টালবাহানা করছে। তারা জাতীয় নির্বাচনের দিন গণভোট করতে চায়। জাতীয় নির্বাচন এবং গণভোট একই দিনে সম্ভব নয়, সুযোগও নেই।

পিআর পদ্ধতি প্রসঙ্গে তিনি বলেন, সবচেয়ে জনপ্রিয় ও গ্রহণযোগ্য পদ্ধতি হচ্ছে পিআর পদ্ধতি। যারা বলে তারা পিআর বোঝে না, তারা রাজনীতি নিয়ে পড়াশোনা করে না। তিনি তাদের পিআর বিষয়ে অধ্যয়ন করার পরামর্শ দিয়ে বলেন, পড়তে না পারলে লজ্জা না করে আমাদের কাছে আসুন, আমরা বুঝিয়ে দেব।

গোলাম পরওয়ার বলেন, একটি দলের পকেটে রাষ্ট্রকে ঢুকিয়ে দিতে কাজ করছেন কয়েকজন উপদেষ্টা। তারা ওই দলের পছন্দ অনুযায়ী ডিসি-এসপি বদলি করে দলীয় লোকদের পদায়ন করছেন। প্রধান উপদেষ্টার উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনার উপদেষ্টা পরিষদের চার-পাঁচজন উপদেষ্টা একটি দলের প্রতি অনুগত। তারা ওই দলের এজেন্ডা বাস্তবায়নে কাজ করছে। এতে আপনার নিরপেক্ষতা প্রশ্নবিদ্ধ। তাদের আপনি সতর্ক করুন, না হলে সরিয়ে নতুন উপদেষ্টা মনোনয়ন দিন।

ইসলামী আন্দোলনের মহাসচিব অধ্যক্ষ মাওলানা ইউনুস আহমদ বলেন, জুলাই সনদের আইনি ভিত্তি ও বাস্তবায়ন না হলে শহীদদের রক্তের সঙ্গে গাদ্দারি করার শামিল হবে। জাতির স্বার্থে ও দেশের স্বার্থে জামায়াতে ইসলামীর উত্থাপিত পিআর পদ্ধতিসহ পাঁচ দফা দাবি মেনে নেওয়ার জন্য সরকারের প্রতি আহ্বান জানান।

জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল মাওলানা আবদুল হালিমের পরিচালনায় সেমিনারে আরো বক্তব্য রাখেন খেলাফত মজলিসের মহাসচিব ড. আহমদ আবদুল কাদের, খেলাফত আন্দোলনের নায়েবে আমির মাওলানা মুজিবুর রহমান হামিদী, ইসলামী আন্দোলনের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন্দ, মাওলানা আবু তালেব, জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি জেনারেল ড. এ.এইচ.এম. হামিদুর রহমান আযাদ, খেলাফত আন্দোলনের মহাসচিব মুফতি ফখরুল ইসলাম, সাবেক ভিসি অধ্যাপক ড. আবদুল লতিফ মাছুম, বুয়েটের অধ্যাপক ড. ফখরুল ইসলাম, সাংবাদিক মাসুমুর রহমান খলিলী, ন্যাশনাল ডক্টরস ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক ডা. নজরুল ইসলাম, অ্যাডভোকেট শেখ আতিয়ার রহমান, ব্রিগেডিয়ার (অব.) মাহমুদুল হাসান, ঢাকা সিটি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ কাজী মিনহাজুল রহমান, অধ্যাপক ডা. কর্ণেল (অব.) জেহাদ খান, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়নের সভাপতি শহিদুল ইসলাম, সাবেক সচিব ড. মো. জাহেদুল ইসলাম, নেজামে ইসলাম পার্টির সিনিয়র নায়েবে আমির আবদুল মাজেদ, জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টির (জাগপা) সহসভাপতি ও মুখপাত্র ইঞ্জিনিয়ার রাশেদ প্রধান প্রমুখ।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত