রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (রাজউক) প্লট বরাদ্দে দুর্নীতির অভিযোগে সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ অন্যান্য আসামিদের বিরুদ্ধে পৃথক তিন মামলায় পঞ্চম দিনে আরও ৯ জনের সাক্ষ্য গ্রহণ করেছেন আদালত। তবে এদিন পুতুলের মামলায় কোন সাক্ষ্যগ্রহণ হয়নি।
মঙ্গলবার ঢাকার পাঁচ নম্বর বিশেষ জজ মো. আব্দুল্লাহ আল মামুনের আদালতে দুই মামলায় সাক্ষীরা তাদের জবানবন্দি দেন। পরে আদালত পরবর্তী সাক্ষ্য গ্রহণের জন্য ১৫ অক্টোবর দিন ধার্য করেন। তবে এসব মামলায় আসামিরা পলাতক থাকায় সাক্ষীদের জেরা করা হয়নি।
আজকের সাক্ষীরা হলেন, প্রধান উপদেষ্টা কার্যালয়ে মটর ক্লিনার মোহাম্মদ উজ্জ্বল হোসেন, গাজীপুরের কালীগঞ্জের সাব রেজিস্টার জাহিদুর রহমান, সদর রেকর্ডরুমের সাব রেজিস্টার মাহবুবুর রহমান, ঢাকার মেট্রোপলিটনের সাবেক ম্যাজিস্ট্রেট এম মেজবাহউর রহমান, ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট সেফাতুল্লাহ, ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশনের উচ্চমান সহকারী কাম হিসাব রক্ষক তৈয়বা রহিম, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের মুদ্রাক্ষরিক কামরুন্নাহার, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের প্রশাসনিক কর্মকর্তা মো. রফিকুল ইসলাম এবং গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের কম্পিউটার অপারেটর মুক্তি তরফদার।
দুদক প্রসিকিউটর খান মো. মঈনুল হাসান (লিপন) এতথ্য নিশ্চিত করেন৷ তিনি বলেন, আদালত থেকে ৯ জনকে সাক্ষীকে সমন পাঠানো হয়েছিলে। আজ তারা আদালতে এসে তিন মামলায় মোট ২০ টা সাক্ষ্য দেন। তার মায়ের পক্ষ থেকে ধানমন্ডিতে দান সূত্রে যে সম্পদ প্রাপ্ত হয়েছে, সে সম্পর্কে সাক্ষীরা সাক্ষ্য দিয়েছেন। আর ম্যাজিস্ট্রেটরা তাদের আদালতে দেয়া জবানবন্দির বিষয়ে বলেছেন।
গত ৩১ জুলাই এই মামলায় চার্জগঠন করে বিচার শুরুর আদেশ দেন একই আদালত। ওইদিন আসামিরা পলাতক থাকায় তাদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করা হয়। পৃথক তিন মামলায় শেখ হাসিনাসহ ১২ জন, সজীব ওয়াজেদ জয়সহ ১৭ এবং সায়মা ওয়াজেদ পুতুলসহ-১৮ জনকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২০ জুলাই ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৪ ও ঢাকার বিশেষ জজ আদালত-৫ আদালতে তিনটি করে মোট ছয়টি মামলা বিচারের জন্য পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকার মহানগর দায়রা জজ আদালত।
মামলার অপর আসামিদের মধ্যে রয়েছে, শেখ রেহানা ও তার মেয়ে টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, আজমিনা সিদ্দিক রূপন্তী, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ববি, জাতীয় গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয়ের সচিব শহীদ উল্লা খন্দকার, অতিরিক্ত সচিব (প্রশাসন) কাজী ওয়াছি উদ্দিন, প্রশাসনিক কর্মকর্তা সাইফুল ইসলাম সরকার, সিনিয়র সহকারী সচিব পূরবী গোলদার, রাজউকের সাবেক চেয়ারম্যান আনিছুর রহমান মিঞা, সাবেক সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) মোহাম্মদ খুরশীদ আলম, সদস্য (প্রশাসন ও অর্থ) কবির আল আসাদ, সদস্য (উন্নয়ন নিয়ন্ত্রণ) তন্ময় দাস, সদস্য (এস্টেট ও ভূমি) নুরুল ইসলাম, সাবেক সদস্য (পরিকল্পনা) মোহাম্মদ নাসির উদ্দীন, সাবেক সদস্য সামসুদ্দীন আহমদ চৌধুরী, পরিচালক (এস্টেট ও ভূমি-২) শেখ শাহিনুল ইসলাম, উপপরিচালক হাফিজুর রহমান, হাবিবুর রহমান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী শরীফ আহমেদ ও প্রধানমন্ত্রীর সাবেক একান্ত সচিব সালাউদ্দিন।
প্লট বরাদ্দের দুর্নীতির অভিযোগে গত জানুয়ারিতে পৃথক ৬ মামলা দায়ের করে দুদক। মামলায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, ছেলে সজীব ওয়াজেদ জয়, মেয়ে সায়মা ওয়াজেদ (পুতুল), বোন শেখ রেহানা, রেহানার মেয়ে ও ব্রিটিশ এমপি টিউলিপ রিজওয়ানা সিদ্দিক, ছেলে রাদওয়ান মুজিব সিদ্দিক ও অপর মেয়ে আজমিনা সিদ্দিকসহ আরও অনেককে আসামি করা হয়।

