খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়

গোলপাতার ছাউনির ক্যাফেটেরিয়ায় জমজমাট আড্ডা

ইব্রাহিম খলিল, খুবি
প্রকাশ : ১৪ আগস্ট ২০২৫, ১০: ১৫

সবুজে ঘেরা খুলনা বিশ্ববিদ্যালয় বরাবরই পরিচিত তার নিস্তরঙ্গ সৌন্দর্য ও রাজনীতিহীন ক্যাম্পাসের জন্য। তবে ২০২৩ সালে সবুজের বুকে গোলপাতার ছাউনি দিয়ে নির্মিত একটি ক্যাফেটেরিয়া এই নিঃসর্গে নতুন মাত্রা যোগ করেছে। এটি শুধু খাবার পরিবেশনের স্থান নয়, এখন হয়ে উঠেছে শিক্ষার্থীদের প্রশান্তির ঠিকানা, গল্প-আড্ডার কেন্দ্র, নিঃসঙ্গ বিকেলের সঙ্গী।

বিজ্ঞাপন

প্রাকৃতিক উপকরণ ও পরিবেশবান্ধব হিসেবে এই ক্যাফেটেরিয়া ইতোমধ্যে সুনাম কুড়িয়েছে। এর আয়তন প্রায় ৫ হাজার ৪০০ বর্গফুট। ছাউনি নির্মাণে ব্যবহৃত হয়েছে উপকূলীয় অঞ্চলের পরিচিত উপাদান গোলপাতা। এর নান্দনিকতা যেমন চোখ জুড়ায়, তেমনি বাস্তবিক কার্যকারিতাও প্রমাণিত। খোলা কাঠামো ও প্রাকৃতিক উপাদানের ব্যবহারে ক্যাফেটেরিয়ার ভেতরে গ্রীষ্মকালে আশপাশের জায়গার তুলনায় ৪ থেকে ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস কম তাপমাত্রা অনুভূত হয়।

এই ক্যাফেটেরিয়ায় ইট-পাথরের কৃত্রিমতা নেই, নেই বহুতলের গম্ভীরতা। আছে সহজিয়া সৌন্দর্য, প্রাকৃতিক প্রশান্তি। পাশে জলাশয়ে ফুটে আছে শাপলা‑পদ্ম, পেছনে দাঁড়িয়ে থাকে হোগলাবন আর বাঁশঝাড়ের পাহারা। চারপাশের এই নিঃসর্গ যেন ক্লান্ত শিক্ষার্থীর মনে আনে আরামদায়ক স্বস্তি।

সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এখানে চলে খাবার পরিবেশন। পরোটা‑ডিম‑সবজি দিয়ে শুরু, দুপুরে খিচুড়ি‑মাছ‑মাংস, আর সন্ধ্যায় হালকা কিছু— সবকিছুর দামই শিক্ষার্থীদের নাগালের মধ্যে। তবে এই ক্যাফেটেরিয়ার আকর্ষণ খাবারে সীমাবদ্ধ নয়। এটি হয়ে উঠেছে বহু প্রথম পরিচয়ের স্থান, দলগত কাজের ঠিকানা, প্রেমের শুরু কিংবা বন্ধুত্বের শেষহীন গল্পের কেন্দ্র।

বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাজ বিজ্ঞান ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী শাম্মী আক্তার মিথি জানান, এই ক্যাফেটেরিয়ায় বসেই আমার প্রথম বন্ধুটির সঙ্গে আলাপ হয়েছিল। আজও আমরা প্রতিদিন এখানে বসে চা খাই।

গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা ডিসিপ্লিনের শিক্ষার্থী মাহমুদ বলেন, খাবারের স্বাদ হয়তো অন্য কোথাও আরো ভালো হতে পারে, কিন্তু এমন পরিবেশ? এমন নিঃশব্দ প্রশান্তি সেটা কেবল এখানেই মেলে।

দুই বছরের ব্যবধানে এই ক্যাফেটেরিয়ায় পরিবর্তন এসেছে অনেক। এসেছে নতুন মুখ, নতুন গল্প। কিন্তু বদলায়নি এর আবহ, এর আকর্ষণ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত