চবিতে সংঘর্ষের মধ্যেও নিয়োগ বোর্ডের পরীক্ষা নিলেন উপাচার্য

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম
প্রকাশ : ০১ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ১২: ২২

ক্যাম্পাসে দফায় দফায় সংঘর্ষে শিক্ষক-শিক্ষার্থী রক্তাক্ত হচ্ছেন, ধানক্ষেতে শিক্ষার্থীদের কুপিয়ে আহত করার ভিডিও ছড়িয়ে পড়ছে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। অথচ এই পরিস্থিতির মধ্যেও রোববার সকাল থেকো দুপুর পর্যন্ত চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইয়াহইয়া আখতার নিয়োগ বোর্ডের পরীক্ষা চালিয়ে যান। এমনকি সকালে সেনাদের টিমও ওনার পরামর্শে ক্যাম্পাস ছাড়েন।

বিজ্ঞাপন

বিশ্ববিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষক জানান, সকাল থেকে সংঘর্ষের কারণে পুরো ক্যাম্পাস অচল হয়ে পড়লেও প্রশাসনিক ভবনের ভেতরে উপাচার্যের সভাপতিত্বে নিয়োগ বোর্ড বসে। যোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের এই মৌখিক পরীক্ষা চালিয়ে নিচ্ছিলেন উপাচার্য। বাইরে শিক্ষার্থীরা হামলার শিকার হলেও ভেতরে পরীক্ষা বন্ধ করা হয়নি।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক টিমের এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের বাঁচাতে ঘটনাস্থলে ছুটছিলাম, কিন্তু একই সময়ে নিয়োগ বোর্ডে উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছিল। এটা খুবই অস্বাভাবিক লেগেছে।

CU-2

এদিকে চট্টগ্রাম ক্যান্টেনমেন্টের ২৪ পদাতিক ডিভিশনের লেফটেন্যান্ট কর্নেল আবিদ বলেন, শনিবার রাতে সংঘর্ষের সময় আমাদের ডাকা হয়েছিল। আমরা রাত ৩টায় এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। পরে উপাচার্য মহোদয়ের পরামর্শে রোববার সকালে আমরা চলে যাই। সকালে ঘটনা আবার শুরু হলে ফরমালি ডাকা হয়। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের অনুমতি ছাড়া আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকতে পারি না। ফরমালি ডাকার পর ক্যাম্পাসে দুপুরের দিকে আবারো আমরা মুভ করি। স্বায়ত্বশাসিত বিশ্ববিদ্যালয়, আমরা যখন তখন আসতে পারি না। আমরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে নিই।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপাচার্য অধ্যাপক ড.ইয়াহইয়া আখতার বলেন, আমাদের অনেক পরীক্ষার্থী গেস্ট হাউসে ছিলো। অনেক দূর থেকে তারা এসেছেন। কেউ রাজশাহী, কেউ সিলেট থেকেও। আমি সিদ্ধান্ত নিচ্ছিলাম পরীক্ষা স্থগিত করার কিন্তু এরমধ্যে আমার পিএস বললো, সবাই দূর থেকে এসেছেন পরীক্ষা চালিয়ে নেয়ার।

তিনি বলেন, আমরা সকাল থেকে নিজস্ব ফোর্স নিয়ে মুভ করি। যেখানে যেখানে শিক্ষার্থীরা আটকে ছিলো বলেছিল, সেখানে গিয়ে দেখি কেউ আটকা পরেনি। সব ছিল গুজব। ৫ আগস্টের পর শুধু আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র না, পুরো দেশের ছাত্রসমাজ কিছু হলেই পদত্যাগ করো, শাহবাগে আন্দোলন, জানাজা পড়া-এসব সংস্কৃতি চলে আসছে। তারা ভুল করতে পারে, আমরাতো করতে পারি না।

শনিবার রাত থেকে শুরু হওয়া সংঘর্ষে রোববার রাত পর্যন্ত ২০০ শতাধিক শিক্ষার্থী আহত হন। দুজন আইসিইউতে আছেন। শুধু শিক্ষার্থী নয়, উপ-উপাচার্য, প্রক্টরসহ ১০ শিক্ষকও আহত হন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত