২০২৩ সালে মুক্তি পাওয়া বাংলা সিনেমা ও কলাকুশলীদের সরকারি স্বীকৃতি দেওয়ার উদ্দেশ্যে ২০২৪-এর জুন মাসের শুরুর দিকে তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে প্রজ্ঞাপন জরি করে আবেদন আহ্বান জানানো হয়। জুলাই-আগস্টজুড়ে ছাত্র-জনতার আন্দোলন ও গণঅভ্যুত্থান ফলে সরকারপ্রধান পালিয়ে গেলে সব হিসাব বদলে যায়। নতুন সরকার দেশের দায়িত্ব গ্রহণ করে। জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দেওয়ার লক্ষ্যে নতুন করে জুরি বোর্ড গঠিত হয়। নতুন জুরি বোর্ড ২০২৩ সালের সেরা চলচ্চিত্র ও কলাকুশলীদের বাছবিচার শুরু করে। শোনা যাচ্ছে শিগগিরই ঘোষণা হবে ‘জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার-২০২৩’। বেশ কিছু গণমাধ্যম কারা পুরস্কার পেতে পারেন সেই আভাসও দিতে শুরু করে। চলচ্চিত্র পাড়ায় চলতে থাকে কানাঘুষা।

তবে সর্বশেষ যা জানা গেল, ২০২৩ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের জন্য আরেকটু অপেক্ষা করা লাগতে পারে। পাশাপাশি ২০২৪ সালে মুক্তি পাওয়া চলচ্চিত্র ও কলাকুশলীদের অপেক্ষা কমতে পারে। তথ্য মন্ত্রণালয়ের একটি সূত্র আমার দেশকে জানিয়েছে, ২০২৩ ও ২০২৪ সালের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার একসঙ্গে দেওয়ার কথা ভাবছে সরকার। এ নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চলছে আলোচনা-পর্যালোচনা। ভালো-মন্দ যাচাই শেষে মন্ত্রণালয় সংশ্লিষ্টরা যদি সিদ্ধান্তে আসেন তাহলে গত দুই বছরের জন্য আলাদা তারিখে পুরস্কার না দিয়ে একসঙ্গে দেওয়ার সম্ভাবনা আছে।

ওই সূত্র আরো জানিয়েছে, যেহেতু ২০২৩ সালের পুরস্কার ২০২৪ সালে দেওয়া হয়নি। বছরের শেষের দিকে নতুন সরকার ক্ষমতা গ্রহণ করলে সবকিছু নতুন করে শুরু করতে হয়েছে। এখন ২০২৫ সালেরও চার মাস পেরিয়ে গেছে প্রায়। তা ছাড়া ২০২৪ সালে সিনেমা মুক্তির সংখ্যাও বেশ কম। এমতাবস্থায় ২০২৩ সালের পুরস্কার দিলে এই বছরেই ২০২৪ সালের পুরস্কার আয়োজনের বাড়তি চাপ ও ব্যয় বর্তাবে সরকারের ওপর। ফলে ব্যয় ও সময় বাঁচাতে একসঙ্গে বিগত দুই বছরের পুরস্কার দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা চলছে। সব দিক বিচার বিবেচনা করে যেটা ভালো মনে হবে সরকার সেটাই করবে। তবে একসঙ্গে দুই বছরের পুরস্কার দেওয়ার সম্ভাবনা বেশি।

একসঙ্গে দুই বছরের পুরস্কার দেওয়া হলে ২০২৪ সালের চলচ্চিত্রের জন্য আলাদা প্রজ্ঞাপন জারি হবে কি না, আলাদা জুরি বোর্ড গঠন হবে কি না, কবে নাগাদ পুরস্কার দেওয়া হতে পারে সে বিষয়ে কিছুই জানায়নি তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রণালয়ের সূত্রটি।

জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের একমাত্র রাষ্ট্রীয় ও সর্বোচ্চ চলচ্চিত্র পুরস্কার। ১৯৭৫ সাল থেকে এ পুরস্কারটি দিয়ে আসছে। বাংলাদেশ সরকার চলচ্চিত্র শিল্পের বিকাশ ও উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদানের জন্য ব্যক্তিবিশেষকে এবং শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্র ও প্রামাণ্যচিত্রকে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার দিয়ে থাকে। ১৯৮১ সালে কোনো পুরস্কার দেওয়া হয়নি কারণ জুরি বোর্ড কোনো চলচ্চিত্রকে পুরস্কার পাওয়ার যোগ্য মনে করেনি। এ ছাড়া ২০০৮ সালে সরকার একসঙ্গে ২০০৪, ২০০৫, ২০০৬ ও ২০০৭ তথা চার বছরের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার ঘোষণা করে। পুরস্কার হিসেবে ১৭ ক্যারেট মানের ১৫ গ্রাম স্বর্ণের একটি পদক, পদকের একটি রেপ্লিকা, একটি সম্মাননাপত্র দেওয়া হয় ও নগদ অর্থ দেওয়া হয়।