জনপ্রিয় নায়ক সালমান শাহকে হত্যার অভিযোগে রাজধানীর রমনা মডেল থানায় করা মামলায় তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, খলনায়ক ডনসহ ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের দিন পেছানো হয়েছে। আগামী ১৩ জানুয়ারি দিন ধার্য করেছে আদালত।
রোববার ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট জুয়েল রানার আদালত এদিন ধার্য করেন।
এর আগে ২০ অক্টোবর, আদালত সাক্ষ্য প্রমাণের ভিত্তিতে সালমান শাহ অপমৃত্যুর মামলাকে হত্যা মামলা হিসেবে গ্রহণের নির্দেশ দেন আদালত। এ নির্দেশের পর ওই দিন মধ্যরাতে সালমান শাহর মা নীলা চৌধুরীর পক্ষে তার ভাই মোহাম্মদ আলমগীর কুমকুম বাদী হয়ে হত্যা মামলা দায়ের করেন।
এ মমলায় তার সাবেক স্ত্রী সামিরা হক, খলনায়ক ডনসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়। এবং এদিন ১১ আসামির বিরুদ্ধে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করার দিন ধার্য করার হয়েছিল। কিন্তু, মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা ও রমনা মডেল থানার পুলিশ পরিদর্শক আতিকুল ইসলাম খন্দকার আদালতে কোনো প্রতিবেদন দাখিল করতে পারেননি। এজন্য আদালত প্রতিবেদন দাখিলে নতুন দিন ধার্য করে।
মামলার অন্য আসামিরা হলেন সামিরা হকের মা লতিফা হক লুসি, ব্যবসায়ী আজিজ মোহাম্মদ ভাই, ডেবিট, জাভেদ, ফারুক, রুবী, আব্দুল ছাত্তার, সাজু ও রেজভি আহমেদ ওরফে ফরহাদ।
১৯৯৬ সালের ৬ সেপ্টেম্বর ঢাকার ইস্কাটনের বাসায় ফ্যানের সঙ্গে ঝুলন্ত অবস্থায় সালমান শাহর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। ওই সময় প্রথমে অপমৃত্যুর মামলা করেন সালমান শাহর বাবা কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী।
পরে ১৯৯৭ সালের ২৪ জুলাই অভিযোগটি হত্যা মামলায় রূপান্তরের আবেদন করা হয়। এ বিষয়ে তদন্ত করতে অপরাধ তদন্ত বিভাগকে (সিআইডি) নির্দেশ দেয় আদালত।
তদন্ত শেষে ওই বছরের ৩ নভেম্বর আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দেয় সিআইডি। প্রতিবেদনে এ ঘটনাকে আত্মহত্যা বলা হয়। পরে ২৫ নভেম্বর ঢাকার সিএমএম আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন গৃহীত হয়।
প্রতিবেদনটি প্রত্যাখ্যান করে রিভিশন মামলা করেন কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরী। পরে ২০০৩ সালের ১৯ মে মামলাটি বিচার বিভাগীয় তদন্তে পাঠায় আদালত।
দীর্ঘ ১১ বছর পর ২০১৪ সালের ৩ আগস্ট আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্তের প্রতিবেদন দাখিল করেন মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট ইমদাদুল হক।
ওই প্রতিবেদনেও সালমান শাহর মৃত্যুকে অপমৃত্যু বলা হয়। কমরউদ্দিন আহমদ চৌধুরীর মৃত্যুর পর ছেলে হত্যা মামলার বাদী হিসেবে অন্তর্ভুক্ত হন মা নীলা চৌধুরী। ২০১৫ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি তিনি ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে বিচার বিভাগীয় তদন্ত প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে নারাজির আবেদন করেন।
সর্বশেষ মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্ত করে। ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর আদালত ওই প্রতিবেদন গ্রহণ করে মামলাটি নিষ্পত্তি করেন। ২০২২ সালের ১২ জুন এই আদেশের বিরুদ্ধে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতে রিভিশন মামলা দায়ের হয়।

