
আবদুল্লাহ শাকের

পাঁচ বছরের শিশু ইয়ানা। শিশুরা যখন বাবার আঙুল ধরে হাঁটার কথা, ইয়ানা তখন শোনে মিসাইলের পটপট শব্দ। যখন তার খেলার কথা পাখাওয়ালা ঘোড়া নিয়ে, ইয়ানা খেলে নুড়ি পাথর নিয়ে। তার খেলার বস্তু গুলাইল, চকমকি ও যুদ্ধের অস্ত্র।
এক বিভীষিকা চিত্র দেখে দেখে বড় হয়েছে ইয়ানা। চোখের সামনে দেখতে পেয়েছে একজনকে গুলি করে মেরে ফেলছে। একজনকে করেছে নিখোঁজ। অবুঝ শিশুকে নিহত করছে দখলদাররা । যুবতী ও মায়েদের সম্মানহানি করতে এতটুকু কাঁপছে না হিংস্রদের হৃদয়।
ইয়ানার তখন তিন বছর। সে থেকেই বাবা আবু আবদুল করিম গুম হয়েছেন। কোথায় আছেন তিনি কেউ তা জানে না। জানেন শুধু আল্লাহতায়ালা। হয়তো দখলদাররা ধরে নিয়ে তাকে মেরে ফেলেছে। নয়তো আটকে রেখে কষ্ট দিচ্ছে। ইয়ানা প্রতিদিন বাবার ফিরে আসার আশায় পথের দিকে চেয়ে থাকে। কিন্তু কই, বাবা তো আর আসেন না! ইয়ানার অবুঝ চোখে দুঃখের নদী!
চোখের সামনে জনমদুঃখিনী মাও মারা গেছেন বোমার আঘাতে। শত কষ্ট থাকলেও মা সামাল দিতেন। সান্ত্বনা দিতেন ইয়ানাকে। এখন আর ঘুমপাড়ানি গান শোনায় না কেউ। শোনায় না জিহাদের কথা। পূর্বপুরুষদের বীরত্বগাথা। যুদ্ধক্ষেত্রের প্রেরণামূলক শোলক শোনায় না আর কেউ!
দুঃখে-শোকে দিন কাটে ইয়ানার। প্রতিটি মিনিট হিসাব করে চলে রোজ। সময় যেন ফুরোয় না। সুন্দর পরিবারটা আজ ফাঁকা ফাঁকা। ইয়ানা আর বড় ভাই নাহিল পরিবারে এখন। দাদা ছিলেন। এখন নেই। শত্রুদের বুলডোজারের নিচে পাথরচাপা হয়েছেন।
যুদ্ধ আক্রান্ত শহরে এমন পরিবেশ থাকবেই। একবার কী যেন খুঁজতে গিয়ে হাতে পায় একটি পুরোনো ডায়েরি। ধুলোবালি ঝেড়ে খুলে দেখে এটা দাদার ডায়েরি। অনাদরে পড়ে আছে। ডায়েরির পাতা খুলে ইয়ানা ও নাহিল তো একেবারেই অবাক। কী লোমহর্ষক ঘটনা লেখা রয়েছে সেই ডায়েরির পাতায়! কোথাও প্রবোধবাণী। কোথাও জাগরণী। তবে পিছপা হওয়ার কথা নেই কোথাও। ডায়েরির শেষে ভাঙা ভাঙা হরফে একটি নসিহা লেখা রয়েছেÑ‘নসিহা নম্বরÑ৩ :
‘জিহাদ আমাদের ঐতিহ্য। সাহাবারা আমাদের উত্তরসূরি। ইসলাম আমাদের ধর্ম এবং ইসলামই শুধু আল্লাহর কাছে মনোনীত ধর্ম।
জিহাদ করে কেউ মারা গেলে সে মরে না। আল্লাহর জান্নাতে সবুজ পাখি হয়ে উড়ে বেড়ায়। ফুলের বাগানে বাগানে ঘুরে বেড়ায়। শহীদদের রক্ত কোনো দিনও বৃথা যায় না। বৃথা যেতে পারে না। দুশমনরা তোমাদের প্রতারণা করবে। ইনিয়েবিনিয়ে ভুল বোঝাবে। তাদের পাতা ফাঁদে পা দিও না। শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকতে নিজ ভূমি কেড়ে নিতে দিও না। রক্ষা করো আল কুদস। পৃথিবীর প্রথম কেবলা। রক্ষা করো ফিলিস্তিন। নবীদের তীর্থভূমি। আমরা সে পথ ধরেই হাঁটছি, যে পথ ধরে হেঁটে গেছেন আম্বিয়া, সাহাবা, সুলাহা এবং পূর্বসূরিরা।
আমার উত্তরাধিকারের প্রতি আমার নির্দেশনা থাকবে—জিহাদের পথে লেগে থাকো তোমরা। সাহস হারিয়ো না। পিছপা হয়ো না। কারণ তোমাদের মাঝেই লুকিয়ে আছে দুঃখজয়ী আশা।
মাআসসালাম
উকাশা মুহাম্মদ।’
ইয়ানা আর নাহিলের চোখ ছলছল করে উঠল। বিরহে ও বিয়োগে টলমলে হলো। সাহস জোগায় দাদার লেখা কথাগুলো। ডায়েরিটিকে বুকের মাঝে চেপে রাখে দুই ভাইবোন। কিন্তু কোনো নিশ্চয়তা নেই। যেকোনো মুহূর্তে নেই হয়ে যেতে পারে নাহিলরা!
ইয়ানারা জানে আজ হোক কাল হোক মারা যেতে হবে। তাই ওদের মনে ভয় কাজ করে না কোনো। ম্যারকাভা ট্যাংক দেখে আর ভয় করে না ওদের। কিন্তু অসহনীয় ব্যথা সবসময় বিরাজ থাকে মনে। একবার এক দখলদার, দেখতে ঠিক পিশাচের মতো। এক শিশুকে আঘাতে আঘাতে নিহত করেছে। সবশেষে এবার ইয়ানারও যাওয়ার পালা। সাহসিনী ইয়ানা পিশাচকে সওয়াল করেÑ
: তোমরা আমাদের মারো কেন?
: মারি, কারণ আমাদের রাজ্য দরকার।
: রাজ্যে কী করবে?
: আমরা মনমত চালাব। যাচ্ছেতাই করতে পারব।
: আল কুদস আক্রমণ করো কেন? নামাজ পড়তে দাও না কেন?
: তাহলে আমাদের বিজয় থাকছে না। আমাদের বিজয় দরকার। রাজ্য দরকার। এ জন্য যা ইচ্ছে করতে পারি। শিশুদের মারতে মারি। বাড়িঘর ভাঙতে পারি। শহরের পর শহর পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারি।
ইয়ানা ছোট। তার থেকে ছোটো তার মন। তাকে নির্মম আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে ওই নরপিশাচ ইসরাইলি। সইতে না পেরে বলে ওঠে ছোট্ট ইয়ানা—আমি ‘আল্লাহকে সব বলে দেব’ কিন্তু। বলে দেব আমার দেশ ভালো নেই। জালিমরা শিশুদের পিষছে জুতার তলে। মায়েদের অপমানিত করছে। এমন কেউ নেই, যে নিরাপদ থাকতে পারে।
ইয়ানাকে মারার সময় পালিয়ে খানিক দূরেই ছিল নাহিল। পাথরের আড়াল থেকে দেখছিল বোনকে আঘাতের অসহ ঘটনা। মন তার মুচড় দিয়ে উঠছিল। চোখ তার ডুকরে ডুকরে কাঁদছিল। কিন্তু শব্দ নেই কোনো। শব্দ হলেই তাকেও ভোগ করতে হবে এমন বেদম আঘাত। নাহিল থেকে যায় বোন ইয়ানাকে হারিয়ে অনিশ্চিত দুনিয়ায়!
পিশাচরা চলে যায় ইয়ানাকে নিহত করে। কিন্তু ইয়ানা উড়ে যায় সবুজ পাখি হয়ে...

পাঁচ বছরের শিশু ইয়ানা। শিশুরা যখন বাবার আঙুল ধরে হাঁটার কথা, ইয়ানা তখন শোনে মিসাইলের পটপট শব্দ। যখন তার খেলার কথা পাখাওয়ালা ঘোড়া নিয়ে, ইয়ানা খেলে নুড়ি পাথর নিয়ে। তার খেলার বস্তু গুলাইল, চকমকি ও যুদ্ধের অস্ত্র।
এক বিভীষিকা চিত্র দেখে দেখে বড় হয়েছে ইয়ানা। চোখের সামনে দেখতে পেয়েছে একজনকে গুলি করে মেরে ফেলছে। একজনকে করেছে নিখোঁজ। অবুঝ শিশুকে নিহত করছে দখলদাররা । যুবতী ও মায়েদের সম্মানহানি করতে এতটুকু কাঁপছে না হিংস্রদের হৃদয়।
ইয়ানার তখন তিন বছর। সে থেকেই বাবা আবু আবদুল করিম গুম হয়েছেন। কোথায় আছেন তিনি কেউ তা জানে না। জানেন শুধু আল্লাহতায়ালা। হয়তো দখলদাররা ধরে নিয়ে তাকে মেরে ফেলেছে। নয়তো আটকে রেখে কষ্ট দিচ্ছে। ইয়ানা প্রতিদিন বাবার ফিরে আসার আশায় পথের দিকে চেয়ে থাকে। কিন্তু কই, বাবা তো আর আসেন না! ইয়ানার অবুঝ চোখে দুঃখের নদী!
চোখের সামনে জনমদুঃখিনী মাও মারা গেছেন বোমার আঘাতে। শত কষ্ট থাকলেও মা সামাল দিতেন। সান্ত্বনা দিতেন ইয়ানাকে। এখন আর ঘুমপাড়ানি গান শোনায় না কেউ। শোনায় না জিহাদের কথা। পূর্বপুরুষদের বীরত্বগাথা। যুদ্ধক্ষেত্রের প্রেরণামূলক শোলক শোনায় না আর কেউ!
দুঃখে-শোকে দিন কাটে ইয়ানার। প্রতিটি মিনিট হিসাব করে চলে রোজ। সময় যেন ফুরোয় না। সুন্দর পরিবারটা আজ ফাঁকা ফাঁকা। ইয়ানা আর বড় ভাই নাহিল পরিবারে এখন। দাদা ছিলেন। এখন নেই। শত্রুদের বুলডোজারের নিচে পাথরচাপা হয়েছেন।
যুদ্ধ আক্রান্ত শহরে এমন পরিবেশ থাকবেই। একবার কী যেন খুঁজতে গিয়ে হাতে পায় একটি পুরোনো ডায়েরি। ধুলোবালি ঝেড়ে খুলে দেখে এটা দাদার ডায়েরি। অনাদরে পড়ে আছে। ডায়েরির পাতা খুলে ইয়ানা ও নাহিল তো একেবারেই অবাক। কী লোমহর্ষক ঘটনা লেখা রয়েছে সেই ডায়েরির পাতায়! কোথাও প্রবোধবাণী। কোথাও জাগরণী। তবে পিছপা হওয়ার কথা নেই কোথাও। ডায়েরির শেষে ভাঙা ভাঙা হরফে একটি নসিহা লেখা রয়েছেÑ‘নসিহা নম্বরÑ৩ :
‘জিহাদ আমাদের ঐতিহ্য। সাহাবারা আমাদের উত্তরসূরি। ইসলাম আমাদের ধর্ম এবং ইসলামই শুধু আল্লাহর কাছে মনোনীত ধর্ম।
জিহাদ করে কেউ মারা গেলে সে মরে না। আল্লাহর জান্নাতে সবুজ পাখি হয়ে উড়ে বেড়ায়। ফুলের বাগানে বাগানে ঘুরে বেড়ায়। শহীদদের রক্ত কোনো দিনও বৃথা যায় না। বৃথা যেতে পারে না। দুশমনরা তোমাদের প্রতারণা করবে। ইনিয়েবিনিয়ে ভুল বোঝাবে। তাদের পাতা ফাঁদে পা দিও না। শরীরে এক ফোঁটা রক্ত থাকতে নিজ ভূমি কেড়ে নিতে দিও না। রক্ষা করো আল কুদস। পৃথিবীর প্রথম কেবলা। রক্ষা করো ফিলিস্তিন। নবীদের তীর্থভূমি। আমরা সে পথ ধরেই হাঁটছি, যে পথ ধরে হেঁটে গেছেন আম্বিয়া, সাহাবা, সুলাহা এবং পূর্বসূরিরা।
আমার উত্তরাধিকারের প্রতি আমার নির্দেশনা থাকবে—জিহাদের পথে লেগে থাকো তোমরা। সাহস হারিয়ো না। পিছপা হয়ো না। কারণ তোমাদের মাঝেই লুকিয়ে আছে দুঃখজয়ী আশা।
মাআসসালাম
উকাশা মুহাম্মদ।’
ইয়ানা আর নাহিলের চোখ ছলছল করে উঠল। বিরহে ও বিয়োগে টলমলে হলো। সাহস জোগায় দাদার লেখা কথাগুলো। ডায়েরিটিকে বুকের মাঝে চেপে রাখে দুই ভাইবোন। কিন্তু কোনো নিশ্চয়তা নেই। যেকোনো মুহূর্তে নেই হয়ে যেতে পারে নাহিলরা!
ইয়ানারা জানে আজ হোক কাল হোক মারা যেতে হবে। তাই ওদের মনে ভয় কাজ করে না কোনো। ম্যারকাভা ট্যাংক দেখে আর ভয় করে না ওদের। কিন্তু অসহনীয় ব্যথা সবসময় বিরাজ থাকে মনে। একবার এক দখলদার, দেখতে ঠিক পিশাচের মতো। এক শিশুকে আঘাতে আঘাতে নিহত করেছে। সবশেষে এবার ইয়ানারও যাওয়ার পালা। সাহসিনী ইয়ানা পিশাচকে সওয়াল করেÑ
: তোমরা আমাদের মারো কেন?
: মারি, কারণ আমাদের রাজ্য দরকার।
: রাজ্যে কী করবে?
: আমরা মনমত চালাব। যাচ্ছেতাই করতে পারব।
: আল কুদস আক্রমণ করো কেন? নামাজ পড়তে দাও না কেন?
: তাহলে আমাদের বিজয় থাকছে না। আমাদের বিজয় দরকার। রাজ্য দরকার। এ জন্য যা ইচ্ছে করতে পারি। শিশুদের মারতে মারি। বাড়িঘর ভাঙতে পারি। শহরের পর শহর পুড়িয়ে ছাই করে দিতে পারি।
ইয়ানা ছোট। তার থেকে ছোটো তার মন। তাকে নির্মম আঘাতে আঘাতে রক্তাক্ত করে ওই নরপিশাচ ইসরাইলি। সইতে না পেরে বলে ওঠে ছোট্ট ইয়ানা—আমি ‘আল্লাহকে সব বলে দেব’ কিন্তু। বলে দেব আমার দেশ ভালো নেই। জালিমরা শিশুদের পিষছে জুতার তলে। মায়েদের অপমানিত করছে। এমন কেউ নেই, যে নিরাপদ থাকতে পারে।
ইয়ানাকে মারার সময় পালিয়ে খানিক দূরেই ছিল নাহিল। পাথরের আড়াল থেকে দেখছিল বোনকে আঘাতের অসহ ঘটনা। মন তার মুচড় দিয়ে উঠছিল। চোখ তার ডুকরে ডুকরে কাঁদছিল। কিন্তু শব্দ নেই কোনো। শব্দ হলেই তাকেও ভোগ করতে হবে এমন বেদম আঘাত। নাহিল থেকে যায় বোন ইয়ানাকে হারিয়ে অনিশ্চিত দুনিয়ায়!
পিশাচরা চলে যায় ইয়ানাকে নিহত করে। কিন্তু ইয়ানা উড়ে যায় সবুজ পাখি হয়ে...

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষক আবদুল্লাহ আল মামুন কর্তৃক হিজাব নিয়ে কটাক্ষের প্রতিবাদ ও তার বিচারের দাবিতে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে মানববন্ধন হয়েছে।
৫ ঘণ্টা আগে
ইসলাম, কোরআন, মহানবী হযরত মোহাম্মদ (সা.) এবং মা আয়েশাকে অবমাননা করার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের তিন শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে। তিন জন হলেন মেহতাজুর রহমান (আইবিএ-২১), তাসনিয়া ইসলাম (আইবিএ-২১) এবং আবরার ফাইয়াজ (সিএসই-২১)। তিন জনই ২০২১-২২ সেশনের শিক্ষার্থী।
৬ ঘণ্টা আগে
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের কার্যনির্বাহী পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
৬ ঘণ্টা আগে
কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুবি) ২০২৪ সালের জুলাই-আগস্ট বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন চলাকালীন সময়ে সংঘটিত বিভিন্ন সহিংস ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের বিষয়ে তথ্য আহ্বান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
৭ ঘণ্টা আগে