জবি শাখা ছাত্রদল নেতা হাসিবুরের প্রথম জানাজা সম্পন্ন

প্রতিনিধি, জবি
প্রকাশ : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ০৯: ৩৯
আপডেট : ০৪ অক্টোবর ২০২৫, ১০: ১২

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় (জবি) শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক হাসিবুর রহমানের প্রথম জানাজা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে সম্পন্ন হয়েছে। শুক্রবার রাত পৌনে ১টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয় শহীদ মিনারের সামনে জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। হাসিবুরের গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়।

বিজ্ঞাপন

জানাজায় কেন্দ্রীয় ছাত্রদল, বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রশিবির, ডাকসু ও জবি ছাত্রদলের সাবেক নেতৃবৃন্দসহ বিভিন্ন সংগঠনের নেতারা অংশ নেন। পরে মরদেহ নিজ জেলা ভোলায় নেওয়া হয়। সেখানে দ্বিতীয় জানাজা শেষে দাফন সম্পন্ন করার কথা রয়েছে।

হাসিবুর রহমানের সহপাঠী ড্যানি বলেন, আমার বন্ধু পবিত্র জুমার দিনে মারা গেছেন। আল্লাহ যেন তাকে জান্নাতুল ফেরদৌসে দাখিল করেন।

ডাকসুর ভিপি সাদিক কায়েম বলেন, ‘হাসিববের সবচেয়ে বড় পরিচয় হলো, সে জুলাই যোদ্ধা। আমরা তার অবদানকে শ্রদ্ধার সাথে স্মরণ করি।’

কেন্দ্রীয় ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক আমানুল্লাহ আমান বলেন, আমাদের সবসময় একটি ভালো মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা সবাই মরহুমের জন্য দোয়া করবো।

কেন্দ্রীয় ছাত্রদল সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব আবেগাপ্লুত কণ্ঠে বলেন, হাসিব আমাদের জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল পরিবারের সবার অনেক প্রিয় ছিল। তার মৃত্যু আমরা কোনোভাবেই মেনে নিতে পারছি না। সে শহীদ হয়েছে বিশ্বাস করতেও কষ্ট হচ্ছে। সে জুলাই আন্দোলনে মিরপুরে সক্রিয় ছিল। জবি ক্যাম্পাসে আন্দোলন করলে পুলিশ ধরে নিতো, তাই আমরা বাইরে আন্দোলন করতাম। হাসিবের বড় ভাই সবার আগে গণভবন দখলে গিয়েছিলেন। আমরা তাকে জকসুর জন্য ভেবে রেখেছিলাম, কিন্তু সে আমাদের ছেড়ে চলে গেল।” এসময় তিনি কান্নায় ভেঙে পড়েন।

ইসলামী ছাত্রশিবিরের সভাপতি জাহিদুল ইসলাম বলেন, ‘আমাদের আদর্শ ভিন্ন হতে পারে, কিন্তু মুসলমান হিসেবে একজন ব্যক্তির মৃত্যুতে সমবেদনা জানানো সবার দায়িত্ব। হাসিবের মৃত্যুতে সর্ব স্তরের মানুষের সমবেদনা ও প্রতিক্রিয়া এটাই প্রমাণিত, একজন ভালো ও মিশুক মানুষ ছিল।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক মোহাম্মদ তাজাম্মুল হক বলেন, আজ আমরা গভীর শোক প্রকাশ করছি। এ ধরনের মৃত্যু আমাদের জবি পরিবারের জন্য মেনে নেওয়া খুবই কঠিন। আমাদের ক্যাম্পাসে সব দলকে নিয়ে আমরা যে বাগান সাজিয়েছিলাম, তার একটি ফুল আজ ঝরে পড়লো। তার কোনো আর্থিক লেনদেন থাকলে আমি নিজেই তা পরিশোধ করবো। আল্লাহ তার পরিবারকে এ শোক সহ্য করার শক্তি দিন।

এ ছাড়া জানাজায় অংশগ্রহণ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক শিক্ষার্থী, শাখা ইসলামী ছাত্রশিবির, ছাত্র অধিকার পরিষদের নেতাকর্মীরা।

উল্লেখ্য, মৃত হাসিবুর রহমান জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ২০১৬-১৭ শিক্ষাবর্ষের (১২তম ব্যাচ) ভূগোল ও পরিবেশ বিভাগের শিক্ষার্থী ছিলেন। তার গ্রামের বাড়ি ভোলা জেলায়।

এর আগে শুক্রবার রাত ১০টার দিকে রাজধানীর ন্যাশনাল মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যান তিনি।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, রাতে খাবারের জন্য শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল ও সদস্যসচিব শামসুল আরেফীনের সঙ্গে ক্যাম্পাসসংলগ্ন হোটেল স্টার কাবাবে অবস্থান করছিলেন হাসিবুর। এ সময় হঠাৎ খিঁচুনি ওঠে ও বুকে ব্যথা অনুভব করেন তিনি। তাৎক্ষণিকভাবে হাসপাতালে নেওয়া হলে চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকের প্রাথমিক ধারণা, হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তিনি।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত