প্রথমে পূর্ব পাকিস্তান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় নামে যাত্রা শুরু করলেও স্বাধীনতাযুদ্ধের সময় এর নাম ঘোষণা করা হয় স্বাধীন বাংলাদেশ কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়। প্রতিষ্ঠাকালীন সময়ে ভেটেরিনারি ও কৃষি অনুষদ নামে দুটি অনুষদ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতিষ্ঠার কয়েক মাসের মধ্যেই পশুপালন অনুষদ নামে তৃতীয় অনুষদ চালু হয়। পরে, ১৯৬৩-৬৪ শিক্ষাবর্ষে শুরু হয় কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদ, ১৯৬৪-৬৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষি প্রকৌশল এবং প্রযুক্তি অনুষদ এবং ১৯৬৭-৬৮ শিক্ষাবর্ষে মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদ যুক্ত হয়।
ময়মনসিংহ শহর থেকে চার কিলোমিটার দক্ষিণে পুরাতন ব্রহ্মপুত্র নদের পশ্চিম তীরে ১২০০ একর এলাকাজুড়ে বিস্তৃত এই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর। রাজধানী ঢাকা থেকে ১২০ কিমি উত্তরে অবস্থিত এই মনোরম সবুজ ক্যাম্পাস। সড়ক, রেল এবং নদীপথে যাতায়াতযোগ্য দেশের একমাত্র বিশ্ববিদ্যালয়। আয়তনের দিক থেকে এটি বাংলাদেশের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিশ্ববিদ্যালয়।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে রয়েছে ছয়টি অনুষদ, ৪৩টি বিভাগ ও ৬টি ইনস্টিটিউট। ভেটেরিনারি অনুষদে ৮টি, কৃষি অনুষদে ১৪টি, পশুপালন অনুষদে ৫টি, কৃষি অর্থনীতি ও গ্রামীণ সমাজবিজ্ঞান অনুষদে ৫টি, কৃষি প্রকৌশল ও প্রযুক্তি অনুষদে ৬টি এবং মাৎস্যবিজ্ঞান অনুষদে ৫টি বিভাগ রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়টি স্নাতকপর্যায়ে ৯ টি এবং স্নাতকোত্তর পর্যায়ে ৫০টি ডিগ্রি প্রদান করে।
বর্তমানে বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষকসংখ্যা ৫৯৫ জন। এর মধ্যে অধ্যাপক ৩৩০ জন, সহযোগী অধ্যাপক ৬৪, সহকারী অধ্যাপক ১৬১ এবং লেকচারার ৪০ জন। কর্মকর্তা রয়েছেন ৩৯১ জন। ১১৮৯ কর্মচারীর মধ্য তৃতীয় শ্রেণির ৫৫২ জন এবং চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীর সংখ্যা ৬৩৭ জন।
উপাচার্য
প্রতিষ্ঠার পর থেকে এখন পর্যন্ত ২৬ জন শিক্ষক উপাচার্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। এর মধ্যে প্রথম উপাচার্য ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মৃত্তিকা বিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. ওসমান গণি। বর্তমানে বাকৃবির ২৬তম উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া।
উপাচার্যের বক্তব্য
বাকৃবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ কে ফজলুল হক ভূঁইয়া বলেন, প্রতিষ্ঠার পর থেকে বিগত ৬৪ বছরে বাকৃবি দেশের কৃষি উন্নয়ন, খাদ্য উৎপাদন ও খাদ্য নিরাপত্তায় অনন্য ভূমিকা রেখেছে। এখানকার গ্র্যাজুয়েটরা দেশ-বিদেশে কৃষি সেক্টরে কাজ করে কৃষকের উৎপাদনশীলতা উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি ও জীবনমান উন্নয়নে নিরলসভাবে অবদান রাখছে।
স্বাধীনতার সময় সাড়ে ৭ কোটি মানুষের খাদ্য জোগানো থেকে আজ সাড়ে ১৭ কোটি মানুষকে খাদ্যে স্বয়ংসম্পূর্ণ করার পেছনে বাকৃবির অবদান অপরিসীম। আধুনিক কৃষির রূপান্তর, জলবায়ু সহনশীল কৃষি এবং প্রযুক্তিনির্ভর উৎপাদন বৃদ্ধিতে বাকৃবি আজও অগ্রণী ভূমিকা পালন করছে। শিক্ষা ও গবেষণার মানোন্নয়নে আমাদের শিক্ষক, গবেষক ও শিক্ষার্থীরা নিরলস পরিশ্রম করে যাচ্ছে।

