বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে ২০১৩ সালের ৪ ডিসেম্বর গুমের শিকার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) তিন ছাত্রদল নেতার সন্ধানের দাবিতে মানববন্ধন করেছে শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল।
বুধবার (১০ ডিসেম্বর) বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান ফটকের সামনে এ কর্মসূচি অনুষ্ঠিত হয়। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে সংহতি প্রকাশ করেন শিক্ষক সমিতির নেতারাও।
২০১৩ সালে গুম হওয়া জবি ছাত্রদল নেতা মাজহারুল ইসলাম রাসেল, আসাদুজ্জামান রানা ও আল-আমিনকে এখনো খুঁজে পাওয়া যায়নি উল্লেখ করে মানববন্ধনে বক্তারা আওয়ামী লীগের আমলের গুম-খুন, পেটোয়া বাহিনীর হামলা ও নির্যাতনের বিচার দাবি করেন। একই সঙ্গে সব নিখোঁজ নাগরিকের সন্ধান ও বিচার বিভাগের কার্যকর ভূমিকারও আহ্বান জানান।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের যুগ্ম আহ্বায়ক ও জকসুর ছাত্রদল সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী খাদিজাতুল কোবরা বলেন, “আজ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস। বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে অনেক মানুষ গুম হয়েছে। কতজনের বিচার চাইব আমরা? একটি স্বাধীন দেশে ভাইদের সন্ধানে রাস্তায় দাঁড়াতে হয়—এটাই আমাদের দুঃখ। আমরা এমন দেশ চাই যেখানে কেউ গুম হবে না, সবাই ন্যায়বিচার পাবে।”
শাখা ছাত্রদলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান হিমেল বলেন, “ফ্যাসিস্ট আমলে বহু বিএনপি নেতা গুম-খুনের শিকার হয়েছেন। ছাত্রলীগের হাতে বহু শিক্ষার্থী হামলার শিকার হয়েছে। আমাদের অনেক ভাই গুম হয়েছিল, কেউ কেউ ফিরে এসেছে; কিন্তু জবি ছাত্রদলের তিন ভাইকে এখনো পাইনি। ১৭ বছর আমরা মৃত্যুর সামনে দাঁড়িয়ে আন্দোলন করেছি। গুম-খুনে যারা জড়িত তাদের বিচার চাই।”
তিনি গুমের শিকার পরিবারের প্রতি সহমর্মিতা জানিয়ে ভবিষ্যতের গণতান্ত্রিক আন্দোলনে জবি ছাত্রদলের সক্রিয় ভূমিকার কথা বলেন।
মানববন্ধনে শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ্ উদ্দিন বলেন, “বিগত ফ্যাসিস্ট আমলে গুম-খুন ছিল নৈমিত্তিক ঘটনা। জুলাই আন্দোলনের পরেও আমরা অনেকের সন্ধান পাইনি। জবির তিন ছাত্রদল নেতা, আমার কাজিন ইলিয়াস আলীসহ অনেকেই নিখোঁজ। ১০ ডিসেম্বর এলেই মানববন্ধন করি, পরদিন ভুলে যাই—এটা দুঃখজনক।”
শিক্ষক সমিতির সভাপতি মোশাররফ হোসেন বলেন, "অন্য বিশ্ববিদ্যালয়ে গুম হওয়া শিক্ষার্থীদের বিষয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছে, কিন্তু জবিতে হয়নি। দুঃখজনক বিষয়—আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ে কোনো তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়নি। আজকের দিনে আমরা দাবি জানাই, জবি থেকে যারা গুম হয়েছেন তাদের বিষয়ে একটি তদন্ত কমিটি করা হোক।”

