শিহাব খুবই সাধারণ একটা ছেলে। ক্লাস সিক্সে পড়ে সে। কিন্তু তার মধ্যে এক অদ্ভুত কৌতূহল সে সবসময় নতুন কিছু বানানোর চেষ্টা করে। একদিন শিহাবের জন্মদিনে দাদু শিহাবকে একটা পুরোনো পেনসিল উপহার দিলেন। পেনসিলটা দেখতে সাধারণ হলেও দাদু রহস্যময় কণ্ঠে বললেন, ‘এটা কিন্তু জাদুর পেনসিল! যা আঁকবে, তাই সত্য হয়ে যাবে!’
শিহাব প্রথমে বিশ্বাস করতে পারেনি, তবে সে পরীক্ষা করে দেখতে চাইল। সে কাগজে একটা আপেল আঁকল। হঠাৎ আঁকা আপেলটা কাগজ থেকে লাফিয়ে উঠল! শিহাব অবাক হয়ে গেল! এরপর সে একটা ছোট্ট খেলনা গাড়ি আঁকল আর সঙ্গে সঙ্গে সেটাও সত্যিকারের গাড়ি হয়ে গেল! এমন হতে দেখে শিহাব আনন্দে আত্মহারা হয়ে গেল। সে ভাবল, ‘এই পেনসিল দিয়ে আমি অনেক কিছু তৈরি করতে পারব!’
শিহাব নিজের জন্য চকোলেট, খেলনা, বই সবকিছু আঁকতে লাগল। কিন্তু ধীরে ধীরে সে বুঝতে পারল, পেনসিলের শক্তি সীমাহীন নয়। ওটার ক্ষমতা কমে আসছে।
একদিন, শিহাবের ছোট বোন তামান্না কাঁদছিল কারণ তার প্রিয় খেলনা টেডি বিয়ার হারিয়ে গেছে। শিহাব তার জাদুর পেনসিল দিয়ে ঠিক তামান্নার খেলনাটির মতো একটি টেডি বিয়ার এঁকে দিল।
তামান্না খুশিতে লাফিয়ে উঠল! শিহাব তখন বুঝতে পারল, সত্যিকারের আনন্দ শুধু নিজের জন্য কিছু বানিয়ে পাওয়া যায় না, বরং অন্যদের সাহায্য করার মধ্যেও অনেক সুখ লুকিয়ে আছে। এরপর থেকে শিহাব শুধু নিজের জন্য কিছু আঁকা বন্ধ করল। সে তার পেনসিল দিয়ে গরিব শিশুদের জন্য জামা-কাপড়, ক্ষুধার্ত পাখিদের জন্য খাবার আর তার আশপাশের লোকদের সাহায্য করার জন্য দরকারি জিনিসপত্র আঁকতে লাগল।
একদিন সকালে ঘুম থেকে উঠে সে দেখল, তার জাদুর পেনসিলটি আর নেই! সে খুঁজতে খুঁজতে অবশেষে একটা ছোট্ট নোট পেল, যেখানে লেখা ছিল, ‘তুমি তোমার দায়িত্ব সফলভাবে পালন করেছো, শিহাব! প্রকৃত জাদু হলো ভালোবাসা ও সাহায্য করার ইচ্ছা।’
শিহাব বুঝতে পারল, জাদুর পেনসিলের শক্তি শেষ হয়ে গেছে, কিন্তু সে যা শিখেছে, সেটাই আসল জাদু। এরপর থেকে সে নিজের প্রতিভা দিয়ে নতুন নতুন জিনিস বানানোর চেষ্টা করতে লাগল, আর সবার জন্য ভালো কিছু করার শপথ নিল। এভাবেই শিহাব হয়ে উঠল সত্যিকারের এক মানুষ!

