সার্কাস একটি ইংরেজি শব্দ (circus), যার অর্থ গোলাকৃতি চত্বর। অনেক সময় যে স্থানে চারদিক থেকে চারটি পথ এসে মিলিত হয়, তাকেও সার্কাস বলা হয়। যেমন লন্ডনের পিকাডেলি সার্কাস নামের পথচক্র। তবে সাধারণভাবে সার্কাস বলতে জীবজন্তু ও মানুষের শারীরিক কসরত বা খেলাকে বোঝানো হয়।
সার্কাস পৃথিবীর সব দেশেই জনপ্রিয়। সার্কাস আমাদের দেশেও খুব জনপ্রিয় একটি বিনোদন মাধ্যম। এ কারণে যেকোনো মেলার আয়োজন করা হলে তার পূর্ণতা দেওয়ার জন্য সার্কাস পার্টিকে ডেকে আনা হয়।

জীবজন্তুর খেলাধুলায় সাজানো সার্কাসের জন্মদাতা ফিলিপ এক্সলে নামে এক ইংরেজ ব্যক্তি। তিনি খুব দক্ষ ঘোড়সওয়ার ছিলেন । ১৭৬৯ সালের কোনো একসময় লন্ডনের ওয়েস্ট মিনিস্টার ব্রিজের ওপর দিয়ে ফিলিপ এক্সলে কোথাও যাচ্ছিলেন । সে সময় তিনি পথের ওপর একটি আংটি পরে থাকতে দেখেন। আংটিটা তুলে নিয়ে কিছুদিন তিনি নিজের কাছে রেখে এর প্রকৃত মালিককে খুঁজে বের করতে চেষ্টা করেন। কিন্তু তার সব চেষ্টা ব্যর্থ হয়। ওদিকে একসময় এক্সলের অর্থনৈতিক অবস্থা আরো খারাপ হয়ে পড়ে। তিনি তখন বাধ্য হয়েই আংটিটি বেচে দেন। আংটিটিতে দামি পাথর বসানো ছিল। তাই দামও পান আশাতীত। এক্সলে তখন এই টাকাটাকে কোনো ভালো কাজে লাগাবেন বলে সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু কীভাবে ব্যবসা করতে হয় তিনি তা জানতেন না। শুধু জানতেন ঘোড়ার পিঠে চড়ে খেলা দেখাতে।
অবশেষে ঘোড়ার পিঠে চড়ে খেলা দেখিয়ে উপার্জন করবেন বলে এক্সলে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেন। তার সঙ্গে যোগ দেয় আরো কয়েকজন খেলোয়াড়। কেউ কেউ ভালুক ও বানর নিয়ে এসে এক্সলের দলে ভিড়ে যায়। ১৭৭৭ সালের মধ্যে এক্সলের সার্কাস সারা ইংল্যান্ডে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। দিনে দিনে সার্কাসে আধুনিকতার ছোঁয়া লাগে। মানুষও শারীরিক কলাকৌশল দেখাতে লেগে যায় । জোকার এসে যোগ দেয়। ব্যবহার করা হতে থাকে আলো ও যন্ত্রের কারুকাজ। ফলে সার্কাস সব শ্রেণির দর্শকদের কাছে দ্রুত জনপ্রিয়তা পেয়ে যায় । সার্কাসের খেলা প্রতিটি দেশে ছড়িয়ে পড়েÑএমনকি আমাদের দেশেও।

