এআই চ্যাটবট কীভাবে কাজ করে

টি এইচ মাহির
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৫, ১৪: ০০
ছবি: সংগৃহীত

কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা বা এআই বর্তমানে সবখানে ছড়িয়ে পড়েছে। প্রযুক্তিবিশ্বে এআই এখন গুরুত্বপূর্ণ বস্তু। প্রযুক্তি সংস্থাগুলো এআই নিয়ে প্রতিযোগিতা করছে। জনপ্রিয় হওয়ার পর সবচেয়ে বেশি আলোচনায় এসেছে এআই চ্যাটবটগুলো। চ্যাটজিপিটি, ডিপসিক, জেমিনি, কোপাইলটের মতো বটগুলো বেশ সাড়া ফেলেছে ইন্টারনেট ব্যবহারকারীদের কাছে। আবার বিভিন্ন ধরনের এআই টুলও জনপ্রিয় হয়েছে। ছবি, ভিডিও তৈরির টুল থেকে শুরু করে বিভিন্ন ধরনের টুল ব্যবহার করছে সবাই। চিকিৎসা, ব্যবসাসহ নানা ক্ষেত্রে ব্যবহার হচ্ছে এআইয়ের। এটি মূলত কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা, যা বিভিন্ন সমস্যা বুঝতে পারে এবং সমাধান করতে পারে। বিজ্ঞানীরা এমন প্রোগ্রাম তৈরি করেছেন, যা প্রচুর পরিমাণে তথ্য বা ডাটা প্রক্রিয়া করতে পারে। তথ্যের ওপর ভিত্তি করে বিভিন্ন সমাধান দিতে পারে। এআইগুলোকে ডাটা থেকে শেখানো হয়। বিভিন্ন ডাটাসিট থেকে শিখে তারা কাজ করতে পারে।

এআইকে প্রশিক্ষণ

বিজ্ঞাপন

চ্যাটবটগুলো স্বয়ংক্রিয়ভাবে মানুষের লেখার মতোই লেখা পড়তে পারে এবং উত্তর দিতে পারে। চ্যাটজিপিটি, জেমিনি তার বড় একটি উদাহরণ। এসব চ্যাটবট কীভাবে মানুষের মতো লেখা বুঝতে পারে এবং উত্তর দিতে পারে, তা এক বিস্ময়। এই চ্যাটবটগুলো হাজার হাজার ডাটা থেকে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়। তারা বই, আর্টিকেল, ওয়েবসাইটসহ বিপুল পরিমাণ ডাটা থেকে প্রশিক্ষণ নেয়। এরা ভাষা বোঝার জন্য ডাটা থেকে প্যাটার্ন বোঝে এবং শেখে। এআইগুলো বাক্যের প্যাটার্ন এবং শব্দগুলো একে অন্যের সঙ্গে কীভাবে সম্পর্কিত, তা শনাক্ত করে।

যেভাবে কাজ করে

এআইয়ের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দিক হলো এদের বোঝার ক্ষমতা। মানুষ যখন এআইকে কোনো প্রম্পট লেখে, তখন এরা হাজার হাজার বই, আর্টিকেল লেখা থেকে তথ্য খুঁজে বের করে উত্তর দেয়। উত্তর খোঁজার ক্ষেত্রে যুক্তিসংগত ধারাবাহিকতা বাজার রাখার চেষ্টা করে। যুক্তিসংগত বলতে অনলাইনে হাজার হাজার ওয়েবপেজে মানুষ কী লিখেছে ইত্যাদি দেখার পর কেউ ওই বিষয়ে কী লিখবে, তা অনুমান করে। যখন এআই চ্যাটবটগুলো প্রবন্ধ লেখার মতো কিছু করে, তখন তারা মূলত বারবার দেখে পরবর্তী শব্দটি কী হবে এবং প্রতিবার একটি শব্দ যোগ করে। প্রতিটি ধাপে এটি সম্ভাব্যসহ শব্দের একটি তালিকা পায়। তাদের অনুসন্ধানে যে শব্দটি সবচেয়ে বেশি ব্যবহৃত মনে হয়, তখন সেটিই যোগ করে। এভাবে বড় বড় নিবন্ধ লেখা, মানুষের প্রাকৃতিক ভাষার উত্তর দেওয়া ইত্যাদি কাজ করে।

টেক্সট জেনারেট করার ক্ষেত্রে এআই চ্যাটবটগুলো ইনপুট টেক্সটকে টোকেন নামক ছোট ইউনিটে ভেঙে দেয়, যা শব্দ বা শব্দের অংশ হতে পারে। তারপর সেই অনুমাননির্ভর প্রাসঙ্গিক প্রতিক্রিয়া দেয়। এআই গণিতের সমস্যা সমাধানেও দক্ষ। কারণ এআইকে অসংখ্য গাণিতিক তথ্য এবং সমস্যার ওপর প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে। জটিল গাণিতিক সমস্যা সমাধানের জন্য মডেলটি ‘চেইন অব থট রিজনিং’ নামক একটি কৌশল ব্যবহার করে, যা সমাধানে পৌঁছানোর জন্য সমস্যাগুলো ছোট ছোট ধাপে বিভক্ত করে। যদিও এআই গাণিতিক সমস্যা সমাধানে মাঝেমধ্যে ভুল করে। আবার এআই চ্যাটবটগুলো তৈরিতে বিভিন্ন প্রোগ্রামিং ভাষার বিপুল পরিমাণে কোডের সংস্পর্শে এসেছে, যার ফলে এরা কোডিং কাঠামো এবং রীতিনীতি বুঝতে সক্ষম। এরা বিভিন্ন কোড রিপোজিটরি থেকে শিখে। তাই এআই চ্যাটবট বিভিন্ন কোডিং সমস্যার সমাধান দিতে পারে সহজেই।

পরিবেশের ওপর এআইয়ের প্রভাব

গবেষকরা মানুষের কাজকে সহজ করা এআই পরিবেশের ওপর প্রভাব ফেলতে পারে। কেননা এআই প্রোগ্রাম চালানোর জন্য প্রয়োজনীয় শক্তিশালী কম্পিউটার চিপ তৈরি করতে প্রচুর বিদ্যুৎ এবং পানির প্রয়োজন হয়। আবার এআই পরিষেবার চাহিদার ফলে ডাটা সেন্টারের সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে। এই ডাটা সেন্টারে হাজার হাজার কম্পিউটার সার্ভার রয়েছে, যেখানে প্রচুর পরিমাণে শক্তি খরচ হয়। সার্ভার ঠান্ডা রাখতে প্রচুর পানির প্রয়োজন হয়। তবে বড় কোম্পানিগুলো পানি ব্যবহার কমাতে পানি পুনর্ব্যবহার ও এয়ার কুলিংয়ের মতো বিকল্প পদ্ধতি বেছে নিচ্ছে।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত