পাওনা টাকা দিতে বিভিন্ন অজুহাত

সরকারি তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে বিটিআরসির পাওনা ৭ হাজার কোটি টাকা

আল-আমিন
প্রকাশ : ১৫ আগস্ট ২০২৫, ০৯: ৪২

সরকারি তিন প্রতিষ্ঠানের কাছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস রেগুলেটরি কমিশনের (বিটিআরসি) পাওনা দাঁড়িয়েছে প্রায় সাত হাজার কোটি টাকায়। বার্ষিক লাইসেন্স ফি, রেভিনিউ শেয়ারিং, মূসক, বিলম্ব ফি, তরল চার্জ, প্রশাসনিক জরিমানা এবং সামাজিক দায়বদ্ধতা তহবিল বাবদ এ টাকা পাওনা হয়েছে। দিনদিন বাড়ছে পাওনা টাকার অঙ্ক। অথচ তিন প্রতিষ্ঠান অর্থ পরিশোধের কোনো উদ্যোগ নিচ্ছে না।

বিজ্ঞাপন

সরকারি এসব প্রতিষ্ঠানের কাছে গত মার্চ পর্যন্ত বিটিআরসির পাওনা ছয় হাজার ৯৬৩ কোটি ৫১ লাখ টাকা। টেলিটক বাংলাদেশ লিমিটেড, বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশনস কোম্পানি লিমিটেড (বিটিসিএল) এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের (পিএলসি) কাছে এ অর্থ বকেয়া রয়েছে। বেশি পাওনা রুগ্ন রাষ্ট্রীয় মোবাইল অপারেটর টেলিটকের কাছে। বিটিআরসির পক্ষ থেকে একাধিকবার প্রতিষ্ঠানগুলোকে চিঠি দেওয়া হলেও অর্থ পরিশোধ না করে তারা বিভিন্ন অজুহাত দাঁড় করাচ্ছে বলে বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান।

দেনাদার প্রতিষ্ঠানগুলো বিভিন্ন সমস্যায় জর্জরিত। প্রতিষ্ঠানগুলোকে সংস্কারের চেষ্টা করছে অন্তর্বর্তী সরকার। এ বিষয়ে প্রধান উপদেষ্টার বিশেষ সহকারী (ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তি মন্ত্রণালয়) ফয়েজ আহমদ তৈয়্যব আমার দেশকে জানান, ‘টেলিটক রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন কোম্পানি হওয়ায় তরঙ্গ ক্রয়ের মূলধন কার্যত সরকারের বরাদ্দকৃত ফান্ডের ওপর বর্তায়। মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সংস্থাগুলোর মধ্য বকেয়া বিষয়টি দীর্ঘদিন ধরেই চলমান।

সরকারি প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে পাওনার এসব বিষয় একটি স্বাভাবিক চিত্র। তাই এটাকে ইস্যু করে কৌশলগত খাতের সেবাদানকারী টেলিটকের তরঙ্গ প্রাপ্তি বন্ধ বা এ-জাতীয় চিন্তাকে মন্ত্রণালয় স্থান দেয় না। বরং দুর্যোগপ্রবণ অঞ্চলে কাভারেজ ক্যাপাসিটি সম্প্রসারণের গুরুদায়িত্ব পালন (যেখানে বাণিজ্যিক প্লেয়াররা যেতে চায় না), বাজার প্রতিযোগিতা ও সিগনিফিক্যান্ট মার্কেট পাওয়ার (এসএমপি) ঠিক রাখা, গ্রাহকের অনুকূলে মোবাইল কল ও ইন্টারনেট মূল্যমান সুরক্ষা এবং তরঙ্গ বরাদ্দ প্রক্রিয়াকে প্রতিযোগিতামূলক রাখতে চায় সরকার। এজন্য ভারত ও পাকিস্তানসহ বিভিন্ন দেশে সরকারি মালিকানাধীন কৌশলগত টেলিযোগাযোগ কোম্পানিকে প্রিমিয়াম স্পেক্ট্রাম বরাদ্দের চর্চা আছে।

সূত্র জানায়, বকেয়া আদায়ের জন্য বিটিআরসি প্রতিষ্ঠানগুলোকে নিয়মিত চিঠি দিলেও তার জবাব পাচ্ছে না। সর্বশেষ বিটিআরসি গত ২৪ জুন বিটিসিএল এবং টেলিটককে চিঠি দেয়। কিন্তু তারা অর্থ পরিষোধ করেনি।

প্রতিষ্ঠানগুলো অর্থ পরিশোধ না করায় কমিশন সভায় তা আবার নতুন করে উপস্থাপন করা হয়েছে। সভায় বিষয়টি নতুন করে জানানোর জন্য ডাক ও টেলিযোগাযোগ বিভাগের উপদেষ্টা ও সচিবকে অনুলিপি প্রদানের সিদ্ধান্ত গৃহীত হয়। ইতোমধ্যে বিটিআরসির পক্ষ থেকে ওই চিঠি প্রেরণ করা হয়েছে।

বিটিআরসি জানায়, টেলিটকের কাছে বিটিআরসির পাওনা পাঁচ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা, বিটিসিএলের কাছে এক হাজার ১০৬ কোটি এবং বাংলাদেশ সাবমেরিন ক্যাবলসের কাছে পাওনা ৯ কোটি টাকা।

বিটিআরসির কর্মকর্তারা জানান, পাওনা টাকা পেলে ফাইভ-জিসহ আরো কয়েকটি প্রকল্পে প্রযুক্তিগত উন্নয়নে তারা অর্থ জোগাতে সক্ষম হবেন।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত