আফলাতুন হায়দার চৌধুরী
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটেনে বাস করছি। বিয়ের আগে একা এবং পরে পরিবার নিয়ে দুনিয়া চষে বেড়িয়েছি। ইউরোপের মধ্যে ব্রিটেনও অনেক সুন্দর। এর অনেক জায়গায় ঘুরেছি; তবে বাদ পড়েছিল কটস্ওয়ল্ডস্। এবার সেই স্বপ্ন পূরণের পালা।
২০২৪ সালের ৮ জুন সোমবার ছিল বিশেষ ছুটি। সকালবেলা বের হয়ে দেখি সুন্দর দিন! মেঘহীন রৌদ্রোজ্জ্বল নীল আকাশ। গ্রীষ্মের শুরুতে এমন মিষ্টি গরম থাকে না। ব্রিটেনে এমন দিন পাওয়া অনেকটা লটারি জেতার মতো। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে।
আড়াই ঘণ্টা পর হাইওয়ে থেকে কান্ট্রি রোডে উঠলে চারপাশের দৃশ্যপটে পরিবর্তন শুরু হয়। আদিগন্ত গাঢ় সবুজ উপত্যকা, ছোট-বড় ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারি, ফুলে ফুলে ভরা তৃণভূমি আর বিশেষ চেহারার ঘরবাড়ি দেখে মনে হলো জীবন্ত পোস্টকার্ডে ঢুকে পড়েছি। এ যে ফেইরিটেইল ল্যান্ড!
যুক্তরাজ্যে ৪৬টি অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ এলাকা বা Area of Outstanding Natural Beauty (AONB) কটস্ওয়ল্ডস্ও তাদের একটি। নামটি এসেছে ওল্ড-ইংলিশ ‘কট’ (ভেড়া) ও ‘ওয়ল্ড’ (পাহাড়) থেকে। মধ্যযুগেরও বহু আগে থেকে এই পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ভেড়া পোষা হতো। প্রাচীন চুনাপাথরের স্থাপত্য আর মধ্যযুগীয় উল-ব্যবসার গৌরবের গল্পে গাঁথা, প্রকৃতি আর ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য কটস্ওয়াল্ডস্ এক প্রশান্তির অভয়ারণ্য।
প্রথম স্টপ চিপিং ক্যাম্পডেন একটি মনোরম গ্রাম। গ্রামটি শতাব্দীর পর শতাব্দী একই চেহারা ধরে রেখেছে। তখনই না থেমে একটু দূরে ফিশ হিলের কাছে একটা পিকনিক স্পট খুঁজে নিলাম। জায়গাটা ছিল ছোট-বড় পাহাড় আর সবুজ তৃণভূমিতে ঘেরা। চারপাশে ডেইজি, কাউস্লিপ, অর্কিড আর রক্তলাল পপির মিশ্রণে এক স্বর্গীয় পরিবেশ। ডেইজির জঙ্গলের সামনে পিকনিক ম্যাট বিছিয়ে লাঞ্চ সেরে নিলাম। পেছনে বৃক্ষ, জাপানি জেলকোভা। ছেলেমেয়ের হাসি-তামাশা, তাদের ছোটাছুটি—সব মিলিয়ে অসাধারণ সময় কেটেছে।
দুপুরে খাবারের পর গিয়েছিলাম ব্রডওয়ে টাওয়ারে। ১৮ শতকে কভেন্ট্রির ষষ্ঠ আর্ল তার দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য এই টাওয়ারটি নির্মাণ করেছিলেন। চুনাপাথরের তৈরি, ষড়ভুজ এই স্থাপনার তিন ভুজ তীক্ষ্ণ আর তিন ভুজ গোল কলামের। পাহাড়ের ওপর থেকে এই টাওয়ার ও আশেপাশের সৌন্দর্য ছিল নজর কাড়া। মনে মনে ভাবছিলাম—‘আজ হইতে কত-শত বছর আগে আর্লের দ্বিতীয় প্রেয়সী প্রকৃতির সৌন্দর্যে খুঁজেছেন অনুপ্রেরণা!’
এরপর ফিরে এলাম চিপিং ক্যাম্পডেন টাউন সেন্টারে। মধু-রঙা পাথরের ঘরগুলো যেন ফিসফিস করে অতীতের গল্প শোনাচ্ছিল। ১৬২৭ সালে তৈরি মার্কেট হলটি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। দেখলাম আর্নেস্ট উইলসন মেমোরিয়াল গার্ডেন- বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা উদ্ভিদে ভরা বাগান। কী শান্ত, কী ঘরোয়া! সত্যিই মনোমুগ্ধকর!
পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়ার পথে পেলাম আদিগন্ত বিশাল এক ডেইজি ফিল্ড। থামতেই হলো, মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য এড়ানো অসম্ভব। তোলা হলো ছবি, প্রতিটি ছবি যেন একেকটি রূপকথার গল্পের স্মৃতিচিহ্ন। এবার এলাম বার্টন-অন-দ্য-ওয়াটারে (Bourton-on-the-Water)। ছোট্ট এই গ্রামটিকে ভালোবেসে বলা হয় ‘কটস্ওয়ল্ডসের ভেনিস’।
মিষ্টি নদী উইন্ডরাশ, যার ওপরে প্রাচীন পাথুরে সেতু আর আশেপাশের ঘরবাড়িগুলোর আকর্ষণ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। মেয়ে, ছেলে আর তাদের মা স্বচ্ছ পানিতে পা ডুবিয়ে মজা করছিল।
শেষ গন্তব্য ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম কাসল কম্ব (Castle Combe)। মনে হলো দুনিয়ার সব শান্তি বুঝি এখানেই। হাঁটছি আর দেখছি। প্রায় জনশূন্য, কী নীরব! শুধু বাতাস আর পাখির মৃদু কলতান। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে সরু রাস্তা, দুপাশের মৌচাকরঙা কটেজগুলো গাঢ় সবুজে ঢেকে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। ১৪ শতকের পুরোনো মার্কেট ক্রস, সেইন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ আর ক্লক টাওয়ার। বাইব্রুক নদীর স্রোতের মৃদু শব্দে পুরো পরিবেশ ছিল মোহনীয়।
গ্রীষ্মের লম্বা দিন, কিন্তু তাও একসময় শেষ হয়। ভাবছিলাম ভালোলাগা কেন এত ক্ষণস্থায়ী? সূর্যটা যখন ডুবছে আমরা তখন ফিরছি। অনিচ্ছায়। সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি অমূল্য সম্পদ—‘আজকের স্মৃতি’। কটস্ওয়ল্ডস্ ভ্রমণের দিনটি ছিল প্রকৃতি, ইতিহাস আর পরিবারের ভালোবাসায় ভরা এক সুন্দর, পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা।
দুই যুগেরও বেশি সময় ধরে ব্রিটেনে বাস করছি। বিয়ের আগে একা এবং পরে পরিবার নিয়ে দুনিয়া চষে বেড়িয়েছি। ইউরোপের মধ্যে ব্রিটেনও অনেক সুন্দর। এর অনেক জায়গায় ঘুরেছি; তবে বাদ পড়েছিল কটস্ওয়ল্ডস্। এবার সেই স্বপ্ন পূরণের পালা।
২০২৪ সালের ৮ জুন সোমবার ছিল বিশেষ ছুটি। সকালবেলা বের হয়ে দেখি সুন্দর দিন! মেঘহীন রৌদ্রোজ্জ্বল নীল আকাশ। গ্রীষ্মের শুরুতে এমন মিষ্টি গরম থাকে না। ব্রিটেনে এমন দিন পাওয়া অনেকটা লটারি জেতার মতো। আমরা এগিয়ে যাচ্ছি ইংল্যান্ডের দক্ষিণ-পশ্চিমে।
আড়াই ঘণ্টা পর হাইওয়ে থেকে কান্ট্রি রোডে উঠলে চারপাশের দৃশ্যপটে পরিবর্তন শুরু হয়। আদিগন্ত গাঢ় সবুজ উপত্যকা, ছোট-বড় ঢেউ খেলানো পাহাড়ের সারি, ফুলে ফুলে ভরা তৃণভূমি আর বিশেষ চেহারার ঘরবাড়ি দেখে মনে হলো জীবন্ত পোস্টকার্ডে ঢুকে পড়েছি। এ যে ফেইরিটেইল ল্যান্ড!
যুক্তরাজ্যে ৪৬টি অনিন্দ্যসুন্দর প্রাকৃতিক সৌন্দর্যপূর্ণ এলাকা বা Area of Outstanding Natural Beauty (AONB) কটস্ওয়ল্ডস্ও তাদের একটি। নামটি এসেছে ওল্ড-ইংলিশ ‘কট’ (ভেড়া) ও ‘ওয়ল্ড’ (পাহাড়) থেকে। মধ্যযুগেরও বহু আগে থেকে এই পাহাড়ি এলাকায় প্রচুর ভেড়া পোষা হতো। প্রাচীন চুনাপাথরের স্থাপত্য আর মধ্যযুগীয় উল-ব্যবসার গৌরবের গল্পে গাঁথা, প্রকৃতি আর ইতিহাসপ্রেমীদের জন্য কটস্ওয়াল্ডস্ এক প্রশান্তির অভয়ারণ্য।
প্রথম স্টপ চিপিং ক্যাম্পডেন একটি মনোরম গ্রাম। গ্রামটি শতাব্দীর পর শতাব্দী একই চেহারা ধরে রেখেছে। তখনই না থেমে একটু দূরে ফিশ হিলের কাছে একটা পিকনিক স্পট খুঁজে নিলাম। জায়গাটা ছিল ছোট-বড় পাহাড় আর সবুজ তৃণভূমিতে ঘেরা। চারপাশে ডেইজি, কাউস্লিপ, অর্কিড আর রক্তলাল পপির মিশ্রণে এক স্বর্গীয় পরিবেশ। ডেইজির জঙ্গলের সামনে পিকনিক ম্যাট বিছিয়ে লাঞ্চ সেরে নিলাম। পেছনে বৃক্ষ, জাপানি জেলকোভা। ছেলেমেয়ের হাসি-তামাশা, তাদের ছোটাছুটি—সব মিলিয়ে অসাধারণ সময় কেটেছে।
দুপুরে খাবারের পর গিয়েছিলাম ব্রডওয়ে টাওয়ারে। ১৮ শতকে কভেন্ট্রির ষষ্ঠ আর্ল তার দ্বিতীয় স্ত্রীর জন্য এই টাওয়ারটি নির্মাণ করেছিলেন। চুনাপাথরের তৈরি, ষড়ভুজ এই স্থাপনার তিন ভুজ তীক্ষ্ণ আর তিন ভুজ গোল কলামের। পাহাড়ের ওপর থেকে এই টাওয়ার ও আশেপাশের সৌন্দর্য ছিল নজর কাড়া। মনে মনে ভাবছিলাম—‘আজ হইতে কত-শত বছর আগে আর্লের দ্বিতীয় প্রেয়সী প্রকৃতির সৌন্দর্যে খুঁজেছেন অনুপ্রেরণা!’
এরপর ফিরে এলাম চিপিং ক্যাম্পডেন টাউন সেন্টারে। মধু-রঙা পাথরের ঘরগুলো যেন ফিসফিস করে অতীতের গল্প শোনাচ্ছিল। ১৬২৭ সালে তৈরি মার্কেট হলটি এখনো মাথা উঁচু করে দাঁড়িয়ে। দেখলাম আর্নেস্ট উইলসন মেমোরিয়াল গার্ডেন- বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে সংগ্রহ করা উদ্ভিদে ভরা বাগান। কী শান্ত, কী ঘরোয়া! সত্যিই মনোমুগ্ধকর!
পরবর্তী গন্তব্যে যাওয়ার পথে পেলাম আদিগন্ত বিশাল এক ডেইজি ফিল্ড। থামতেই হলো, মনোমুগ্ধকর এই দৃশ্য এড়ানো অসম্ভব। তোলা হলো ছবি, প্রতিটি ছবি যেন একেকটি রূপকথার গল্পের স্মৃতিচিহ্ন। এবার এলাম বার্টন-অন-দ্য-ওয়াটারে (Bourton-on-the-Water)। ছোট্ট এই গ্রামটিকে ভালোবেসে বলা হয় ‘কটস্ওয়ল্ডসের ভেনিস’।
মিষ্টি নদী উইন্ডরাশ, যার ওপরে প্রাচীন পাথুরে সেতু আর আশেপাশের ঘরবাড়িগুলোর আকর্ষণ বহুগুণে বাড়িয়ে দিয়েছে। মেয়ে, ছেলে আর তাদের মা স্বচ্ছ পানিতে পা ডুবিয়ে মজা করছিল।
শেষ গন্তব্য ইংল্যান্ডের সবচেয়ে সুন্দর গ্রাম কাসল কম্ব (Castle Combe)। মনে হলো দুনিয়ার সব শান্তি বুঝি এখানেই। হাঁটছি আর দেখছি। প্রায় জনশূন্য, কী নীরব! শুধু বাতাস আর পাখির মৃদু কলতান। পাহাড়ের ফাঁকে ফাঁকে সরু রাস্তা, দুপাশের মৌচাকরঙা কটেজগুলো গাঢ় সবুজে ঢেকে প্রকৃতির সঙ্গে মিলেমিশে একাকার। ১৪ শতকের পুরোনো মার্কেট ক্রস, সেইন্ট অ্যান্ড্রুজ চার্চ আর ক্লক টাওয়ার। বাইব্রুক নদীর স্রোতের মৃদু শব্দে পুরো পরিবেশ ছিল মোহনীয়।
গ্রীষ্মের লম্বা দিন, কিন্তু তাও একসময় শেষ হয়। ভাবছিলাম ভালোলাগা কেন এত ক্ষণস্থায়ী? সূর্যটা যখন ডুবছে আমরা তখন ফিরছি। অনিচ্ছায়। সঙ্গে করে নিয়ে যাচ্ছি অমূল্য সম্পদ—‘আজকের স্মৃতি’। কটস্ওয়ল্ডস্ ভ্রমণের দিনটি ছিল প্রকৃতি, ইতিহাস আর পরিবারের ভালোবাসায় ভরা এক সুন্দর, পরিপূর্ণ অভিজ্ঞতা।
আন্দোলনে অংশ নেওয়া ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী দেলোয়ার হোসেন শিশির বলেন, আমরা স্পষ্টভাবে বলছি, শাকসু বানচালের চেষ্টা চলছে। শিক্ষার্থীরা এটা কোনোভাবেই মেনে নেবে না। যদি আগামী সোমবার ভিসি এসে নির্বাচন কমিশন গঠন করে রোডম্যাপ ঘোষণা না করেন, তাহলে প্রশাসনিক ভবনে তালা ঝুলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের...
৬ ঘণ্টা আগেসংগঠনের তথ্য, উপহার প্রদান, অনুভূতি বক্স এবং মেহেদি দেওয়ার জন্য উৎসবের ছাউনিতে চারটি আলাদা বুথ। সেখানে ছিল নারী শিক্ষার্থীদের স্বতঃস্ফূর্ত অংশগ্রহণ। আয়োজকরা নতুন সদস্য আহ্বান ও প্রচারপত্র বিলি করেন। ফটকের সামনে একটি ব্যানারে লেখা, ‛প্রিয় ভাইয়েরা, ভেতরে প্রবেশ ও উঁকি মারা থেকে বিরত থাকুন।’
৭ ঘণ্টা আগেজগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ড. রইছ উদ্দীন বলেছেন, ছাত্রদল নেতা ও পরিসংখ্যান বিভাগের শিক্ষার্থী জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডে প্রকৃত অপরাধীদের শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে—কেউ যেন আইনের ফাঁক দিয়ে কেউ বেরিয়ে না যায়।
৮ ঘণ্টা আগেঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী রিয়াদ হাসানের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বোরকা ও পর্দাশীল নারীদের নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করার অভিযোগ উঠেছে। এই মন্তব্যের নিন্দা জানিয়েছে বাংলাদেশ ইসলামী ছাত্রীসংস্থা।
৯ ঘণ্টা আগে