রুমান হাফিজ
টানা কয়েক বছর ছিলাম চট্টগ্রামে। ফলে সাগর-বিচ-ঝরনা কিংবা পাহাড়ের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ ছিল বেশ। এমনও হয়েছে, সারাদিন ক্লাস করে বিকালে হুটহাট কক্সবাজার চলে যাওয়া। কিংবা সন্ধ্যায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। কতবার গেছি ঠিক বলাও মুশকিল!
লন্ডন আসার পর কয়েকবার পরিকল্পনা করেও যেতে পারিনি। আগস্টে ফোন করে ইব্রাহিম আলী ভাই জানালেন সমুদ্র সৈকতে যেতে চান। জানতে চাইলেন যেতে পারব কি না। দিন-তারিখ জেনে নিশ্চিত করলাম।
রোদ ঝলমলে সকালে স্টার্টফোর্ড স্টেশনে সবাই উপস্থিত হলাম। নাশতা সেরে গ্রুপ ছবি তুলছিলাম। পাশ দিয়ে যাওয়া অপরিচিত দম্পতি এগিয়ে আমাদের ছবি তুলে দিতে চাইলেন। হাসিমুখে অনেকগুলো ছবি তুলে দিলেন। ধন্যবাদ জানানো হলো। ভালো লাগল। এমন ঘটনা এই দেশে প্রায়ই দেখা যায়। ট্রেনের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আগে থেকেই টিকিট করা হয়েছে। নির্ধারিত সিট না থাকায় যেখানে খালি সেখানেই বসা গেছে। আমরা কয়েকজন একসঙ্গে বসার সুযোগ পেলাম। ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখতে লাগলাম বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ আর রকমারি চাষাবাদ। এর মধ্যে ছোট ছোট ঘর বিশেষ নজর কাড়ে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে করতেই গন্তব্যে ‘মারগেট বিচ’-এ পৌঁছে গেলাম। সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা।
সিদ্ধান্ত হলো আগে নামাজ আদায়ের। সমুদ্রের পানিতে অজু করতে গেলাম। তখন ভরা জোয়ার। যথারীতি ঢেউয়ের ফলে নড়েচড়ে বসতে হলো। তবু ভেজা থেকে বাঁচা গেল না! নামাজ আর খাবার শেষে প্রস্তুত হয়ে পানিতে নামলাম আমরা।
সমুদ্র সৈকত বলতে আমরা যেমনটা অনুভব করি, এখানেও তেমনটা দেখলাম। পা ডুবিয়ে হেঁটে বেড়ানো, পানির কাছাকাছি বসে থাকা। বালুতে খালি গায়ে শুয়ে থাকাটা বেশি চোখে পড়ল, ছোট-বড় কেউ বাদ নেই। বিশেষ উপকরণের সাহায্যে সাঁতার কাটাতেও দেখা গেল। এক কথায়, মাত্র ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বালুকাময় সমুদ্র সৈকতে উল্লাস-উদযাপনের কমতি নেই।
ঢেউয়ের সঙ্গে দোলায় দুলতে দুলতে এগোচ্ছিলাম। পানির শীতলতা আর ঢেউয়ের সম্মিলনে কেউ কেউ থেমে গেলেন। আমরা ছয়জনের মতো এগিয়ে গেলাম নিরাপদ চিহ্নের আগ পর্যন্ত। ফুটবল নিয়ে মেতে উঠলাম। পরে যুক্ত হলেন আরো অনেকজন। ছোটবেলার স্মৃতি যেন কিছু সময়ের জন্য ফিরে পাওয়া। সময়ের সঙ্গে ঢেউ আর পানির শীতলতা বাড়লেও আমাদের কারো উঠতে ইচ্ছে করছিল না। তাড়া দিচ্ছিলেন ইব্রাহিম ভাই। তার কথামতো উঠলেও আবার শুরু হলো সাঁতার প্রতিযোগিতা। প্রথম কিংবা দ্বিতীয় কেউ না হলেও আনন্দের কমতি ছিল না। সেই সঙ্গে থেমে থেমে সমস্বরে গান আর গ্রুপ ছবি নেওয়া বাদ যায়নি। উঠে আসার আগ মুহূর্তে দেখলাম ভাটা শুরু হয়েছে। জোয়ার আর ভাটার মধ্যে সমুদ্রের চেহারায়ও বৈচিত্র্যের ছাপ স্পষ্ট। মানুষের জীবনেও এর মিল কম নয়।
মোটামুটি প্রস্তুত হয়ে সবাই একত্র হলাম আগের জায়গায়। ঘণ্টা-দুয়েক সমুদ্রের পানিতে থাকায় শরীরে রোদের স্পর্শ বেশ চাহিদার ছিল। রোদ ঝলমলে দিনে এর কমতি ছিল না। তখন আবার চায়ের সঙ্গে চানাচুরে জমল আড্ডা। হাফিজ সোহেল ভাই বাসা থেকে নিয়ে এসেছেন। কিছুটা সময় নিয়মতান্ত্রিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে কয়েকজন বক্তব্য দিলেন। নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাসে আমাদের পথচলা, সংঘবদ্ধ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম আমরা। সবাই এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায়ের প্রত্যাশা করলেন।
শেষ মুহূর্তে আবার সাকিব ভাই আর সুফিয়ান ভাইয়ের গানের সুরে কণ্ঠ মেলালাম সবাই। ঢেউয়ের উচ্ছ্বাস, গর্জনে সুর মুহূর্তেই মিলিয়ে যেতে লাগল দিগবিদিক। পর্যটকদের অনেকেই দাঁড়িয়ে গেলেন গান শুনতে। কতটুকু বুঝলেন তারাই জানেন! ফেরার সময় হয়েছে। ট্রেন ধরতে হবে আমাদের। ট্রেনে উঠলাম ঠিকই কিন্তু সারাদিনের রোদ ঝকমকে পাথর-সাগর-নীল জলরাশি মাথায় গেঁথে রইল বিলেতের ‘মারগেট বিচ’। সমুদ্র যেন চিরন্তন বাণীর মতো উপলব্ধি করাল, সমুদ্রের মতো গভীর হতে, কিন্তু নিজের ভেতরেই, না দেখিয়ে, না বলেই...!
যেখানে ‘মারগেট সমুদ্র সৈকত’
মারগেট সমুদ্র সৈকত ইংল্যান্ডের কেন্ট অঞ্চলের নর্থ সি উপকূলে অবস্থিত, যা প্রায় ২০০ মিটার লম্বা বালুকাময় সৈকত।
টানা কয়েক বছর ছিলাম চট্টগ্রামে। ফলে সাগর-বিচ-ঝরনা কিংবা পাহাড়ের কাছাকাছি যাওয়ার সুযোগ ছিল বেশ। এমনও হয়েছে, সারাদিন ক্লাস করে বিকালে হুটহাট কক্সবাজার চলে যাওয়া। কিংবা সন্ধ্যায় পতেঙ্গা সমুদ্র সৈকতে। কতবার গেছি ঠিক বলাও মুশকিল!
লন্ডন আসার পর কয়েকবার পরিকল্পনা করেও যেতে পারিনি। আগস্টে ফোন করে ইব্রাহিম আলী ভাই জানালেন সমুদ্র সৈকতে যেতে চান। জানতে চাইলেন যেতে পারব কি না। দিন-তারিখ জেনে নিশ্চিত করলাম।
রোদ ঝলমলে সকালে স্টার্টফোর্ড স্টেশনে সবাই উপস্থিত হলাম। নাশতা সেরে গ্রুপ ছবি তুলছিলাম। পাশ দিয়ে যাওয়া অপরিচিত দম্পতি এগিয়ে আমাদের ছবি তুলে দিতে চাইলেন। হাসিমুখে অনেকগুলো ছবি তুলে দিলেন। ধন্যবাদ জানানো হলো। ভালো লাগল। এমন ঘটনা এই দেশে প্রায়ই দেখা যায়। ট্রেনের উদ্দেশ্যে রওনা হলাম। আগে থেকেই টিকিট করা হয়েছে। নির্ধারিত সিট না থাকায় যেখানে খালি সেখানেই বসা গেছে। আমরা কয়েকজন একসঙ্গে বসার সুযোগ পেলাম। ট্রেনের জানালা দিয়ে দেখতে লাগলাম বিস্তীর্ণ সবুজ মাঠ আর রকমারি চাষাবাদ। এর মধ্যে ছোট ছোট ঘর বিশেষ নজর কাড়ে। প্রাকৃতিক সৌন্দর্য উপলব্ধি করতে করতেই গন্তব্যে ‘মারগেট বিচ’-এ পৌঁছে গেলাম। সময় লেগেছে দেড় ঘণ্টা।
সিদ্ধান্ত হলো আগে নামাজ আদায়ের। সমুদ্রের পানিতে অজু করতে গেলাম। তখন ভরা জোয়ার। যথারীতি ঢেউয়ের ফলে নড়েচড়ে বসতে হলো। তবু ভেজা থেকে বাঁচা গেল না! নামাজ আর খাবার শেষে প্রস্তুত হয়ে পানিতে নামলাম আমরা।
সমুদ্র সৈকত বলতে আমরা যেমনটা অনুভব করি, এখানেও তেমনটা দেখলাম। পা ডুবিয়ে হেঁটে বেড়ানো, পানির কাছাকাছি বসে থাকা। বালুতে খালি গায়ে শুয়ে থাকাটা বেশি চোখে পড়ল, ছোট-বড় কেউ বাদ নেই। বিশেষ উপকরণের সাহায্যে সাঁতার কাটাতেও দেখা গেল। এক কথায়, মাত্র ২০০ মিটার দৈর্ঘ্যের বালুকাময় সমুদ্র সৈকতে উল্লাস-উদযাপনের কমতি নেই।
ঢেউয়ের সঙ্গে দোলায় দুলতে দুলতে এগোচ্ছিলাম। পানির শীতলতা আর ঢেউয়ের সম্মিলনে কেউ কেউ থেমে গেলেন। আমরা ছয়জনের মতো এগিয়ে গেলাম নিরাপদ চিহ্নের আগ পর্যন্ত। ফুটবল নিয়ে মেতে উঠলাম। পরে যুক্ত হলেন আরো অনেকজন। ছোটবেলার স্মৃতি যেন কিছু সময়ের জন্য ফিরে পাওয়া। সময়ের সঙ্গে ঢেউ আর পানির শীতলতা বাড়লেও আমাদের কারো উঠতে ইচ্ছে করছিল না। তাড়া দিচ্ছিলেন ইব্রাহিম ভাই। তার কথামতো উঠলেও আবার শুরু হলো সাঁতার প্রতিযোগিতা। প্রথম কিংবা দ্বিতীয় কেউ না হলেও আনন্দের কমতি ছিল না। সেই সঙ্গে থেমে থেমে সমস্বরে গান আর গ্রুপ ছবি নেওয়া বাদ যায়নি। উঠে আসার আগ মুহূর্তে দেখলাম ভাটা শুরু হয়েছে। জোয়ার আর ভাটার মধ্যে সমুদ্রের চেহারায়ও বৈচিত্র্যের ছাপ স্পষ্ট। মানুষের জীবনেও এর মিল কম নয়।
মোটামুটি প্রস্তুত হয়ে সবাই একত্র হলাম আগের জায়গায়। ঘণ্টা-দুয়েক সমুদ্রের পানিতে থাকায় শরীরে রোদের স্পর্শ বেশ চাহিদার ছিল। রোদ ঝলমলে দিনে এর কমতি ছিল না। তখন আবার চায়ের সঙ্গে চানাচুরে জমল আড্ডা। হাফিজ সোহেল ভাই বাসা থেকে নিয়ে এসেছেন। কিছুটা সময় নিয়মতান্ত্রিক প্রোগ্রামের মাধ্যমে কয়েকজন বক্তব্য দিলেন। নিজ দেশ ছেড়ে প্রবাসে আমাদের পথচলা, সংঘবদ্ধ উদ্যোগের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করলাম আমরা। সবাই এমন আয়োজনের ধারাবাহিকতা বজায়ের প্রত্যাশা করলেন।
শেষ মুহূর্তে আবার সাকিব ভাই আর সুফিয়ান ভাইয়ের গানের সুরে কণ্ঠ মেলালাম সবাই। ঢেউয়ের উচ্ছ্বাস, গর্জনে সুর মুহূর্তেই মিলিয়ে যেতে লাগল দিগবিদিক। পর্যটকদের অনেকেই দাঁড়িয়ে গেলেন গান শুনতে। কতটুকু বুঝলেন তারাই জানেন! ফেরার সময় হয়েছে। ট্রেন ধরতে হবে আমাদের। ট্রেনে উঠলাম ঠিকই কিন্তু সারাদিনের রোদ ঝকমকে পাথর-সাগর-নীল জলরাশি মাথায় গেঁথে রইল বিলেতের ‘মারগেট বিচ’। সমুদ্র যেন চিরন্তন বাণীর মতো উপলব্ধি করাল, সমুদ্রের মতো গভীর হতে, কিন্তু নিজের ভেতরেই, না দেখিয়ে, না বলেই...!
যেখানে ‘মারগেট সমুদ্র সৈকত’
মারগেট সমুদ্র সৈকত ইংল্যান্ডের কেন্ট অঞ্চলের নর্থ সি উপকূলে অবস্থিত, যা প্রায় ২০০ মিটার লম্বা বালুকাময় সৈকত।
জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থী ও ছাত্রদল নেতা জোবায়েদ হোসাইন হত্যাকাণ্ডের পর স্থগিত হওয়া বিশ্ববিদ্যালয় দিবস আগামী ২৭ অক্টোবর পালিত হবে। বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের এক সভায় এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক মো. রেজাউল করিম।
২ ঘণ্টা আগে১৮৪৬ সালের ১৬ অক্টোবর চিকিৎসা বিজ্ঞানের ইতিহাসে এক যুগান্তকারী দিন। বোস্টনের ম্যাসাচুসেটস জেনারেল হাসপাতালে প্রথমবারের মতো এক রোগীর শরীরে ব্যথাহীন অস্ত্রোপচার সম্পন্ন হয়। দাঁতের চিকিৎসক ডা. উইলিয়াম মর্টন রোগী গিলবার্ট অ্যাবটের মুখে ইথার গ্যাস শ্বাসের মাধ্যমে প্রয়োগ করেন। কয়েক মিনিটের মধ্যেই রোগী
২ ঘণ্টা আগেকরোনা ভ্যাকসিনের দীর্ঘমেয়াদি জটিলতা নিয়ে বাংলাদেশের মানুষদের মধ্যে রয়েছে নানা ভুল ধারণা এবং অন্ধবিশ্বাস। বর্তমানে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে স্ক্যাবিসসহ কিছু সংক্রামক চর্মরোগ মহামারির আকার ধারণ করেছে। বেশির ভাগ মানুষ বিশ্বাস করে, করোনা ভ্যাকসিন গ্রহণ করার ফলে তাদের বিভিন্ন ধরনের চর্মরোগ হচ্ছে। আবার
২ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশ ষড়ঋতুর দেশ। আবহাওয়া পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে বিভিন্ন রোগবালাই আবির্ভাব হয়। বাংলাদেশে হেমন্তকালের শেষের দিকে শীতকাল খুব কাছাকাছি চলে আসে। ঋতু পরিবর্তনের এ সময় তাপমাত্রার ওঠানামা ও শুষ্ক বাতাসের কারণে সর্দি-কাশি, জ্বরসহ অন্যান্য রোগব্যাধি দ্রুত ছড়িয়ে পড়তে পারে। শিশুদের রোগপ্রতিরোধ ক্ষমতা
২ ঘণ্টা আগে