সিভি তৈরি করে আয় লাখ টাকা

মোহনা জাহ্নবী
প্রকাশ : ১৮ মার্চ ২০২৫, ১২: ২৮

আকরাম হোসাইন তাহসিনের বেড়ে ওঠা ময়মনসিংহের গফরগাঁও উপজেলায়। পড়াশোনা শেষ করে চাকরি করছেন বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে। পাশাপাশি প্রফেশনাল সিভি তৈরির কাজ করেন তিনি। এক হাজার তিন শতাধিকের বেশি মানুষকে সিভি তৈরি করে দিয়েছেন। গত এক মাসে সিভি ও ক্যারিয়ার প্রোফাইল তৈরি করেই আয় করেছেন ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা।

তাহসিন বলেন, ‘আমি মূলত মানুষের পারপাস ইমপ্লিমেন্ট নিয়ে কাজ করি। ২০২৫ সালে এসে এখন আর কোনো প্রতিষ্ঠান ক্লাসিক্যাল ফরমেটের সিভি দেখে সন্তুষ্ট হয় না। তাই প্রফেশনাল সিভিতে প্রচুর পরিমাণে সাড়া মেলে। সাধারণ সিভির তুলনায় প্রফেশনাল সিভির গুরুত্ব অনেক বেশি। এছাড়া আমরা সকল নেটওয়ার্কিং ব্যবহার করে মানুষকে চাকরি পেতেও সহায়তা করি। ক্যারিয়ার অপোরচুনিটি (Career Opportunity) নামে ফেসবুকে একটি গ্রুপ পরিচালনা করি, যেখানে চাকরিপ্রার্থী ও রিক্রুটারদের সমন্বয় করিয়ে দিই এবং কীভাবে প্রফেশনাল সিভি, কাভার লেটার ও ক্যারিয়ার প্রোফাইল তৈরি করতে হয় তা নিয়ে সচেতনতা বৃদ্ধি করি। ফলে মানুষের যে চাকরি পাওয়ার আকাঙ্ক্ষা, তা অনেকটা সহজেই পূরণ হয়।’

বিজ্ঞাপন

কত দিন ধরে এই কাজ করছেন জানতে চাইলে বলেন, ‘আমি দীর্ঘদিন ধরে বিভিন্ন সামাজিক স্বেচ্ছাসেবামূলক কাজের সঙ্গে জড়িত। পড়াশোনা সম্পন্ন করার পর মানুষের জীবনে চাকরি কতটা গুরুত্বপূর্ণ, তা উপলব্ধি করতে পারি।

তারপর ২০২০ সালের শেষের দিকে ফেসবুকে একটি গ্রুপ (Career Opportunity) তৈরি করি। সেখানে চাকরিপ্রার্থী ও রিক্রুটারদের মধ্যে সমন্বয় করার চেষ্টা করি এবং খুব দ্রুত সময়ের মধ্যেই এই গ্রুপটি এক লাখ সদস্যের মাইলফলক অতিক্রম করে। প্রতিদিন অনেক মানুষ এই গ্রুপের মাধ্যমে চাকরি পায়, আমাকে ধন্যবাদ জানায়। এ বিষয়টি আমাকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করে। আমি আরও বেশি মানুষকে সহযোগিতা করার চেষ্টা করি। কিন্তু ২০২৩ সালের মার্চ মাসে এসে ফেসবুকের নীতিমালা-সংক্রান্ত জটিলতায় পড়ে গ্রুপটি নষ্ট হয়ে যায়। অনেক মানুষের অনুরোধে ২০২৩ সালের জুলাই মাসে আবার আগের নামেই গ্রুপ তৈরি করি। এটি আগের চেয়ে দ্রুততম সময়ে জনপ্রিয় হয়ে ওঠে। এখন গ্রুপের সদস্য ১ লাখ ৩০ হাজার ছাড়িয়ে গেছে। এই গ্রুপ থেকে দৈনিক শত শত মানুষ চাকরি পাচ্ছে।’

স্বপ্নবাজ এই তরুণ তাহসিন ভবিষ্যৎ পরিকল্পনার কথাও জানান । তিনি বলেন, ‘মানবসম্পদ নিয়ে কাজ করার তীব্র ইচ্ছা। বাংলাদেশে প্রচুর মানুষ রয়েছে, কিন্তু তূলনামূলকভাবে দক্ষ জনসংখ্যার পরিমাণ খুব কম। আমাদের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলো থেকে প্রতিবছর লাখ লাখ গ্র্যাজুয়েট বের হচ্ছে, কিন্তু দক্ষতার কথা চিন্তা করলে হতাশ হতে হয়। শিক্ষাব্যবস্থা যেহেতু আমার হাতে নেই, তাই আমি এমন একটি প্রতিষ্ঠান দাঁড় করানোর কথা ভাবছি, যেখানে বিভিন্ন বিষয়ে দক্ষতা অর্জনের সুযোগ থাকবে। দক্ষ জনবল তৈরি হলে দেশের বাইরে থেকে কর্মী নিয়োগ দেওয়ার প্রয়োজন পড়বে না। ফলে বাংলাদেশের অর্থনৈতিক অবস্থার যেমন উন্নতি হবে, তেমনি মানুষও উপকৃত হবে।’

বিষয়:

সিভি তৈরি
এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত