মাসুদ রানা, ববি
বছর ঘুরে ফিরে এলো ভয়াল ১৮ জুলাই। ২০২৪ সালের এই দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যায় অবিস্মরণীয় ঘটনা। এটি জুলাই বিপ্লব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে লেখা এক সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। যেদিন একটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার বিরুদ্ধে, চারটি সশস্ত্র বাহিনীর বিপক্ষে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার মোকাবিলা। দৃপ্ত প্রত্যয়ে লড়াই করে যেদিন শিক্ষার্থীরা যৌথ বাহিনীকে পরাস্ত করে অর্জন করেছিল চব্বিশের প্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস।
গত বছরের ১৮ জুলাই সকালের আলো পুরোপুরি দৃশ্যমান হওয়ার আগেই শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে ফেলে রাষ্ট্রীয় চার বাহিনী- পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবির যৌথ বাহিনী। চারপাশে চলছিল টহল ও অস্ত্রের ঝনঝনানি। বিরাজ করছিল নির্ভীকতার বিপরীতে আতঙ্কগ্রস্ত নীরবতা। কিন্তু এরপর যা ঘটেছে, তা যেন সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ববির আহ্বায়ক রাকিব আহমেদ সেই উত্তপ্ত সকালকে স্মরণ করে বলেন, ‘যৌথবাহিনী ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে, আমরা গেট ভেঙে সড়কে নামি। ওরা গুলি চালায়, টিয়ারশেল ছুড়ে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা বসে থাকেনি। স্থানীয় জনতার সহায়তায় আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন- সবাই একপর্যায়ে পরাস্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে। সেদিন আমরা শুধু প্রতিরোধ করিনি, আমরা ইতিহাস লিখেছি।’
আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক সুজয় শুভ সেই দিনের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘১৭ তারিখ রাতে আমরা নানা কাজ সামলে একটু দেরিতেই ঘুমাই, ফলে উঠিও একটু দেরিতে। ১৮ তারিখ সকালে ঘুম ভাঙতেই ফেসবুক খুলে দেখি ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলেছে যৌথ বাহিনী। রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ। সড়কপথে ক্যাম্পাসে যাওয়ার উপায় ছিল না। সিদ্ধান্ত নিলাম নদীপথে ক্যাম্পাসে ফিরব। কাঁঠালতলায় সবাই জড়ো হয়ে রওনা হলাম। নদীর ঘাটে পৌঁছে দেখি, কোনো নৌযান নেই। একমাত্র ভরসা একটি কার্গো ট্রলার, যা পণ্য তুলছিল। মালিক লোকসানের ভয়ে নিতে চাইলেন না। তখন শ্রমিকরা বললেন, আমরা আমাদের মজুরি ছেড়ে দেব, তবুও চলেন আমরা আপনাদের পৌঁছাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘কী অসম্ভব আত্মত্যাগ! আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা যে সেদিন শুধু আমাদের না, ইতিহাসকে বয়ে নিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে। নদী পার হয়ে গ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা হেঁটে পেছন দিক দিয়ে গোপনে ক্যাম্পাসে ঢুকি। অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হই, তালাবদ্ধ গেট ভেঙে সড়কে নামি। তখনই শুরু হয় যৌথ বাহিনীর অতর্কিত হামলা, প্রতিবাদে পাল্টা আক্রমণ করে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীরাও, তৈরি হয় রণক্ষেত্রে।’
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পাশে ইট, ডালপালা, গলার স্লোগান- অন্য পাশে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট আর ছররা গুলি। রক্তাক্ত হয় শিক্ষার্থীদের শরীর, কিন্তু চূর্ণ হয় না তাদের মনোবল। সংঘর্ষ চলে টানা আড়াই ঘণ্টা। আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, মসজিদের মিনারের আহ্বানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় জনতা। তারাও আহত হন পুলিশের নির্মমতায়।
শুভ বলেন, ‘এমন একজন ছিলেন- বিল্লাল ভাই, স্থানীয় অটোরিকশাচালক, যিনি ওই সংঘর্ষে চিরতরে দৃষ্টি হারান। অনেকে গুরুতর আহত হন। তবু থেমে যায়নি লড়াই। রাষ্ট্রীয় চার বাহিনী তীব্র প্রতিরোধের মুখে বলতে বাধ্য হয়- আর হামলা নয়। ক্যাম্পাসে আর হামলা করবে না মর্মে আত্মসমর্পণ করে ক্ষমা চেয়ে শহরের দিকে চলে যায়। আমরা তাদের গার্ড দিয়ে দপদপিয়া সেতু পার করে দিই, এটাই ছিল বর্বরতার মুখে আমাদের সভ্য প্রতিশোধ।’
তিনি জানান, মুহূর্তেই মিডিয়া পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পরে এই ঘটনা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিত হয় জুলাইয়ের প্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস হিসেবে। সে দিন শুধু ছাত্ররাই লড়েনি, নারীরাও ছিলেন সেই প্রতিরোধের অগ্রভাগে। লড়াইয়ে, আহতদের সেবা-শুশ্রূষায় তাদের ভূমিকাও ছিল অতুলনীয়। অনেক নারী শিক্ষার্থী আহতও হয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ সেদিন রক্তাক্ত হন, কেউ ক্লান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন- তবু কেউ পিছু হটেননি।
স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শুভ বলেন, ‘কর্ণকাঠির মা-বোনেরা নিজের হাতে রান্না করা খাবার এনে আমাদের খাইয়েছেন। নিজের সন্তান ভেবে আমাদের যত্ন করেছেন। এই মায়া আমরা কোথায় পাব? তারা আমাদের রক্তের আত্মীয় না হলেও আত্মার আত্মীয় হয়ে উঠেছিলেন সে দিন। তাদের এই অবদান আমরা কখনো ভুলব না।’
সে দিনের সংঘর্ষে আহতদের একজন হাসনাত আবুল আলা, ৫০টির অধিক গুলিবিদ্ধ মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, আমাদের হাতে লাঠি আর ইট। আমাদের কাছে ছিল অসীম সাহস আর প্রতিবাদী হিম্মত। ওরা ভেবেছিল দমন করবে, কিন্তু আমরাই তাদের নতজানু করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করি।’
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল জানান সেই রাতের কথাগুলো। তিনি বলেন, ‘আমরা রাতে হলের ছাদে ইট আর লাঠি মজুত করি। নিঃসঙ্গ হলেও ভয় পাইনি। মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা হয়, জনগণকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান। আর সকালে হাজারো শিক্ষার্থী পতাকা হাতে, স্লোগানে মুখর হয়ে মাঠে নামে। মেয়েরা তখন হল গেটের তালা ভেঙে বের হয়ে আসে। ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে যুদ্ধের ময়দান।’
তিনি জানান, যৌথবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বুলেট-টিয়ারশেল ছুড়েছিল। একের পর এক আহত হতে থাকে শিক্ষার্থী। চারপাশে শুধু ধোঁয়া আর কান্না। কিন্তু প্রতিরোধ থেমে থাকেনি। আল্লাহর রহমতে, স্থানীয় জনতার অশেষ সহায়তায় আমরা যৌথবাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি, শেষ পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ করে এবং প্রথমবারের মতো জুলাইয়ে দেশে পুলিশের একটি বাহিনী শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে।’
বছর ঘুরে ফিরে এলো ভয়াল ১৮ জুলাই। ২০২৪ সালের এই দিনে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ে ঘটে যায় অবিস্মরণীয় ঘটনা। এটি জুলাই বিপ্লব ও বিশ্ববিদ্যালয়ের ইতিহাসে লেখা এক সাহসিকতার প্রতিচ্ছবি। যেদিন একটি রাষ্ট্রীয় পরিকল্পনার বিরুদ্ধে, চারটি সশস্ত্র বাহিনীর বিপক্ষে নিরস্ত্র ছাত্র-জনতার মোকাবিলা। দৃপ্ত প্রত্যয়ে লড়াই করে যেদিন শিক্ষার্থীরা যৌথ বাহিনীকে পরাস্ত করে অর্জন করেছিল চব্বিশের প্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস।
গত বছরের ১৮ জুলাই সকালের আলো পুরোপুরি দৃশ্যমান হওয়ার আগেই শহরের কোলাহল ছাড়িয়ে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ঘিরে ফেলে রাষ্ট্রীয় চার বাহিনী- পুলিশ, র্যাব, এপিবিএন ও বিজিবির যৌথ বাহিনী। চারপাশে চলছিল টহল ও অস্ত্রের ঝনঝনানি। বিরাজ করছিল নির্ভীকতার বিপরীতে আতঙ্কগ্রস্ত নীরবতা। কিন্তু এরপর যা ঘটেছে, তা যেন সিনেমার চিত্রনাট্যকেও হার মানায়।
রসায়ন বিভাগের শিক্ষার্থী ও বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন, ববির আহ্বায়ক রাকিব আহমেদ সেই উত্তপ্ত সকালকে স্মরণ করে বলেন, ‘যৌথবাহিনী ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলে, আমরা গেট ভেঙে সড়কে নামি। ওরা গুলি চালায়, টিয়ারশেল ছুড়ে। কিন্তু সাধারণ শিক্ষার্থীরা বসে থাকেনি। স্থানীয় জনতার সহায়তায় আমরা প্রতিরোধ গড়ে তুলি। র্যাব, পুলিশ, বিজিবি, এপিবিএন- সবাই একপর্যায়ে পরাস্ত হয়ে শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে। সেদিন আমরা শুধু প্রতিরোধ করিনি, আমরা ইতিহাস লিখেছি।’
আন্দোলনের অন্যতম প্রধান সমন্বয়ক সুজয় শুভ সেই দিনের স্মৃতি হাতড়ে বলেন, ‘১৭ তারিখ রাতে আমরা নানা কাজ সামলে একটু দেরিতেই ঘুমাই, ফলে উঠিও একটু দেরিতে। ১৮ তারিখ সকালে ঘুম ভাঙতেই ফেসবুক খুলে দেখি ক্যাম্পাস ঘিরে ফেলেছে যৌথ বাহিনী। রাস্তাঘাট অবরুদ্ধ। সড়কপথে ক্যাম্পাসে যাওয়ার উপায় ছিল না। সিদ্ধান্ত নিলাম নদীপথে ক্যাম্পাসে ফিরব। কাঁঠালতলায় সবাই জড়ো হয়ে রওনা হলাম। নদীর ঘাটে পৌঁছে দেখি, কোনো নৌযান নেই। একমাত্র ভরসা একটি কার্গো ট্রলার, যা পণ্য তুলছিল। মালিক লোকসানের ভয়ে নিতে চাইলেন না। তখন শ্রমিকরা বললেন, আমরা আমাদের মজুরি ছেড়ে দেব, তবুও চলেন আমরা আপনাদের পৌঁছাই।’
তিনি আরো বলেন, ‘কী অসম্ভব আত্মত্যাগ! আমাদের শ্রমিক ভাইয়েরা যে সেদিন শুধু আমাদের না, ইতিহাসকে বয়ে নিয়েছিলেন ক্যাম্পাসে। নদী পার হয়ে গ্রামের মধ্য দিয়ে আমরা হেঁটে পেছন দিক দিয়ে গোপনে ক্যাম্পাসে ঢুকি। অপেক্ষারত শিক্ষার্থীদের সঙ্গে মিলিত হই, তালাবদ্ধ গেট ভেঙে সড়কে নামি। তখনই শুরু হয় যৌথ বাহিনীর অতর্কিত হামলা, প্রতিবাদে পাল্টা আক্রমণ করে নিরস্ত্র শিক্ষার্থীরাও, তৈরি হয় রণক্ষেত্রে।’
তিনি জানান, শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যৌথবাহিনীর সংঘর্ষ শুরু হয়। এক পাশে ইট, ডালপালা, গলার স্লোগান- অন্য পাশে সাউন্ড গ্রেনেড, টিয়ারশেল, রাবার বুলেট আর ছররা গুলি। রক্তাক্ত হয় শিক্ষার্থীদের শরীর, কিন্তু চূর্ণ হয় না তাদের মনোবল। সংঘর্ষ চলে টানা আড়াই ঘণ্টা। আহত হন দুই শতাধিক শিক্ষার্থী, মসজিদের মিনারের আহ্বানে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে যোগ দেন স্থানীয় জনতা। তারাও আহত হন পুলিশের নির্মমতায়।
শুভ বলেন, ‘এমন একজন ছিলেন- বিল্লাল ভাই, স্থানীয় অটোরিকশাচালক, যিনি ওই সংঘর্ষে চিরতরে দৃষ্টি হারান। অনেকে গুরুতর আহত হন। তবু থেমে যায়নি লড়াই। রাষ্ট্রীয় চার বাহিনী তীব্র প্রতিরোধের মুখে বলতে বাধ্য হয়- আর হামলা নয়। ক্যাম্পাসে আর হামলা করবে না মর্মে আত্মসমর্পণ করে ক্ষমা চেয়ে শহরের দিকে চলে যায়। আমরা তাদের গার্ড দিয়ে দপদপিয়া সেতু পার করে দিই, এটাই ছিল বর্বরতার মুখে আমাদের সভ্য প্রতিশোধ।’
তিনি জানান, মুহূর্তেই মিডিয়া পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দেশব্যাপী ছড়িয়ে পরে এই ঘটনা। বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় পরিচিত হয় জুলাইয়ের প্রথম স্বাধীন ক্যাম্পাস হিসেবে। সে দিন শুধু ছাত্ররাই লড়েনি, নারীরাও ছিলেন সেই প্রতিরোধের অগ্রভাগে। লড়াইয়ে, আহতদের সেবা-শুশ্রূষায় তাদের ভূমিকাও ছিল অতুলনীয়। অনেক নারী শিক্ষার্থী আহতও হয়েছিলেন। তাদের কেউ কেউ সেদিন রক্তাক্ত হন, কেউ ক্লান্ত হয়ে মাটিতে লুটিয়ে পড়েন- তবু কেউ পিছু হটেননি।
স্থানীয়দের প্রতি কৃতজ্ঞতা জানিয়ে শুভ বলেন, ‘কর্ণকাঠির মা-বোনেরা নিজের হাতে রান্না করা খাবার এনে আমাদের খাইয়েছেন। নিজের সন্তান ভেবে আমাদের যত্ন করেছেন। এই মায়া আমরা কোথায় পাব? তারা আমাদের রক্তের আত্মীয় না হলেও আত্মার আত্মীয় হয়ে উঠেছিলেন সে দিন। তাদের এই অবদান আমরা কখনো ভুলব না।’
সে দিনের সংঘর্ষে আহতদের একজন হাসনাত আবুল আলা, ৫০টির অধিক গুলিবিদ্ধ মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের এই শিক্ষার্থী বলেন, ‘ওদের হাতে আগ্নেয়াস্ত্র, আমাদের হাতে লাঠি আর ইট। আমাদের কাছে ছিল অসীম সাহস আর প্রতিবাদী হিম্মত। ওরা ভেবেছিল দমন করবে, কিন্তু আমরাই তাদের নতজানু করে ক্যাম্পাস ছাড়তে বাধ্য করি।’
আন্দোলনের অন্যতম সংগঠক, লোকপ্রশাসন বিভাগের শিক্ষার্থী মোকাব্বেল জানান সেই রাতের কথাগুলো। তিনি বলেন, ‘আমরা রাতে হলের ছাদে ইট আর লাঠি মজুত করি। নিঃসঙ্গ হলেও ভয় পাইনি। মসজিদের মাইক থেকে ঘোষণা হয়, জনগণকে পাশে দাঁড়ানোর আহ্বান। আর সকালে হাজারো শিক্ষার্থী পতাকা হাতে, স্লোগানে মুখর হয়ে মাঠে নামে। মেয়েরা তখন হল গেটের তালা ভেঙে বের হয়ে আসে। ক্যাম্পাস হয়ে ওঠে যুদ্ধের ময়দান।’
তিনি জানান, যৌথবাহিনী ক্যাম্পাসে প্রবেশ করে বুলেট-টিয়ারশেল ছুড়েছিল। একের পর এক আহত হতে থাকে শিক্ষার্থী। চারপাশে শুধু ধোঁয়া আর কান্না। কিন্তু প্রতিরোধ থেমে থাকেনি। আল্লাহর রহমতে, স্থানীয় জনতার অশেষ সহায়তায় আমরা যৌথবাহিনীকে চারদিক থেকে ঘিরে ফেলি, শেষ পর্যন্ত তারা আত্মসমর্পণ করে এবং প্রথমবারের মতো জুলাইয়ে দেশে পুলিশের একটি বাহিনী শিক্ষার্থীদের কাছে ক্ষমা চেয়ে ক্যাম্পাস ছাড়ে।’
জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫