
আহসান কবীর, যশোর

২৬ জুলাই ইমতিয়াজ আহম্মেদ জাবিরের লাশ যখন ঝিকরগাছার দেউলি গ্রামের বাড়িতে আনা হয়, তখন সেখানে এক ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছিল। স্বজনরা চেয়েছিলেন সকালে জানাজা শেষে লাশ দাফন করতে। কিন্তু হাসিনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুমকি- রাতেই দাফন করতে হবে।
উপায় না দেখে বাবা নওশের আলী লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স থেকে ফোনে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতেই কবর খুঁড়ে রাখার ব্যবস্থা করেন। বাড়ির পাশে তড়িঘড়ি আয়োজন করা হয় জানাজার। কিন্তু পুলিশকে হতবাক করে দিয়ে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয় রাত ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত জানাজায়।
কৃষক পরিবারের সন্তান জাবির সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করছিলেন। পরিবার ও সহযোদ্ধাদের ভাষ্য, আন্দোলনে তিনি প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন। ১৮ জুলাই জাবির রামপুরা এলাকায় পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে আহত হন। কিন্তু দমে না গিয়ে পরদিন ১৯ জুলাই ফের মিছিলে নামেন। এদিন বনশ্রী এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন।
সহযোদ্ধারা তাকে নিয়ে যান মুগদা জেনারেল হসপিটালে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢামেকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুলাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান জাবির।
শহীদ জাবিরের বোন জেরিন। সে আমার দেশকে বলছিল, ‘আমাদের দুই ভাই-বোনকে লেখাপড়া শেখাতে আব্বু সবকিছু করেছেন। মাঠের জমি বিক্রি করে ভাইয়ার পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছিলেন। বাড়িতে একটি মুরগির খামার ছিল, সেটাও এখন বন্ধ। ভাইয়া আমাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। বাড়িতে ঢুকেই তিনি আমাকে ‘মনা’ বলে ডাকতেন। আর কোনোদিন ভাইয়া আমাকে ডাকবেন না।’ এ কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলে ভাই হারানো এই কিশোরী।
ছেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় যতটুকু কষ্ট পেয়েছেন মা শিরিনা আক্তার, তারচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন মৃত ছেলের মুখ একবারের জন্যও না দেখতে পেয়ে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে একটু ছুঁয়েও দেখতে পারলাম না। তাড়াতাড়ি দাফন করতে হাসিনার পুলিশের হুমকি-উৎপাতে কলিজাটারে শেষবারের মতো একটু বাড়ির ভেতরেও আনতে পারলাম না। সারা জীবনে এই আফসোস থেকে যাবে।’
বোন জেরিন জানায়, জাবিরের মরদেহ ২৭ জুলাই সকালে যখন ঢামেক থেকে বের করা হচ্ছিল, তখন সেখানে উপস্থিত পুলিশ আমাদের পরিবারটির সদস্যদের টিটকারি করছিল। বলছিল, ‘যাও, ছেলেকে ভালো করে আন্দোলন করতে বলো।
এখন কবরে শুয়ে শুয়ে আন্দোলন করুক।’ শুধু তা-ই নয়, ঢাকা থেকে যশোরে গ্রামের বাড়িতে আনা পর্যন্ত মিনিটে মিনিটে ফোন করে হুমকি-ধমকি দিয়েছে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। তাদের সোজা কথা- কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা করা যাবে না। ঢামেক থেকে গোসল করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে খবর খুঁড়ে রাখতে বলো। লাশ সোজা কবরে নামাবে। এর অন্যথা হলে পরিবারের সবাই বিপদে পড়বে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন অনুকূল পরিবেশ এসেছে। জাবিরের বাবা নওশের আলী ছেলে হত্যার বিচার চান। বলেন, ‘আমার স্বপ্ন তো শেষ। এখন একটাই চাওয়াÑ অসংখ্য মানুষ হত্যায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি দেখতে চাই। যে বিচার দেখে যেন আর কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।’
শহীদ জাবিরের বাবা নওশের আলী ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সম্প্রতি গঠিত কমিটির সহসভাপতি। আমার দেশকে তিনি বলছিলেন, ছেলে হত্যার অভিযোগে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
নওশেরের পরিবার শহীদ পরিবারের মর্যাদা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিবারটি জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে পাঁচ লাখ, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দুই লাখ, বিএনপির পক্ষ থেকে এক লাখ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে। আদ-দ্বীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবারটির সদস্যরা আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।

২৬ জুলাই ইমতিয়াজ আহম্মেদ জাবিরের লাশ যখন ঝিকরগাছার দেউলি গ্রামের বাড়িতে আনা হয়, তখন সেখানে এক ভীতিকর পরিবেশ বিরাজ করছিল। স্বজনরা চেয়েছিলেন সকালে জানাজা শেষে লাশ দাফন করতে। কিন্তু হাসিনার আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর হুমকি- রাতেই দাফন করতে হবে।
উপায় না দেখে বাবা নওশের আলী লাশবাহী অ্যাম্বুলেন্স থেকে ফোনে স্বজনদের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতেই কবর খুঁড়ে রাখার ব্যবস্থা করেন। বাড়ির পাশে তড়িঘড়ি আয়োজন করা হয় জানাজার। কিন্তু পুলিশকে হতবাক করে দিয়ে হাজার হাজার মানুষ অংশ নেয় রাত ১১টার দিকে অনুষ্ঠিত জানাজায়।
কৃষক পরিবারের সন্তান জাবির সাউথ ইস্ট বিশ্ববিদ্যালয়ে বিবিএ করছিলেন। পরিবার ও সহযোদ্ধাদের ভাষ্য, আন্দোলনে তিনি প্রথম থেকেই সক্রিয় ছিলেন। ১৮ জুলাই জাবির রামপুরা এলাকায় পুলিশের টিয়ারশেল ও রাবার বুলেটে আহত হন। কিন্তু দমে না গিয়ে পরদিন ১৯ জুলাই ফের মিছিলে নামেন। এদিন বনশ্রী এলাকায় পুলিশের গুলিতে গুরুতর আহত হন।
সহযোদ্ধারা তাকে নিয়ে যান মুগদা জেনারেল হসপিটালে। সেখানে অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় তাকে হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়। ঢামেকের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২৬ জুলাই পৃথিবী ছেড়ে চলে যান জাবির।
শহীদ জাবিরের বোন জেরিন। সে আমার দেশকে বলছিল, ‘আমাদের দুই ভাই-বোনকে লেখাপড়া শেখাতে আব্বু সবকিছু করেছেন। মাঠের জমি বিক্রি করে ভাইয়ার পড়ালেখার খরচ জুগিয়েছিলেন। বাড়িতে একটি মুরগির খামার ছিল, সেটাও এখন বন্ধ। ভাইয়া আমাকে প্রাণের চেয়েও বেশি ভালোবাসতেন। বাড়িতে ঢুকেই তিনি আমাকে ‘মনা’ বলে ডাকতেন। আর কোনোদিন ভাইয়া আমাকে ডাকবেন না।’ এ কথা বলতে বলতেই কেঁদে ফেলে ভাই হারানো এই কিশোরী।
ছেলে পুলিশের গুলিতে নিহত হওয়ায় যতটুকু কষ্ট পেয়েছেন মা শিরিনা আক্তার, তারচেয়ে বেশি কষ্ট পেয়েছেন মৃত ছেলের মুখ একবারের জন্যও না দেখতে পেয়ে। কাঁদতে কাঁদতে তিনি বলছিলেন, ‘আমার একমাত্র ছেলেকে একটু ছুঁয়েও দেখতে পারলাম না। তাড়াতাড়ি দাফন করতে হাসিনার পুলিশের হুমকি-উৎপাতে কলিজাটারে শেষবারের মতো একটু বাড়ির ভেতরেও আনতে পারলাম না। সারা জীবনে এই আফসোস থেকে যাবে।’
বোন জেরিন জানায়, জাবিরের মরদেহ ২৭ জুলাই সকালে যখন ঢামেক থেকে বের করা হচ্ছিল, তখন সেখানে উপস্থিত পুলিশ আমাদের পরিবারটির সদস্যদের টিটকারি করছিল। বলছিল, ‘যাও, ছেলেকে ভালো করে আন্দোলন করতে বলো।
এখন কবরে শুয়ে শুয়ে আন্দোলন করুক।’ শুধু তা-ই নয়, ঢাকা থেকে যশোরে গ্রামের বাড়িতে আনা পর্যন্ত মিনিটে মিনিটে ফোন করে হুমকি-ধমকি দিয়েছে পুলিশ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থার লোকজন। তাদের সোজা কথা- কোনো ধরনের আনুষ্ঠানিকতা করা যাবে না। ঢামেক থেকে গোসল করিয়ে দেওয়া হয়েছে। বাড়িতে খবর খুঁড়ে রাখতে বলো। লাশ সোজা কবরে নামাবে। এর অন্যথা হলে পরিবারের সবাই বিপদে পড়বে।
হাসিনা সরকারের পতনের পর এখন অনুকূল পরিবেশ এসেছে। জাবিরের বাবা নওশের আলী ছেলে হত্যার বিচার চান। বলেন, ‘আমার স্বপ্ন তো শেষ। এখন একটাই চাওয়াÑ অসংখ্য মানুষ হত্যায় জড়িতদের বিচার ও শাস্তি দেখতে চাই। যে বিচার দেখে যেন আর কেউ এমন অপরাধ করার সাহস না পায়।’
শহীদ জাবিরের বাবা নওশের আলী ঝিকরগাছা উপজেলা বিএনপির সম্প্রতি গঠিত কমিটির সহসভাপতি। আমার দেশকে তিনি বলছিলেন, ছেলে হত্যার অভিযোগে ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনাসহ ৯৭ জনকে আসামি করে মামলা করা হয়েছে।
নওশেরের পরিবার শহীদ পরিবারের মর্যাদা পেয়েছে। এখন পর্যন্ত পরিবারটি জুলাই ফাউন্ডেশন থেকে পাঁচ লাখ, জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে দুই লাখ, বিএনপির পক্ষ থেকে এক লাখ এবং জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে ২৫ হাজার টাকা অনুদান পেয়েছে। আদ-দ্বীন হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ প্রতিশ্রুতি দিয়েছে তাদের প্রতিষ্ঠান থেকে পরিবারটির সদস্যরা আজীবন বিনামূল্যে চিকিৎসা পাবেন।

জুলাই আন্দোলনে গুলিতে দৃষ্টিশক্তি হারানো এক যোদ্ধাকে বাদী দেখিয়ে অভিনব কায়দায় মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানির অভিযোগ করা হয়েছে।
১৪ সেপ্টেম্বর ২০২৫
২০২৪ সালের ৪ আগস্ট ছাত্র-জনতার আন্দোলনে মৌলভীবাজার শহরে অন্যান্য শ্রমিকদের সঙ্গে মিছিলে অংশ নেন জসিমও। চৌমুহনায় মিছিলকারী ছাত্র-জনতার সঙ্গে পুলিশ ও আ.লীগের সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীদের ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। তবুও পিছু হটেনি সাহস নিয়ে পুলিশের বন্দুকের সামনে বুক পেতে পুলিশ ও ছাত্রলীগকে লক্ষ্য
৩১ আগস্ট ২০২৫
চব্বিশের জুলাইয়ে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম একজন যোদ্ধা তরুণ আলেম মাওলানা শফিকুর রহমান। আন্দোলন ঘিরে যাত্রাবাড়ীর কাজলা এলাকায় পতিত আওয়ামী সরকারের পুলিশ বাহিনীর সঙ্গে তার বাগবিতন্ডার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। রামপুরা এলাকায় আন্দোলনকারীদের মাঝে খাবার বিতরণ করতে দেখা যায় তাকে।
২৯ আগস্ট ২০২৫
তাইমুরের বাবা পুলিশের এসআই মো. ময়নাল হোসেন ভুঁইয়া তার ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের বলেছিলেন, ‘একজন মানুষকে মারতে কয়টা গুলি লাগে স্যার’। আমার ছেলের কি দোষ ছিল, কেন তাকে এত কষ্ট দিয়ে মারা হলো? কেন তার শরীরে দুইশ গুলি মারা হলো।
১৯ আগস্ট ২০২৫