বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি : ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্

শামসুদ্দিন ইলিয়াস
প্রকাশ : ১৯ জুলাই ২০২৫, ১৪: ৩৭

Traditional Culture in East Pakistan নামের রচনাটি ১৯৮৫ সালে প্রকাশিত ‘ডক্টর মুহম্মদ শহীদুল্লাহ স্মারকগ্রন্থ’ থেকে গৃহিত। স্মারকগ্রন্থটি সম্পাদনা করেন শাসমুজ্জামান খান, আজহার ইসলাম ও সেলিনা হোসেন। উদ্যোগ ও প্রকাশ করে বাংলা একাডেমি।

রচনাটি সম্ভবত পাকিস্তান আমলে রচিত। ফলে মূল রচনায় বাংলাদেশ উল্লেখিত ছিলো পূর্ব পাবিস্তান হিসেবে। সঙ্গত বিবেচনায় বাংলা অনুবাদে এক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যবহৃত হয়েছে।

বিজ্ঞাপন

(“বাঙালি মুসলমান ধনহীন নয়, তবুও সে দরিদ্র; ধনে নয়, সাহিত্যে। যে জাতির সাহিত্য সম্পদ নাই, তাহার যতই ধনৈশ্বর্য থাকুক না কেন, তাহাকে সভ্যপদবাচ্য করা যাইতে পারে না।” -ড. মুহম্মদ শহীদুল্লাহ্ )

ভূমিকা: বাংলাদেশ আগে পূর্ববঙ্গ নামে পরিচিত ছিল। আয়তন ৫৪ হাজার ১৪১ বর্গমাইল। জনসংখ্যা ৫ কোটি ৮ লাখ ৪০ হাজার ২৩৫। জনসংখ্যার প্রায় ৭৭ শতাংশ মুসলমান। অন্যদের মধ্যে সংখ্যাগরিষ্ঠ ধর্মীয় সম্প্রদায় হিন্দু। প্রতি বর্গমাইলে গড় ঘনত্ব ৭৭৪ জন। এ অঞ্চলের জনগণ প্রধানত গ্রামাঞ্চলে বাস করে—৬১ হাজার ৪২৪টি গ্রাম, যার অধিকাংশই পদ্মা-ব্রহ্মপুত্রের বদ্বীপ, উপনদী এবং উত্তর-পূর্বাঞ্চলের পার্বত্য ও উঁচু ভূমিতে অবস্থিত। কৃষিকাজ, পশুপালন ও মাছচাষ জনগণের প্রধান জীবিকা।

চট্টগ্রামের পার্বত্য অঞ্চল প্রধানত বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বীদের আবাসস্থল, যারা গোটা ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশে একমাত্র দেশজ বৌদ্ধ জনগোষ্ঠী। এ ছাড়া এখানে ক্ষুদ্র দেশজ খ্রিষ্টান এবং সাঁওতাল, চাকমা, মণিপুরি, হাজং ও গারো জাতিসত্তার আদিবাসী জনগোষ্ঠীও আছে। মুসলমান ও হিন্দু একসঙ্গে বসবাস করে। গোটা প্রদেশে কেবল মুসলমান বা কেবল হিন্দু অধ্যুষিত গ্রাম খুবই বিরল। মুসলমানদের মধ্যে সৈয়দ ও পাঠানরা দাবি করেন, তারা মূলত ভারত-পাকিস্তান উপমহাদেশের পশ্চিমে অবস্থিত এশীয় দেশগুলো থেকে আগত।

চট্টগ্রামের কিছু লোকের দাবি, তাদের শিরায় আরব রক্ত প্রবাহিত। অন্যদিকে হিন্দুদের মধ্যে ব্রাহ্মণরা নিজেদের খাঁটি আর্য হিসেবে বিবেচনা করেন। যদিও সামাজিক রীতি ও প্রথায় মুসলমান ও হিন্দুদের মধ্যে পার্থক্য রয়েছে। তবুও ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতির দৃষ্টিকোণ থেকে এ দুই সম্প্রদায়ের মধ্যে বহু মিল। নৃতাত্ত্বিকভাবে একজন সাধারণ মুসলমান ও একজন সাধারণ হিন্দুর মধ্যে কিংবা একজন ব্রাহ্মণ ও একজন অ-ব্রাহ্মণের মধ্যে বিশেষ কোনো পার্থক্য আছে কি না, তা সংশয়যুক্ত।

দেশের প্রাচীন ইতিহাস পর্যালোচনা করলে দেখা যায়, আর্যরা প্রায় ১৫০০ খ্রিষ্টপূর্বে পশ্চিম দিক থেকে উপমহাদেশে প্রবেশ করে। তারা তখন ইরানীয়দের সঙ্গে এক জাতিভূক্ত ছিল। উপমহাদেশে প্রবেশের সময় তারা দেখতে পায়, দেশটি ইতোমধ্যে অনার্য জনগোষ্ঠী অধ্যুষিত, যারা সম্ভবত পশ্চিমে দ্রাবিড় এবং পূর্বাঞ্চলে অস্ট্রো-এশীয় জনগণ ছিল। মঙ্গোলীয় বংশোদ্ভূত তিব্বত-বার্মার জনগণ আর্যদের পরে পূর্ববঙ্গে প্রবেশ করে।

আর্যদের উপমহাদেশের পূর্বাংশে প্রবেশকাল আনুমানিক ৪০০ খ্রিষ্টপূর্বাব্দ নির্ধারণ করা যেতে পারে। আমার ‘বাংলা ভাষায় মুন্ডা প্রভাব’ শীর্ষক প্রবন্ধে দেখিয়েছি, বাংলা ভাষায় মুন্ডা (কল) প্রভাবের নিদর্শন রয়েছে। পূর্ব পাকিস্তানের উপভাষাগুলোয় আর্য ঘ, ধ, ভ ধ্বনিগুলো জোরালো গ, দ, ব-তে রূপান্তরিত এবং বিশুদ্ধ তালব্য ধ্বনির তালব্য-দন্ত্য উচ্চারণে তিব্বত-বার্মা প্রভাব স্পষ্ট। এছাড়া, বিশেষ করে টিপরা ও চট্টগ্রামের উপভাষায় পার্শ্ববর্তী তিব্বত-বার্মা ভাষার কিছু শব্দ গৃহীত হয়েছে।

বাঙালি জাতির বৃহৎ জনগোষ্ঠীর মূল স্তর সম্ভবত অস্ট্রো-এশীয়। তবে একটি বিষয় নিশ্চিত যে, তারা বাংলার জীবনধারায় তাদের সাংস্কৃতিক ছাপ রেখে গেছে। উদাহরণস্বরূপ, বাংলা ভাষায় ‘কুড়ি’ (বিশ) শব্দটি মুন্ডা উৎসের। সরবোন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর প্রজিলুসকি প্রমাণ করেছেন, সংস্কৃত ভাষায় ব্যবহৃত শব্দসমূহ যেমন ময়ূর (mayura –ময়ূর), কদলি (kadali– কলা), তাম্বুল (tambula– পানপাতা) ও আলাবু (alabu – লাউ) অস্ট্রো-এশীয় উৎসের।

কলকাতা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক এস.কে. চ্যাটার্জি মনে করেন, চাল (বাংলা, হিন্দি ও উর্দুতে) শব্দটিও অস্ট্রো-এশীয় ভাষা থেকে গৃহীত। মাছ-ভাত খাওয়ার অভ্যাস, ধেঁকি ও ডোঙ্গা বা ডিঙি ব্যবহারের মতো উপকরণ সম্ভবত এই জনগোষ্ঠীর অবদান। বাংলা লোককথা, লোকসংগীত ও লোকনৃত্যেও তাদের প্রভাব প্রতিফলিত। এমনকি বৈদিক পরবর্তী হিন্দুধর্মে তাদের প্রভাব খুঁজে পাওয়া যায়। বিবাহিত হিন্দু নারীদের সিঁথিতে সিঁদুর পরা ও শাঁখা পরিধান অনার্য সংস্কৃতি থেকে উদ্ভূত বলে মনে হয়।

মুসলিম বিজয় ও সাংস্কৃতিক প্রভাব

প্রায় ১৩০০ খ্রিষ্টাব্দে পুরো পূর্ববঙ্গ মুসলমানদের অধীন হয়। সম্রাট আকবর ১৫৭৬ সালে পাঠান শাসক দাউদ শাহকে পরাজিত করে বাংলা জয় করেন এবং ১৬০০ সালের মধ্যে গোটা পূর্ব পাকিস্তান মুঘল শাসনের অন্তর্ভুক্ত হয়। মুঘল বিজয়ের আগেই পর্তুগিজরা বাণিজ্যের উদ্দেশ্যে বাংলায় আগমন করে। মুঘল আমলে ইংরেজ, ডাচ ও ফরাসি বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলায় প্রতিষ্ঠা পায়। ১৭৫৭ সালে পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজ ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি কার্যত বাংলার শাসক হয়ে ওঠে।

মুসলিম শাসন ও বাংলা সাহিত্য

মুসলিম শাসনামলে বাংলা সাহিত্য বিকশিত হয়। মধ্যযুগীয় বাংলা সাহিত্যের বিকাশে মুসলিম শাসক ও অভিজাতদের পৃষ্ঠপোষকতা মুখ্য ভূমিকা রাখে। গৌড়ের সিকান্দার শাহ (১৩৫৭–৯৩ খ্রিষ্টাব্দ) ছিলেন মধ্যযুগের প্রথম কবি চণ্ডীদাসের পৃষ্ঠপোষক। শাহ মুহম্মদ সগীর গিয়াসুদ্দিন আজম শাহের (১৩৯৩–১৪১০ খ্রিষ্টাব্দ) আমলে সক্রিয় ছিলেন। মুসলিম রাজা জলালুদ্দিন মুহাম্মদ শাহ (১৪১৮–৩১) সম্ভবত কৃত্তিবাসকে রামায়ণের বঙ্গানুবাদ করতে অনুপ্রাণিত করেন। শামসুদ্দিন ইউসুফ শাহ (১৪৭৪–৮১) মালধর বসুকে শ্রীকৃষ্ণ বিজয় রচনার জন্য ‘গুণরাজ খান’ উপাধি প্রদান করেন। পরাগল খান, সুলতান হোসেন শাহের একজন সেনাপতি, কাব্যরূপে মহাভারতের বঙ্গানুবাদ করতে কবিন্দ্র পরমেশ্বরকে অনুরোধ করেন। এ ধরনের বহু দৃষ্টান্ত রয়েছে। যদিও দরবারি ভাষা ছিল ফারসি। তবু বাংলা ভাষায় আরবি, ফারসি ও তুর্কি উৎসের প্রায় দুই হাজার শব্দ গৃহীত হয়েছে, যা হিন্দু-মুসলমান নির্বিশেষে প্রচলিত।

ফারসি ও মুসলিম সংস্কৃতির প্রভাব

শব্দকোষগত প্রভাব ছাড়াও মুসলমানদের সংস্কৃতির প্রভাব হিন্দুদের জীবনধারায়ও দৃশ্যমান, এমনকি ধর্মীয় জীবনেও। ‘হিন্দু’ নামক পরিচয়টি মুসলমানদের দ্বারা প্রবর্তিত। তাদের প্রাচীন পোশাক ছিল ধুতি ও ওড়না। গরু পবিত্র হওয়ায় চামড়ার জুতা পরা বর্জিত ছিল। কিন্তু মুসলিম প্রভাবে তাদের মধ্যে জামা ও জুতা পরার প্রচলন ঘটে। এমনকি খাবারে পোলাও, কোরমা, কোপ্তা ইত্যাদির সংযোজন ঘটে। অস্পৃশ্যতার কড়াকড়ি শিথিল হয় এবং নানক, কবীর, চৈতন্য প্রমুখ ধর্মীয় সংস্কারক আবির্ভূত হন। মুসলিম শাসকরা হিন্দুদের ‘খান’, ‘সরকার’, ‘মল্লিক’, ‘মজুমদার’, ‘তরফদার’, ‘শাহ’ প্রভৃতি উপাধি প্রদান করেন, যা আজও সম্মানের প্রতীক।

উর্দু, দোভাষী বাংলা ও শিয়া প্রভাব

১৭ শতকের শেষ দিকে উর্দু প্রভাবে কিছু উর্দু-হিন্দি শব্দ বাংলায় প্রবেশ করে, যেমন: চাচা, চাচি, ফুপি, ফুপা, নানা, নানি, বকরি, ঝুট প্রভৃতি। এ থেকে দোভাষী বাংলা নামক একটি নতুন রীতির উদ্ভব হয়, যেখানে বাংলায় বিশাল পরিমাণ সাহিত্য রচিত হয়, বিশেষত মুসলমানদের মাধ্যমে, যার একটি ধারাকে বলা হয় ‘পুঁথিসাহিত্য’। মুর্শিদ কুলি খানের (১৭১৭–২৭ খ্রিষ্টাব্দ) সময় থেকে মুঘল শাসকরা শিয়া মতবাদের অসুনারী ছিল। যদিও সাধারণ মানুষ ছিলেন হানাফি। তবুও মুহররমের রীতি, আলী-হাসান-হুসাইন নাম ধারণের চল প্রচলিত হয়ে পড়ে। আরবি-ফারসির মিশ্রনাম, যেমন আফতাবুদ্দিন, মাহতাবুদ্দিন প্রভৃতির প্রচলন ঘটে। ‘খোদা’ শব্দটি আল্লাহর সমার্থক রূপে ব্যবহৃত হয়। ‘রসুল’, ‘সালাত’, ‘সাওম’, ‘জান্নাত’, ‘জাহান্নাম’ প্রভৃতি আরবি শব্দের পরিবর্তে ফারসি প্রতিশব্দ ‘পয়গম্বর’, ‘নামাজ’, ‘রোজা’, ‘বেহেশ্‌ত’, ‘দোজখ’ প্রভৃতি উত্তর ভারতের প্রায় সব ভাষায় গৃহীত হয়েছে। সুতরাং উপমহাদেশের মুসলিম সংস্কৃতি মূলত ফারসি-আরবি-ভারতীয় সংমিশ্রণে গঠিত একটি সম্মিলিত সংস্কৃতি। মুঘল চিত্রশিল্প এর উৎকৃষ্ট উদাহরণ।

ঔপনিবেশিক যুগ ও পশ্চিমীকরণ

১৭৬৫ সালে দিল্লির সম্রাট প্রদত্ত সনদের মাধ্যমে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি বাংলার প্রকৃত শাসক হয়ে ওঠে। ১৮০০ সালে কলকাতায় ফোর্ট উইলিয়াম কলেজ প্রতিষ্ঠিত হয়, যেখানে বাংলা ভাষাও পড়ানো হতো। ১৮৩৫ সালে ফারসির পরিবর্তে ইংরেজি রাষ্ট্রভাষা হয়। এরপর রেলপথ ও বাষ্পজাহাজ যোগাযোগ ব্যবস্থা সহজ করে। ইংরেজ পোশাক, রীতিনীতি ও ভাষা বাংলার সংস্কৃতিতে ঢুকে পড়ে। প্রায় ২০০ পর্তুগিজ শব্দ বাংলা ভাষায় গৃহীত হয়, এ ছাড়া ডাচ ও ফরাসি উৎসেরও কিছু শব্দ গৃহীত হয়েছে।

উপসংহার : পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার পরেও ইংরেজি বাংলাদেশের রাষ্ট্রভাষা রয়ে গেছে এবং ভবিষ্যতেও তা শিক্ষাব্যবস্থার একটি বাধ্যতামূলক অংশ হিসেবে থাকবে। অতএব, ইংরেজি ভাষা ও সংস্কৃতি বাংলাদেশের ভাষা ও সংস্কৃতিতে প্রভাব বিস্তার করবে।

উপরোক্ত আলোচনা থেকে প্রতীয়মান হয়, বাংলাদেশের ঐতিহ্যবাহী সংস্কৃতি অস্ট্রো-এশীয়, তিব্বত-বার্মা, ভারত-আরণ্য, আরব, ফারসি, তুর্কি, পর্তুগিজ ও ইংরেজ উপাদানের সংমিশ্রণে গঠিত। পাকিস্তান প্রতিষ্ঠার ফলে পশ্চিম পাকিস্তানও এখন পূর্ব পাকিস্তানের সাংস্কৃতিক ক্ষেত্রে একটি নতুন উপাদান হয়ে উঠেছে, যার প্রভাব সময়ের সঙ্গে বৃদ্ধি পাবে। তবে ধর্মীয় ঐতিহ্য ব্যতীত দুই অংশের সংস্কৃতিতে অভিন্নতা অর্জিত হবে কি না, তা বলা কঠিন।

জাতিগত ও ভাষাগত সংমিশ্রণ ছাড়াও বাংলাদেশে বিভিন্ন ধর্মের পারস্পরিক সম্পর্ক দীর্ঘকাল ধরে প্রথাগত সংস্কৃতিকে প্রভাবিত করেছে। আর্যদের আগমনের আগে আদিবাসীদের ধর্ম ছিল প্রাণবাদ (animism)। আর্যরা ব্রাহ্মণ্য ধর্ম নিয়ে আসে। অনেক আদিবাসী নতুন ধর্ম গ্রহণ করে হিন্দু সমাজের নিম্নবর্ণে পরিণত হয়। এরপর জৈন ধর্ম ও বৌদ্ধ ধর্ম আসে। জৈন ধর্ম রাজার পৃষ্ঠপোষকতা না পাওয়ায় বিলুপ্ত হয় এবং বৌদ্ধ ধর্মের উত্থান ঘটে। পাল বংশ (৮ম থেকে মধ্য ১২শ শতক) প্রায় সমগ্র বাংলায় রাজত্ব করে এবং তারা ধর্মে বৌদ্ধ ছিল। চন্দ্র, দেব ও খড়গ বংশও একই সময়ে দক্ষিণ-পূর্ব বাংলায় বৌদ্ধ ছিল। পালদের পতনের পর সেন বংশ ক্ষমতায় আসে এবং হিন্দুধর্ম পুনরুজ্জীবিত করে। সেন রাজা লক্ষ্মণ সেনের রাজত্বকালে মুসলমানরা পশ্চিম বঙ্গ বিজয় করে (১২০১ খ্রিষ্টাব্দ)।

জনশ্রুতি রয়েছে, মুসলিম বিজয়ের আগেও পীর-দরবেশরা ইসলাম প্রচার করেছিলেন। সম্ভবত আরব বণিকরা অষ্টম বা নবম শতকে চট্টগ্রাম বন্দরে ইসলাম প্রচার করেন। বৌদ্ধ ও কিছুসংখ্যক হিন্দু ইসলাম গ্রহণ করে ইসলামের সাম্য ও ভ্রাতৃত্ববোধে আকৃষ্ট হয়ে। খ্রিষ্টধর্ম ষোড়শ শতকে পর্তুগিজ মিশনারিদের মাধ্যমে প্রবেশ করে এবং ব্রিটিশ বিজয়ের পর প্রসার লাভ করে। বিশেষত নিম্নবর্ণের হিন্দুদের মধ্যে খ্রিষ্টধর্ম গ্রহণের প্রবণতা দেখা দেয়। ১৪ আগস্ট, ১৯৪৭-এ পূর্ববঙ্গ পাকিস্তানের অংশ হলে আশা করা হয়, দুই অংশের মুসলমানরা ইসলাম ধর্মের বন্ধনে আরো সুদৃঢ় হবে এবং সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ও এর দ্বারা প্রভাবিত ও উপকৃত হবে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত