মিল্লাত অ্যালামনাই কনফারেন্সে মাহমুদুর রহমান

জুলাইকে রাজনৈতিক-ধর্মীয়-সাংস্কৃতিক বিপ্লব হিসেবে দেখি

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ১৩
আপডেট : ০১ নভেম্বর ২০২৫, ১২: ৪১

জুলাই বিপ্লবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং কালচারাল (সাংস্কৃতিক) বিপ্লব হিসেবে দেখি বলে মন্তব্য করেছেন আমার দেশ সম্পাদক মাহমুদুর রহমান।

বিজ্ঞাপন

শনিবার বেলা ১১টার দিকে রাজধানীর বাংলাদেশ চীন মৈত্রী সম্মেলন কেন্দ্রে তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন আয়োজিত প্রথম অ্যালামনাই কনফারেন্স ২০২৫ -এ প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি একথা বলেন।

মাহমুদুর রহমান বলেন, আজকে আপনাদের জন্য, বিশেষত আমাদের জন্য খুব আনন্দের দিন। আজকে আপনারা প্রথম অ্যালামনাই কনফারেন্স করতে পারছেন। কেন করতে পারছি? কারণ মহান জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে বাংলাদেশ পরিবর্তন হয়েছে। সকল জুলাই যোদ্ধাদের প্রতি আমার সালাম এবং আমার সম্মান সকল শহীদদের প্রতি। এই জুলাই বিপ্লবকে আমি ব্যক্তিগতভাবে রাজনৈতিক, ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক বিপ্লব হিসেবে দেখি। আমাদের বাঙালি মুসলমানের যে আত্মপরিচয়, সেই আত্মপরিচয় আমরা নতুন করে বুঝতে শিখেছি জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে।

mahamudur rhaman-1

জুলাই বিপ্লবে মাদ্রাসা শিক্ষার্থীদের অবদানের কথা স্মরণ করে তিনি বলেন, এই মাদরাসার ছেলেরা যাত্রাবাড়িতে যে লড়াই করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনার বিরুদ্ধে, এই ইতিহাস আমাদের বার বার বলতে হবে। সুতরাং আজকে আমরা বাংলাদেশের ইতিহাসে এক নতুন দ্বারপ্রান্তে উপস্থিত হয়েছি। আপনাদের সকলের কাছে আমার আহ্বান থাকবে আমরা যেন আমাদের এই বিজয় ধরে রাখতে পারি। এ বিজয় ধরে রাখার বিষয়ে ইনশাল্লাহ তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদ্রাসার ছেলেরা ও অ্যালামনাইরা সবাই নেতৃত্ব দেবেন।

বাঙালি মুসলমানের রেনেসাঁ বাংলাদেশে দেখতে পাচ্ছি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন, এই রেনেসাঁ দেখবার জন্য আমরা দীর্ঘকাল ধরে অপেক্ষা করছি। আমি এখন আশাবাদী যে আমরা বাংলাদেশে সেই রেনেসাঁর দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছি। কারণ মুসলমানদের যদি রেনেসাঁ না হয় তাহলে সারা বিশ্বে আমরা মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে পারবো না।

তিনি বলেন, সারা বিশ্বে মুসলমানদের উপরে যে জুলুম চলছে তার প্রধান কারণ আমরা তাদের সঙ্গে জ্ঞানে পেরে উঠছি না, বিজ্ঞানে পেরে উঠছি না। তাদের সঙ্গে জ্ঞান-বিজ্ঞানে আমরা যখন শ্রেষ্ঠত্ব অর্জন করতে পারবো তখনই মুসলমানদের সম্মান প্রতিষ্ঠা করতে পারবো। আমি মনে করি এই ক্ষেত্রে তা’মীরুল মিল্লাত একটা উল্লেখযোগ্য ভূমিকা রাখতে পারে। যেটা তারা এখন পর্যন্ত দেখাতে সক্ষম হয়েছে, আলহামদুলিল্লাহ।

স্মৃতিচারণ করে আমার দেশ সম্পাদক বলেন, আসলে তা’মীরুল মিল্লাত মাদ্রাসা যে কতটা সুনাম অর্জন করেছে সেটা আমি টের পেলাম যখন ২০১৯ সালে মালয়েশিয়ার ইসলামিক ইউনিভার্সিটিতে একটু লেখাপড়া করতে গেলাম। তখন ওখানে গিয়ে দেখলাম তা’মীরুল মিল্লাতের ছাত্রদের খুব সুনাম। এটা দেখে আমি খুব গর্ববোধ করেছিলাম যে, বাংলাদেশের একটা মাদ্রাসার ছাত্রদের সুনাম মালয়েশিয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ে দেখতে পাচ্ছি। এটা আমার জন্য ছিলো অত্যন্ত আনন্দের। আসলে মুসলমানদের জন্য ইসলামী এবং আধুনিক শিক্ষার যে একটি মিশ্রণ একটি মেলবন্ধন দরকার এবং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ সেটা তা’মীরুল মিল্লাত খুব সফলভাবে দেখাতে পেরেছে। একারণেই আজকে তা’মীরুল মিল্লাতের ছেলেরা বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ভর্তি পরীক্ষায় প্রথম হয়। মাদ্রাসার ছেলেরা বিভিন্ন আধুনিক সেক্যুলার বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র সংসদ নির্বাচনে তারা ভিপি-জিএস নির্বাচিত হয়। এটা এক ধরনের সফলতা।

তা’মীরুল মিল্লাতের সফলতা কামনা করে তিনি বলেন, আপনাদের একটা পুরোনো ইতিহাস মনে করিয়ে দিতে চাই। এই বাংলাদেশে একজন সুফি, একজন মহান ব্যক্তি এমন একটি মাদরাসা প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আজ থেকে শত শত বছর আগে, সেই মাদ্রাসা সারা বিশ্বে অন্যতম শ্রেষ্ঠ মাদ্রাসা হিসেবে পরিচিত ছিল। সেই মহান ব্যক্তির নাম শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামা। শরফুদ্দিন আবু তাওয়ামার যে মাদ্রাসা সোনারগাঁতে ছিল সেটা সারা বিশ্বে একটা উদাহরণ ছিল। এই সেঞ্চুরিতে আমি দেখতে চাই যেমন করে আবু তাওয়ামার মাদ্রাসা সারা বিশ্বে মুসলমানের জন্য আলোকবর্তিকা হয়ে দাঁড়িয়েছিল-তেমনি তা’মীরুল মিল্লাত কামিল মাদরাসা সারা বিশ্বে ইসলামী শিক্ষা এবং আধুনিক শিক্ষায় পৃথিবীতে এক নম্বর স্থান অধিকার করবে। এটা আমি স্বপ্ন দেখি এবং এটা আমি দেখতে চাই।

অনুষ্ঠানে আরো বক্তব্য রাখেন- প্রতিষ্ঠানটির অধ্যক্ষ যাইনুল আবেদিন, আসসুন্নাহ ফাউন্ডেশন চেয়ারম্যান আহমাদুল্লাহ, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মহানগর দক্ষিণ আমির নুরুল ইসলাম বুলবুল, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য অধ্যাপক ড. নকিব মোহাম্মদ নসরুল্লাহ প্রমুখ।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত