এআই ছবি বিতর্ক: পুলিশের দাবি সত্য নয়, ছবিটি আসল

স্টাফ রিপোর্টার
প্রকাশ : ২৮ আগস্ট ২০২৫, ২৩: ০৫
আপডেট : ০৩ সেপ্টেম্বর ২০২৫, ২০: ৫২
ছবিটি ছড়িয়ে পড়ায় সমালোচনার মুখে বিবৃতি দিয়ে ডিএমপি দাবি করে, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি। কিন্তু এতে সমালোচনা আরও বেড়ে গেছে এবং ছবিটি আসল বলেই দাবি করা হচ্ছে।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) শিক্ষার্থীদের অবরোধে এক পুলিশ কর্মকর্তার শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরার একটি ছবি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি কিনা এ নিয়ে বিতর্ক এখন তুঙ্গে। বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশ বিজ্ঞপ্তি দিয়ে জানিয়েছিল, ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি। কিন্তু ফ্যাক্টচেকার এবং ছবি ধারণকারী প্রতিষ্ঠান বলছে, ‘এটি আসল ছবি।’

পুলিশের প্রেস বিজ্ঞপ্তি আমার দেশের অনলাইনে এবং সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে প্রকাশিত হলে এ নিয়ে বুয়েট শিক্ষার্থীদের পক্ষ থেকে মন্তব্য কলামে এআই ছবি নয় বলে অনেকে মন্তব্য করেন। ফোন করেও কেউ কেউ প্রতিবাদ জানান। সংবাদ সম্মেলনেও ছবিটি আসল বলে দাবি করেন শিক্ষার্থীরা।

বিজ্ঞাপন

পরে বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান করেছে আমার দেশ। ছবিটি দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস) পত্রিকার ফেসবুক পেজে প্রকাশ করে বলা হয়েছে, এটি তাদের ফটোগ্রাফার রাজিব ধর বুধবার (২৭ আগস্ট) মিন্টু রোডে ছবিটি তুলেছেন। বিষয়টি আমার দেশকে নিশ্চিত করেছেন টিবিএস’র প্রধান প্রতিবেদক আব্বাস উদ্দিন নয়ন।

police

একই তথ্য জানাচ্ছেন ফ্যাক্টচেকাররাও। আন্তর্জাতিক বার্তা সংস্থা এএফপির বাংলাদেশের ফ্যাক্ট-চেকবিষয়ক সাবেক সম্পাদক কদরুদ্দিন শিশির জানিয়েছেন, ‘ছবিটি এআই দিয়ে তৈরি নয়, আসল ছবি।’

ছবিটি নিয়ে বিশ্লেষণ করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক সাইফুল আলম চৌধুরী। ফেসবুকে দেওয়া পোস্টে তিনি বলেন, ‘পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে বুয়েটের এক শিক্ষার্থীর মুখ চেপে ধরা ছবিটি এআই জেনারেটেড। পুলিশের এমন দাবি অবলীলায় ছাপিয়েছে গণমাধ্যমগুলো।

এমনকি যেসব গণমাধ্যমের ফ্যাক্টচেক উইং আছে তারাও এটি প্রকাশ করেছে। পুলিশ কোন সফটওয়্যার দিয়ে, মেটাডেটা এনালাইসিস করেছে, কি দেখে মনে হলো ছবিটা এআই জেনারেটরেড - তার কোনো ব্যাখ্যা নাই। এআই জেনারেটেড ছবি কী না তার সবচেয়ে বিশ্বাসযোগ্য প্রমাণ হলো মেটা ডেটা এনালাইসিস করা। আমার জানা মতে, পুলিশের মধ্যে এ ধরনের এনালিস্ট নেই। খুব ক্রুসিয়াল না হলে এখন আর ফ্যাক্ট চেক করি না। কিন্তু পুলিশের দাবির পর ছবিটার একটা গ্রামার দেখেই মনে হয়েছে এই ছবি এআই জেনারেটেড নয়।’

DMP

এই শিক্ষক বলেন, ‘এআই ছবিতে যদি একাধিক হাত থাকে তাহলে হাতগুলো একসাথে ৯০ এবং ১২০ ডিগ্রি এঙ্গেলে থাকতে পারে না। সেজন্য ছয়টা টুলস দিয়ে পরীক্ষা করলাম। ফলাফল ছবিটা রিয়েল। গণমাধ্যমের কাজ তিনি হেসে বলেন, কেঁদে বলেন, দাবি করেন - এসব বিশেষণ দিয়ে জানানো নয়। গণমাধ্যমের দায়িত্ব সত্য জানানো। যেহেতু এআই আর ফ্যাক্ট চেকিং প্রশিক্ষণ দেই তাই পুলিশের এই ছবিটা ভালো উদাহরণ হয়ে থাকলো।’

এর আগে ডিএমপি এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে দাবি করে, সম্প্রতি ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের রমনা বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মো. মাসুদ আলমকে নিয়ে এক ছাত্রের মুখ চেপে ধরার একটি ছবি বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশিত হয়েছে। যা ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) দৃষ্টিগোচর হয়েছে। ছবিটি আর্টিফিশিয়াল ইন্টেলিজেন্স (এআই) প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি।

ডিএমপির মিডিয়া বিভাগের উপ কমিশনার (ডিসি) মুহাম্মদ তালেবুর রহমান স্বাক্ষরিত ওই বিজ্ঞপ্তিতে আরও বলা হয়, কে বা কারা সম্পূর্ণ উদ্দেশ্যমূলকভাবে উক্ত ছবিটি তৈরি করে জনমনে অহেতুক বিভ্রান্তি ছড়ানোর চেষ্টা করেছে। ছবিটি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করে বুঝা যায় তা সম্পূর্ণ এআই প্রযুক্তি ব্যবহার করে তৈরি এবং বাস্তবতা বিবর্জিত।

একজন দায়িত্বশীল পুলিশ কর্মকর্তাকে নিয়ে জনমনে বিভ্রান্তি তৈরির উদ্দেশে তৈরি ছবি ও তা প্রচারের সাথে জড়িতদের এহেন কর্মকাণ্ডের তীব্র প্রতিবাদ ও নিন্দা জানায় ডিএমপি। একইসাথে এ ধরনের মিথ্যা প্রচারণায় বিভ্রান্ত না হওয়ার জন্য ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের পক্ষ থেকে সর্বসাধারণকে অনুরোধ করা হলো।

সাব-জেলে অভিযুক্ত সেনা কর্মকর্তারা, সরকারের কাছে যে আহ্বান জানালেন ব্যারিস্টার আরমান

অসদাচারণের দায়ে টঙ্গী পাইলট স্কুলের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষকে শোকজ

জরুরি অবস্থা জারি করলেন পেরুর প্রেসিডেন্ট

গুম-খুনে জড়িত ১৫ সেনা কর্মকর্তা চাকরিচ্যুত। ট্রাইব্যুনালে হাজির। সাবজেলে প্রেরণ

এবার ১ টাকায় গরুর মাংস বিতরণের ঘোষণা সেই এমপি প্রার্থীর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত