সরদার আনিছ
বেশ কয়েক দিনের তাপপ্রবাহের পর স্বস্তি নিয়ে এসেছে বৃষ্টি। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ অবস্থা আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত চলতে পারে। এর প্রভাবে দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর ফলেই আবহাওয়ার এমন অবস্থা চলছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের আট বিভাগেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা ২৪ কিংবা ২৫ জুন পর্যন্ত চলতে পারে। অতিভারী বর্ষণের ফলে পাঁচ জেলায় ভূমিধস এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের সীতাকুণ্ডে সবচেয়ে বেশি ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গতকাল রাজধানীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ৩৮ মিলিমিটার।
গতকাল সকাল থেকেই বৃষ্টি হওয়ায় বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, পল্লবী, উত্তরা, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় হালকা জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে বিকালে অফিস ফেরত কর্মজীবী ও পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সন্ধ্যার দিকে কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, বিজয় সরণিসহ বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কারণেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে।
গতকাল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছার দেওয়া ভারী বর্ষণের সতর্কতায় আবহাওয়া অফিস জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৮ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া অতিভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় তৈরি হচ্ছে বজ্রমেঘ। বিরাজ করছে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এবং সমুদ্রবন্দর এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গতকাল আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ কিংবা দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আরো বৃদ্ধি পেয়ে পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে বেসরকারি বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন গবেষণা টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, মৌসুমি বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’ সারা দেশে ভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। এটি এমন পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয়, যার প্রভাবে দেশের সব এলাকায় যথেষ্ট বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টিবলয়ের কারণে দেশের শতভাগ এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে।
এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। এ ছাড়া রংপুর, বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগেও ‘রিমঝিম’ সক্রিয় থাকবে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে এর প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম হলেও বৃষ্টি ঝরাবে।
বিডব্লিউওটি সতর্ক করেছে, রিমঝিমের প্রভাবের ফলে রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। যদিও বড় কোনো আশঙ্কা নেই, তবে কোথাও কোথাও বজ্রপাত হতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সাগর কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।
‘রিমঝিম’ চলতি বছরের দ্বিতীয় মৌসুমি বৃষ্টিবলয়। এটি ১৬ জুন দেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে এবং ২৮ জুনের মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চল হয়ে দেশের উপরিভাগ ত্যাগ করতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
শক্তিশালী মৌসুমি বৃষ্টিবলয় দেশের আবহাওয়ায় পরিবর্তন আনতে চলেছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হলেও বেশকিছু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা থাকায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পাশাপাশি দমকা হাওয়া ও বজ্রপাতও আনতে পারে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
সংস্থাটি পূর্বাভাসে বলছে, চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা ও গোমতী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোমতী, মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী অববাহিকায় একদিন মাঝারি-ভারী থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ফেনী জেলার মুহুরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের সারি গোয়াইন নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অববাহিকায় আগামী একদিন মাঝারি থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই নদীর পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট জলার সারি গোয়াইন নদী, সুনামগঞ্জ জেলার যাদুকাটা নদী ও নেত্রকোনা জেলার সোমেশ্বরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী তিনদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এ অববাহিকায় আগামী একদিন মাঝারি থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগামী দুদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তৃতীয় দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। পানি সমতল হ্রাস আগামী একদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে ও তৎপরবর্তী দুদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
বেশ কয়েক দিনের তাপপ্রবাহের পর স্বস্তি নিয়ে এসেছে বৃষ্টি। সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে সারা দেশেই ভারী থেকে অতিভারী বর্ষণ হচ্ছে। এ অবস্থা আগামী ২৪ জুন পর্যন্ত চলতে পারে। এর প্রভাবে দেশের প্রধান নদ-নদীর পানি ক্রমেই বাড়ছে বলে জানিয়েছে বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, বাংলাদেশের দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চল ও তৎসংলগ্ন এলাকায় একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। লঘুচাপের বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমি বায়ু বাংলাদেশের ওপর সক্রিয় ও উত্তর বঙ্গোপসাগরে প্রবল অবস্থায় রয়েছে। এর ফলেই আবহাওয়ার এমন অবস্থা চলছে।
আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছা বলেন, গতকাল মঙ্গলবার সকাল থেকে রাজধানীসহ দেশের আট বিভাগেই ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হচ্ছে। এ অবস্থা ২৪ কিংবা ২৫ জুন পর্যন্ত চলতে পারে। অতিভারী বর্ষণের ফলে পাঁচ জেলায় ভূমিধস এবং ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীতে জলাবদ্ধতা হতে পারে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের তথ্যমতে, গতকাল মঙ্গলবার সারা দেশেই কমবেশি বৃষ্টি হয়েছে। এর মধ্যে কক্সবাজারের সীতাকুণ্ডে সবচেয়ে বেশি ১১৮ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। গতকাল রাজধানীতে বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয় ৩৮ মিলিমিটার।
গতকাল সকাল থেকেই বৃষ্টি হওয়ায় বিকাল পর্যন্ত রাজধানীর মিরপুর, কাজীপাড়া, পল্লবী, উত্তরা, পুরান ঢাকাসহ বিভিন্ন এলাকায় হালকা জলাবদ্ধতার খবর পাওয়া গেছে। টানা বৃষ্টির কারণে বিকালে অফিস ফেরত কর্মজীবী ও পথচারীদের ভোগান্তিতে পড়তে হয়। সন্ধ্যার দিকে কারওয়ান বাজার, বাংলামোটর, বিজয় সরণিসহ বিভিন্ন রাস্তায় যানজটের কারণেও ভোগান্তিতে পড়তে হয় মানুষকে।
গতকাল বাংলাদেশ আবহাওয়া অধিদপ্তরের সহকারী আবহাওয়াবিদ কাজী জেবুন্নেছার দেওয়া ভারী বর্ষণের সতর্কতায় আবহাওয়া অফিস জানায়, দক্ষিণ-পশ্চিম মৌসুমি বায়ু সক্রিয়তার কারণে মঙ্গলবার দুপুর ২টা থেকে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় চট্টগ্রাম, বরিশাল, খুলনা, রংপুর, ময়মনসিংহ, সিলেট, ঢাকা ও রাজশাহী বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী (৪৪-৮৮ মিলিমিটার) থেকে অতিভারী (৮৮ মিলিমিটারের বেশি) বর্ষণ হতে পারে।
এ ছাড়া অতিভারী বর্ষণের কারণে চট্টগ্রাম, রাঙামাটি, খাগড়াছড়ি, বান্দরবান ও কক্সবাজার জেলার পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধসের সম্ভাবনা রয়েছে। একই সঙ্গে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে বলে জানিয়েছে সংস্থাটি।
আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, মৌসুমি বায়ু সক্রিয় হওয়ায় উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় তৈরি হচ্ছে বজ্রমেঘ। বিরাজ করছে বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এবং সমুদ্রবন্দর এলাকায় ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিসহ দমকা বা ঝোড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে। এরই মধ্যে চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৩ নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
গতকাল আবহাওয়াবিদ হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত আবহাওয়ার সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
এ ছাড়া উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি এসে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে।
দেশের নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, যশোর, কুষ্টিয়া, ফরিদপুর, খুলনা, বরিশাল, পটুয়াখালী, নোয়াখালী, কুমিল্লা, চট্টগ্রাম এবং কক্সবাজার অঞ্চলের ওপর দিয়ে দক্ষিণ কিংবা দক্ষিণ পূর্ব দিক থেকে ঘণ্টায় ৪৫-৬০ কিলোমিটার বেগে অস্থায়ীভাবে দমকা বা ঝোড়ো হাওয়াসহ বৃষ্টি অথবা বজ্রবৃষ্টি হতে পারে। এসব এলাকার নদীবন্দরকে ১ নম্বর সতর্ক সংকেত দেখাতে বলা হয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র জানিয়েছে, বর্তমানে দেশের প্রধান নদ-নদীসমূহের পানি সমতল বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হলেও পানি বৃদ্ধি পাচ্ছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের ফলে আরো বৃদ্ধি পেয়ে পানি সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
এদিকে বেসরকারি বাংলাদেশ ওয়েদার অবজারভেশন গবেষণা টিম (বিডব্লিউওটি) জানিয়েছে, মৌসুমি বৃষ্টিবলয় ‘রিমঝিম’ সারা দেশে ভারী বৃষ্টি ঝরাচ্ছে। এটি এমন পূর্ণাঙ্গ বৃষ্টিবলয়, যার প্রভাবে দেশের সব এলাকায় যথেষ্ট বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। এই বৃষ্টিবলয়ের কারণে দেশের শতভাগ এলাকায় কমবেশি বৃষ্টি হতে পারে।
এর সবচেয়ে বেশি প্রভাব পড়বে চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগে। এ ছাড়া রংপুর, বরিশাল, ঢাকা ও ময়মনসিংহ বিভাগেও ‘রিমঝিম’ সক্রিয় থাকবে। খুলনা ও রাজশাহী বিভাগে এর প্রভাব অপেক্ষাকৃত কম হলেও বৃষ্টি ঝরাবে।
বিডব্লিউওটি সতর্ক করেছে, রিমঝিমের প্রভাবের ফলে রংপুর, সিলেট ও চট্টগ্রাম বিভাগের নিচু এলাকায় বন্যা দেখা দিতে পারে। যদিও বড় কোনো আশঙ্কা নেই, তবে কোথাও কোথাও বজ্রপাত হতে পারে। উপকূলীয় এলাকায় দমকা হাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে এবং সাগর কিছুটা উত্তাল থাকতে পারে।
‘রিমঝিম’ চলতি বছরের দ্বিতীয় মৌসুমি বৃষ্টিবলয়। এটি ১৬ জুন দেশের উপকূলীয় এলাকা দিয়ে প্রবেশ করে এবং ২৮ জুনের মধ্যে সিলেট ও চট্টগ্রাম অঞ্চল হয়ে দেশের উপরিভাগ ত্যাগ করতে পারে বলে পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে।
শক্তিশালী মৌসুমি বৃষ্টিবলয় দেশের আবহাওয়ায় পরিবর্তন আনতে চলেছে। এর প্রভাবে এরই মধ্যে তাপপ্রবাহ প্রশমিত হলেও বেশকিছু এলাকায় বন্যার আশঙ্কা থাকায় সতর্ক থাকার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টির পাশাপাশি দমকা হাওয়া ও বজ্রপাতও আনতে পারে বলে সংস্থাটি জানিয়েছে।
বন্যা পূর্বাভাস ও সতর্কীকরণ কেন্দ্র
সংস্থাটি পূর্বাভাসে বলছে, চট্টগ্রাম বিভাগের মুহুরী, হালদা ও গোমতী নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। গোমতী, মুহুরী, ফেনী, সাঙ্গু ও মাতামুহুরী নদী অববাহিকায় একদিন মাঝারি-ভারী থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় ফেনী জেলার মুহুরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
সিলেট বিভাগের সারি গোয়াইন নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে এখনো বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। এ অববাহিকায় আগামী একদিন মাঝারি থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। ওই নদীর পানি সমতল আগামী তিনদিন পর্যন্ত বৃদ্ধি পেতে পারে। আগামী ৭২ ঘণ্টায় সিলেট জলার সারি গোয়াইন নদী, সুনামগঞ্জ জেলার যাদুকাটা নদী ও নেত্রকোনা জেলার সোমেশ্বরী নদী সতর্কসীমায় প্রবাহিত হতে পারে।
সুরমা-কুশিয়ারা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী তিনদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে। এ অববাহিকায় আগামী একদিন মাঝারি থেকে ভারী এবং দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন মাঝারি-ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা রয়েছে।
তিস্তা নদীর পানি সমতল বৃদ্ধি পাচ্ছে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে, যা আগামী দুদিন স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং তৃতীয় দিন বৃদ্ধি পেতে পারে।
ব্রহ্মপুত্র-যমুনা নদ-নদীর পানি সমতল হ্রাস পাচ্ছে। পানি সমতল হ্রাস আগামী একদিন পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে, দ্বিতীয় ও তৃতীয় দিন স্থিতিশীল থাকতে পারে ও তৎপরবর্তী দুদিন বৃদ্ধি পেতে পারে। তবে বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
গঙ্গা-পদ্মা নদীর পানি সমতল স্থিতিশীল আছে। নদীগুলোর পানি সমতল আগামী পাঁচদিন পর্যন্ত স্থিতিশীল থাকতে পারে এবং বিপৎসীমার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হতে পারে।
ঢাকা ও আশপাশের এলাকায় দুপুর পর্যন্ত আবহাওয়া শুষ্ক থাকতে পারে। সেই সঙ্গে তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা নেই বলে বলে জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
২ দিন আগেদেশের ছয় অঞ্চলের ওপর দিয়ে সর্বোচ্চ ৬০ কিলোমিটার বেগে ঝড়ের আভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এ সময় বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। সোমবার দুপুর ১টা পর্যন্ত দেশের অভ্যন্তরীণ নদীবন্দরগুলোর জন্য দেওয়া এক সতর্কবার্তায় এ তথ্য জানানো হয়।
৩ দিন আগেবাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি) এর ৬৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষ্যে আয়োজিত আলোচনা সভায় অংশ নিয়ে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বিএডিসি’র চেয়ারম্যান (গ্রেড-১) মো. রুহুল আমিন খান বলেন যে, দক্ষ কৃষি ব্যবস্থাপনা গড়ে তুলে টেকসই কৃষি নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণে বিএডিসি অনন্য ভূমিকা পালন করে যাচ্ছে।
৩ দিন আগেসারাদেশে শীতল হাওয়া বইতে শুরু করেছে। ইতোমধ্যে ২২ ডিগ্রিতে নেমেছে দেশের সর্বনিম্ন তাপমাত্রা। এই অবস্থার মধ্যেই দেশের ৩ বিভাগে বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে বর্ধিত ৫ দিনে বৃষ্টিপাতের প্রবণতা বাড়তে পারে বলেও দুঃসংবাদ দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর।
৪ দিন আগে