রাজধানীতে জলাবদ্ধতায় ভোগান্তি, অতিভারী বৃষ্টি থাকবে আরো তিনদিন

সরদার আনিছ
প্রকাশ : ০১ অক্টোবর ২০২৫, ২০: ১৯

আগামী ৫ অক্টোবর পর্যন্ত সারাদেশে টানা বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। এরমধ্যে বৃহস্পতিবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এই তিন দিন দেশে ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে। এসময় রাজধানীতেও ভারী থেকে অতিভারী বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা।

বুধবার আবহাওয়াবিদ ড. আবুল কালাম মল্লিক স্বাক্ষরিত বৃষ্টিপাতের সতর্কবার্তায় বলা হয়েছে, পশ্চিম মধ্য বঙ্গোপসার ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থিত সুস্পষ্ট লঘুচাপ এবং সক্রিয় মৌসুমি বায়ুর প্রভাবে পরবর্তী ৭২ ঘণ্টায় রংপুর, রাজশাহী, ঢাকা, ময়মনসিংহ, খুলনা, বরিশাল, চট্টগ্রাম ও সিলেট বিভাগের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টি হতে পারে।

বিজ্ঞাপন

ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির কারণে চট্টগ্রাম বিভাগের পাহাড়ি এলাকার কোথাও কোথাও ভূমিধ্বসের সম্ভাবনা রয়েছে। সেই সাথে ভারী বর্ষণজনিত কারণে ঢাকা ও চট্টগ্রাম মহানগরীর কোথাও কোথাও অস্থায়ীভাবে জলাবদ্ধতা তৈরি হতে পারে।

আবহাওয়া দপ্তরের ভাষায়-২৪ ঘণ্টায় ৪৪ থেকে ৮৮ মিলিমিটার বৃষ্টি হলে তা ভারি এবং ৮৮ মিলিমিটারের বেশি বৃষ্টি রেকর্ড হলে সেটিকে বলা হয়ে থাকে অতিভারি বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়াবিদ খোন্দকার হাফিজুর রহমান স্বাক্ষরিত অপর সামুদ্রিক সতর্কবার্তায় পশ্চিমমধ্য বঙ্গোপসাগর ও তৎসংলগ্ন এলাকায় অবস্থানরত সুস্পষ্ট লঘুচাপটি উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে একই এলাকায় নিম্নচাপে পরিণত হয়েছে। এটি বুধবার বিকাল ৩ টায় চট্টগ্রাম সমুদ্রবন্দর থেকে ৯১৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, কক্সবাজার সমুদ্রবন্দর থেকে ৮৬৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে, মোংলা সমুদ্র বন্দর থেকে ৮০০ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে এবং পায়রা সমুদ্রবন্দর থেকে ৭৯৫ কিলোমিটার দক্ষিণপশ্চিমে অবস্থান করছিল। এটি আরোও উত্তর-উত্তরপশ্চিম দিকে অগ্রসর ও ঘণীভূত হয়ে গভীর নিম্নচাপে পরিণত হতে পারে। এর প্রভাবে উত্তর বঙ্গোপসাগর এলাকায় বায়ুচাপের তারতম্যের আধিক্য বিরাজ করছে। উত্তর বঙ্গোপসাগর, বাংলাদেশের উপকূলীয় এলাকা ও সমুদ্র বন্দরসমূহের উপর দিয়ে দমকা কিংবা ঝড়ো হাওয়া বয়ে যেতে পারে।

নিম্নচাপ কেন্দ্রের ৪৪ কিলোমিটার এর মধ্যে বাতাসের একটানা সর্বোচ্চ গতিবেগ ঘণ্টায় ৪০ কিলোমিটার, যা দমকা অথবা ঝড়ো হাওয়ার আকারে ৫০ কিলোমিটার পর্যন্ত বৃদ্ধি পাচ্ছে। নিম্নচাপ কেন্দ্রের নিকটবর্তী এলাকায় সাগর উত্তাল রয়েছে।

চট্টগ্রাম, কক্সবাজার, মোংলা ও পায়রা সমুদ্র বন্দরসমূহকে তিন নম্বর পুনঃ তিন নম্বর স্থানীয় সতর্ক সংকেত দেখিয়ে যেতে বলা হয়েছে। উত্তর বঙ্গোপসাগরে অবস্থানরত মাছ ধরার নৌকা ও ট্রলারসমূহকে পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত উপকূলের কাছাকাছি থেকে সাবধানে চলাচল করতে বলা হয়েছে, যাতে স্বল্প সময়ের নোটিশে নিরাপদ আশ্রয়ে যেতে পারে।

মধ্যরাত থেকে টানা রাজধানীতে জলাবদ্ধতা

মঙ্গলবার মধ্যরাত থেকে টানা ছয় ঘণ্টা বৃষ্টিতে ডুবে যায় শহরের অনেক সড়ক। কোনো কোনো সড়কে বৃষ্টির পানির সঙ্গে মেশে ড্রেনের নোংরা পানিও। বুধবার সকালে এ নোংরা পানি মাড়িয়েই পথ চলতে হয় ঢাকাবাসীকে। বিশেষ করে রাজধানীর মিরপুর, নিউমার্কেট, আজিমপুর, বংশালসহ রাজধানী বিভিন্ন এলাকায় ব্যাপক জলাবদ্ধতায় সারাদিন দুর্ভোগ পোহাতে হয় নগরবাসীকে। ঢাকায় মঙ্গলবার দিবাগত রাত ১২টা থেকে বুধবার সকাল ৬টা পর্যন্ত ৬ ঘণ্টায় ১৩২ মিলিমিটার বৃষ্টি হয়। বুধবার সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ ২৪ ঘণ্টায় রাজধানীতে বৃষ্টি হয়েছে ১৪৩ মিলিমিটার। তবে সকাল ৬টায় আগের ২৪ ঘন্টায় ২০৬ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়, এটি এই সময়ে দেশের সর্বোচ্চ বৃষ্টি।

এদিকে রাজশাহী, রংপুর, চট্টগ্রাম ও ময়মনসিংহ বিভাগের বিভিন্ন এলাকায় ভারী বৃষ্টি হয়েছে।

আবহাওয়াবিদ শাহানাজ সুলতানা বলেন, পশ্চিম বঙ্গোপসাগরে একটি লঘুচাপ সৃষ্টি হয়েছে। এছাড়া একটি গভীর সঞ্চারণশীল মেঘমালারও সৃষ্টি হয়েছে। এর প্রভাবেই বৃষ্টি হচ্ছে।

বৃষ্টি, ঝোড়ো হাওয়া ও বজ্রপাতের এই প্রবণতা ৪ অক্টোবর পর্যন্ত দেশের বিভিন্ন স্থানে কমবেশি থাকতে পারে বলে জানিয়েছেন আবহাওয়াবিদ একেএম নাজমুল হক।

আমার দেশের খবর পেতে গুগল নিউজ চ্যানেল ফলো করুন

বিষয়:

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত