আদিবাসী বিতর্ক ও পার্বত্য চট্টগ্রামের ঐতিহাসিক পরিচয়

মো. জসিম উদ্দিন
প্রকাশ : ২৮ জানুয়ারি ২০২৫, ১০: ৪৮

পার্বত্য চট্টগ্রাম ঘিরে আমাদের বেশ কিছু সংকট রয়েছে। এর মধ্যে একটি হলো সেখানকার বিভিন্ন শ্রেণির মানুষের পরিচয় নিয়ে বিতর্ক। পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন উপজাতি সম্প্রদায় ২০০০ সাল থেকে নিজেদের আদিবাসী দাবি করে বিশ্ব আদিবাসী দিবস পালন শুরু করে।

এরপর তারা দেশের সমতলের বিভিন্ন উপজাতি ও তফসিলি জনগোষ্ঠীকেও এতে শামিল করে। এসব জনগোষ্ঠীকে একত্রে আদিবাসী আখ্যা দিয়ে বাংলাদেশ সরকারের কাছে স্বীকৃতি দাবি করে। এ নিয়ে তখনই বিতর্কের সৃষ্টি হয়।

বিজ্ঞাপন

ইংরেজি ‘Indigenous’ শব্দটির বাংলা ‘আদিবাসী’। ‘প্রাগৈতিহাসিক কাল থেকে কোনো এলাকার বিশেষ জনগোষ্ঠী যদি ওই এলাকায় বসবাস করে, তাহলে তাদের ওই এলাকার আদিবাসী হিসেবে গণ্য করা হয়।’ ‘Indigenous’ শব্দটির অর্থ হচ্ছে: ‘Nation born originating or produced naturally in a country, not imported.’ অর্থাৎ আদিবাসী হতে হলে অভিবাসী হওয়া চলবে না, বরং একটি দেশে প্রাচীনকাল থেকে উৎপত্তি হতে হবে।

এ ব্যাপারে আমেরিকার প্রখ্যাত নৃতত্ত্ববিদ লুইজ মর্গান বলেন: ‘The Aboriginals are the groups of human race who have been residing in a place from time immemorial. They are the true sons of the soil. (Morgan, An Introduction to Anthropology, 1972)’ – যদি কেউ নিজেকে আদিবাসী দাবি করে, তবে একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য থাকতে হবে যা হলো ‘Sons of the soil’ বা ‘ভূমিপুত্র’।

জাতিসংঘ থেকে UNPFII-এর (United Nation Permanent Forum for Indigenous Issues) মাধ্যমে কারা আদিবাসী হবে, তার একটি মানদণ্ড ঠিক করা হয়েছে। জাতিসংঘ কমিশনের স্পেশাল র‍্যাপোটিয়ার মার্টিনেজ কোবে যে সংজ্ঞা দিয়েছেন তাতে বলা হয়েছে, কোনো ভূখণ্ডের আদিবাসী সম্প্রদায়, জাতিগোষ্ঠী বা জাতি বলতে তাদের বোঝায়, যাদের ওই ভূখণ্ডে প্রাক-আগ্রাসন এবং প্রাক-উপনিবেশকাল থেকে বিকশিত সামাজিক ধারাসহ ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা রয়েছে, যারা নিজেদের ওই ভূখণ্ডে বা ভূখণ্ডের কিয়দংশে বিদ্যমান অন্যান্য সামাজিক জনগোষ্ঠী থেকে স্বতন্ত্র মনে করে।

সেইসঙ্গে তারা নিজস্ব সাংস্কৃতিক বৈশিষ্ট্য, সামাজিক প্রতিষ্ঠান ও আইন ব্যবস্থার ভিত্তিতে পূর্বপুরুষের ভূখণ্ড ও নৃতাত্ত্বিক পরিচয় ভবিষ্যৎ বংশধরদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ। এই সংজ্ঞায় মূলত তিনটি বিষয়ের অবতারণা করা হয়েছে, যা হলো—ক. কোনো উপনিবেশ স্থাপনের আগে থেকেই যদি ওই ভূখণ্ডে যারা বাস করছিল; খ. যারা ভূখণ্ডের নিজস্ব জাতিসত্তার সংস্কৃতি ধরে রেখেছে এবং তা ভবিষ্যৎ বংশধরদের হাতে তুলে দেওয়ার জন্য দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং গ. যারা নিজেদের স্বতন্ত্র মনে করে। এই সংজ্ঞাগুলোর আওতায় আন্তর্জাতিকভাবে খ্যাতিসম্পন্ন অধিক ভূ-রাজনীতি বিশ্লেষকরা সত্যিকার অর্থে কারা আদিবাসী হবে তার উদাহরণ দিয়ে বলেছেন, ‘খর্বাকৃতি, কোঁকড়ানো কেশবিশিষ্ট, স্ফীত চ্যাপ্টা নাক ও কৃষ্ণ বর্ণের বুমেরাংম্যানরা অস্ট্রেলিয়ার আদিবাসী, যারা আসল অ্যাবোরিজিন্যালস।

আর তারা ওখানকার ভূমিপুত্রও। ঠিক এভাবেই মাউরি নামের সংখ্যালঘু প্রকৃতিপূজারি নিউজিল্যান্ডের ক্ষুদ্র জনগোষ্ঠী ওই অঞ্চলের আদিবাসী। কিন্তু পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা এসব সংজ্ঞার অন্তর্ভুক্ত নয়। এছাড়া সব ঐতিহাসিক, নৃতাত্ত্বিক ও প্রত্নতাত্ত্বিক বিশ্লেষণ অনুযায়ী বাংলাদেশের উপজাতীয় জনগোষ্ঠীর কেউই বাংলাদেশে প্রাচীনকাল থেকে বসবাস করছে না। তাদের সবাই বহির্বিশ্ব বিশেষ করে ভারত ও মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে বিভিন্ন সময়ে।

এই অনুপ্রবেশও প্রাচীনকালে ঘটেনি। মাত্র কয়েকশ বছর আগে ভারত ও মিয়ানমার থেকে তারা বাংলাদেশে প্রবেশ করেছে। অথচ কিছু গবেষক ‘ইন্টারন্যাশনাল লেবার অরগানাইজেশন (আইএলও) কনভেনশন, ১৬৯’-এর আদিবাসী-বিষয়ক সংজ্ঞার অপব্যাখ্যা করে বাংলাদেশের ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও তফসিলি সম্প্রদায়কে আদিবাসী দাবি করছেন এবং তাদের উসকানি দিচ্ছেন। জাতিসংঘ ও এর অধিভুক্ত প্রতিষ্ঠান থেকে এ পর্যন্ত উপজাতি ও আদিবাসী বিষয়ে প্রধান তিনটি চার্টারের অস্তিত্ব পাওয়া যায়।

যেমন, ক. ১৯৫৭ সালের ৫ জুন অনুষ্ঠিত আইএলও’র ৪০তম অধিবেশনে প্রদত্ত – Indigenous and Tribal Populations Convention, 1957 (No. 107); খ. ১৯৮৯ সালের ৭ জুন অনুষ্ঠিত ৭৬তম অধিবেশনে প্রদত্ত – Indigenous and Tribal Peoples Convention, 1989 (No. 169); এবং গ. ২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর নিউইয়র্কে জাতিসংঘ সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে – The United Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples. এই আইএলও’র প্রথম চার্টার দুটি (ক ও খ) বিশেষভাবে লক্ষণীয়।

চার্টার দুটির শিরোনাম হচ্ছে—Indigenous and Tribal Populations Convention. অর্থাৎ আদিবাসী ও উপজাতি জনগোষ্ঠী-বিষয়ক কনভেনশন। সুতরাং এই কনভেনশনটি আদিবাসী ও উপজাতি-বিষয়ক স্বার্থসংশ্লিষ্ট। এখানে উপজাতি ও আদিবাসীদের জন্য আলাদা সংজ্ঞা নির্ধারণ করা হয়েছে। Indigenous and Tribal Peoples Convention, 1989 (No. 169)-এর আর্টিকল ১-এর (বি)-তে ট্রাইবাল বা উপজাতির সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘একটি দেশের মূল জনগোষ্ঠী থেকে সামাজিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিকভাবে ভিন্নতর, যারা তাদের নিজস্ব ঐতিহ্য, কৃষ্টি ও আইন দ্বারা সম্পূর্ণ বা আংশিকভাবে পরিচালিত তাদের উপজাতি বলা হয়।’

এখন আইএলও’র এই সংজ্ঞাটি যদি আমরা বাংলাদেশের চাকমা, মারমা, সাঁওতাল ও অন্যদের সঙ্গে বিচার করি তাহলে পরিষ্কার বোঝা যায় তারা উপজাতি। যেহেতু ‘ট্রাইব’ শব্দের বাংলা পরিভাষা উপজাতি। অন্যদিকে আমরা Indigenous পিপলের সংজ্ঞাটি বিশ্লেষণ করলে পাই—Indigenous and Tribal Peoples Convention, 1989 (No. 169)-এর আর্টিকল ১-এর (বি)-তে ইনডিজিন্যাস পিপল বা আদিবাসীর সংজ্ঞা দিতে গিয়ে বলা হয়েছে, ‘আদিবাসী তারা যারা একটি নির্দিষ্ট রাষ্ট্রে বংশানুক্রমে বসবাস করছে বা অধিকৃত হওয়া বা বর্তমান সীমানা নির্ধারণের আগে বা উপনিবেশ সৃষ্টির আগে থেকে বসবাস করছে।

যারা তাদের কিছু বা সকল নিজস্ব সামাজিক, রাজনৈতিক, সাংস্কৃতিক, অর্থনৈতিক ও আইনগত অধিকার ও প্রতিষ্ঠানগুলো ধরে রাখে।’ আইএলও কর্তৃক উপজাতি ও আদিবাসী সংজ্ঞার মূল পার্থক্য হচ্ছে নির্দিষ্ট রাষ্ট্রে বংশানুক্রমে বসবাস বা অধিকৃত হওয়া, বর্তমান সীমানা নির্ধারণের আগে পর্বগুলো মোটামুটি উপজাতিদের মতোই। অর্থাৎ একজন উপজাতি আদিবাসী হবেন কি হবেন না, তা উপরোক্ত সদর দপ্তরে অনুষ্ঠিত ৬১তম অধিবেশনে ‘The Nations Declaration on the Rights of Indigenous Peoples’ চার্টারে বলা হয়েছে, যা মূলত আদিবাসীদের স্বার্থসংশ্লিষ্ট, উপজাতিদের নয়। এই চার্টারটি এ পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ২৭টি দেশ অনুমোদন করেছে। ১৯৭২ সালের ২২ জুন বাংলাদেশ এই কনভেনশন অনুমোদন করেছিল।

পাকিস্তান ও ভারতও অনুমোদন করেছে। যদিও এরই মধ্যে আটটি দেশ এই কনভেনশনকে নিন্দা করে তা থেকে বেরিয়ে গেছে। অন্যদিকে Indigenous and Tribal Peoples Convention-1989, 169 নম্বর কনভেনশন পাস হলেও এখন পর্যন্ত বিশ্বের মাত্র ২৩টি দেশ এই কনভেনশন অনুমোদন করেছে। এর মধ্যে কনভেনশন-১০৭ থেকে বেরিয়ে আসা আটটি দেশও রয়েছে। উপমহাদেশের একমাত্র নেপাল ছাড়া আর কোনো দেশ এই কনভেনশন-১৬৯ অনুমোদন করেনি। যদিও কনভেনশন-১৬৯ কনভেনশন ১০৭-এর রূপান্তরিত রূপ, তবু সেটা আলাদা করে অনুমোদন করতে হবে। কেননা কনভেনশন-১৬৯ পাস হওয়ার ফলে কনভেনশন-১০৭-এর গুরুত্ব হারায়।

উল্লেখ করা প্রয়োজন, একটি আন্তর্জাতিক চার্টার কোনো দেশ অনুমোদন না করলে তা তার জন্য প্রযোজ্য নয়। এখানে একটি বিষয় আরো উল্লেখ্য যে, আইএলও কনভেনশন ১০৭ ও ১৬৯ যে দেশগুলো অনুমোদন করেছে, তাদের বেশিরভাগই আফ্রিকান ও দক্ষিণ আমেরিকান দেশ, যাদের প্রধান বা অন্যতম প্রধান জনগোষ্ঠী বা গোষ্ঠীগুলো আদিবাসী হিসেবে স্বীকৃত।

২০০৭ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর জাতিসংঘের ৬১তম অধিবেশনে আদিবাসী-বিষয়ক ঘোষণাপত্র উপস্থাপন করলে ১৪৩টি দেশ প্রস্তাবের পক্ষে, চারটি দেশ বিপক্ষে, ১১টি দেশ ভোটদানে বিরত এবং ৩৪টি দেশ অনুপস্থিত থাকে। ভোটদানে বিরত থাকা দেশগুলোর মধ্যে বাংলাদেশ অন্যতম। সুতরাং এর থেকে বোঝা যায়, এই চার্টারের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্ক আর রইল না। আর বাংলাদেশ সরকার বরাবরই বলে আসছে বাংলাদেশে কোনো আদিবাসী নেই। সুতরাং তারা যা দাবি করছে, তা ভিত্তিহীন ও অযৌক্তিক।

নৃতাত্ত্বিক ও আন্তর্জাতিক সংজ্ঞা অনুযায়ী যেমন পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতিরা আদিবাসী নন, তেমনি ইতিহাসের দৃষ্টিতেও তারা আদিবাসী নন। উপজাতিদের নিজস্ব যে লিখিত ইতিহাস পাওয়া যায়, তাতে স্পষ্টভাবে বলা হয়েছে, তাদের পূর্বপুরুষেরা অদূর অতীতে বাংলাদেশের সীমানার বাইরে প্রতিবেশী রাজ্য কিংবা অঞ্চল থেকে রাজনৈতিক কারণে বিভিন্ন সময় বিতাড়িত হয়ে বাংলাদেশ অঞ্চলে এসে বসবাস শুরু করেছে। তারা সবাই কোনো না কোনো ধর্মানুসারী ছিল, রাজ্যশাসন করত, প্রতিপক্ষের সঙ্গে যুদ্ধ করত, সভ্য জীবনযাপন করত এবং যুদ্ধে হেরে বাংলাদেশের কোনো না কোনো স্থানে আশ্রয় নিত।

তাদের মধ্যে চাকমা, মারমা ও ত্রিপুরা উল্লেখযোগ্য। স্বীকৃত সব নৃ-তত্ত্ববিদ ও সমাজবিজ্ঞানীদের মতে, তারা কোনোভাবেই আদিবাসী হিসেবে অভিহিত হতে পারে না। তারা বার্মা থেকে বিতাড়িত হয়ে চট্টগ্রাম তথা পার্বত্য চট্টগ্রামের অরণ্যে আশ্রয় নিয়েছে ১৭শ খ্রিস্টাব্দ ও ১৮শ খ্রিস্টাব্দের মাঝামাঝি সময় নাগাদ।

এছাড়া তাদের উৎপত্তি সম্পর্কে বিশেষভাবে বললে বলা যায়, যেমন চাকমা ভারত ও মিয়ানমারের চম্পকনগর, মারমা মিয়ানমার, খুমি মিয়ানমারের চীন প্রদেশ, খাসিয়া ভারতের আসাম, খিয়াং মিয়ানমারের আরাকান-ইয়োমা, তঞ্চঙ্গা মিয়ানমারের আরাকান, বম চীনের চিনলুং, মনিপুরী ভারতের মনিপুর, মুরং মিয়ানমারের আরাকান, কোচ ভারতের কুচবিহার, ত্রিপুরা চীনের ইয়াংসি ও হোয়াংহো নদীর উপত্যকা থেকে ভারতের আসাম, পাংখোয়া মিয়ানমারের চিন প্রদেশ, লুসাই ভারতের লুসাই হিল, গারো তিব্বত/ভারতের গারো হিলস প্রভৃতি স্থান থেকে বাংলাদেশে এসেছে।

উপরোক্ত সূত্রের আলোকে অবশ্যই বলা যায়, একমাত্র বাঙালিরাই এই এলাকার আদিবাসী, যারা ব্রিটিশ কলোনি স্থাপনের আগে সেই প্রাচীনকাল থেকেই বংশ পরম্পরায় ঐতিহাসিক ধারাবাহিকতা ও সামাজিকতা এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভাষাগত স্বাতন্ত্র্য বজায় রেখেছে। এজন্য বাঙালিরাই এ অঞ্চলের একমাত্র ভূমিপুত্র।

নৃতাত্ত্বিক ও ঐতিহাসিক বিশ্লেষণে এটা স্পষ্ট, পাহাড়ের বর্তমান ক্ষুদ্র গোষ্ঠীগুলো হলো অভিবাসী উপজাতি, আদিবাসী নয়। বহিরাগত হওয়ার কারণে ইংরেজ সরকার তাদের নিজ শাসনাধীন মনে করত না। ১৯০০ সালে পার্বত্য চট্টগ্রাম ম্যানুয়েলে ব্রিটিশরা এ অঞ্চলকে নন-রেগুলেটেড এরিয়া বা অশাসিত এলাকা হিসেবে উল্লেখ করে। ১৯৬২ সালে পাকিস্তান সরকার এলাকাটিকে উপজাতি এলাকা হিসেবে অভিহিত করে। ১৯৯৭ সালে যে শান্তিচুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছে, তাতেও স্থান পায়নি ‘আদিবাসী’ শব্দটি। এমনকি এসব ক্ষুদ্র নৃ-গোষ্ঠীগুলো তাদের অধিকার আদায়ের দীর্ঘ বছরের সংগ্রামেও নিজেদের আদিবাসী হিসেবে উল্লেখ করেনি।

লেখক : শিক্ষার্থী, রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়

এমবি

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত