ড. আবদুল আলীম তালুকদার
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্বিঘ্নে সব মত-পথ, ধর্মমতের জনগণের সঙ্গে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করতে পারছি, এ জন্য স্বাচ্ছন্দ্য ও গৌরববোধ করছি। ১৫টি বছর মহান স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে হাইজ্যাক করে বিকৃত ইতিহাস রচনা করে জাতিকে বিভ্রান্ত এবং বিভক্ত করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। অপরাজনীতির পথ অবলম্বন করা থেকে শুরু করে জনগণের মৌল-মানবিক অধিকার হরণসহ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে দলীয়করণ করতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছিল। জাতির মীমাংসিত ইতিহাসকে বিকৃত করে তাদের পদলেহনকারী জ্ঞানপাপীদের দ্বারা আওয়ামী ও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ঘরানার মনগড়া ইতিহাস রচনা করে তরুণ প্রজন্মকে বিপথে পরিচালিত করতে তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু জেন-জি প্রজন্ম জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে। আজ সময় এসেছে পতিত ফ্যাসিবাদ যাতে এ দেশে আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা। কারণ তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়ালে আবার আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মৌল-মানবিক অধিকার, ইতিহাস-ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হবে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবার বিদেশে অর্থ পাচার, চুরি-ডাকাতি, লুটপাটসহ জনগণের অধিকার হরণে লিপ্ত হবে, যা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কারোরই কাম্য নয়।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত গৌরবের, অত্যন্ত আনন্দের। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের পর থেকেই ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় আমাদের। অবশেষে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে বিজয় অর্জিত হয় এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা, রাজারবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানসহ সারাদেশে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে, তখন এর আকস্মিকতায় দিশাহারা হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। সে সময় সাড়ে ৭ কোটি বাঙালিকে অরক্ষিত রেখে ও বিপদের মুখে ফেলে আওয়ামী লীগ এবং বাম রাজনীতির অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান। আবার কেউ কেউ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি হানাদাররা ঢাকায় আক্রমণের পর চট্টগ্রামে কর্মরত মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। তিনি তার সহকর্মী বাঙালি সেনা অফিসারদের নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে তিন সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। তিনি সেনাসদস্যদের সংগঠিত করে পরে তিনটি সেক্টরের সমন্বয়ে জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পরপরই দেশের বীর সন্তানরা বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৯ মাস মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের জান কোরবান বৃথা যায়নি। তাদের রক্তে বাংলার মাটি শুধু যে উর্বর হয়েছে তা-ই নয়, তাদের একেক ফোঁটা রক্ত রক্তবীজের মতো সৃষ্টি করে একেকজন অজেয় সৈনিক তৈরি করেছে। শত্রুকবলিত বাংলাদেশ হানাদারমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়ে গেছেন জীবনবাজি রেখে। এ জন্যই তো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি হয়ে ওঠে স্বতন্ত্র। প্রতিবেশী দেশ ভারত বা পাকিস্তানের জন্ম যেভাবে হয়েছে, তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সৃষ্টি হলো। কোনো ধরনের দেনদরবার বা গোলটেবিল বৈঠকের সিদ্ধান্তের ফল বাংলাদেশ নয়। নয় কোনো কূটকৌশলের ফল। নয় কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দাক্ষিণ্য। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ জন্মলাভ করল মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে। সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ঘন অন্ধকার কাটিয়ে উঠে উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হলো স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন পূর্ববাংলার জনগণ (ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-মজুর, অখ্যাত পল্লির দুরন্ত তরুণ, নগরীর হাজারো বস্তির উদ্ধত যুবক, মহানগরীর যুবশক্তি, মিল-ফ্যাক্টরির কর্মী, বিভিন্ন পেশার প্রশিক্ষিত নাগরিক)। জাতীয় জনসমাজ বলতে যাদের বোঝায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তারাই। অংশগ্রহণ করেন কোনো দলের সদস্য হিসেবে নয়। নয় কোনো দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মী হিসেবে। কোনো দলের অঙ্গীকারবদ্ধ অনুসারী হিসেবে নয়।
স্বাধীনতা শব্দটির তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। স্বাধীনতা মানে নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আয়োজন নয়; স্বাধীনতা হলো স্বাধীন রাষ্ট্রে সার্বভৌম জাতি হিসেবে টিকে থাকার আয়োজন। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছা প্রকাশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি তথা শৃঙ্খলমুক্ত জীবনাচারকে বোঝায়। একটি দেশের স্বাধীনতা সেদিনই সার্থক হয়, যেদিন সে দেশের জনগণ প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করে। স্বাধীনতা যেকোনো জাতির পরম আকাঙ্ক্ষিত বিষয়, আরাধ্য ধন। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ, গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ গঠন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, জানমালের নিরাপত্তা বিধান, ধর্ম পালন, নিজস্ব সংস্কৃতি-মূল্যবোধ-বিশ্বাসের অবারিত চর্চা নিশ্চিত করা ইত্যাদি সাধারণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিটি জাতির জন্য অপরিহার্য।
অকুতোভয় বীর বাঙালিরা বুকভরা স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনে লড়েছিল। তারা এমন একটি কল্যাণকামী স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিল, যা প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু আদর্শের ভিত্তির ওপর। স্বাধীনতা দিবস আবার আমাদের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে সাগরসম রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেসব আদর্শের দিকে ফিরে তাকানোর দাবি নিয়ে। স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল উদার, কল্যাণমুখী, মানবিক, প্রগতিশীল ও ইনসাফভিত্তিক স্বতন্ত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মানুষের মৌলিক ও মানবিক অধিকার এবং ন্যায়সংগত অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
আমাদের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিনটি আমাদের জীবনে বয়ে আনে একই সঙ্গে আনন্দ-বেদনার অম্ল-মধুর অনুভূতি; একদিকে হারানোর কষ্ট, অন্যদিকে প্রাপ্তির আনন্দ। তবে শেষ পর্যন্ত সর্বস্ব হারিয়েও স্বাধীনতাপ্রাপ্তির অপার আনন্দই বড় হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালির কাছে। গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি প্রতিবছর আসে আত্মত্যাগ ও আত্মপরিচয়ের বার্তা নিয়ে। স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। নব উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আসে প্রতিবছর এই দিন।
নাগরিক জীবনে স্বাধীনতার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সর্বোচ্চ মর্যাদাদান করা উচিত সবার। স্বাধীনতার অর্জন যাতে কোনোভাবেই ম্লান না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা উচিত প্রতিটি নাগরিকের। মহান স্বাধীনতা দিবস শুধু স্মৃতিচারণ নয়, জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা অর্থবহ, তাৎপর্যময় করে তোলার পাশাপাশি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে অঙ্গীকার করার দিনও। স্বাধীনতা অর্জন যত কঠিন, স্বাধীনতা রক্ষা করা তার চেয়ে আরো বেশি কঠিন। চলমান বিশ্ব প্রেক্ষাপট এবং আমাদের বাস্তবতায় এ বিষয়টি নানাভাবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতির স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা এবং জাতীয় সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
দেখতে দেখতে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রম করে চুয়ান্নতম বর্ষে পদার্পণ করেছি। স্বাধীনতা লাভের অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পার করলেও আজও দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ এবং মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে আমরা পারিনি। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পর আজকের নতুন বাংলাদেশেও নৈতিকতার অবক্ষয়, তরুণ-যুবাদের অসৎসঙ্গ, মোবাইল ও ইন্টারনেট আসক্তি, মাদকাসক্তি, মূল্যবোধের অবক্ষয়, হত্যা-ধর্ষণ, ঘুস প্রভৃতি অনৈতিক কার্যকলাপ স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লাগাম টেনে ধরে আছে।
তবে বর্তমান সংকট উত্তরণের জন্য যে কাজটি সর্বাগ্রে করা উচিত বলে মনে করি, তা হলো শিক্ষাব্যবস্থার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক স্খলন থেকে বাঁচানোর থেকে ভালো বিকল্প কোনো পথ আছে বলে আমার জানা নেই। যেহেতু বিশ্বের সব ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবজাতিকে খারাপ-অশ্লীল-অন্যায় কাজ থেকে বিরত রেখে ন্যায় ও মানবীয় পথে পরিচালিত করা। সে জন্য যার যার ধর্মীয় রীতিনীতি শিক্ষাগ্রহণ ও প্রত্যেকের নিজ জীবনে তা বাস্তবায়ন ছাড়া সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনা অসম্ভব।
সবশেষে আর একটি আশাব্যঞ্জক কথা উল্লেখ করে এ লেখার ইতি টানছি; আর তা হলো, আমাদের বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত সচেতন ও স্বাধীনতার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। যার প্রমাণ আমরা পেয়েছি সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া জুলাই বিপ্লবে। এই প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মন্ত্রে দীক্ষিত করতে হবে। এ জন্য তাদের সামনে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে তুলে ধরতে হবে। পরস্পরে কাদা ছোড়াছুড়ি পরিহার করে দল কিংবা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে জনকল্যাণমুখী রাজনীতিচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি জননী জন্মভূমিকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে নিজ স্বার্থকে বড় করে না দেখে দেশের কল্যাণে, দেশের আপামর জনগণের কল্যাণে মিলেমিশে কাজ করতে হবে; তবেই না গড়ে উঠবে ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও কল্যাণকামী এক মানবিক বাংলাদেশ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, শেরপুর
ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের পতনের পর নতুন বাংলাদেশে প্রথমবারের মতো নির্বিঘ্নে সব মত-পথ, ধর্মমতের জনগণের সঙ্গে মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস উদযাপন করতে পারছি, এ জন্য স্বাচ্ছন্দ্য ও গৌরববোধ করছি। ১৫টি বছর মহান স্বাধীনতা দিবসসহ বিভিন্ন জাতীয় দিবস ও মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাসকে হাইজ্যাক করে বিকৃত ইতিহাস রচনা করে জাতিকে বিভ্রান্ত এবং বিভক্ত করেছিল ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকার। অপরাজনীতির পথ অবলম্বন করা থেকে শুরু করে জনগণের মৌল-মানবিক অধিকার হরণসহ রাষ্ট্রের সব ক্ষেত্রে দলীয়করণ করতে তারা মরিয়া হয়ে উঠেছিল। জাতির মীমাংসিত ইতিহাসকে বিকৃত করে তাদের পদলেহনকারী জ্ঞানপাপীদের দ্বারা আওয়ামী ও তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ ঘরানার মনগড়া ইতিহাস রচনা করে তরুণ প্রজন্মকে বিপথে পরিচালিত করতে তারা সর্বশক্তি প্রয়োগ করেছিল। কিন্তু জেন-জি প্রজন্ম জনগণকে সঙ্গে নিয়ে ফ্যাসিবাদের আস্তানা গুঁড়িয়ে দিয়ে তাদের ঝেঁটিয়ে বিদায় করেছে। আজ সময় এসেছে পতিত ফ্যাসিবাদ যাতে এ দেশে আর মাথা উঁচু করে দাঁড়াতে না পারে, সেদিকে সজাগ দৃষ্টি রাখা। কারণ তারা আবার মাথাচাড়া দিয়ে দাঁড়ালে আবার আমাদের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, মৌল-মানবিক অধিকার, ইতিহাস-ঐতিহ্য ভূলুণ্ঠিত হবে। আওয়ামী সন্ত্রাসীরা আবার বিদেশে অর্থ পাচার, চুরি-ডাকাতি, লুটপাটসহ জনগণের অধিকার হরণে লিপ্ত হবে, যা এই পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে কারোরই কাম্য নয়।
২৬ মার্চ মহান স্বাধীনতা ও জাতীয় দিবস। আমাদের প্রিয় মাতৃভূমি বাংলাদেশের জনগণের কাছে এই দিনটি অত্যন্ত গৌরবের, অত্যন্ত আনন্দের। ১৯৪৭ সালে ভারতবর্ষ ভাগের পর থেকেই ভাষা আন্দোলন, স্বায়ত্তশাসন ও স্বাধিকার আন্দোলনের পথ ধরে ১৯৭১ সালে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে অবতীর্ণ হতে হয় আমাদের। অবশেষে দীর্ঘ ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী সংগ্রাম ও অনেক ত্যাগ-তিতিক্ষার বিনিময়ে বিজয় অর্জিত হয় এবং বিশ্ব মানচিত্রে স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশের অভ্যুদয় ঘটে।
পাকিস্তানি বাহিনী ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাতে যখন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়, পিলখানা, রাজারবাগসহ ঢাকার বিভিন্ন স্থানসহ সারাদেশে হত্যাযজ্ঞে মেতে ওঠে, তখন এর আকস্মিকতায় দিশাহারা হয়ে পড়েন সাধারণ মানুষ। সে সময় সাড়ে ৭ কোটি বাঙালিকে অরক্ষিত রেখে ও বিপদের মুখে ফেলে আওয়ামী লীগ এবং বাম রাজনীতির অনেক নেতা আত্মগোপনে চলে যান। আবার কেউ কেউ ভারতে আশ্রয় গ্রহণ করেন। ২৬ মার্চ পাকিস্তানি হানাদাররা ঢাকায় আক্রমণের পর চট্টগ্রামে কর্মরত মেজর জিয়াউর রহমান বিদ্রোহ করে ২৭ মার্চ চট্টগ্রামের কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে স্বাধীনতার ঐতিহাসিক ঘোষণা দেন। তিনি তার সহকর্মী বাঙালি সেনা অফিসারদের নিয়ে স্বাধীনতা যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগর সরকার গঠিত হলে তিন সেক্টর কমান্ডার নিযুক্ত হন। তিনি সেনাসদস্যদের সংগঠিত করে পরে তিনটি সেক্টরের সমন্বয়ে জেড ফোর্সের অধিনায়ক হিসেবে যুদ্ধ পরিচালনা করেন। পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর হামলা শুরুর পরপরই দেশের বীর সন্তানরা বিভিন্ন স্থানে প্রতিরোধযুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়েন। ৯ মাস মরণপণ সংগ্রামের মধ্য দিয়ে অর্জিত হয় চিরকাঙ্ক্ষিত স্বাধীনতা।
১৯৭১ সালের মহান মুক্তিযুদ্ধে যারা আত্মাহুতি দিয়েছেন, তাদের জান কোরবান বৃথা যায়নি। তাদের রক্তে বাংলার মাটি শুধু যে উর্বর হয়েছে তা-ই নয়, তাদের একেক ফোঁটা রক্ত রক্তবীজের মতো সৃষ্টি করে একেকজন অজেয় সৈনিক তৈরি করেছে। শত্রুকবলিত বাংলাদেশ হানাদারমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত তারা লড়ে গেছেন জীবনবাজি রেখে। এ জন্যই তো একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধের প্রকৃতি হয়ে ওঠে স্বতন্ত্র। প্রতিবেশী দেশ ভারত বা পাকিস্তানের জন্ম যেভাবে হয়েছে, তা থেকে সম্পূর্ণ ভিন্ন প্রক্রিয়ায় বাংলাদেশের সৃষ্টি হলো। কোনো ধরনের দেনদরবার বা গোলটেবিল বৈঠকের সিদ্ধান্তের ফল বাংলাদেশ নয়। নয় কোনো কূটকৌশলের ফল। নয় কোনো সাম্রাজ্যবাদী শক্তির দাক্ষিণ্য। স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ জন্মলাভ করল মুক্তিযুদ্ধের রক্তাক্ত প্রান্তরে। সীমাহীন ত্যাগের বিনিময়ে ঘন অন্ধকার কাটিয়ে উঠে উজ্জ্বল আলোয় উদ্ভাসিত হলো স্বাধীন-সার্বভৌম বাংলাদেশ।
এই লড়াইয়ে নেতৃত্ব দিয়েছেন পূর্ববাংলার জনগণ (ছাত্র-শিক্ষক, কৃষক-মজুর, অখ্যাত পল্লির দুরন্ত তরুণ, নগরীর হাজারো বস্তির উদ্ধত যুবক, মহানগরীর যুবশক্তি, মিল-ফ্যাক্টরির কর্মী, বিভিন্ন পেশার প্রশিক্ষিত নাগরিক)। জাতীয় জনসমাজ বলতে যাদের বোঝায় একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধে অংশগ্রহণ করেন তারাই। অংশগ্রহণ করেন কোনো দলের সদস্য হিসেবে নয়। নয় কোনো দলের আদর্শে অনুপ্রাণিত কর্মী হিসেবে। কোনো দলের অঙ্গীকারবদ্ধ অনুসারী হিসেবে নয়।
স্বাধীনতা শব্দটির তাৎপর্য অত্যন্ত গভীর ও ব্যাপক। স্বাধীনতা মানে নতুন একটি রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার আয়োজন নয়; স্বাধীনতা হলো স্বাধীন রাষ্ট্রে সার্বভৌম জাতি হিসেবে টিকে থাকার আয়োজন। স্বাধীনতা মানে ইচ্ছা প্রকাশের স্বাধীনতা, মতপ্রকাশের স্বাধীনতা, রাজনীতির স্বাধীনতা, বাকস্বাধীনতা, অর্থনৈতিক মুক্তি তথা শৃঙ্খলমুক্ত জীবনাচারকে বোঝায়। একটি দেশের স্বাধীনতা সেদিনই সার্থক হয়, যেদিন সে দেশের জনগণ প্রকৃত অর্থে গণতান্ত্রিক পরিবেশে নিজেদের নাগরিক অধিকার নিয়ে মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর ক্ষমতা অর্জন করে। স্বাধীনতা যেকোনো জাতির পরম আকাঙ্ক্ষিত বিষয়, আরাধ্য ধন। আত্মনিয়ন্ত্রণের অধিকার লাভ, গণতান্ত্রিক সুশাসন প্রতিষ্ঠা, ন্যায়নীতিভিত্তিক সমাজ গঠন, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন, জানমালের নিরাপত্তা বিধান, ধর্ম পালন, নিজস্ব সংস্কৃতি-মূল্যবোধ-বিশ্বাসের অবারিত চর্চা নিশ্চিত করা ইত্যাদি সাধারণ জাতীয় আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের জন্য স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব প্রতিটি জাতির জন্য অপরিহার্য।
অকুতোভয় বীর বাঙালিরা বুকভরা স্বপ্ন-আশা-আকাঙ্ক্ষা নিয়ে ১৯৭১ সালের রণাঙ্গনে লড়েছিল। তারা এমন একটি কল্যাণকামী স্বাধীন রাষ্ট্র চেয়েছিল, যা প্রতিষ্ঠিত হবে কিছু আদর্শের ভিত্তির ওপর। স্বাধীনতা দিবস আবার আমাদের দ্বারপ্রান্তে উপনীত হয়েছে সাগরসম রক্তের বিনিময়ে অর্জিত সেসব আদর্শের দিকে ফিরে তাকানোর দাবি নিয়ে। স্বাধীনতাযুদ্ধের মূল উদ্দেশ্য ছিল উদার, কল্যাণমুখী, মানবিক, প্রগতিশীল ও ইনসাফভিত্তিক স্বতন্ত্র গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা। মানুষের মৌলিক ও মানবিক অধিকার এবং ন্যায়সংগত অধিকার নিশ্চিত করার মাধ্যমে জাতীয় পরিচয় প্রতিষ্ঠা, শোষণ, বৈষম্য, অন্যায়ের অবসান ঘটিয়ে ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত একটি সুখী-সমৃদ্ধ সমাজ প্রতিষ্ঠার স্বপ্ন ছিল স্বাধীনতার অন্যতম প্রধান উদ্দেশ্য।
আমাদের জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা দিবসের গুরুত্ব ও তাৎপর্য অপরিসীম। এ দিনটি আমাদের জীবনে বয়ে আনে একই সঙ্গে আনন্দ-বেদনার অম্ল-মধুর অনুভূতি; একদিকে হারানোর কষ্ট, অন্যদিকে প্রাপ্তির আনন্দ। তবে শেষ পর্যন্ত সর্বস্ব হারিয়েও স্বাধীনতাপ্রাপ্তির অপার আনন্দই বড় হয়ে ওঠে প্রতিটি বাঙালির কাছে। গৌরবোজ্জ্বল এই দিনটি প্রতিবছর আসে আত্মত্যাগ ও আত্মপরিচয়ের বার্তা নিয়ে। স্মরণ করিয়ে দেয় আমাদের দায়িত্ব-কর্তব্য। নব উদ্যমে সামনে এগিয়ে যাওয়ার অনুপ্রেরণা ও দিকনির্দেশনা নিয়ে আসে প্রতিবছর এই দিন।
নাগরিক জীবনে স্বাধীনতার মতো অতি গুরুত্বপূর্ণ বিষয়কে সর্বোচ্চ মর্যাদাদান করা উচিত সবার। স্বাধীনতার অর্জন যাতে কোনোভাবেই ম্লান না হয়, সেদিকে বিশেষভাবে লক্ষ রাখা উচিত প্রতিটি নাগরিকের। মহান স্বাধীনতা দিবস শুধু স্মৃতিচারণ নয়, জাতীয় জীবনে স্বাধীনতা অর্থবহ, তাৎপর্যময় করে তোলার পাশাপাশি স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব সংরক্ষণে অঙ্গীকার করার দিনও। স্বাধীনতা অর্জন যত কঠিন, স্বাধীনতা রক্ষা করা তার চেয়ে আরো বেশি কঠিন। চলমান বিশ্ব প্রেক্ষাপট এবং আমাদের বাস্তবতায় এ বিষয়টি নানাভাবে বিবেচিত হওয়ার সুযোগ রয়েছে। জাতির স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষা বাস্তবায়নের মাধ্যমে জাতীয় নিরাপত্তা এবং জাতীয় সমৃদ্ধি নিশ্চিত করা সম্ভব।
দেখতে দেখতে আমরা স্বাধীনতার সুবর্ণজয়ন্তী অতিক্রম করে চুয়ান্নতম বর্ষে পদার্পণ করেছি। স্বাধীনতা লাভের অর্ধশতাব্দীরও বেশি সময় পার করলেও আজও দারিদ্র্য ও ক্ষুধামুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ শান্তিপূর্ণ এবং মানবিক সমাজ প্রতিষ্ঠা করতে আমরা পারিনি। ফ্যাসিস্ট সরকার বিদায়ের পর আজকের নতুন বাংলাদেশেও নৈতিকতার অবক্ষয়, তরুণ-যুবাদের অসৎসঙ্গ, মোবাইল ও ইন্টারনেট আসক্তি, মাদকাসক্তি, মূল্যবোধের অবক্ষয়, হত্যা-ধর্ষণ, ঘুস প্রভৃতি অনৈতিক কার্যকলাপ স্বাধীনতার স্বপ্ন বাস্তবায়নের লাগাম টেনে ধরে আছে।
তবে বর্তমান সংকট উত্তরণের জন্য যে কাজটি সর্বাগ্রে করা উচিত বলে মনে করি, তা হলো শিক্ষাব্যবস্থার সর্বস্তরে ধর্মীয় ও নৈতিক শিক্ষাগ্রহণকে অগ্রাধিকার দিতে হবে। আমাদের তরুণ প্রজন্মকে নৈতিক স্খলন থেকে বাঁচানোর থেকে ভালো বিকল্প কোনো পথ আছে বলে আমার জানা নেই। যেহেতু বিশ্বের সব ধর্মের মূলমন্ত্র হলো মানবজাতিকে খারাপ-অশ্লীল-অন্যায় কাজ থেকে বিরত রেখে ন্যায় ও মানবীয় পথে পরিচালিত করা। সে জন্য যার যার ধর্মীয় রীতিনীতি শিক্ষাগ্রহণ ও প্রত্যেকের নিজ জীবনে তা বাস্তবায়ন ছাড়া সমাজে শান্তি ফিরিয়ে আনা অসম্ভব।
সবশেষে আর একটি আশাব্যঞ্জক কথা উল্লেখ করে এ লেখার ইতি টানছি; আর তা হলো, আমাদের বর্তমান তরুণ প্রজন্ম অত্যন্ত সচেতন ও স্বাধীনতার ব্যাপারে যথেষ্ট আগ্রহী। যার প্রমাণ আমরা পেয়েছি সাম্প্রতিককালে ঘটে যাওয়া জুলাই বিপ্লবে। এই প্রজন্মকে স্বাধীনতার চেতনায় উদ্বুদ্ধ করে দেশকে এগিয়ে নেওয়ার মন্ত্রে দীক্ষিত করতে হবে। এ জন্য তাদের সামনে স্বাধীনতার সঠিক ইতিহাস ও মুক্তিযুদ্ধের লক্ষ্য এবং উদ্দেশ্য স্পষ্ট করে তুলে ধরতে হবে। পরস্পরে কাদা ছোড়াছুড়ি পরিহার করে দল কিংবা ব্যক্তিস্বার্থের ঊর্ধ্বে ওঠে জনকল্যাণমুখী রাজনীতিচর্চার অভ্যাস গড়ে তুলতে হবে। পাশাপাশি জননী জন্মভূমিকে মন-প্রাণ দিয়ে ভালোবেসে নিজ স্বার্থকে বড় করে না দেখে দেশের কল্যাণে, দেশের আপামর জনগণের কল্যাণে মিলেমিশে কাজ করতে হবে; তবেই না গড়ে উঠবে ক্ষুধামুক্ত, দুর্নীতিমুক্ত সুখী-সমৃদ্ধ ও কল্যাণকামী এক মানবিক বাংলাদেশ।
লেখক : সহযোগী অধ্যাপক, শেরপুর সরকারি মহিলা কলেজ, শেরপুর
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
১৬ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
১৭ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
১৭ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
২ দিন আগে