মো. তৌহিদুল আলম
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর সম্প্রতি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, দেশের ব্যাংক খাত এখন যোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও দক্ষ সিনিয়র নেতৃত্বের ঘাটতিতে ভুগছে। তার এই মন্তব্য জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে এ কথা বলার অবকাশ রাখে না, এই নেতৃত্ব সংকট একদিনে তৈরি হয়নি; এটি বহু বছরের অবিন্যস্ত শাসন, দুর্বল তদারকি ও নৈতিক অবক্ষয়ের ফল।
দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ম ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার ফল
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের আজকের সংকটের মূল শেকড় নিহিত রয়েছে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, রাজনৈতিক প্রভাব, বোর্ডপর্যায়ে দুর্নীতি ও পেশাগত যোগ্যতার ঘাটতিতে। অনেক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের নিয়ে, যাদের ব্যাংকিং জ্ঞান, নৈতিক মান বা দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ভাবনা নেই। রাজনৈতিক যোগাযোগ ও ব্যবসায়িক স্বার্থ প্রায়ই যোগ্যতার চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফলে বোর্ড নিজেই পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ঋণ অনুমোদন, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি কিংবা ক্রয়—এসব ক্ষেত্রেও অতি হস্তক্ষেপ দেখা যায়। এর ফলে এমডি ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের স্বাধীনতা এবং জবাবদিহি দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর মেধাবী কর্মকর্তারা ধীরে ধীরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও তদারকির দুর্বল ভূমিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফিট অ্যান্ড প্রপার’ নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও অতীতে তা প্রায়ই যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। কিছু ব্যাংকের বোর্ড ও শীর্ষপর্যায়ে এমন ব্যক্তিরা দায়িত্বে থেকেছেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির দুর্বলতা, বিলম্বিত সিদ্ধান্ত ও নরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনেক সময় ভুল বার্তা দিয়েছে—যেন অনিয়ম করেও পার পাওয়া সম্ভব। এর ফলে সততা এবং নৈতিকতার ভিত্তি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়েছে, যার পরিণতিতে আজ দেখা যাচ্ছে নেতৃত্বে শূন্যতা ও আস্থার সংকট।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রিয়পাত্র সংস্কৃতি
সমস্যাটি শুধু বোর্ডে সীমাবদ্ধ নয়। অনেক এমডি ও শীর্ষ নির্বাহী নিজের অবস্থান ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। দক্ষ, সৎ এবং ভিন্নমত পোষণকারী কর্মকর্তাদের প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়েছে; বরং আনুগত্য ও ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই পদোন্নতি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল মানদণ্ড করা হয়েছে।
এ ধরনের প্রিয়পাত্র সংস্কৃতি ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরে ন্যায়বোধ ও উদ্যম ধ্বংস করেছে। যখন সততা মূল্যহীন হয় এবং আনুগত্য পুরস্কৃত হয়, তখন প্রকৃত নেতৃত্ব আর বিকশিত হয় না—শুধু ভয়ের সংস্কৃতি টিকে থাকে।
নেতৃত্ব বিকাশে দীর্ঘ অবহেলা
আমাদের ব্যাংকগুলো আকারে বড় হয়েছে, কিন্তু নেতৃত্ব বিকাশে বিনিয়োগ অত্যন্ত সীমিত। এখনো পর্যন্ত বেশির ভাগ ব্যাংকে কোনো পরিকল্পিত উত্তরাধিকার (succession planning) বা নেতৃত্ব বিকাশ কর্মসূচি নেই। মধ্যমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা দেওয়া, পরামর্শদাতা (mentor) নিয়োগ, কিংবা উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ—এসব উদ্যোগ প্রায় অনুপস্থিত।
ফলে, যখন কোনো ব্যাংকের এমডি পদ শূন্য হন, তখন উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এভাবে নেতৃত্বের পাইপলাইন শূন্য হয়ে গেছে, যা আজকের বাস্তব সংকটের মূল কারণ।
অন্তর্বর্তী সরকারের বোর্ড সংস্কারÑআশার আলো
তবে সাম্প্রতিক সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করেছে এবং আরো কয়েকটি ব্যাংকে নানা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে ও নিচ্ছে।
এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এটি ইঙ্গিত দেয়, দীর্ঘদিনের অরাজক ও প্রভাবনির্ভর কাঠামো থেকে ব্যাংক খাত ধীরে ধীরে সুশাসন ও ন্যায়ভিত্তিক কাঠামোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যদি এই সংস্কার প্রক্রিয়া ধারাবাহিকতা পায় এবং নিয়োগে মেধা, অভিজ্ঞতা ও সততাকে প্রধান মানদণ্ড করা হয়, তবে ব্যাংক খাতের পুনর্জাগরণের ভিত রচিত হতে পারে।
কী করতে হবে এখন
এই সেক্টরকে পুনরুজ্জীবিত করতে কিছু মৌলিক পদক্ষেপ অপরিহার্যÑ
# বোর্ড গঠনে যোগ্যতা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করা—পরিচালক হতে হলে নির্দিষ্ট পেশাগত যোগ্যতা এবং সুনাম থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে
# মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব নির্বাচন—এমডি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগে স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক ও প্রকাশ্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
# ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে জবাবদিহি কাঠামো—শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের জন্য আচরণবিধি, স্বাধীন অডিট এবং হুইসেলব্লোয়ার সুরক্ষা কার্যকর করতে হবে।
# নেতৃত্ব বিকাশে বিনিয়োগ—প্রতিটি ব্যাংকে নেতৃত্ব উন্নয়ন কেন্দ্র বা সহযোগী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে হবে এবং কার্যকর নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
# নিয়ন্ত্রকের স্বাধীনতা ও দৃঢ়তা—বাংলাদেশ ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে শক্ত হাতে নিয়ম প্রয়োগে সক্ষম হতে হবে।
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে নেতৃত্ব সংকট আজকের সৃষ্টি নয়; এটি দশকের পর দশক ধরে চলা অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পরিণতি। তবে আশার বিষয় হলো—বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক অবশেষে বোর্ড সংস্কার ও তদারকি জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে।
যদি এই উদ্যোগগুলো ধারাবাহিকতা পায় এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়, সততা ও মেধাকে মূল্য দেওয়া হয়, তবে ব্যাংক খাতে নতুন আস্থার যুগ শুরু হতে পারে।
অবিন্যস্ত ও আস্থাহীন এক কাঠামো থেকে পেশাদার, জবাবদিহিমূলক ও নৈতিক ব্যাংকব্যবস্থার দিকে যাওয়ার এটাই হতে পারে বাংলাদেশের ‘লিডারশিপ রিসেট’—একটি নতুন সূচনা।
লেখক : সিনিয়র ফ্যাকাল্টি ও হেড অব লার্নিং ফ্যাসিলিটেশন উইং, এমটিবি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এমটিবিটিআই)
বাংলাদেশ ব্যাংকের বর্তমান গভর্নর সম্প্রতি প্রকাশ্যে স্বীকার করেছেন, দেশের ব্যাংক খাত এখন যোগ্য ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও দক্ষ সিনিয়র নেতৃত্বের ঘাটতিতে ভুগছে। তার এই মন্তব্য জাতীয় দৈনিক ও ইলেকট্রনিক গণমাধ্যমে ব্যাপক আলোচনার জন্ম দিয়েছে। তবে এ কথা বলার অবকাশ রাখে না, এই নেতৃত্ব সংকট একদিনে তৈরি হয়নি; এটি বহু বছরের অবিন্যস্ত শাসন, দুর্বল তদারকি ও নৈতিক অবক্ষয়ের ফল।
দীর্ঘমেয়াদি অনিয়ম ও দুর্বল শাসনব্যবস্থার ফল
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতের আজকের সংকটের মূল শেকড় নিহিত রয়েছে দীর্ঘদিনের অনিয়ম, রাজনৈতিক প্রভাব, বোর্ডপর্যায়ে দুর্নীতি ও পেশাগত যোগ্যতার ঘাটতিতে। অনেক ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ গঠিত হয়েছে এমন ব্যক্তিদের নিয়ে, যাদের ব্যাংকিং জ্ঞান, নৈতিক মান বা দীর্ঘমেয়াদি উন্নয়ন ভাবনা নেই। রাজনৈতিক যোগাযোগ ও ব্যবসায়িক স্বার্থ প্রায়ই যোগ্যতার চেয়ে বড় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ফলে বোর্ড নিজেই পেশাদারিত্ব ও স্বচ্ছতা থেকে বিচ্যুত হয়েছে। ঋণ অনুমোদন, নিয়োগ, পদোন্নতি, বদলি কিংবা ক্রয়—এসব ক্ষেত্রেও অতি হস্তক্ষেপ দেখা যায়। এর ফলে এমডি ও সিনিয়র ম্যানেজমেন্টের স্বাধীনতা এবং জবাবদিহি দুটোই ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে আর মেধাবী কর্মকর্তারা ধীরে ধীরে নেতৃত্বের প্রতিযোগিতা থেকে সরে গেছেন।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও তদারকির দুর্বল ভূমিকা
বাংলাদেশ ব্যাংকের ‘ফিট অ্যান্ড প্রপার’ নীতিমালা থাকা সত্ত্বেও অতীতে তা প্রায়ই যথাযথভাবে বাস্তবায়িত হয়নি। কিছু ব্যাংকের বোর্ড ও শীর্ষপর্যায়ে এমন ব্যক্তিরা দায়িত্বে থেকেছেন, যাদের বিরুদ্ধে দুর্নীতি বা অনৈতিক কার্যকলাপের অভিযোগ ছিল।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক ও সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের তদারকির দুর্বলতা, বিলম্বিত সিদ্ধান্ত ও নরম শাস্তিমূলক ব্যবস্থা অনেক সময় ভুল বার্তা দিয়েছে—যেন অনিয়ম করেও পার পাওয়া সম্ভব। এর ফলে সততা এবং নৈতিকতার ভিত্তি ধীরে ধীরে ভেঙে পড়েছে, যার পরিণতিতে আজ দেখা যাচ্ছে নেতৃত্বে শূন্যতা ও আস্থার সংকট।
ক্ষমতার অপব্যবহার ও প্রিয়পাত্র সংস্কৃতি
সমস্যাটি শুধু বোর্ডে সীমাবদ্ধ নয়। অনেক এমডি ও শীর্ষ নির্বাহী নিজের অবস্থান ব্যবহার করে ক্ষমতার অপব্যবহার এবং পক্ষপাতমূলক আচরণ করেছেন। দক্ষ, সৎ এবং ভিন্নমত পোষণকারী কর্মকর্তাদের প্রায়ই উপেক্ষা করা হয়েছে; বরং আনুগত্য ও ব্যক্তিগত সম্পর্ককেই পদোন্নতি বা অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার ক্ষেত্রে মূল মানদণ্ড করা হয়েছে।
এ ধরনের প্রিয়পাত্র সংস্কৃতি ব্যাংকগুলোর অভ্যন্তরে ন্যায়বোধ ও উদ্যম ধ্বংস করেছে। যখন সততা মূল্যহীন হয় এবং আনুগত্য পুরস্কৃত হয়, তখন প্রকৃত নেতৃত্ব আর বিকশিত হয় না—শুধু ভয়ের সংস্কৃতি টিকে থাকে।
নেতৃত্ব বিকাশে দীর্ঘ অবহেলা
আমাদের ব্যাংকগুলো আকারে বড় হয়েছে, কিন্তু নেতৃত্ব বিকাশে বিনিয়োগ অত্যন্ত সীমিত। এখনো পর্যন্ত বেশির ভাগ ব্যাংকে কোনো পরিকল্পিত উত্তরাধিকার (succession planning) বা নেতৃত্ব বিকাশ কর্মসূচি নেই। মধ্যমপর্যায়ের কর্মকর্তাদের ঘুরিয়ে-ফিরিয়ে নেতৃত্বের অভিজ্ঞতা দেওয়া, পরামর্শদাতা (mentor) নিয়োগ, কিংবা উচ্চতর প্রশিক্ষণের সুযোগ—এসব উদ্যোগ প্রায় অনুপস্থিত।
ফলে, যখন কোনো ব্যাংকের এমডি পদ শূন্য হন, তখন উপযুক্ত প্রার্থী খুঁজে পাওয়া কঠিন হয়ে পড়ে। এভাবে নেতৃত্বের পাইপলাইন শূন্য হয়ে গেছে, যা আজকের বাস্তব সংকটের মূল কারণ।
অন্তর্বর্তী সরকারের বোর্ড সংস্কারÑআশার আলো
তবে সাম্প্রতিক সময়ে এক গুরুত্বপূর্ণ ইতিবাচক পরিবর্তন শুরু হয়েছে। বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ইতোমধ্যে কয়েকটি ব্যাংকের বোর্ড পুনর্গঠন করেছে এবং আরো কয়েকটি ব্যাংকে নানা পরিবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছে ও নিচ্ছে।
এই পদক্ষেপ নিঃসন্দেহে ইতিবাচক। এটি ইঙ্গিত দেয়, দীর্ঘদিনের অরাজক ও প্রভাবনির্ভর কাঠামো থেকে ব্যাংক খাত ধীরে ধীরে সুশাসন ও ন্যায়ভিত্তিক কাঠামোর দিকে অগ্রসর হচ্ছে। যদি এই সংস্কার প্রক্রিয়া ধারাবাহিকতা পায় এবং নিয়োগে মেধা, অভিজ্ঞতা ও সততাকে প্রধান মানদণ্ড করা হয়, তবে ব্যাংক খাতের পুনর্জাগরণের ভিত রচিত হতে পারে।
কী করতে হবে এখন
এই সেক্টরকে পুনরুজ্জীবিত করতে কিছু মৌলিক পদক্ষেপ অপরিহার্যÑ
# বোর্ড গঠনে যোগ্যতা ও নৈতিকতা নিশ্চিত করা—পরিচালক হতে হলে নির্দিষ্ট পেশাগত যোগ্যতা এবং সুনাম থাকা বাধ্যতামূলক করতে হবে
# মেধাভিত্তিক নেতৃত্ব নির্বাচন—এমডি ও শীর্ষ কর্মকর্তাদের নিয়োগে স্বচ্ছ, প্রতিযোগিতামূলক ও প্রকাশ্য প্রক্রিয়া অনুসরণ করতে হবে।
# ক্ষমতার অপব্যবহার রোধে জবাবদিহি কাঠামো—শীর্ষ ব্যবস্থাপকদের জন্য আচরণবিধি, স্বাধীন অডিট এবং হুইসেলব্লোয়ার সুরক্ষা কার্যকর করতে হবে।
# নেতৃত্ব বিকাশে বিনিয়োগ—প্রতিটি ব্যাংকে নেতৃত্ব উন্নয়ন কেন্দ্র বা সহযোগী প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট গড়ে তুলতে হবে এবং কার্যকর নেতৃত্ব উন্নয়ন কর্মসূচি গ্রহণ করতে হবে।
# নিয়ন্ত্রকের স্বাধীনতা ও দৃঢ়তা—বাংলাদেশ ব্যাংককে রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে শক্ত হাতে নিয়ম প্রয়োগে সক্ষম হতে হবে।
বাংলাদেশের ব্যাংক খাতে নেতৃত্ব সংকট আজকের সৃষ্টি নয়; এটি দশকের পর দশক ধরে চলা অব্যবস্থাপনা, দুর্নীতি ও মূল্যবোধের অবক্ষয়ের পরিণতি। তবে আশার বিষয় হলো—বর্তমান সরকার ও বাংলাদেশ ব্যাংক অবশেষে বোর্ড সংস্কার ও তদারকি জোরদারের উদ্যোগ নিয়েছে।
যদি এই উদ্যোগগুলো ধারাবাহিকতা পায় এবং রাজনৈতিক প্রভাবমুক্ত থেকে ন্যায়, সততা ও মেধাকে মূল্য দেওয়া হয়, তবে ব্যাংক খাতে নতুন আস্থার যুগ শুরু হতে পারে।
অবিন্যস্ত ও আস্থাহীন এক কাঠামো থেকে পেশাদার, জবাবদিহিমূলক ও নৈতিক ব্যাংকব্যবস্থার দিকে যাওয়ার এটাই হতে পারে বাংলাদেশের ‘লিডারশিপ রিসেট’—একটি নতুন সূচনা।
লেখক : সিনিয়র ফ্যাকাল্টি ও হেড অব লার্নিং ফ্যাসিলিটেশন উইং, এমটিবি ট্রেনিং ইনস্টিটিউট (এমটিবিটিআই)
গাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১৯ ঘণ্টা আগেযখন অনুন্নত দেশের যোগ্য, দক্ষ ও মেধাবী ব্যক্তিরা উন্নত দেশে স্থানান্তরিত হন, তখন এ ঘটনাকে ‘মেধা পাচার’ বা ‘ব্রেইন ড্রেন’ বলা হয়। নানা কারণে দেশ ত্যাগ করার বিরূপ প্রভাব পড়ছে বাংলাদেশের মতো একটি দেশের ক্ষেত্রে। অথচ জাতিসংঘের জনসংখ্যা তহবিলের ‘বিশ্ব জনসংখ্যার অবস্থা প্রতিবেদন-২০২৫’-এ বাংলাদেশকে বর্তমান
১৯ ঘণ্টা আগেবাংলাদেশে রাজনীতিবিদ এবং আমলাদের অনেক গুণ থাকলেও, যে গুণটির বড্ড অভাব, তা হলো আত্মপর্যালোচনার অভ্যাস। কিন্তু এর জন্য পুরোপুরি তাদের দায়ী করা চলে না। কারণ, তাদের কর্মকাণ্ডের যারা দর্শক-শ্রোতা তথা (সু)ফলভোগী, অর্থাৎ আমাদের মতো আমজনতা, আমরা তাদের কাজকে সেটা ভুল হোক, ভালো হোক হাততালি দিয়ে আর প্রশংসায় ভ
১৯ ঘণ্টা আগেভারতও এই নিয়মের বাইরে নয়। তাই আমি আবার সেই প্রশ্নে ফিরে যাই : আমরা কি মুসলিম, নাকি মুজরিম (অপরাধী)? কেন আমাদের প্রতিদিন আসামির মতো বাঁচতে হবে, যখন খুনিরা অবাধে ঘুরে বেড়ায়? কেন আমাদের শিশুদের মৃত্যুর ঘটনা মিডিয়া থেকে গায়েব করে ফেলা হয়, অথচ রাষ্ট্র স্বাধীনতার ‘অমৃতকাল’ উদযাপন করে?
১৯ ঘণ্টা আগে