
আবদুল লতিফ মাসুম

‘নিরপেক্ষতা’ আর নিরপেক্ষ নেই। এর পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি হয়েছে। ডালপালা, শাখা-প্রশাখা গজিয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিরপেক্ষ শব্দটি একটি কূটাভাস। কূটাভাস শব্দটিও পরিচিত নয়। সে জন্য আরো বিশ্লেষণ প্রয়োজন। এগুলো হলো, আপাতবিরোধী সত্য, স্ববিরোধী ধারণা তথা হেঁয়ালি। অবশ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের শব্দমালা একেবারেই যে অপরিচিত, এমন নয়। বরং যথার্থ চিত্র পেতে হলে এসব শব্দই জুতসই। বঙ্গভাষায় নিরপেক্ষতার আদি আসল রূপ ব্যাখ্যা করলে হয়তো আরো অর্থ বানানোর পথ সুগম হবে। ‘নিরপেক্ষতা’র উৎপত্তিগত বিশ্লেষণ এ রকমÑমূল রূপ : নির+পক্ষ+তা, এটি একটি তৎসম শব্দ। অংশভাগে বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়, ‘নির’ অর্থÑবিহীন, বাইরে, ছাড়া, অভাব, অমুক্ত। ‘পক্ষ’ অর্থÑদিক, দল, পার্টি, অভিমত বা কোনো অবস্থান। ‘তা’ অর্থ কোনো গুণ বা অবস্থা নির্দেশ করে। র্নি + পক্ষ + তা = নিরপেক্ষতা → অর্থাৎ ‘যার কোনো পক্ষ নেই’ বা ‘যেকোনো একদিক বা দলের প্রতি অনুরাগ বা পক্ষপাতমুক্ত’। নিরপেক্ষতা হলোÑপক্ষবিহীনতার গুণ বা অবস্থা, অর্থাৎ কোনো পক্ষের অনুকূলে বা বিপক্ষে না থেকে সমদূরত্বে থাকার অবস্থা। নিরপেক্ষতা সম্পর্কে আমরা এ সময় যে অবস্থা মোকাবিলা করছি, তাতে করে নিরপেক্ষতার নির্গলিতার্থ সন্ধান করাই শ্রেয়। যে হারে নিরপেক্ষতা নিয়ে বাদানুবাদ হচ্ছে, তাতে নিরপেক্ষতাই এই মুহূর্তে একটি সংকটের রূপ নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। একেক দলের পক্ষে নিরপেক্ষতা একেক ধরনের। এই বিবিধ ব্যাখ্যায় উপদেষ্টারা নানা বর্ণে, নানা আদর্শে ও নানা অভিধায় অভিযুক্ত অথবা অভিষিক্ত হচ্ছেন। এতদিন ধরে ঢাক ঢাক গুরু গুরু করে বিষয়টি একরকম ধামাচাপা ছিল। এখন বিষয়টি রীতিমতো দ্বন্দ্ব, বিতর্ক এমনকি বিগ্রহের রূপ ধারণ করছে।
অনেকটা আকস্মিকভাবেই ২১ অক্টোবর বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দেয়। ‘তত্ত্বাবধায়ক’ শব্দ ব্যবহারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাখ্যা দেনÑএটি সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নয়; বরং প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্রে কঠোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান।
বিএনপি সূত্র জানায়, দলটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিচার বিভাগ, সচিবালয় ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দলীয় প্রভাবমুক্ত পদক্ষেপের অনুরোধ জানায়। তারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ‘দলঘনিষ্ঠদের’ ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে বলে। বিএনপি আরো প্রস্তাব করে, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের অপসারণ এবং বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে যোগ্যদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হোক। একই সঙ্গে নতুন পুলিশ নিয়োগ, পদোন্নতি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠন স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রশাসন ও জেলাপর্যায়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগই এখন সবচেয়ে জরুরি। সচিবালয়ে থাকা ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের’ অপসারণ, বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগ এবং পুলিশের নিয়োগে পক্ষপাতহীনতা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি স্পষ্ট করেছে কোন কোন ক্ষেত্রে তারা নিরপেক্ষতা চায়।
পরদিন ২২ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীও একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা অভিযোগ করে যে সরকারের কিছু উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন এবং প্রধান উপদেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছেন। জামায়াত প্রশাসন, সচিবালয় ও পুলিশে রদবদলের আহ্বান জানায়, তবে কারো নাম প্রকাশ করেনি। জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা এখন শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সময় দিচ্ছি; প্রয়োজনে পরে পদক্ষেপ নেব।’
একই দিন এনসিপির প্রতিনিধিদলও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে। তারা জানতে চায় বিএনপি ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের কথা বলে কী বোঝাতে চায়। এনসিপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফল এবং এর ম্যান্ডেট সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। তাই তত্ত্বাবধায়ক ধারণা উত্থাপনকে তারা দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করে। এনসিপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, ইসির পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক ভারসাম্য রক্ষার পরামর্শ দেয়। তাদের মতে, উপদেষ্টা পরিষদে দলঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়ে ন্যায্যভাবে সরকার পুনর্গঠন প্রয়োজন।
পৃথক পৃথকভাবে তিনটি রাজনৈতিক দলের নিরপেক্ষতা সম্পর্কিত অভিযোগ যদি নিরাসক্তভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, তারা নিরপেক্ষতা চান তাদের মতো করে। তাদের কাছে নিরপেক্ষতার নিজ নিজ সংজ্ঞা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ রয়েছে। মূল কথা হলোÑএটি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো কোনো অভিযোগ নয়। বরং দলগুলোর অভিযোগের ভাষা শুনলেই বোঝা যাবে যে একটি দল অন্য দলের ওপর অভিযোগ করছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল লক্ষ করেছেন, প্রধান দুটো রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এ নিয়ে প্রথম থেকেই এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছে। তখন প্রতিবাদের ভাষা ছিল মৃদু, এখন এটি কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। সচিবালয় এবং বিভিন্ন জেলায় দায়িত্বশীল অফিসারদের বিষয়ে এই দুটি দলের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় ‘Winner takes all’। অর্থাৎ বিজয়ী দলই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় মনে করা হয়, বিএনপি ভবিষ্যৎ সরকার গঠন করবে। আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য আমলাতন্ত্রের মধ্যে যেমন কিছু লোক অতি-উৎসাহী হয়ে সমর্থন জুগিয়েছে, এখনো তেমন অবস্থা। এটি একটি অপ্রিয় বাস্তবতা যে দীর্ঘ প্রায় ষোলো বছরে আমলাতন্ত্রের ওপর আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখন সেই আমলাতন্ত্রকে স্বৈরাচারের দোসর বলে গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। এদের মধ্যে কিছু লোক শাস্তি পেয়েছে। অন্য অংশ নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে কিন্তু একটি অংশ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আনুগত্যের প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে থাকতে চাচ্ছে। সচিবালয় বা অন্যত্র অবস্থা এমন যে ক, খ, গ, ঘÑসবাই আওয়ামী লীগার। এর মধ্যে অতি-উৎসাহী অংশ ভবিষ্যৎ গড়ার আশায় আগে থেকেই সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করছে। আবার এমনও আছে, সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করছে একটি অংশ। এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষ বলে পরিগণিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের কথামতো কাজ না করলে সে আর ‘নিরপেক্ষ’ থাকছে না। তাকে অতীত স্বৈরাচার বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এ বিষযগুলো তিনটি দলের অভিযোগের ক্ষেত্রগুলো পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে।
তিনটি দলের এসব অভিযোগ উত্থাপনের পর কর্মরত আমলাতন্ত্রে অস্থিরতা ও অবিশ্বাস দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। অন্যদিকে উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টারা নিশ্চয়ই বিব্রতবোধ করছেন। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনেও জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের সম্মানীয় কোনো কোনো সদস্য অস্বস্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে সরকারের কোন কোন উপদেষ্টার বিষয়ে আপত্তি আছে, তা কোনো রাজনৈতিক দলই স্পষ্ট করেনি। তবে উপদেষ্টা পরিষদ ও রাজনৈতিক মহলে অল্প কয়েকজনের নাম আলোচিত হচ্ছে। শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। তবে বিব্রতকর মন্তব্য করার জন্য কয়েকজনের দপ্তর বদল হয় মাত্র। দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে নিয়ে বিএনপি এই সেদিন প্রশ্ন উত্থাপন করে। এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, উপদেষ্টার অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজুঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছেন। জামায়াতের তরফ থেকেও এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অনুরূপ অভিযোগ করা হয়। সর্বশেষ বিএনপি এই অভিযোগ উত্থাপন করল। তবে তিনটি দলের অভিযোগই রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সংগতভাবেই তিনটি দলকেই পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শতভাগ নিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। বস্তুত প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য এমন বিব্রতকর যে, তিনি কাউকে বাদ দেওয়া বা নতুন করে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন তার জন্য বিব্রতকর এবং কঠিন মনে হয়। তবে এটি লক্ষণীয় যে, তিনি প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আস্থায় রাখতে চান। স্মরণ করা যেতে পারে, প্রাথমিক বিব্রতকর অবস্থা অতিক্রম করে বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের দুই নেতা লন্ডনচুক্তি স্বাক্ষর করেন। পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, বিএনপির ওপর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে এবং কথিত কিংস পার্টি এনসিপির মধ্যে সামান্য হলেও দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী সরকারের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য স্ব-কৌশলে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
নিরপেক্ষতা নিয়ে যে দ্বৈধতা, বিতর্ক ও বিগ্রহ হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে, তা উপদেষ্টা পরিষদকে বিশেষভাবে অস্বস্তিতে ফেলেছে। নিরপেক্ষভাবে বলতে গেলে উপদেষ্টা পরিষদ তাদের নিজ নিজ কৌশল ও বুদ্ধিমতো নিরপেক্ষতাই অবলম্বন করছেন। অথচ সেই নিরপেক্ষতা কাউকেই হয়তো খুশি করতে পারছে না। একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, সড়ক পরিবহন রেল ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফয়জুল কবির খান এ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে উপদেষ্টাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। একটি দলের তালিকায় আমার নামও আছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে এটুকুই বলা, আমি পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নই। সবসময় কোনো ধরনের অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ যতটা জানা যায়, এই সাবেক আমলা তার কর্মজীবনেও কোনো বদনামের শিকার হননি। স্বচ্ছতার প্রমাণ রেখেছেন। তার বিব্রত হওয়া অসংগত নয়, তবে নিরপেক্ষতার দলীয় ব্যাখ্যায় তার বিব্রত না হওয়াই উচিত মনে করে সুধীজন। উপদেষ্টামণ্ডলীর সবাই যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেন, তাহলে দলীয় ব্যাখ্যায় ন্যায়বিচার বা এর পক্ষ-প্রতিপক্ষ নিয়ে তাদের ভাবনার অবকাশ নেই। জনগণ স্বস্তির সঙ্গে সম্মানের সঙ্গেই তাদের এক্সিট আশা করে। কথায় বলে যে, ভালো তার সব ভালো। শেষ ভালো যার সব ভালো তার।

‘নিরপেক্ষতা’ আর নিরপেক্ষ নেই। এর পক্ষ-বিপক্ষ সৃষ্টি হয়েছে। ডালপালা, শাখা-প্রশাখা গজিয়েছে। এই মুহূর্তে বাংলাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে নিরপেক্ষ শব্দটি একটি কূটাভাস। কূটাভাস শব্দটিও পরিচিত নয়। সে জন্য আরো বিশ্লেষণ প্রয়োজন। এগুলো হলো, আপাতবিরোধী সত্য, স্ববিরোধী ধারণা তথা হেঁয়ালি। অবশ্য রাজনৈতিক অঙ্গনে এ ধরনের শব্দমালা একেবারেই যে অপরিচিত, এমন নয়। বরং যথার্থ চিত্র পেতে হলে এসব শব্দই জুতসই। বঙ্গভাষায় নিরপেক্ষতার আদি আসল রূপ ব্যাখ্যা করলে হয়তো আরো অর্থ বানানোর পথ সুগম হবে। ‘নিরপেক্ষতা’র উৎপত্তিগত বিশ্লেষণ এ রকমÑমূল রূপ : নির+পক্ষ+তা, এটি একটি তৎসম শব্দ। অংশভাগে বিশ্লেষণ করলে দাঁড়ায়, ‘নির’ অর্থÑবিহীন, বাইরে, ছাড়া, অভাব, অমুক্ত। ‘পক্ষ’ অর্থÑদিক, দল, পার্টি, অভিমত বা কোনো অবস্থান। ‘তা’ অর্থ কোনো গুণ বা অবস্থা নির্দেশ করে। র্নি + পক্ষ + তা = নিরপেক্ষতা → অর্থাৎ ‘যার কোনো পক্ষ নেই’ বা ‘যেকোনো একদিক বা দলের প্রতি অনুরাগ বা পক্ষপাতমুক্ত’। নিরপেক্ষতা হলোÑপক্ষবিহীনতার গুণ বা অবস্থা, অর্থাৎ কোনো পক্ষের অনুকূলে বা বিপক্ষে না থেকে সমদূরত্বে থাকার অবস্থা। নিরপেক্ষতা সম্পর্কে আমরা এ সময় যে অবস্থা মোকাবিলা করছি, তাতে করে নিরপেক্ষতার নির্গলিতার্থ সন্ধান করাই শ্রেয়। যে হারে নিরপেক্ষতা নিয়ে বাদানুবাদ হচ্ছে, তাতে নিরপেক্ষতাই এই মুহূর্তে একটি সংকটের রূপ নিচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলো অন্তর্বর্তী সরকারের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উত্থাপন করেছে। একেক দলের পক্ষে নিরপেক্ষতা একেক ধরনের। এই বিবিধ ব্যাখ্যায় উপদেষ্টারা নানা বর্ণে, নানা আদর্শে ও নানা অভিধায় অভিযুক্ত অথবা অভিষিক্ত হচ্ছেন। এতদিন ধরে ঢাক ঢাক গুরু গুরু করে বিষয়টি একরকম ধামাচাপা ছিল। এখন বিষয়টি রীতিমতো দ্বন্দ্ব, বিতর্ক এমনকি বিগ্রহের রূপ ধারণ করছে।
অনেকটা আকস্মিকভাবেই ২১ অক্টোবর বিএনপি প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসের সঙ্গে সাক্ষাৎ করে তার নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তী সরকারকে নিরপেক্ষ ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের ভূমিকায় অবতীর্ণ হওয়ার পরামর্শ দেয়। ‘তত্ত্বাবধায়ক’ শব্দ ব্যবহারে বিভ্রান্তি সৃষ্টি হলেও মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর ব্যাখ্যা দেনÑএটি সাংবিধানিক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবি নয়; বরং প্রশাসন ও রাষ্ট্রযন্ত্রে কঠোর নিরপেক্ষতা নিশ্চিত করার আহ্বান।
বিএনপি সূত্র জানায়, দলটি প্রধান উপদেষ্টার কাছে বিচার বিভাগ, সচিবালয় ও প্রশাসনের গুরুত্বপূর্ণ পদে দলীয় প্রভাবমুক্ত পদক্ষেপের অনুরোধ জানায়। তারা উপদেষ্টা পরিষদে থাকা ‘দলঘনিষ্ঠদের’ ব্যাপারেও ব্যবস্থা নিতে বলে। বিএনপি আরো প্রস্তাব করে, বিগত স্বৈরাচারী সরকারের দোসরদের অপসারণ এবং বঞ্চিত কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে যোগ্যদের চুক্তিভিত্তিক নিয়োগ দেওয়া হোক। একই সঙ্গে নতুন পুলিশ নিয়োগ, পদোন্নতি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠানের পরিচালনা কমিটি গঠন স্থগিত রাখার অনুরোধ জানায়।
মির্জা ফখরুল বলেন, প্রশাসন ও জেলাপর্যায়ে নিরপেক্ষ কর্মকর্তা নিয়োগই এখন সবচেয়ে জরুরি। সচিবালয়ে থাকা ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের’ অপসারণ, বিচার বিভাগে নিরপেক্ষ বিচারক নিয়োগ এবং পুলিশের নিয়োগে পক্ষপাতহীনতা বজায় রাখার আহ্বান জানান তিনি। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের মতে, এই বক্তব্যের মাধ্যমে বিএনপি স্পষ্ট করেছে কোন কোন ক্ষেত্রে তারা নিরপেক্ষতা চায়।
পরদিন ২২ অক্টোবর জামায়াতে ইসলামীও একই দাবিতে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাৎ করে। তারা অভিযোগ করে যে সরকারের কিছু উপদেষ্টা বিএনপির পক্ষে কাজ করছেন এবং প্রধান উপদেষ্টাকে বিভ্রান্ত করছেন। জামায়াত প্রশাসন, সচিবালয় ও পুলিশে রদবদলের আহ্বান জানায়, তবে কারো নাম প্রকাশ করেনি। জামায়াত নেতা আব্দুল্লাহ মোহাম্মদ তাহের বলেন, ‘আমরা এখন শুধু দৃষ্টি আকর্ষণ করছি, সময় দিচ্ছি; প্রয়োজনে পরে পদক্ষেপ নেব।’
একই দিন এনসিপির প্রতিনিধিদলও প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে দেখা করে। তারা জানতে চায় বিএনপি ‘তত্ত্বাবধায়ক’ সরকারের কথা বলে কী বোঝাতে চায়। এনসিপি মনে করে, অন্তর্বর্তী সরকার গণঅভ্যুত্থানের ফল এবং এর ম্যান্ডেট সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন। তাই তত্ত্বাবধায়ক ধারণা উত্থাপনকে তারা দুরভিসন্ধিমূলক বলে মনে করে। এনসিপি নির্বাচন কমিশনের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন তোলে, ইসির পুনর্গঠন এবং প্রশাসনিক ভারসাম্য রক্ষার পরামর্শ দেয়। তাদের মতে, উপদেষ্টা পরিষদে দলঘনিষ্ঠদের বাদ দিয়ে ন্যায্যভাবে সরকার পুনর্গঠন প্রয়োজন।
পৃথক পৃথকভাবে তিনটি রাজনৈতিক দলের নিরপেক্ষতা সম্পর্কিত অভিযোগ যদি নিরাসক্তভাবে বিশ্লেষণ করা হয়, তাহলে এটা স্পষ্ট হয়ে উঠবে যে, তারা নিরপেক্ষতা চান তাদের মতো করে। তাদের কাছে নিরপেক্ষতার নিজ নিজ সংজ্ঞা, ব্যাখ্যা ও বিশ্লেষণ রয়েছে। মূল কথা হলোÑএটি অন্তর্বর্তী সরকারের বিরুদ্ধে জোরালো কোনো অভিযোগ নয়। বরং দলগুলোর অভিযোগের ভাষা শুনলেই বোঝা যাবে যে একটি দল অন্য দলের ওপর অভিযোগ করছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষক মহল লক্ষ করেছেন, প্রধান দুটো রাজনৈতিক দল বিএনপি ও জামায়াতের মধ্যে এ নিয়ে প্রথম থেকেই এক ধরনের প্রতিযোগিতা চলছে। তখন প্রতিবাদের ভাষা ছিল মৃদু, এখন এটি কঠিন থেকে কঠিনতর হচ্ছে। সচিবালয় এবং বিভিন্ন জেলায় দায়িত্বশীল অফিসারদের বিষয়ে এই দুটি দলের ভিন্ন ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি আছে। বাংলাদেশের রাজনৈতিক সাংস্কৃতিক বাস্তবতায় ‘Winner takes all’। অর্থাৎ বিজয়ী দলই সবকিছু নিয়ন্ত্রণ করে। এ সময় মনে করা হয়, বিএনপি ভবিষ্যৎ সরকার গঠন করবে। আওয়ামী লীগ সরকারকে সহযোগিতা দেওয়ার জন্য আমলাতন্ত্রের মধ্যে যেমন কিছু লোক অতি-উৎসাহী হয়ে সমর্থন জুগিয়েছে, এখনো তেমন অবস্থা। এটি একটি অপ্রিয় বাস্তবতা যে দীর্ঘ প্রায় ষোলো বছরে আমলাতন্ত্রের ওপর আওয়ামী লীগ নিরঙ্কুশ আধিপত্য প্রতিষ্ঠা করেছিল। এখন সেই আমলাতন্ত্রকে স্বৈরাচারের দোসর বলে গালমন্দ শুনতে হচ্ছে। এদের মধ্যে কিছু লোক শাস্তি পেয়েছে। অন্য অংশ নিজেদের গুটিয়ে নিয়েছে কিন্তু একটি অংশ রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতি আনুগত্যের প্রতিযোগিতা করে এগিয়ে থাকতে চাচ্ছে। সচিবালয় বা অন্যত্র অবস্থা এমন যে ক, খ, গ, ঘÑসবাই আওয়ামী লীগার। এর মধ্যে অতি-উৎসাহী অংশ ভবিষ্যৎ গড়ার আশায় আগে থেকেই সম্ভাব্য রাজনৈতিক দলের লেজুড়বৃত্তি করছে। আবার এমনও আছে, সত্যিকার অর্থে নিরপেক্ষতা ও পেশাদারিত্ব বজায় রেখে কাজ করার চেষ্টা করছে একটি অংশ। এই অন্তর্বর্তী সরকারের কাজ করতে গিয়ে কোনো কোনো রাজনৈতিক দলের প্রতিপক্ষ বলে পরিগণিত হচ্ছে। রাজনৈতিক দলের নেতৃত্বের কথামতো কাজ না করলে সে আর ‘নিরপেক্ষ’ থাকছে না। তাকে অতীত স্বৈরাচার বা রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয়। এ বিষযগুলো তিনটি দলের অভিযোগের ক্ষেত্রগুলো পর্যালোচনা করলেই বোঝা যাবে।
তিনটি দলের এসব অভিযোগ উত্থাপনের পর কর্মরত আমলাতন্ত্রে অস্থিরতা ও অবিশ্বাস দেখা দেওয়া অস্বাভাবিক নয়। অন্যদিকে উত্থাপিত অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে উপদেষ্টারা নিশ্চয়ই বিব্রতবোধ করছেন। পত্রিকায় প্রকাশিত প্রতিবেদনেও জানা যায়, উপদেষ্টা পরিষদের সম্মানীয় কোনো কোনো সদস্য অস্বস্তি ও উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন। তবে সরকারের কোন কোন উপদেষ্টার বিষয়ে আপত্তি আছে, তা কোনো রাজনৈতিক দলই স্পষ্ট করেনি। তবে উপদেষ্টা পরিষদ ও রাজনৈতিক মহলে অল্প কয়েকজনের নাম আলোচিত হচ্ছে। শুরুতে উপদেষ্টা পরিষদের নিরপেক্ষতা নিয়ে কেউ কোনো প্রশ্ন তোলেনি। তবে বিব্রতকর মন্তব্য করার জন্য কয়েকজনের দপ্তর বদল হয় মাত্র। দুজন ছাত্র প্রতিনিধি উপদেষ্টাকে নিয়ে বিএনপি এই সেদিন প্রশ্ন উত্থাপন করে। এনসিপি আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম একটি বেসরকারি টেলিভিশনে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেন, উপদেষ্টার অনেকেই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের সঙ্গে লিয়াজুঁ করে ফেলেছেন। তারা নিজেদের সেফ এক্সিট বা নিরাপদ প্রস্থানের কথা ভাবছেন। জামায়াতের তরফ থেকেও এ মাসের মাঝামাঝি সময়ে অনুরূপ অভিযোগ করা হয়। সর্বশেষ বিএনপি এই অভিযোগ উত্থাপন করল। তবে তিনটি দলের অভিযোগই রাজনৈতিক গুরুত্ব রয়েছে। সংগতভাবেই তিনটি দলকেই পৃথকভাবে প্রধান উপদেষ্টা প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূস শতভাগ নিরপেক্ষতার নিশ্চয়তা দিয়েছেন। বস্তুত প্রফেসর মুহাম্মদ ইউনূসের জন্য এমন বিব্রতকর যে, তিনি কাউকে বাদ দেওয়া বা নতুন করে উপদেষ্টা পরিষদ গঠন তার জন্য বিব্রতকর এবং কঠিন মনে হয়। তবে এটি লক্ষণীয় যে, তিনি প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপিকে আস্থায় রাখতে চান। স্মরণ করা যেতে পারে, প্রাথমিক বিব্রতকর অবস্থা অতিক্রম করে বিএনপি ও অন্তর্বর্তী সরকারের দুই নেতা লন্ডনচুক্তি স্বাক্ষর করেন। পর্যবেক্ষক মহল মনে করে, বিএনপির ওপর অন্তর্বর্তী সরকারের নির্ভরতা বেড়েছে এবং কথিত কিংস পার্টি এনসিপির মধ্যে সামান্য হলেও দূরত্ব সৃষ্টি হয়েছে। আর জামায়াতে ইসলামী সরকারের আস্থা ও বিশ্বাস অর্জন করার জন্য স্ব-কৌশলে চেষ্টা করে যাচ্ছে।
নিরপেক্ষতা নিয়ে যে দ্বৈধতা, বিতর্ক ও বিগ্রহ হওয়ার মতো অবস্থা হয়েছে, তা উপদেষ্টা পরিষদকে বিশেষভাবে অস্বস্তিতে ফেলেছে। নিরপেক্ষভাবে বলতে গেলে উপদেষ্টা পরিষদ তাদের নিজ নিজ কৌশল ও বুদ্ধিমতো নিরপেক্ষতাই অবলম্বন করছেন। অথচ সেই নিরপেক্ষতা কাউকেই হয়তো খুশি করতে পারছে না। একটি পত্রিকার প্রতিবেদনে জানা যায়, সড়ক পরিবহন রেল ও বিদ্যুৎ উপদেষ্টা মোহাম্মদ ফয়জুল কবির খান এ সম্পর্কে তার প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করেছেন। তিনি ফেসবুকে লিখেছেন, ‘প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে তিন রাজনৈতিক দলের বৈঠকে উপদেষ্টাদের নিরাপত্তা সম্পর্কে প্রশ্ন উঠেছে। একটি দলের তালিকায় আমার নামও আছে। আত্মপক্ষ সমর্থনে এটুকুই বলা, আমি পক্ষপাতদুষ্ট চিন্তা করতে ও সিদ্ধান্ত গ্রহণে অভ্যস্ত নই। সবসময় কোনো ধরনের অনুরাগ-বিরাগের বশবর্তী না হয়ে সরকারের সিদ্ধান্ত নিয়েছি।’ যতটা জানা যায়, এই সাবেক আমলা তার কর্মজীবনেও কোনো বদনামের শিকার হননি। স্বচ্ছতার প্রমাণ রেখেছেন। তার বিব্রত হওয়া অসংগত নয়, তবে নিরপেক্ষতার দলীয় ব্যাখ্যায় তার বিব্রত না হওয়াই উচিত মনে করে সুধীজন। উপদেষ্টামণ্ডলীর সবাই যদি ন্যায়বিচার নিশ্চিত করেন, তাহলে দলীয় ব্যাখ্যায় ন্যায়বিচার বা এর পক্ষ-প্রতিপক্ষ নিয়ে তাদের ভাবনার অবকাশ নেই। জনগণ স্বস্তির সঙ্গে সম্মানের সঙ্গেই তাদের এক্সিট আশা করে। কথায় বলে যে, ভালো তার সব ভালো। শেষ ভালো যার সব ভালো তার।

প্রবাসীদের ভোটাধিকার নিয়ে কাজ করছে ‘প্রবাসী ভোটাধিকার বাস্তবায়ন পরিষদ’ নামে একটি সংগঠন। এই সংগঠনের যুক্তরাজ্য শাখার আহ্বায়ক ইউকে ইমিগ্রেশন ট্রাইব্যুনালের একজন বিচারক। তার নেতৃত্বে গঠিত সংগঠনের একজন সদস্য হিসেবে আমার মতো নগণ্য ব্যক্তিকেও রাখা হয়েছে।
৪ ঘণ্টা আগে
মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ‘মেক আমেরিকা গ্রেট এগেইন’ (মাগা) বা যুক্তরাষ্ট্রকে আবার মহান করার স্লোগান তার নির্বাচনি প্রচারণায় একটি বড় হাতিয়ার হিসেবে কাজ করেছিল। রিপাবলিকান পার্টির নেতাকর্মীদের পাশাপাশি দেশটির শ্বেতাঙ্গ শ্রমিক শ্রেণির লোকজনকেও ট্রাম্পের এই রাজনৈতিক স্লোগান যথেষ্ট উজ্জীবিত
৪ ঘণ্টা আগে
বাংলাদেশে প্রায়ই দেখা যায়, প্রগতিশীল রাজনীতি হিসেবে নিজেদের দাবি করা বামপন্থি রাজনীতিবিদ ও দলগুলো জনস্বার্থ-সংশ্লিষ্ট নানা ইস্যুতে নানা কর্মসূচি নিয়ে এগিয়ে আসে, সরকার ও আন্তর্জাতিক মহলের কাছে সর্বজনীন মানবাধিকার এবং এ ধরনের ইস্যুতে সরব হয়।
৪ ঘণ্টা আগে
গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে এমন নেতিবাচক, বিকৃত ও শত্রুতাপূর্ণ উপস্থাপন, যা ভয়, ঘৃণা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমের এই বিদ্বেষ সরাসরি ‘ইসলাম খারাপ’ বলার মাধ্যমে নয়; বরং প্রশ্নের ভাষা ও প্রেক্ষাপটে মুসলিমসমাজকে সন্দেহের চোখে দেখানো হয়।
১ দিন আগে