
তাইফুর রহমান

গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে এমন নেতিবাচক, বিকৃত ও শত্রুতাপূর্ণ উপস্থাপন, যা ভয়, ঘৃণা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমের এই বিদ্বেষ সরাসরি ‘ইসলাম খারাপ’ বলার মাধ্যমে নয়; বরং প্রশ্নের ভাষা ও প্রেক্ষাপটে মুসলিমসমাজকে সন্দেহের চোখে দেখানো হয়। টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোতে প্রায়ই দেখা যায়, সঞ্চালকরা আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে এমন প্রশ্ন করেন, যেগুলো নিরপেক্ষ ও অনুসন্ধানমূলক মনে হলেও, তার অন্তরালে লুকিয়ে থাকে গভীর ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব। এই সূক্ষ্ম পক্ষপাত বা সাধারণ দর্শকের কাছে ধরা পড়ে না, কিন্তু সমাজে ইসলামের বিরুদ্ধে এক ধরনের নীরব অবিশ্বাসের বীজ রোপণ করে।
যেমন ‘ইসলামে কি সত্যিই নারী-পুরুষের সমান অধিকার পায়?’, ‘শরিয়াহ আইন কি মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়?’, ‘যখন ইসলামী ব্যাংক লাভ নেয়, সেটা কি সুদের মতোই নয়? পার্থক্য কোথায়?’, ‘ইসলাম কি সহিংসতাকে উৎসাহিত করে?’, ‘মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদের প্রবণতা কেন বেশি?’, ‘ইসলামি পোশাক কি আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে যায়?’ এসব প্রশ্ন শুনলে মনে হয়, এগুলো চিন্তনীয় ও বৈজ্ঞানিক আলোচনার আহ্বান। কিন্তু বাস্তবে এগুলো তৈরি করা হয় এমনভাবে, যাতে ইসলাম নিজেই প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে পড়ে যায়। ফলে দর্শকের মনে অজান্তেই একটি ধারণা তৈরি হয়Ñইসলাম হয়তো ‘অন্য ধর্মগুলোর তুলনায় বেশি কঠোর বা সহিংস।’
সঞ্চালক বা উপস্থাপকরা অনেক সময় এমন শব্দচয়ন করেন, যা মনস্তাত্ত্বিকভাবে ইসলামকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরে। যেমন : ‘সন্ত্রাসী’ শব্দটি ‘মুসলমান’ পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়, অথচ অন্য ধর্মের অপরাধীর ক্ষেত্রে ধর্মের পরিচয় উল্লেখ করা হয় না। অন্যদিকে, ‘শরিয়াহ আইন’ বললেই তাকে ‘কঠোর শাস্তি’, ‘নারী নিপীড়ন’ বা ‘অন্ধ অনুশাসন’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। অথচ শরিয়াহর মূল দর্শনÑ ন্যায়, দয়া ও মানবকল্যাণÑগোপন থাকে। এই প্রক্রিয়াকে সমাজবিজ্ঞানে বলা হয় ‘ফ্রেমিং বায়াস’ যেখানে তথ্য নয়, বরং উপস্থাপনার ধরনই জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। ফলে দর্শক অবচেতন মনে ইসলামের প্রতি সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন, যদিও তিনি সরাসরি ইসলামবিদ্বেষে বিশ্বাসী নন।
আধুনিক যুগে গণমাধ্যম মানুষের চিন্তা, মূল্যবোধ ও মনোভাব গঠনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। গণমাধ্যমের প্রভাব আজ সর্বত্র বিস্তৃত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এই গণমাধ্যমই বহু সময় ইসলাম ও মুসলিমসমাজের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গবেষকদের মতে, পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর শিকড় প্রোথিত রয়েছে ঔপনিবেশিক যুগের ‘প্রাচ্যবাদী’ বা ওরিয়েন্টালিস্ট ধারণায়, যেখানে ইসলামকে পশ্চাৎপদ, অগ্রগতিবিমুখ ও সহিংস ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বিখ্যাত পণ্ডিত অ্যাডওয়ার্ড সাঈদ তার ‘কভারিং ইসলাম’ গ্রন্থে বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম ইসলামকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, যেন তা আধুনিক সভ্যতার জন্য হুমকি। এই ধারণার ফলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য ও শান্তির বার্তা আড়াল হয়ে গেছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং ২০০১ সালের নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর ইসলামবিদ্বেষ আরো বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মুসলিমদের প্রতি সন্দেহ, ভয় ও বিদ্বেষ ছড়াতে গণমাধ্যমে ইসলামের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটি যুক্ত করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্রে মুসলিমদের নিয়ে প্রকাশিত প্রায় ৭৮ শতাংশ প্রতিবেদন নেতিবাচক ভাষায় রচিত। এমনকি ইউরোপে ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদ’ বা ‘সহিংস ইসলাম’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলিমসমাজকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
গণমাধ্যমের দায়িত্ব সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেক গণমাধ্যম ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে একপেশে প্রচারণা চালায়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজ বা ইউরোপের কিছু প্রভাবশালী পত্রিকা মুসলিমদের প্রায়ই ‘অসভ্য’, ‘চরমপন্থি’, ‘নারীবিদ্বেষী’ হিসেবে তুলে ধরে। এমনকি মুসলিম নারীদের হিজাব বা পর্দাকে নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয় অথচ এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার একটি দিক। ২০১৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিমা বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ইসলাম সম্পর্কে তাদের ধারণা তৈরি করে টেলিভিশন বা অনলাইন গণমাধ্যম থেকে।
মুসলিমরা কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়, হিজাব পরিহিতা নারীরা হামলার মুখে পড়ে, এমনকি অনেক দেশেই ইসলামফোবিক আক্রমণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘটনার ৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী নারী। অন্যদিকে, এই বিদ্বেষ মুসলিম তরুণদের মধ্যেও মানসিক চাপ ও আত্মসম্মানবোধের সংকট সৃষ্টি করে। তারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে ভয় পায়। ফলে সমাজে এক ধরনের অবিশ্বাস ও বিভাজন তৈরি হয়, যা মানবতার সর্বজনীন বার্তার পরিপন্থী।
গণমাধ্যমে ইসলামকে প্রায়ই সহিংসতার ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হলেও, বাস্তবে ইসলাম শব্দের মূল অর্থই হচ্ছে মহান রবের কাছে আত্মসমর্পণ, যার মাধ্যমে শান্তি অর্জিত হয়। কোরআন ঘোষণা করেÑ‘আর আমরা তোমাকে (হে মুহাম্মদ সা: ) সমগ্র জগতের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’ (সুরা আল-আম্বিয়া, ২১ : ১০৭) নবী (মুহাম্মদ সা: )-এর জীবনে এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে, যেখানে তিনি শত্রুর প্রতিও ক্ষমা, সহানুভূতি ও মানবিক আচরণের শিক্ষা দিয়েছেন।
বাংলাদেশে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ মিডিয়ায় ইসলামবিদ্বেষ সামনে আনা হয় বেশ সূক্ষ্মভাবেই। এটি করা হয় শব্দচয়ন, সংবাদ নির্বাচন ও আলোচনার প্রেক্ষাপট নির্ধারণের মাধ্যমে। ফলে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি, মুসলিমসমাজের ইতিবাচক দিক এবং সহাবস্থানের মূল্যবোধ প্রায়ই বাদ পড়ে যায়।
গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন যৌথ প্রচেষ্টা। কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী, সত্য, ন্যায় ও শান্তির পথে অটল থাকাই একমাত্র সমাধান। মিথ্যা প্রচারণা ও ইসলামবিদ্বেষ যতই শক্তিশালী হোক, সত্যের আলো একদিন তা মুছে দেবে। গণমাধ্যম যদি সত্য, ন্যায় ও মানবতার পথে ফিরে আসে, তবে বিশ্বে শান্তি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে, যা ইসলামের প্রকৃত বার্তা।
লেখক : ব্যাংকার ও প্রাবন্ধিক
Email: taifurrahmanibbl@gmail.com

গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ হচ্ছে ইসলাম সম্পর্কে এমন নেতিবাচক, বিকৃত ও শত্রুতাপূর্ণ উপস্থাপন, যা ভয়, ঘৃণা ও বিভ্রান্তি সৃষ্টি করে। গণমাধ্যমের এই বিদ্বেষ সরাসরি ‘ইসলাম খারাপ’ বলার মাধ্যমে নয়; বরং প্রশ্নের ভাষা ও প্রেক্ষাপটে মুসলিমসমাজকে সন্দেহের চোখে দেখানো হয়। টিভি চ্যানেলগুলোর টকশোতে প্রায়ই দেখা যায়, সঞ্চালকরা আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে এমন প্রশ্ন করেন, যেগুলো নিরপেক্ষ ও অনুসন্ধানমূলক মনে হলেও, তার অন্তরালে লুকিয়ে থাকে গভীর ইসলামবিদ্বেষী মনোভাব। এই সূক্ষ্ম পক্ষপাত বা সাধারণ দর্শকের কাছে ধরা পড়ে না, কিন্তু সমাজে ইসলামের বিরুদ্ধে এক ধরনের নীরব অবিশ্বাসের বীজ রোপণ করে।
যেমন ‘ইসলামে কি সত্যিই নারী-পুরুষের সমান অধিকার পায়?’, ‘শরিয়াহ আইন কি মানবাধিকারের সঙ্গে সাংঘর্ষিক নয়?’, ‘যখন ইসলামী ব্যাংক লাভ নেয়, সেটা কি সুদের মতোই নয়? পার্থক্য কোথায়?’, ‘ইসলাম কি সহিংসতাকে উৎসাহিত করে?’, ‘মুসলমানদের মধ্যে সন্ত্রাসবাদের প্রবণতা কেন বেশি?’, ‘ইসলামি পোশাক কি আধুনিক সভ্যতার সঙ্গে যায়?’ এসব প্রশ্ন শুনলে মনে হয়, এগুলো চিন্তনীয় ও বৈজ্ঞানিক আলোচনার আহ্বান। কিন্তু বাস্তবে এগুলো তৈরি করা হয় এমনভাবে, যাতে ইসলাম নিজেই প্রতিরক্ষামূলক অবস্থানে পড়ে যায়। ফলে দর্শকের মনে অজান্তেই একটি ধারণা তৈরি হয়Ñইসলাম হয়তো ‘অন্য ধর্মগুলোর তুলনায় বেশি কঠোর বা সহিংস।’
সঞ্চালক বা উপস্থাপকরা অনেক সময় এমন শব্দচয়ন করেন, যা মনস্তাত্ত্বিকভাবে ইসলামকে নেতিবাচকভাবে তুলে ধরে। যেমন : ‘সন্ত্রাসী’ শব্দটি ‘মুসলমান’ পরিচয়ের সঙ্গে যুক্ত হয়, অথচ অন্য ধর্মের অপরাধীর ক্ষেত্রে ধর্মের পরিচয় উল্লেখ করা হয় না। অন্যদিকে, ‘শরিয়াহ আইন’ বললেই তাকে ‘কঠোর শাস্তি’, ‘নারী নিপীড়ন’ বা ‘অন্ধ অনুশাসন’-এর সঙ্গে তুলনা করা হয়। অথচ শরিয়াহর মূল দর্শনÑ ন্যায়, দয়া ও মানবকল্যাণÑগোপন থাকে। এই প্রক্রিয়াকে সমাজবিজ্ঞানে বলা হয় ‘ফ্রেমিং বায়াস’ যেখানে তথ্য নয়, বরং উপস্থাপনার ধরনই জনমত গঠনে ভূমিকা রাখে। ফলে দর্শক অবচেতন মনে ইসলামের প্রতি সন্দেহপ্রবণ হয়ে ওঠেন, যদিও তিনি সরাসরি ইসলামবিদ্বেষে বিশ্বাসী নন।
আধুনিক যুগে গণমাধ্যম মানুষের চিন্তা, মূল্যবোধ ও মনোভাব গঠনের অন্যতম প্রধান মাধ্যম। গণমাধ্যমের প্রভাব আজ সর্বত্র বিস্তৃত। কিন্তু দুঃখজনকভাবে, এই গণমাধ্যমই বহু সময় ইসলাম ও মুসলিমসমাজের প্রতি নেতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গি ছড়িয়ে দেওয়ার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। গবেষকদের মতে, পশ্চিমা গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর শিকড় প্রোথিত রয়েছে ঔপনিবেশিক যুগের ‘প্রাচ্যবাদী’ বা ওরিয়েন্টালিস্ট ধারণায়, যেখানে ইসলামকে পশ্চাৎপদ, অগ্রগতিবিমুখ ও সহিংস ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে। বিখ্যাত পণ্ডিত অ্যাডওয়ার্ড সাঈদ তার ‘কভারিং ইসলাম’ গ্রন্থে বলেন, পশ্চিমা গণমাধ্যম ইসলামকে এমনভাবে উপস্থাপন করেছে, যেন তা আধুনিক সভ্যতার জন্য হুমকি। এই ধারণার ফলে ইসলামের প্রকৃত সৌন্দর্য ও শান্তির বার্তা আড়াল হয়ে গেছে।
ইরানে ১৯৭৯ সালের ইসলামি বিপ্লব এবং ২০০১ সালের নাইন ইলেভেনের সন্ত্রাসী হামলার পর ইসলামবিদ্বেষ আরো বেড়ে যায়। যুক্তরাষ্ট্র ও ইউরোপে মুসলিমদের প্রতি সন্দেহ, ভয় ও বিদ্বেষ ছড়াতে গণমাধ্যমে ইসলামের সঙ্গে ‘সন্ত্রাসবাদ’ শব্দটি যুক্ত করা হয়। গবেষণায় দেখা গেছে, যুক্তরাষ্ট্রের সংবাদপত্রে মুসলিমদের নিয়ে প্রকাশিত প্রায় ৭৮ শতাংশ প্রতিবেদন নেতিবাচক ভাষায় রচিত। এমনকি ইউরোপে ‘ইসলামি সন্ত্রাসবাদ’ বা ‘সহিংস ইসলাম’ শব্দগুচ্ছ ব্যবহারের মাধ্যমে মুসলিমসমাজকে হুমকি হিসেবে তুলে ধরা হয়েছে।
গণমাধ্যমের দায়িত্ব সত্যনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করা। কিন্তু বাস্তবে দেখা যায়, অনেক গণমাধ্যম ইসলাম ও মুসলিমদের নিয়ে একপেশে প্রচারণা চালায়। উদাহরণস্বরূপ, যুক্তরাষ্ট্রের ফক্স নিউজ বা ইউরোপের কিছু প্রভাবশালী পত্রিকা মুসলিমদের প্রায়ই ‘অসভ্য’, ‘চরমপন্থি’, ‘নারীবিদ্বেষী’ হিসেবে তুলে ধরে। এমনকি মুসলিম নারীদের হিজাব বা পর্দাকে নিপীড়নের প্রতীক হিসেবে দেখানো হয় অথচ এটি ধর্মীয় স্বাধীনতার একটি দিক। ২০১৪ সালের এক জরিপে দেখা গেছে, পশ্চিমা বিশ্বের তিন-চতুর্থাংশ মানুষ ইসলাম সম্পর্কে তাদের ধারণা তৈরি করে টেলিভিশন বা অনলাইন গণমাধ্যম থেকে।
মুসলিমরা কর্মক্ষেত্রে বৈষম্যের শিকার হয়, হিজাব পরিহিতা নারীরা হামলার মুখে পড়ে, এমনকি অনেক দেশেই ইসলামফোবিক আক্রমণ বেড়ে যায়। গবেষণায় দেখা গেছে, ইউরোপে ইসলামবিদ্বেষমূলক ঘটনার ৯০ শতাংশ ভুক্তভোগী নারী। অন্যদিকে, এই বিদ্বেষ মুসলিম তরুণদের মধ্যেও মানসিক চাপ ও আত্মসম্মানবোধের সংকট সৃষ্টি করে। তারা নিজেদের ধর্মীয় পরিচয় প্রকাশ করতে ভয় পায়। ফলে সমাজে এক ধরনের অবিশ্বাস ও বিভাজন তৈরি হয়, যা মানবতার সর্বজনীন বার্তার পরিপন্থী।
গণমাধ্যমে ইসলামকে প্রায়ই সহিংসতার ধর্ম হিসেবে তুলে ধরা হলেও, বাস্তবে ইসলাম শব্দের মূল অর্থই হচ্ছে মহান রবের কাছে আত্মসমর্পণ, যার মাধ্যমে শান্তি অর্জিত হয়। কোরআন ঘোষণা করেÑ‘আর আমরা তোমাকে (হে মুহাম্মদ সা: ) সমগ্র জগতের জন্য রহমত হিসেবে পাঠিয়েছি।’ (সুরা আল-আম্বিয়া, ২১ : ১০৭) নবী (মুহাম্মদ সা: )-এর জীবনে এমন অসংখ্য উদাহরণ রয়েছে, যেখানে তিনি শত্রুর প্রতিও ক্ষমা, সহানুভূতি ও মানবিক আচরণের শিক্ষা দিয়েছেন।
বাংলাদেশে তথাকথিত ধর্মনিরপেক্ষ মিডিয়ায় ইসলামবিদ্বেষ সামনে আনা হয় বেশ সূক্ষ্মভাবেই। এটি করা হয় শব্দচয়ন, সংবাদ নির্বাচন ও আলোচনার প্রেক্ষাপট নির্ধারণের মাধ্যমে। ফলে সাধারণ মানুষের ধর্মীয় অনুভূতি, মুসলিমসমাজের ইতিবাচক দিক এবং সহাবস্থানের মূল্যবোধ প্রায়ই বাদ পড়ে যায়।
গণমাধ্যমে ইসলামবিদ্বেষ মোকাবিলার জন্য প্রয়োজন যৌথ প্রচেষ্টা। কোরআনের নির্দেশনা অনুযায়ী, সত্য, ন্যায় ও শান্তির পথে অটল থাকাই একমাত্র সমাধান। মিথ্যা প্রচারণা ও ইসলামবিদ্বেষ যতই শক্তিশালী হোক, সত্যের আলো একদিন তা মুছে দেবে। গণমাধ্যম যদি সত্য, ন্যায় ও মানবতার পথে ফিরে আসে, তবে বিশ্বে শান্তি ও পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ প্রতিষ্ঠা সম্ভব হবে, যা ইসলামের প্রকৃত বার্তা।
লেখক : ব্যাংকার ও প্রাবন্ধিক
Email: taifurrahmanibbl@gmail.com


নিউ ইয়র্কে একটি অনুষ্ঠানে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছিলেন, ‘ড. ইউনূসের মধ্যে জিয়াউর রহমানের প্রতিচ্ছবি দেখছি।’ দিনটি ছিল ২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫। মাত্র এক মাসের মাথায় কী এমন ঘটল, সেই ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে এখন তুলনা করা হচ্ছে জেনারেল আইয়ুব খান ও জেনারেল ইয়াহিয়া খানের
১৪ ঘণ্টা আগে
ভারতে হিন্দু দক্ষিণপন্থিরা সাংস্কৃতিক উৎসবগুলো সামাজিক ও রাজনৈতিক যুদ্ধের অস্ত্রে পরিণত করেছে। যে উৎসবগুলো একসময় ছিল আলো, রঙ আর ভক্তির, সেগুলো তারা এখন ভয় প্রদর্শনের উপলক্ষ বানিয়ে ফেলেছে।
২ দিন আগে
হাসিনার দেড় দশকের শাসনে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোয় ইসলামোফোবিয়া ভয়ংকর মাত্রায় রূপ নিয়েছিল। টুপি কিংবা হিজাব পরার কারণে বহু শিক্ষার্থী শারীরিক ও মানসিক নিপীড়নের শিকার হয়েছে। দাড়ি রাখা, নামাজ পড়া কিংবা প্রাথমিকপর্যায়ে মাদরাসায় পড়েছেন এমন শিক্ষার্থীদের শ্রেণিকক্ষে নানাভাবে হেনস্তা করা হয়েছে। বহু শিক্ষার্থীকে ধ
২ দিন আগে
বাংলাদেশের রাজনীতি এক অদ্ভুত মোড়ে এসে দাঁড়িয়েছে। সামনে জাতীয় নির্বাচন, কিন্তু রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট দিন দিন আরো জটিল হয়ে উঠছে। নির্বাচন কমিশনের সংশোধিত গণপ্রতিনিধিত্ব আদেশ (আরপিও) এখন নতুন করে নেড়ে দিয়েছে রাজনৈতিক মাঠ। সংশোধিত নিয়ম অনুযায়ী, এখন থেকে জোটের প্রার্থীরা আর প্রধান দলের প্রতীকে ভোট করতে পার
৩ দিন আগে