ড. মো. ফরিদ তালুকদার
ডানপন্থার রাজনীতি নিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিমভাবে ভয়ের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। জনগণ যখনই তাদের স্বাধীনতা ক্লেইম করতে চায়, স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে চায় অথবা রাজনৈতিক মতপ্রকাশ করতে চায়, তা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কিছু রাজনীতিবিদ এবং কিছু বুদ্ধিজীবী নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে জনগণকে ‘ডানপন্থার উত্থানের’ ভয় দেখায়। এই ভয় কেন দেখায়, ভয়ের উৎসই বা কী বা এই ভয়ের আদৌ কোনো কারণ আছে কি না, তা ব্যাপক আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
যদিও এই ভয় দেখানো নতুন কিছু না। আগেও দেখানো হতো কিন্তু এখন আরো পরিষ্কারভাবে, উচ্চ স্বরে বলা হচ্ছে যে, দেশে ‘ডানপন্থা বা দক্ষিণপন্থার উত্থান’ হচ্ছে, যার জন্য দেশ বিপদে পড়বে।
কিন্তু জনগণ এটি পরিষ্কারভাবে জানতে অথবা বুঝতে পারছে না যে ‘ডান পন্থার উত্থান’ বলতে এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা আসলে কী বোঝাতে চান। কিন্তু তাদের কথার ধরন এবং বডি ল্যাংগুয়েজ দেখে এটা বোঝা যায় যে ডানপন্থা হলো ‘খারাপ’ একটা পন্থা এবং এর ‘উত্থানে’ বাংলাদেশ বিপদে পড়বে।
এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের টকশো এবং সেমিনারের আলোচনা শুনে মোটামুটি তিনটা কারণ স্পষ্ট হয় যে কেন তারা ‘ডানপন্থার উত্থান’কে বিপজ্জনক বলছেন।
প্রথমত, আধুনিক বিশ্বে যেকোনো রাষ্ট্রকে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে স্বার্থের কারণে কানেকটেড থাকতে হয়। সে জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রই অন্য রাষ্ট্রের নানা বিষয় বিশেষ করে রাজনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর লক্ষ রাখে। তাই অন্য দেশ বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে জানতে চেষ্টা করে আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্য দেশ যখন বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি জানতে চায়, তখন আমাদের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশটা বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্র ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে না। এই না পারার কারণের মধ্যে অন্যতম একটা কারণ হলো, আমাদের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে এই দেশের গণমানুষের সম্পর্ক নেই বললেই চলে। এই গণমানুষ হলো তারা, যারা রাষ্ট্রের রক্ত চুষে খায় না, কিন্তু রাষ্ট্রের যখন রক্ত দরকার হয়, তখন তারা নিজেদের রক্ত দেয়। সম্পর্ক না থাকার কারণেই ওই বুদ্ধিজীবীরা গণমানুষের রাজনৈতিক অ্যাসপিরেশন বুঝে না। অন্যদিকে গণমানুষের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক আছে কিন্তু যেহেতু রাজনীতির ধরন হলো ‘উপর থেকে নিচ’ মানে ‘টপ ডাউন অ্যাপ্রস’ তাই নেতারা রাজনীতি উপর থেকে নিচে চাপিয়ে দেয়। এ জন্য তারাও বুদ্ধিজীবীদের মতো গণমানুষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ।
দ্বিতীয় কারণ হলো বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের, বিশেষ করে ভারত ও পশ্চিমা বন্ধুদের যে বয়ান, আমাদের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ সেই বয়ান ধারণ করে। বিদেশিদের সমর্থন এবং নানা প্রোজেক্ট (প্রকল্প) পাওয়ার জন্য রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ কখনো কখনো নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিদেশিদের ডানপন্থার বয়ান ফেরি করে। বিদেশিদের বয়ান যে আমাদের গণমানুষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না বা তাদের ধারণায় ঘাটতি আছে বা ভুল আছে, এটি বোঝানোর মতো ইচ্ছা, সৎসাহস এবং যোগ্যতা আমাদের ওই রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের নেই আর থাকলেও কাজে লাগায় না স্বার্থের কারণে।
তৃতীয়ত, ডানপন্থা বলতে এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা আসলে চরমপন্থাকেই মিন করে থাকে। তারা মাজার ভাঙাকে অথবা মাজারে আগুন দেওয়ার মতো অপরাধকে ডানপন্থা হিসেবে পাঠ করে এবং চরমপন্থা হিসেবে অনুবাদ করে। মাজার ভাঙার সঙ্গে ডানপন্থা বা বামপন্থার কোনো সম্পর্ক নেই; এর সম্পর্ক মূলত সেই এলাকার মানুষের জীবনে মাজারের প্রভাব এবং যাকে কেন্দ্র করে মাজার গড়ে উঠেছে, তার জীবনাচারের সঙ্গে। মাজার, মাজারের এলাকা এবং ওই এলাকার মানুষের জীবনমান আমলে না নেওয়ার কারণে রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এটা বোঝাতে চায় যে ডানপন্থা মানে রেডিক্যালিজম বা এক্সট্রিমিজম। তারা হয়তো জানেও না যে ডানপন্থা, এমনকি বামপন্থাও না, রেডিক্যালও না—এক্সট্রিমিস্ট। অর্থাৎ, তারা জানে না যে ডানপন্থা বা বামপন্থাকে রেডিক্যালিজম বা এক্সট্রিমিজম হিসেবে ডিফাইন করা যাবে না আর যদি জানেও, তাহলে চালাকি করে সেই সত্য গোপন করে।
এর কারণ হলো আমাদের এই নির্দিষ্ট কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা হয়তো খাতা-কলমে এটি কখনো জানার চেষ্টা করেনি যে এই ডানপন্থার রাজনীতি আর কোন কোন দেশে আছে। যেহেতু হোমওয়ার্ক করে না, সেহেতু জানে না যে বাংলাদেশের সঙ্গে যতগুলো রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তার সবগুলো রাষ্ট্রেই ডানপন্থার রাজনীতি আছে। তারা হয়তো এটাও জানে না যে পশ্চিমের অনেক দেশে ডানপন্থি দল এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে। আমেরিকার বর্তমান সরকারকে ডানপন্থি সরকার বলা হয়। ব্রিটেনের সাবেক সরকার (কনজারভেটিভ পার্টির) ডানপন্থি সরকার হিসেবেই পরিচিত। কেউ কেউ তো বলছে না যে পশ্চিমের ডানপন্থি দলের সরকার রেডিক্যাল সরকার। বলছে না কারণ ডানপন্থা মানেই রেডিক্যালিজম নয়, ডানপন্থা মানেই এক্সট্রিমিজম নয়।
বাংলাদেশে ডানপন্থা, বামপন্থা, মধ্যমপন্থাসহ গণতান্ত্রিক সব পন্থাই থাকবে। জনগণ যদি ডানপন্থাকে ক্ষমতায় বসায় অথবা বামপন্থাকে বেছে নেয় অথবা মধ্যমপন্থা পছন্দ করে, করুক। গণমানুষের রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটুক। নাগরিক হিসেবে এই অধিকার তাদের আছে।
কিন্তু কেউ যদি ডানপন্থার উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে ডানপন্থাকে অন্যায়ভাবে রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে দেখে এবং প্রচার করে, তাহলে যারা ডানপন্থার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হয় এবং তাদের হত্যাযোগ্য করে তোলা হয়। এ ঘটনা ঘটেছে গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনার আমলে। তখন যে কাউকে রেডিক্যাল হিসেবে তুলে ধরে হত্যা করা জায়েজ ছিল। সেই যুগে কেউ ফিরতে চায় না।
তাই যারা বুঝে হোক, না বুঝে হোক, পশ্চিমা বন্ধু ও ভারতকে খুশি করার জন্য হোক অথবা অনৈতিক স্বার্থের জন্য হোক, বাংলাদেশের ডানপন্থাকে রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে পাঠ করবেন, তারা নিজেরাও বিপদে পড়বেন। কারণ ডানপন্থা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধারণ মানুষগুলো যদি রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে পাঠ করে, তাদের জীবন হুমকির মধ্যে ফেলা হয়, তাহলে পুরো দেশই অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃশক্তির আক্রমণে পড়বে। আর তখন আপনাদের চালাকির খেসারত দেবে পুরো দেশ।
লেখক : শিক্ষক, গবেষক
mtalukder@mcneese.edu
ডানপন্থার রাজনীতি নিয়ে বাংলাদেশে কৃত্রিমভাবে ভয়ের একটা পরিবেশ সৃষ্টি করে রাখা হয়েছে। জনগণ যখনই তাদের স্বাধীনতা ক্লেইম করতে চায়, স্বাধীনভাবে রাজনৈতিক সিদ্ধান্ত নিতে চায় অথবা রাজনৈতিক মতপ্রকাশ করতে চায়, তা বন্ধ করে দেওয়ার জন্য কিছু রাজনীতিবিদ এবং কিছু বুদ্ধিজীবী নিরাপত্তার অজুহাত দেখিয়ে জনগণকে ‘ডানপন্থার উত্থানের’ ভয় দেখায়। এই ভয় কেন দেখায়, ভয়ের উৎসই বা কী বা এই ভয়ের আদৌ কোনো কারণ আছে কি না, তা ব্যাপক আলোচনা হওয়া প্রয়োজন।
যদিও এই ভয় দেখানো নতুন কিছু না। আগেও দেখানো হতো কিন্তু এখন আরো পরিষ্কারভাবে, উচ্চ স্বরে বলা হচ্ছে যে, দেশে ‘ডানপন্থা বা দক্ষিণপন্থার উত্থান’ হচ্ছে, যার জন্য দেশ বিপদে পড়বে।
কিন্তু জনগণ এটি পরিষ্কারভাবে জানতে অথবা বুঝতে পারছে না যে ‘ডান পন্থার উত্থান’ বলতে এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা আসলে কী বোঝাতে চান। কিন্তু তাদের কথার ধরন এবং বডি ল্যাংগুয়েজ দেখে এটা বোঝা যায় যে ডানপন্থা হলো ‘খারাপ’ একটা পন্থা এবং এর ‘উত্থানে’ বাংলাদেশ বিপদে পড়বে।
এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের টকশো এবং সেমিনারের আলোচনা শুনে মোটামুটি তিনটা কারণ স্পষ্ট হয় যে কেন তারা ‘ডানপন্থার উত্থান’কে বিপজ্জনক বলছেন।
প্রথমত, আধুনিক বিশ্বে যেকোনো রাষ্ট্রকে অন্যান্য রাষ্ট্রের সঙ্গে স্বার্থের কারণে কানেকটেড থাকতে হয়। সে জন্য প্রত্যেক রাষ্ট্রই অন্য রাষ্ট্রের নানা বিষয় বিশেষ করে রাজনীতির গতি-প্রকৃতির ওপর লক্ষ রাখে। তাই অন্য দেশ বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি সম্বন্ধে জানতে চেষ্টা করে আর এটাই স্বাভাবিক। কিন্তু অন্য দেশ যখন বাংলাদেশের রাজনীতির গতিপ্রকৃতি জানতে চায়, তখন আমাদের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশটা বাংলাদেশের রাজনীতির চিত্র ভালোভাবে তুলে ধরতে পারে না। এই না পারার কারণের মধ্যে অন্যতম একটা কারণ হলো, আমাদের বুদ্ধিজীবীদের সঙ্গে এই দেশের গণমানুষের সম্পর্ক নেই বললেই চলে। এই গণমানুষ হলো তারা, যারা রাষ্ট্রের রক্ত চুষে খায় না, কিন্তু রাষ্ট্রের যখন রক্ত দরকার হয়, তখন তারা নিজেদের রক্ত দেয়। সম্পর্ক না থাকার কারণেই ওই বুদ্ধিজীবীরা গণমানুষের রাজনৈতিক অ্যাসপিরেশন বুঝে না। অন্যদিকে গণমানুষের সঙ্গে রাজনীতিবিদদের সম্পর্ক আছে কিন্তু যেহেতু রাজনীতির ধরন হলো ‘উপর থেকে নিচ’ মানে ‘টপ ডাউন অ্যাপ্রস’ তাই নেতারা রাজনীতি উপর থেকে নিচে চাপিয়ে দেয়। এ জন্য তারাও বুদ্ধিজীবীদের মতো গণমানুষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষা বুঝতে ব্যর্থ।
দ্বিতীয় কারণ হলো বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে বিদেশিদের, বিশেষ করে ভারত ও পশ্চিমা বন্ধুদের যে বয়ান, আমাদের রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ সেই বয়ান ধারণ করে। বিদেশিদের সমর্থন এবং নানা প্রোজেক্ট (প্রকল্প) পাওয়ার জন্য রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ কখনো কখনো নিজেরা স্বপ্রণোদিত হয়ে বিদেশিদের ডানপন্থার বয়ান ফেরি করে। বিদেশিদের বয়ান যে আমাদের গণমানুষের রাজনৈতিক আকাঙ্ক্ষাকে ধারণ করে না বা তাদের ধারণায় ঘাটতি আছে বা ভুল আছে, এটি বোঝানোর মতো ইচ্ছা, সৎসাহস এবং যোগ্যতা আমাদের ওই রাজনীতিবিদ ও বুদ্ধিজীবীদের নেই আর থাকলেও কাজে লাগায় না স্বার্থের কারণে।
তৃতীয়ত, ডানপন্থা বলতে এই কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা আসলে চরমপন্থাকেই মিন করে থাকে। তারা মাজার ভাঙাকে অথবা মাজারে আগুন দেওয়ার মতো অপরাধকে ডানপন্থা হিসেবে পাঠ করে এবং চরমপন্থা হিসেবে অনুবাদ করে। মাজার ভাঙার সঙ্গে ডানপন্থা বা বামপন্থার কোনো সম্পর্ক নেই; এর সম্পর্ক মূলত সেই এলাকার মানুষের জীবনে মাজারের প্রভাব এবং যাকে কেন্দ্র করে মাজার গড়ে উঠেছে, তার জীবনাচারের সঙ্গে। মাজার, মাজারের এলাকা এবং ওই এলাকার মানুষের জীবনমান আমলে না নেওয়ার কারণে রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীদের ওই অংশ প্রকাশ্যে-অপ্রকাশ্যে এটা বোঝাতে চায় যে ডানপন্থা মানে রেডিক্যালিজম বা এক্সট্রিমিজম। তারা হয়তো জানেও না যে ডানপন্থা, এমনকি বামপন্থাও না, রেডিক্যালও না—এক্সট্রিমিস্ট। অর্থাৎ, তারা জানে না যে ডানপন্থা বা বামপন্থাকে রেডিক্যালিজম বা এক্সট্রিমিজম হিসেবে ডিফাইন করা যাবে না আর যদি জানেও, তাহলে চালাকি করে সেই সত্য গোপন করে।
এর কারণ হলো আমাদের এই নির্দিষ্ট কিছু রাজনীতিবিদ এবং বুদ্ধিজীবীরা হয়তো খাতা-কলমে এটি কখনো জানার চেষ্টা করেনি যে এই ডানপন্থার রাজনীতি আর কোন কোন দেশে আছে। যেহেতু হোমওয়ার্ক করে না, সেহেতু জানে না যে বাংলাদেশের সঙ্গে যতগুলো রাষ্ট্রের কূটনৈতিক সম্পর্ক আছে, তার সবগুলো রাষ্ট্রেই ডানপন্থার রাজনীতি আছে। তারা হয়তো এটাও জানে না যে পশ্চিমের অনেক দেশে ডানপন্থি দল এখন রাষ্ট্রক্ষমতায় আছে। আমেরিকার বর্তমান সরকারকে ডানপন্থি সরকার বলা হয়। ব্রিটেনের সাবেক সরকার (কনজারভেটিভ পার্টির) ডানপন্থি সরকার হিসেবেই পরিচিত। কেউ কেউ তো বলছে না যে পশ্চিমের ডানপন্থি দলের সরকার রেডিক্যাল সরকার। বলছে না কারণ ডানপন্থা মানেই রেডিক্যালিজম নয়, ডানপন্থা মানেই এক্সট্রিমিজম নয়।
বাংলাদেশে ডানপন্থা, বামপন্থা, মধ্যমপন্থাসহ গণতান্ত্রিক সব পন্থাই থাকবে। জনগণ যদি ডানপন্থাকে ক্ষমতায় বসায় অথবা বামপন্থাকে বেছে নেয় অথবা মধ্যমপন্থা পছন্দ করে, করুক। গণমানুষের রাজনৈতিক ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটুক। নাগরিক হিসেবে এই অধিকার তাদের আছে।
কিন্তু কেউ যদি ডানপন্থার উত্থানে উদ্বিগ্ন হয়ে ডানপন্থাকে অন্যায়ভাবে রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে দেখে এবং প্রচার করে, তাহলে যারা ডানপন্থার রাজনীতির সঙ্গে জড়িত, তাদের রাজনৈতিক অধিকার হরণ করা হয় এবং তাদের হত্যাযোগ্য করে তোলা হয়। এ ঘটনা ঘটেছে গত একযুগেরও বেশি সময় ধরে শেখ হাসিনার আমলে। তখন যে কাউকে রেডিক্যাল হিসেবে তুলে ধরে হত্যা করা জায়েজ ছিল। সেই যুগে কেউ ফিরতে চায় না।
তাই যারা বুঝে হোক, না বুঝে হোক, পশ্চিমা বন্ধু ও ভারতকে খুশি করার জন্য হোক অথবা অনৈতিক স্বার্থের জন্য হোক, বাংলাদেশের ডানপন্থাকে রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে পাঠ করবেন, তারা নিজেরাও বিপদে পড়বেন। কারণ ডানপন্থা রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত সাধারণ মানুষগুলো যদি রেডিক্যাল অথবা এক্সট্রিমিস্ট হিসেবে পাঠ করে, তাদের জীবন হুমকির মধ্যে ফেলা হয়, তাহলে পুরো দেশই অভ্যন্তরীণ এবং বহিঃশক্তির আক্রমণে পড়বে। আর তখন আপনাদের চালাকির খেসারত দেবে পুরো দেশ।
লেখক : শিক্ষক, গবেষক
mtalukder@mcneese.edu
এই বছর অর্থনীতির নোবেল পুরস্কার দেওয়া হয়েছে উদ্ভাবন ও সৃজনশীল ধ্বংসের প্রক্রিয়া (creative destruction) কীভাবে দীর্ঘমেয়াদি অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির মূল চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে সেই গবেষণার ওপর। নতুন প্রযুক্তি ও ধারণা পুরোনো ব্যবস্থাকে প্রতিস্থাপন করে সমাজ যখন পরিবর্তনের জন্য উন্মুক্ত থাকে, তখনই টেক
৮ ঘণ্টা আগে‘মনের তালা খুলল কে, চাবিওয়ালা, চাবিওয়ালা!’ প্রখ্যাত শিল্পী রুনা লায়লার সেই সুরেলা প্রশ্নের উত্তর আজও খুঁজে বেড়াচ্ছি! তবে ব্যক্তিগত জীবনে নয়, রাষ্ট্রীয় জীবনে। এই রাষ্ট্রের জীবনেও একটা বিশেষ তালা আছে, আর তার নাম আর্টিকেল ৭০! এই তালা লাগানো হয়েছিল সেই সব মাননীয়র জন্য, যাদের মধ্যে ‘ছাগলীয়’ প্রবৃত্তি রয়ে
৮ ঘণ্টা আগেভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ইসরাইলের যুদ্ধাপরাধী প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহুকে প্রায়ই তার পরম বন্ধু বলে বেশ গৌরবের সঙ্গে প্রচার করে থাকেন। ভিন্ন দেশের এ দুই রাজনীতিবিদের প্রগাঢ় বন্ধুত্বের মূল সূত্র হলো মুসলমানদের প্রতি তাদের তীব্র ঘৃণা। বর্তমান বিশ্বে ইসলামোফোবিয়ায় আক্রান্ত শীর্ষ দুটি
৮ ঘণ্টা আগেগাজার ভবিষ্যৎ নিয়ে যখন হতাশা চরমে, তখনই যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প ঘোষণা করেছেন এক নতুন ‘২০ দফার শান্তি পরিকল্পনা’। সেখানে তিনি নিজেকে বসিয়েছেন একটি তথাকথিত ‘বোর্ড অব পিস’-এর চেয়ারম্যান হিসেবে।
১ দিন আগে