উচ্চকক্ষের বিকল্প

ডক্টর তারেক ফজল
প্রকাশ : ২৫ জানুয়ারি ২০২৫, ১২: ৪৪

বিএনপি এবং আরো নির্দিষ্ট করে বললে মি. তারেক রহমান, ২০২২ সালে (১১ ডিসেম্বর) ২৭ দফার রাষ্ট্র সংস্কার কর্মসূচি ঘোষণা করেছিলেন। এরপর দলটি সমমনা অন্য দলগুলোর সঙ্গে আলোচনা করে উপস্থাপন করে ৩১ দফার রাষ্ট্র মেরামতের যৌথ কর্মসূচি, ১৩ জুলাই ২০২৪। ৩১ দফার ৫ নম্বরে ‘বিশেষজ্ঞ জ্ঞান ও অভিজ্ঞতাসম্পন্ন ব্যক্তিদের’ সমন্বয়ে আইনসভার একটি উচ্চকক্ষ গঠনের প্রস্তাব দেওয়া হয়।

বিজ্ঞাপন

ইতোমধ্যে ডক্টর আলী রীয়াজের নেতৃত্বে সংবিধান কমিশন দ্বিকক্ষবিশিষ্ট আইনসভার সুপারিশ করেছে। নিম্নকক্ষের নাম দিয়েছে ন্যাশনাল অ্যাসেম্বলি আর উচ্চকক্ষের নাম হবে সিনেট। নিম্নকক্ষে ৩০০টি নির্বাচনী এলাকা থেকে ৩০০ জন সদস্য নির্বাচিত হবেন। এই কক্ষে ১০০ জন নারী সদস্য সমসংখ্যক নির্বাচনী এলাকা থেকে শুধু নারীদের সঙ্গে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে নির্বাচিত হবেন। উচ্চকক্ষে ১০৫ জন সদস্য পিআর ব্যবস্থায় নির্বাচিত হবেন। তাদের মধ্যে পাঁচজন সদস্য হবেন ক্ষুদ্র নৃগোষ্ঠী ও অন্য পিছিয়ে থাকা জনগোষ্ঠীর মধ্য থেকে। কমিশনের সুপারিশে নিম্নকক্ষের বাংলা নাম বলা হয়েছে ‘জাতীয় সংসদ’।

কোনো ‘নাম’-এর ‘অনুবাদ’ হয় না। অন্যসব ভাষাতেই ‘একটি নাম’ মূল রূপে উচ্চারিত হবে, এটিই ‘ব্যাকরণ’। কমিশন এ ব্যাকরণ স্মরণে রাখেনি।

দুই কক্ষ মিলে বাংলাদেশের প্রস্তাবিত ‘আইনসভা’টির ‘নাম’ কী হবে, কমিশন তা বলেছে বলে মনে হয়নি। দুই কক্ষ মিলে একটি ‘নাম’ চাই। সংবিধান কমিশনেরই তা প্রস্তাব করা উচিত এবং উচিত ছিল।

আমি ইতোমধ্যে প্রস্তাব করেছি, বিদ্যমান সামগ্রিক বাস্তবতায় উল্লেখযোগ্য ব্যয়সাধ্য একটি পূর্ণরূপের উচ্চকক্ষ গঠন না করাই উচিত এবং লাভজনক। এটি ছাড়াও প্রস্তাবিত উচ্চকক্ষের লক্ষ্য অর্জন করা সম্ভব।

বলেছি, বিদ্যমান ৩০০ সাধারণ আসনের সঙ্গে ২৫টি নারীদের জন্য ও ৭৫টি কথিত বিশেষজ্ঞ এবং অভিজ্ঞদের জন্য সংরক্ষণ করা যায়। সংরক্ষিত আসনের সদস্যদের পিআর ব্যবস্থায় বাছাই করা যাবে। এতে বিশেষজ্ঞদের কথিত/কাঙ্ক্ষিত সেবা পাওয়া যাবে। বিপুল অঙ্কের ব্যয় থেকে রেহাই মিলবে। পৃথক কক্ষসংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য জটিলতা থেকেও মুক্ত থাকা যাবে।

লেখক : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি বিজ্ঞানের প্রফেসর

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত