প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) এএমএম নাসির উদ্দিনের সাম্প্রতিক বক্তব্য চরম দায়িত্বজ্ঞানহীনতা ও অসংবেদনশীলতার প্রকাশ ঘটেছে বলে মন্তব্য করেছে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ।
সোমবার বিকেলে ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় সভাপতি মুনতাছির আহমাদ ও সেক্রেটারি জেনারেল সুলতান মাহমুদ যৌথ বিবৃতিতে সিইসির বক্তব্যের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানান।
বিবৃতিতে নেতারা বলেন, সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে সিইসি আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির অবনতি অস্বীকার করে নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী প্রার্থী ও দেশের গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা প্রসঙ্গে বক্তব্য রাখতে গিয়ে বলেন, প্রতি নির্বাচনের আগেই কিছু ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ ঘটনা ঘটে থাকে। বক্তব্যের এই ধারাবাহিকতায় তিনি ইনকিলাব মঞ্চের মুখপাত্র ও জুলাই আন্দোলনের অগ্রসেনানি শরীফ ওসমান হাদীর ওপর সংঘটিত নৃশংস হামলার ঘটনাকেও ‘অনাকাঙ্ক্ষিত’ বলে আখ্যায়িত করেন।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন বাংলাদেশ মনে করে, একটি পরিকল্পিত ও নৃশংস হামলাকে ‘অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা’ হিসেবে উপস্থাপন করা শুধু দায়িত্বজ্ঞানহীনই নয়; এটি ভুক্তভোগী, তাঁর পরিবার এবং জাতির বিবেকের প্রতি চরম অবমাননাকর।
তারা আরো বলেন, দেশের নির্বাচন কমিশনের প্রধান একজন সাংবিধানিক ও দায়িত্বশীল ব্যক্তি। তাঁর মুখ থেকে এ ধরনের অসংবেদনশীল ও দায় এড়ানোর বক্তব্য কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। একজন সাংবিধানিক পদধারী হিসেবে এমন বক্তব্যের জন্য সিইসিকে অবিলম্বে জাতির কাছে ক্ষমা চাইতে হবে।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলন নেতারা বলেন, আমরা এমন একটি বাংলাদেশ চাই যেখানে সাম্য, মানবিক মর্যাদা ও সামাজিক ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হবে; যেখানে শান্তি-শৃঙ্খলা ও নাগরিক নিরাপত্তা নিশ্চিত থাকবে। যারা শান্তি-শৃঙ্খলা বিনষ্ট করে, তারা রাষ্ট্র, সমাজ ও মানবতার শত্রু।
তারা দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, অতীতে ফ্যাসিবাদী শাসনামলে নির্বাচন কমিশনের পক্ষ থেকে যে ধরনের দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্য জাতি প্রত্যক্ষ করেছে, ফ্যাসিবাদমুক্ত বাংলাদেশে এসে একই ধরনের বক্তব্য শোনা গভীর হতাশাজনক।
ইসলামী ছাত্র আন্দোলনের পক্ষ থেকে তিন দফা দাবি জানানো হয়। সেগুলো হলো- নির্বাচন কমিশনকে অবিলম্বে জাতির সামনে এসে উক্ত দায়িত্বজ্ঞানহীন বক্তব্যের জন্য প্রকাশ্যে ক্ষমা প্রার্থনা করতে হবে। নির্বাচনি সময়ে প্রার্থী ও গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বদের নিরাপত্তা নিশ্চিতে কার্যকর ও দৃশ্যমান পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে। নৃশংস হামলার ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের দ্রুত আইনের আওতায় এনে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।

