আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস

ইসলামে পরিবারের কাম্য রূপ

ডা. মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
প্রকাশ : ১৬ মে ২০২৫, ১০: ১৭
প্রতীকী ছবি

১৫ মে ছিল আন্তর্জাতিক পরিবার দিবস ২০২৫। যৌথ পরিবারের ঐতিহ্য ধরে রাখার মানসিকতা সৃষ্টির লক্ষ্যে জাতিসংঘ ১৯৯৬ সাল থেকে দিবসটি পালন করে আসছে। পরিবার আত্মিক সম্পর্কের সূতিকাগার। রক্তের বন্ধন মানেই পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সব সদস্যের মধ্যে অকৃত্রিম সুসম্পর্ক গড়ে তোলা এবং তা অটুট রাখা আমাদের সবার নৈতিক দায়িত্ব। আমাদের চিরায়ত সমাজব্যবস্থায় সুন্দর জীবনের একটি গুরুত্বপূর্ণ শর্ত হচ্ছে, সুন্দর পারিবারিক বন্ধন। পরিবারের সব সদস্যের মধ্যে পারস্পরিক সম্পর্ক বন্ধুর মতো হলে পারিবারিক নানা জটিল সমস্যা ও মোকাবিলা করা যায়। সবার এগিয়ে চলার পথ হয় মসৃণ।

পৃথিবীর প্রথম পরিবার গড়ে ওঠে আদম (আ.) ও তার স্ত্রী হাওয়ার মাধ্যমে। পরিবারের সদস্য প্রথমত তারা স্বামী-স্ত্রী দুজন ছিলেন। সৃষ্টির পর মহান আল্লাহ এ পরিবারকে জান্নাতে বসবাস করতে দেন।

আল্লাহ বলেন, ‘হে আদম! তুমি আর তোমার স্ত্রী দুজনেই জান্নাতে বসবাস করো।’ (সুরা বাকারা : ৩৫) এরপর তারা পৃথিবীতে আগমন করলেন। তাদের থেকে জন্ম নেয় তাদের সন্তান-সন্ততি। এভাবে পৃথিবীতে পরিবার ও পারিবারিক ব্যবস্থার সূচনা হয়। আর পারিবারিক জীবনের গুরুত্ব বোঝাতে আল্লাহতায়ালা বলেন, ‘হে মানবমণ্ডলী! তোমরা তোমাদের প্রতিপালককে ভয় করো, যিনি তোমাদের এক ব্যক্তি থেকেই সৃষ্টি করেছেন ও যিনি তা থেকে তার স্ত্রী সৃষ্টি করেছেন এবং যিনি তাদের দুজন থেকে বহু নর-নারী ছড়িয়ে দিয়েছেন।’ (সুরা নিসা : ১) অন্য আয়াতে আল্লাহ বলেন, ‘হে মানুষ! আমি তোমাদের সৃষ্টি করেছি এক পুরুষ এবং এক নারী থেকে। তারপর তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা পরস্পরে পরিচিতি লাভ করতে পারো।’ (সুরা হুজুরাত : ১৩)

পারিবারিক জীবনের সুফল উপরোক্ত আয়াত থেকে স্পষ্ট প্রতীয়মাণ হয়, পারিবারিক বন্ধন থেকেই মানব বংশ সম্প্রসারণ হয়েছে। যদি সব জাতি ও গোত্রের লোকরা বিভিন্ন পরিবারে বিভক্ত হয়ে নিজ নিজ দায়িত্ব যথাযথভাবে পালন করেন, তবে সে পরিবার সমাজে সর্বোত্তম আদর্শ পরিবার হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করবে। যেখানে বইতে থাকে শান্তির ফল্গুধারা। পরিবারের প্রতিটি সদস্যের বিচরণ হবে সুখকর ও আনন্দময়।

পরিবারের সদস্যরা যখন আল্লাহর দেওয়া দায়িত্বানুভূতি সম্পর্কে সজাগ থাকবে, তখন স্ত্রী তার অধিকার পূর্ণাঙ্গভাবে লাভ করবে। স্বামী যখন স্ত্রীর কাছে তার অধিকার পাবে। সন্তান বাবা-মায়ের ঘনিষ্ঠ সাহচর্য ও তাদের অধিকার লাভ করবে। আত্মীয়-স্বজন যখন পরস্পরের যথাযথ সম্মান মর্যাদা পাবে। তখন কোনো স্ত্রী আর তার অধিকারের দাবিতে প্রকাশ্য জনপথে আন্দোলনে বের হবে না। কোনো স্বামী ভালোবাসা ও সুন্দর জীবনযাপনে অন্য নারীর প্রতি আসক্ত হবে না। কোনো সন্তানই বাবা-মায়ের অবাধ্য হয়ে উচ্ছৃঙ্খল জীবনযাপন করবে না।

আত্মীয়স্বজনের সম্পর্কের দৃঢ়তায় আল্লাহর রহমত, বরকত ও অনুগ্রহ বর্ষিত হতে থাকবে। শুধু তাই নয়, ইসলাম নির্দেশিত পারিবারিক জীবন হলো আল্লাহতায়ালার মহা-অনুগ্রহ।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত