ওয়ালিউল্লাহ সিরাজ
অর্গানইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) মুসলিম বিশ্বের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা এবং তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে জন্ম নিয়েছিল। ৫৬ বছর আগে জন্ম নেওয়া ৫৭টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাটি মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা কতটা করতে পেরেছে, সে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতায় সবকিছু ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পরও ওআইসির নীরবতা সেই প্রশ্নকে আরো তীব্র করেছে।
দেড় বছর ধরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। নিষ্পাপ নারী-শিশু, হাসপাতালের রোগীÑ কেউ রেহাই পায়নি তাদের বর্বরতা থেকে। শিশু ও হাসপাতালগুলোকে ইসরাইলিরা বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। গাজার সর্বশেষ হাসপাতালটিও তারা বোমার আঘাতে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৯৪৪ জন নিহত এবং ১১৬,০৪৫ জন আহত হয়েছে। এত মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ দেখেও কেন ঘুম ভাঙছে না ওআইসির। যৌক্তিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে কী কাজ ওআইসির?
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ইসরাইল মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগ করে। ফলে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় ২৫ আগস্ট ১৪টি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিসরের রাজধানী কায়রোতে এক বৈঠকে মিলিত হন। সৌদি আরব প্রস্তাব করে, যেহেতু বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের জন্য স্পর্শকাতর, তাই সব মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে নিয়েই শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করবে। মরক্কো, সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, মালয়েশিয়া এবং নাইজারকে নিয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়।
একই বছর ২২-২৫ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাবাতে ২৫টি মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে এক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সিদ্ধান্তক্রমে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা নামে এই প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওআইসি প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ৫৭টি ইসলামি রাষ্ট্র নিয়ে এ সংস্থা গঠিত। তবে ২০১১ সালের ২৮ জুন আস্তানা, কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে সংস্থাটির নাম ইসলামি সম্মেলন সংস্থা পরিবর্তন করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা করা হয়। এ সময় ওআইসির লোগোও পরিবর্তন করা হয়।
জাতিসংঘের পর সবচেয়ে বড় আন্তঃদেশীয় এই জোট বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রত্যেক বছর একবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটা বৈঠক হয়। তিন বছর পরপর দেশগুলোর প্রধানরা আয়োজন করেন সম্মেলন। এসব সম্মেলন থেকে অর্জনের খাতায় যোগ হয় শুধু আনুষ্ঠানিকতা, চা-চক্র আর ফটোসেশন। মুসলিম উম্মাহর স্বপ্ন, চাওয়া-পাওয়া থেকে যায় পর্দার আড়ালেই।
গাজা ইস্যুতে ওআইসি ও আরববিশ্বের নিষ্ক্রিয়তা দেখে সাম্প্রতিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ঝড়ো হাওয়ায় গাছের শুকনো পাতা যেভাবে আকাশে উড়ে যায়, বোমার আঘাতে পবিত্র ভূমির মানুষদের সেভাবে আকাশে উড়তে দেখল বিশ্ববাসী। পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষ, ২০০ কোটি মুসলমান, জাতিসংঘ, ওআইসি, আরববিশ্ব—কেউই হায়েনার হাত থেকে একটি জনপদকে রক্ষা করতে পারল না। বরং সবাই রোমের কলোসিয়ামের গ্যালারিতে বসে গ্ল্যাডিয়েটরদের মৃত্যু দেখার মতো যেন উপভোগ করছে এই বর্বরতা।
মুসলিম জাতিকে এক কাতারে এনে শক্তিশালী একটি জাতি গঠন করাই ছিল ওআইসির লক্ষ্য। কিন্তু ওআইসির মাধ্যমে মুসলিম জাতি একত্র হয়েছে এবং অমুসলিমদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তেমন কোনো নজির খুঁজে পাওয়া বড়ই মুশকিল। বসনিয়ায় সার্ব খ্রিষ্টানদের হামলায় হাজার হাজার মুসলমান নিহত হয়—ওআইসি কিছুই করতে পারেনি। আফগানিস্তানে মুসলিম সরকারকে উৎখাত করতে মার্কিন ড্রোন ও বোমার আঘাতে ধ্বংস করা হয়—ওআইসি ছিল নীরব। কাশ্মীর, ইয়েমেন, সিরিয়া, সোমালিয়া—যেখানেই মুসলমান নিপীড়িত, সেখানেই ওআইসি অনুপস্থিত।
ঢাল নেই, তলোয়ার নেই—একজন নিধিরাম সর্দারের মতোই নিষ্ক্রিয় অবস্থানে আছে ওআইসি। অত্যাচারিত মুসলমানদের মধ্যে এই সংস্থার প্রতি জন্ম নিয়েছে তীব্র ঘৃণা। প্রশ্ন জাগে—২০০ কোটি মুসলমানের প্রতিনিধিত্বকারী মুসলিম মোড়লদের বিবেক আসলে কবে জাগবে?
অর্গানইজেশন অব ইসলামিক কো-অপারেশন (ওআইসি) মুসলিম বিশ্বের সম্মিলিত কণ্ঠস্বর হয়ে ওঠা এবং তাদের স্বার্থ সুরক্ষায় কাজ করার প্রত্যয় নিয়ে জন্ম নিয়েছিল। ৫৬ বছর আগে জন্ম নেওয়া ৫৭টি দেশের প্রতিনিধিত্বকারী সংস্থাটি মুসলিমদের স্বার্থ রক্ষা কতটা করতে পেরেছে, সে প্রশ্ন দীর্ঘদিনের। কিন্তু সাম্প্রতিক সময়ে গাজায় ইসরাইলি বর্বরতায় সবকিছু ধ্বংসস্তূপে পরিণত হওয়ার পরও ওআইসির নীরবতা সেই প্রশ্নকে আরো তীব্র করেছে।
দেড় বছর ধরে ফিলিস্তিনি মুসলমানদের ওপর ইসরাইলের হত্যাযজ্ঞ ও নিপীড়ন সব মাত্রা ছাড়িয়ে গেছে। নিষ্পাপ নারী-শিশু, হাসপাতালের রোগীÑ কেউ রেহাই পায়নি তাদের বর্বরতা থেকে। শিশু ও হাসপাতালগুলোকে ইসরাইলিরা বিশেষ লক্ষ্যবস্তুতে পরিণত করেছে। গাজার সর্বশেষ হাসপাতালটিও তারা বোমার আঘাতে গুঁড়িয়ে দিয়েছে। ২০২৩ সালের অক্টোবর থেকে শুরু হওয়া যুদ্ধে এখন পর্যন্ত ৫০ হাজার ৯৪৪ জন নিহত এবং ১১৬,০৪৫ জন আহত হয়েছে। এত মৃত্যু ও ধ্বংসযজ্ঞ দেখেও কেন ঘুম ভাঙছে না ওআইসির। যৌক্তিক কারণেই প্রশ্ন উঠছে কী কাজ ওআইসির?
১৯৬৭ সালের ছয় দিনের যুদ্ধের পর ১৯৬৯ সালের ২১ আগস্ট ইসরাইল মসজিদুল আকসায় অগ্নিসংযোগ করে। ফলে সমগ্র মুসলিম বিশ্বে প্রতিক্রিয়া দেখা দেওয়ায় ২৫ আগস্ট ১৪টি আরব দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রীরা মিসরের রাজধানী কায়রোতে এক বৈঠকে মিলিত হন। সৌদি আরব প্রস্তাব করে, যেহেতু বিষয়টি মুসলিম বিশ্বের জন্য স্পর্শকাতর, তাই সব মুসলিম দেশের রাষ্ট্রপ্রধানদের সঙ্গে নিয়েই শীর্ষ বৈঠক আয়োজন করবে। মরক্কো, সৌদি আরব, ইরান, পাকিস্তান, সোমালিয়া, মালয়েশিয়া এবং নাইজারকে নিয়ে প্রস্তুতি কমিটি গঠিত হয়।
একই বছর ২২-২৫ সেপ্টেম্বর মরক্কোর রাবাতে ২৫টি মুসলিম বিশ্বের রাষ্ট্রপ্রধানদের নিয়ে এক সম্মেলন হয়। ওই সম্মেলনে রাষ্ট্রের প্রতিনিধিদের সিদ্ধান্তক্রমে ইসলামি সম্মেলন সংস্থা নামে এই প্রতিষ্ঠানটি আত্মপ্রকাশ করে। ১৯৬৯ সালের ২৫ সেপ্টেম্বর ওআইসি প্রতিষ্ঠিত হয়। মধ্যপ্রাচ্য, উত্তর-পশ্চিম আফ্রিকা, মধ্য এশিয়া, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া এবং ভারতীয় উপমহাদেশের ৫৭টি ইসলামি রাষ্ট্র নিয়ে এ সংস্থা গঠিত। তবে ২০১১ সালের ২৮ জুন আস্তানা, কাজাখস্তানে অনুষ্ঠিত পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের কাউন্সিলে সংস্থাটির নাম ইসলামি সম্মেলন সংস্থা পরিবর্তন করে ইসলামি সহযোগিতা সংস্থা করা হয়। এ সময় ওআইসির লোগোও পরিবর্তন করা হয়।
জাতিসংঘের পর সবচেয়ে বড় আন্তঃদেশীয় এই জোট বিশ্বের ২০০ কোটি মানুষের প্রতিনিধিত্ব করে। প্রত্যেক বছর একবার দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের একটা বৈঠক হয়। তিন বছর পরপর দেশগুলোর প্রধানরা আয়োজন করেন সম্মেলন। এসব সম্মেলন থেকে অর্জনের খাতায় যোগ হয় শুধু আনুষ্ঠানিকতা, চা-চক্র আর ফটোসেশন। মুসলিম উম্মাহর স্বপ্ন, চাওয়া-পাওয়া থেকে যায় পর্দার আড়ালেই।
গাজা ইস্যুতে ওআইসি ও আরববিশ্বের নিষ্ক্রিয়তা দেখে সাম্প্রতিক নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে প্রখ্যাত ইসলামিক স্কলার শায়খ আহমাদুল্লাহ বলেছেন, ঝড়ো হাওয়ায় গাছের শুকনো পাতা যেভাবে আকাশে উড়ে যায়, বোমার আঘাতে পবিত্র ভূমির মানুষদের সেভাবে আকাশে উড়তে দেখল বিশ্ববাসী। পৃথিবীর ৮০০ কোটি মানুষ, ২০০ কোটি মুসলমান, জাতিসংঘ, ওআইসি, আরববিশ্ব—কেউই হায়েনার হাত থেকে একটি জনপদকে রক্ষা করতে পারল না। বরং সবাই রোমের কলোসিয়ামের গ্যালারিতে বসে গ্ল্যাডিয়েটরদের মৃত্যু দেখার মতো যেন উপভোগ করছে এই বর্বরতা।
মুসলিম জাতিকে এক কাতারে এনে শক্তিশালী একটি জাতি গঠন করাই ছিল ওআইসির লক্ষ্য। কিন্তু ওআইসির মাধ্যমে মুসলিম জাতি একত্র হয়েছে এবং অমুসলিমদের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলেছে, তেমন কোনো নজির খুঁজে পাওয়া বড়ই মুশকিল। বসনিয়ায় সার্ব খ্রিষ্টানদের হামলায় হাজার হাজার মুসলমান নিহত হয়—ওআইসি কিছুই করতে পারেনি। আফগানিস্তানে মুসলিম সরকারকে উৎখাত করতে মার্কিন ড্রোন ও বোমার আঘাতে ধ্বংস করা হয়—ওআইসি ছিল নীরব। কাশ্মীর, ইয়েমেন, সিরিয়া, সোমালিয়া—যেখানেই মুসলমান নিপীড়িত, সেখানেই ওআইসি অনুপস্থিত।
ঢাল নেই, তলোয়ার নেই—একজন নিধিরাম সর্দারের মতোই নিষ্ক্রিয় অবস্থানে আছে ওআইসি। অত্যাচারিত মুসলমানদের মধ্যে এই সংস্থার প্রতি জন্ম নিয়েছে তীব্র ঘৃণা। প্রশ্ন জাগে—২০০ কোটি মুসলমানের প্রতিনিধিত্বকারী মুসলিম মোড়লদের বিবেক আসলে কবে জাগবে?
মক্কার মসজিদুল হারামের অন্যতম পবিত্র স্থান হাতিম। কাবার মূল কাঠামোর অংশ হিসেবে বিবেচিত এ স্থানটি মুসল্লিদের জন্য অত্যন্ত সম্মানিত ও নামাজ আদায়ের আকাঙ্ক্ষিত জায়গা। এখানে শৃঙ্খলাপূর্ণ উপায়ে ইবাদত নিশ্চিত করতে পুরুষ ও নারী উভয়ের জন্য আলাদা সময় নির্ধারণ করেছে কর্তৃপক্ষ।
১ দিন আগেখাদ্যগ্রহণ যেমন ক্ষুধা মেটানোর জন্য অপরিহার্য, প্রাত্যহিক জীবনের অংশ হিসেবে খাদ্যগ্রহণের ক্ষেত্রে উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার অনুসরণ করাও গুরুত্বপূর্ণ। মানুষ যা খায়, যেভাবে খায়—তা তার চরিত্র, নীতি ও রুচির পরিচয় বহন করে। তাই ইসলাম আমাদের খাওয়ার উত্তম সংস্কৃতি ও শিষ্টাচার শিখিয়েছে।
২ দিন আগেসম্প্রতি ইসলামি আলোচক আমীর হামজা আল্লাহর রাসুল (সা.)–কে ‘সাংবাদিক’ বলেছেন। তিনি যুক্তি দিয়েছেন, যেহেতু নবী (সা.) ছিলেন আল্লাহর বার্তাবাহক, তাই রূপক অর্থে তাঁকে সাংবাদিক বলা যেতে পারে। কিন্তু বাস্তবে এই তুলনা ইসলামি দৃষ্টিকোণ থেকে বিভ্রান্তিকর এবং রাসুলের মর্যাদার পরিপন্থী।
৫ দিন আগেআমাদের সমাজে বেশ পরিচিত দুটি শব্দ হলো অলি-আওলিয়া। বাঙালি মুসলমান সমাজে সাধারণত মুসলমানদের একটি বিশেষ শ্রেণিকে অলি-আওলিয়া মনে করা হয়। অলি-আওলিয়াদের বিশেষ মর্যাদা ও ক্ষমতা আছে এমন বিশ্বাসও সাধারণ মুসলমানদের রয়েছে।
৫ দিন আগে