একটি দল মেম্বার থেকে এমপি পর্যন্ত মনোনয়ন দিয়ে প্রার্থি ঠিক করে রেখেছে আর অন্যদিকে বলে আমরা সংসদীয় গণতন্ত্র মানি না। এটা হচ্ছে জনগনের সাথে তাদের একটা প্রতারণা। বাংলাদেশে যদি মৌলিক কোনো পরিবর্তন আনতে হয় সেটা সংসদীয় গণতন্ত্রের মধ্যে দিয়ে আনতে হবে।
সেদিনের সকালটা আর দশটা সাধারণ সকালের মতো নয়, সারাটা রাত তীব্র উৎকণ্ঠায় জেগে থাকা বিশ কোটি মানুষের নিদ্রাহীন রাতের শেষে এক পরিবর্তনের প্রত্যাশিত শুভ সকাল।
নিজের পাপে আজ আওয়ামী লীগ ডেড বা মৃত। জামায়াত অস্পৃশ্য (রাজাকার), এনসিপি শিশু। কাজেই উইলিয়াম কুপারের সেই কবিতার মতো বিএনপির কোনো কোনো নেতা আওড়াচ্ছেন,
ব্যক্তি, গোষ্ঠী বা কোটারীগত স্বার্থে কোনভাবেই গণঅভ্যুত্থানের অর্জন নষ্ট করা যাবেনা উল্লেখ করে গণতন্ত্র মঞ্চের নেতারা বলেন, যেকোনো বিভক্তি বিভাজনের পাঁয়তারাকেও রুখে দিতে হবে।
ছাত্র-জনতার গণঅভ্যুত্থানে পতন ঘটেছে স্বৈরাচারের। গঠিত হয়েছে নির্দলীয় নিরপেক্ষ অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। আন্দোলনকারীরা অঙ্গীকার করেছেন রাজনীতি ও রাষ্ট্রব্যবস্থায় সংস্কারের। গণঅভ্যুত্থানের মূল আকাঙ্ক্ষা স্বৈরাচারমুক্ত একটি বৈষম্যহীন, মানবিক, কল্যাণকর ও আইনের শাসনের গণতান্ত্রিক বাংলাদেশ।
একটি সফল অভ্যুত্থানে স্বৈরাচার ও ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে। দেশের সব শ্রেণি-পেশার মানুষ ড. ইউনূসের ওপর আস্থায় রেখে অন্তর্বর্তী সরকারকে দায়িত্ব দিয়েছে। তার ওপর আমাদের আস্থা রাখতে হবে। সেই সঙ্গে সরকারের ভুল-ত্রুটিগুলোও ধরিয়ে দিতে হবে। কোনো বিরোধ থাকলে সেটাও দূর করতে হবে।
প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস বলেছেন, গণতন্ত্রে মসৃণ রূপান্তরের লক্ষ্যে একটি অবাধ, সুষ্ঠু, বিশ্বাসযোগ্য এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক সাধারণ নির্বাচনের জন্য আমরা প্রস্তুতি নিচ্ছি।
জুলাই বিপ্লবে নেতৃত্ব ও জীবন দিয়েছে এ দেশের তরুণ ছাত্র-জনতা, যাদের গড় বয়স তিরিশের নিচে। ১১ বছর ফ্যাসিস্ট সরকার কর্তৃক বন্ধ রাখার পর গত বছর ২২ ডিসেম্বর আমার দেশ পুনঃপ্রকাশিত হলে বিস্ময়করভাবে প্রধানত সেই বিপ্লবী তরুণ প্রজন্মই পত্রিকাটিকে আপন করে নিয়েছে।
স্বাধীনতার জন্য জীবন দিয়েছি। এখনো আমরা গণতন্ত্রের প্রত্যাশায় বসে আছি। সেই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার জন্য কথা বলছি, স্লোগান দিচ্ছি, সভা-সমাবেশ করছি। কত দিন? কত বার আমাদেরকে এই কাজ করতে হবে? আমাদেরকে এই বাংলাদেশের জনগণকে বার বার সেই সাপ-লুড়ু খেলার মতো ৯৩ থেকে ৩-এ চলে আসতে হচ্ছে। কেন? আমরা ৯৩ থেকে ৯৪, ৯৫
বিএনপি ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, গণতন্ত্র ভোটাধিকার না আসলে অতীতের তাদের মতো হতে পারে। এই কথা বলতে আমাদের খারাপ লাগে কারণ বিএনপি ছাত্রজনতা আপনাকে ক্ষমতায় বসিয়েছে। এ কথাটা আপনাদের মাথায় রাখতে হবে।
ফ্রান্জ ফ্যানোর কথা দিয়ে শুরু করি। তিনি বলেছিলেন, ‘যতবার স্বাধীনতা বিপন্ন হবে, আমরা সংশ্লিষ্ট হবোই। আমরা সাদা, কালো, হলুদ যা-ই হই না কেন। আর যতবার স্বাধীনতা রুদ্ধ হবে, আমি নিজেকে ততবার জড়িয়ে ফেলব।’
রাষ্ট্র কি নতুন হয়েছে প্রশ্ন রেখে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদ বলেন, এখানে গণতন্ত্রের চরিত্র হারিয়েছে, তাই গণপরিষদ ভোট নয়, সংবিধান সংশোধন দরকার।
বর্তমানে বিশ্বে একটি উন্নত দেশের যেসব বৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং সেসব দেশের নাগরিকরা যে কারণে সম্মানজনক জীবন উপভোগ করছেন, তা নিশ্চিত করতে দরকার সৎ, বলিষ্ঠ ও দেশপ্রেমিক নেতৃত্ব।
মুক্তিযুদ্ধ ও দেশের ওপর অনন্ত মালিকানা দাবি করে গণতন্ত্রকে সামন্ততন্ত্রে পরিণত করার চর্চা হয়েছে দেশে ১৬ বছর ধরে হাসিনার শাসনামলে। তবে ছাত্রদের জুলাই বিপ্লব ইতোমধ্যে প্রমাণ করে দিয়েছে, ওই যুগটির ইতি ঘটেছে এবং আমরা একটি নতুন যুগে প্রবেশ করেছি।
সংবিধানে ‘জাতির পিতা’ বিধান ও শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতি প্রদর্শনের বাধ্যতামূলক করার বিধান বাতিলের সুপারিশ করে কমিশনের প্রতিবেদনে বলা হয়, এ ধরনের বিধান ব্যক্তি বন্দনাকে উৎসাহিত করে, স্বৈরতন্ত্রের পথ সুগম করে।
দেশে সরকার থাকা অবস্থায় ধানমন্ডি ৩২ নম্বরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের বাড়িসহ সারাদেশে আওয়ামী লীগ নেতাদের বাড়িঘর ও দলীয় কার্যালয়ে হামলা ও ভাঙচুরের কর্মকাণ্ড গ্রহণযোগ্য নয় এবং তা সরকারের অস্তিত্বকেই ’প্রশ্নবিদ্ধ করে’ বলে মনে করে গণসংহতি আন্দোলন।
একটি দেশের টেকসই গণতন্ত্র, স্থিতিশীল অর্থনীতি, জাতীয় সমৃদ্ধি, সামাজিক সম্প্রীতি এবং শান্তিশৃঙ্খলানির্ভর করে সে দেশে কতটুকু আইনের শাসন কার্যকর আছে তার ওপর। বিচার, বিচারক এবং বিচারব্যবস্থা-এই তিনটি হচ্ছে আইনের শাসনের মূল ভিত্তি।