‘টাইটানিক’ নামটির সঙ্গেই মানসপটে ভেসে ওঠে একটি ডুবন্ত জাহাজের ছবি। যে জাহাজটির যাত্রীদের একাংশ ছিল ব্রিটেনের ধনী পরিবারের। আরেক অংশ ছিল ভাগ্যবদলের সন্ধানে ব্রিটেন থেকে আমেরিকাগামী যাত্রী। ১৯১২ সালের ১০ এপ্রিল নিউ ইয়র্কের উদ্দেশে ব্রিটেনের সাউদাম্পটন থেকে যাত্রা শুরু করেছিল টাইটানিক। যাত্রী সংখ্যা ছিল দুই হাজার ২০০ জন এবং কয়েকশ কর্মী।
যাত্রার মাত্র চারদিন পর ১৫ এপ্রিল উত্তর আটলান্টিক মহাসাগরের নিচে থাকা বরফখণ্ডের সঙ্গে সজোরে ধাক্কা লাগে ৮৮২ ফুট ৯ ইঞ্চি দৈর্ঘ্যের জাহাজটির। তারপর ২ ঘণ্টা ৪০ মিনিট পর পুরোপুরি ডুবে যায় টাইটানিক। এর সঙ্গে ডুবে মারা যান এক হাজার ৫০০ -এরও বেশি যাত্রী।
যাদের মধ্যে ছিলেন ব্রিটেনের ধনকুবের ইসিডর স্ট্রাউস এবং তার স্ত্রী আইডা। দুর্ঘটনার কয়েকদিন পর আটলান্টিক মহাসাগর থেকে তার লাশ উদ্ধার করা হয়। সেসময় তার সঙ্গে ছিল জুলস ইয়ুরগেনসেন কোম্পানির তৈরি ১৮ ক্যারেটের সোনার ঘড়ি।
স্ট্রাউস পরিবারের কাছে থাকা উদ্ধার করা সেই ঘড়িটি শনিবার উইল্টশায়ারের ডেভিজেসে ‘হেনরি অ্যালড্রিজ অ্যান্ড সন অকশনার্স’ নামের একটি প্রতিষ্ঠান আয়োজিত নিলামে বিক্রি করা হয়। সোনার ওই পকেট ঘড়িটি বিক্রি করা হয়েছে ১.৭৮ মিলিয়ন পাউন্ডে, যা রেকর্ড ছাড়িয়েছে।
ধনকুবের স্ট্রাউস ছিলেন আমেরিকার বাভারিয়ায় জন্মগ্রহণকারী একজন ব্যবসায়ী। তিনি একাধারে ছিলেন রাজনীতিবিদ এবং নিউ ইয়র্কের বিখ্যাত ডিপার্টমেন্টাল স্টোর ‘মেসি’স-এর যৌথ মালিক।
ডুবে যাওয়ার রাতে, তার স্ত্রী আইডা লাইফবোটে উঠতে অস্বীকৃতি জানিয়েছিলেন। পরে স্বামীর সঙ্গেই ডুবে মারা যান তিনি। আইডার লাশ আর খুঁজে পাওয়া যায়নি। শুধু ঘড়ি নয়, টাইটানিক জাহাজে থাকাকালে সেখানকার কাগজে আইডা স্ট্রাউসের লেখা একটি চিঠিও নিলামে বিক্রি হয়। যার দাম ছিল এক লাখ পাউন্ড।
টাইটানিকের যাত্রীদের একটি তালিকা ১ লাখ ৪ হাজার পাউন্ডে এবং উদ্ধারকৃত যাত্রীদের পক্ষ থেকে উদ্ধারকারী জাহাজ আরএমএস কার্পাথিয়ার ক্রুদের দেওয়া একটি স্বর্ণপদক ৮৬ হাজার পাউন্ডে বিক্রি হয়েছে।
ডুবে যাওয়ার সময় ঘড়িটিতে সময় ছিল রাত ২টা ২০ মিনিট। ধারণা করা হয়, ১৮৮৮ সালে স্বামীর জন্মদিনে তার নামের আদ্যক্ষর খোদাই করা ঘড়িটি উপহার দিয়েছিলেন আইডা। উদ্ধারের পর ঘড়িটি স্ট্রাউসের পরিবারের কাছে ফেরত দেওয়া হয়েছিল। ইসিডোরের প্রপৌত্র কেনেথ হলিস্টার ঘড়িটি মেরামত করেছিলেন। পরে তা সচল হয়ে প্রজন্মের পর প্রজন্ম ধরে চলছে।


গ্রামীণফোনে ভারতীয় নাগরিকদের আধিপত্য