ইরানে হামলা ইস্যুতে পেন্টাগনের গোয়েন্দা প্রধান বরখাস্ত

আন্তর্জাতিক ডেস্ক
প্রকাশ : ২৪ আগস্ট ২০২৫, ১৯: ১৭

ইরানের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের সাম্প্রতিক হামলার প্রভাব নিয়ে গোয়েন্দা তথ্য মূল্যায়ন ঘিরে হোয়াইট হাউসের অসন্তোষের পর, পেন্টাগনের গোয়েন্দা সংস্থা ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির প্রধান লেফটেন্যান্ট জেনারেল জেফরি ক্রুসকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে আরও দুই জ্যেষ্ঠ সামরিক কমান্ডারকেও অপসারণ করা হয়েছে।

শনিবার ব্রিটিশ গণমাধ্যম বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়।

বিজ্ঞাপন

পেন্টাগন এক বিবৃতিতে এই বরখাস্তের বিষয়টি নিশ্চিত করলেও, তাৎক্ষণিকভাবে এর পেছনের কারণ বিস্তারিত জানানো হয়নি। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, হোয়াইট হাউসের সঙ্গে গোয়েন্দা সংস্থার অভ্যন্তরীণ দ্বন্দ্ব এর মূল কারণ হতে পারে।

বরখাস্তের সিদ্ধান্ত আসে সেই সময়ে, যখন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রকাশ্যে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্সির একটি ফাঁস হওয়া প্রতিবেদনের উপর। সেই প্রতিবেদনে দাবি করা হয়েছিল, ইরানে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক হামলার ফলে দেশটির পারমাণবিক কর্মসূচি মাত্র কয়েক মাস পিছিয়ে গেছে। হোয়াইট হাউস সেই মূল্যায়নকে ‘পুরোপুরি ভুল’ বলে প্রত্যাখ্যান করে।

ট্রাম্প এই হামলাকে ‘ইতিহাসের সবচেয়ে সফল সামরিক অভিযানগুলোর একটি’ বলে বর্ণনা করেন এবং মিডিয়াকে অভিযুক্ত করেন এই সফলতাকে খাটো করার চেষ্টার জন্য। প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথ নিজেও ওই মূল্যায়নকে ‘নিম্ন মানের গোয়েন্দা তথ্যের ওপর ভিত্তি করে তৈরি’ বলে মন্তব্য করেছিলেন এবং জানান, ফাঁসের তদন্তে এফবিআই কাজ করছে।

এই বরখাস্তের খবর প্রথম প্রকাশ করে ওয়াশিংটন পোস্ট। ডিফেন্স ইন্টেলিজেন্স এজেন্স মূলত প্রযুক্তিভিত্তিক গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে বিশেষজ্ঞ এবং এটি সরাসরি পেন্টাগনের অধীনে কাজ করে।

শুক্রবার রয়টার্সকে দেওয়া একটি সূত্রের বরাতে জানা গেছে, হেগসেথ আরও দুই উচ্চপদস্থ নৌবাহিনী কর্মকর্তাকেও অপসারণের নির্দেশ দিয়েছেন। তারা হলেন নৌবাহিনীর রিজার্ভ প্রধান এবং বিশেষ যুদ্ধ কমান্ডের কমান্ডার।

এদিকে, যুক্তরাষ্ট্রের সিনেট গোয়েন্দা কমিটির চেয়ারম্যান মার্ক ওয়ার্নার এই সিদ্ধান্তের কড়া সমালোচনা করে বলেন, ‘ক্রুসের বরখাস্ত প্রমাণ করে যে প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প এখন গোয়েন্দা তথ্যকে জাতীয় নিরাপত্তার জন্য নয়, বরং তার প্রতি আনুগত্যের পরীক্ষার হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছেন।’

ট্রাম্প প্রশাসনের বরখাস্তের তালিকায় এটি নতুন কোনো ঘটনা নয়। এর আগে তিনি জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থার পরিচালক জেনারেল টিমোথি হাফ, জাতীয় নিরাপত্তা পরিষদের একাধিক সদস্য এবং শ্রম পরিসংখ্যান কমিশনার এরিকা ম্যাকএন্টারফারকেও সরিয়ে দেন, তাদের বিশ্লেষণ বা প্রতিবেদনের কারণে প্রশাসনের সঙ্গে মতবিরোধ হওয়ায়।

এছাড়াও, প্রতিরক্ষা সচিব হেগসেথ চলতি বছরের ফেব্রুয়ারিতে বিমান বাহিনীর জেনারেল সি কিউ ব্রাউনসহ আরও পাঁচজন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তাকেও বরখাস্ত করেন।

বিশ্লেষকদের মতে, এই পদক্ষেপগুলো মার্কিন প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা কাঠামোর উপর রাজনৈতিক চাপের ইঙ্গিত দিচ্ছে, যা ভবিষ্যতের জন্য উদ্বেগজনক একটি নজির স্থাপন করতে পারে।

এলাকার খবর
খুঁজুন

সম্পর্কিত