হোম > আমার দেশ স্পেশাল

তফসিল ঘোষণা ১১ ডিসেম্বর, ভোট ৮ ফেব্রুয়ারি

গাজী শাহনেওয়াজ

তফসিল ঘোষণা ১১ ডিসেম্বর

আগামী ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ১১ ডিসেম্বর ঘোষণা করা হবে। ওইদিন জাতির উদ্দেশে ভাষণের মধ্য দিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার এ এম এম নাসিরউদ্দিন এই ঘোষণা দেবেন। বহুল প্রত্যাশিত এ নির্বাচনের ভোটগ্রহণ হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। রোববার কমিশনের সভায় এসব বিষয় চূড়ান্ত অনুমোদন দেওয়া হতে পারে।

তফসিলের আগে নির্বাচন কমিশন সংশ্লিষ্টরা রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবেন। আগামী ১০ ডিসেম্বর রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাতের সময় চূড়ান্ত হয়েছে। প্রথা অনুযায়ী জাতীয় সংসদ নির্বাচনের তফসিলের আগে কমিশন রাষ্ট্রপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ করে থাকে। রাষ্ট্রপতি ছাড়াও তফসিলের আগে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ রেফাত আহমেদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করবে নাসিরউদ্দিন কমিশন। আগের দিন ৯ ডিসেম্বর প্রধান বিচারপতির সঙ্গে সাক্ষাৎ হওয়ার কথা রয়েছে। এর আগে গত মঙ্গলবার রাষ্ট্রপতি ও প্রধান বিচারপতির সাক্ষাৎ চেয়ে ইসি চিঠি দেয়। আগামী ১০ অথবা ১১ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় রাষ্ট্রপতির সাক্ষাৎ চেয়ে চিঠি পাঠানো হলে রাষ্ট্রপতি ১০ ডিসেম্বর দুপুর ১২টায় সাক্ষাতের সময় দিয়েছেন। নির্বাচন কমিশন সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।

কমিশন সূত্রে জানা গেছে, প্রধান নির্বাচন কমিশনার তফসিল ঘোষণার জন্য তার ভাষণের খসড়া তৈরি করেছেন। তার ভাষণে মুক্তিযুদ্ধ থেকে চব্বিশের জুলাই অভ্যুত্থানের চিত্র তুলে ধরবেন। দেশবাসীকে নির্বাচনে অংশগ্রহণের আহ্বানসহ উৎসবমুখর নির্বাচন অনুষ্ঠানে রাজনৈতিক দলসহ সবার কাছে সার্বিক সহযোগিতা চাইবেন।

নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ আমার দেশকে বলেন, তফসিল ঘোষণার সিদ্ধান্ত নেবেন সিইসি ও কমিশনাররা। তফসিল দেওয়ার জন্য প্রয়োজনীয় প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে নির্বাচন কমিশন সচিবালয়।

ইসির দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, তফসিল উপলক্ষে প্রধান নির্বাচন কমিশনারের রেকর্ডকৃত ভাষণ সম্প্রচার করা হবে। রাষ্ট্রপতির সঙ্গে দেখা হওয়ার পর ওইদিন রাতেই (১০ ডিসেম্বর) বা পরদিন সকালের দিকে বাংলাদেশ টেলিভিশন (বিটিভি) ও বাংলাদেশ বেতারে সিইসির লিখিত ভাষণটি রেকর্ড হতে পারে। এর জন্য রাষ্ট্রীয় দুটি সম্প্রচার মাধ্যমকে আগামী সপ্তাহে নির্বাচন কমিশন থেকে চিঠি দেওয়া হবে। রেকর্ডকৃত ভাষণটি ১১ ডিসেম্বর বিকেলে দেশবাসীর উদ্দেশ্যে সম্প্রচারের মধ্য দিয়ে ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোটের তফসিল ঘোষণা করা হবে।

সিইসির ভাষণের মাধ্যমে তফসিল দেওয়া হবে বলে নিশ্চিত করেন কমিশনের সিনিয়র সচিব আখতার আহমেদ। তিনি বলেন, বিটিভি ও বাংলাদেশ বেতারকে সিইসির ভাষণ রেকর্ড করার জন্য চিঠি দেওয়া হবে।

জানা গেছে, তফসিল থেকে ভোট গ্রহণের সময়ের মধ্যে দুই মাসের মতো বিরতি রাখা হতে পারে। ভোট গ্রহণের সময় নির্ধারণ হতে পারে ৮ ফেব্রুয়ারি, রোববার।

ইসির কর্মকর্তারা জানান, তফসিল থেকে ভোট গ্রহণের আদর্শ সময় ৪২ থেকে ৪৫ দিন। তবে, বিভিন্ন কারণে এই সময় কম বা বেশি হয়ে থাকে। পোস্টাল ভোটসহ নানা কারণে এবার তফসিল ও ভোটের দিনের মধ্যে বেশি ব্যবধান রাখা হচ্ছে। এর আগে সর্বনিম্ন ৩৬ দিনের তফসিলে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারির নির্বাচন হয়।

সরকারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী এবার জাতীয় সংসদ নির্বাচন ও গণভোট একই দিনে অনুষ্ঠিত হবে। এজন্য প্রয়োজনীয় আইন ও বিধির সংশোধনসহ সব ধরনের প্রস্তুতি সম্পন্ন করেছে ইসি। দুটি ভোট একই সঙ্গে অনুষ্ঠানের জন্য ভোট গ্রহণের সময় প্রায় একঘণ্টা বাড়ানো হবে। আগে সকাল ৮টা থেকে টানা বিকাল ৪টা পর্যন্ত ভোট হতো। এবার ভোট গ্রহণের শুরুর সময় আধ ঘণ্টা এগিয়ে সকাল সাড়ে ৭টা এবং শেষ সময়ও আধঘণ্টা বাড়িয়ে বিকাল সাড়ে ৪টা পর্যন্ত করা হতে পারে। রোববারের কমিশন সভায় এ বিষয়টি চূড়ান্ত হবে।

অবশ্য এর আগে ঢাকায় একটি মক ভোট অনুষ্ঠানের পর নির্বাচন কমিশনার ব্রি. জে. (অব.) আবুল ফজল মো. সানাউল্লাহ ভোটের সময় বাড়ানোর কথা গণমাধ্যমকে জানিয়েছেন।

নির্বাচন ব্যবস্থাপনা শাখার দায়িত্বশীল কর্মকর্তারা জানান, এবার প্রার্থীদের মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছাইয়ের জন্য সময় তিনদিন থেকে বাড়িয়ে ৫ দিন করা হচ্ছে। একইভাবে, মনোনয়নপত্র বাতিলের বিরুদ্ধে আপিলের সময়ও ৫ দিন করা হচ্ছে।

এদিকে বিগত সময়ে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হওয়ার পর পোস্টাল ভোটে আগ্রহী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হলেও এবার তফসিল ঘোষণার পরপরই প্রবাসী ভোটারদের কাছে পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে। তবে, অন্যদের জন্য পোস্টাল ব্যালট পাঠানো হবে আরো পরে। এবারই প্রথম প্রবাসীদের পোস্টাল ব্যালটে ভোটদানের বিধান যুক্ত হয়েছে।

কমিশন থেকে জানানো হয়েছে, অন্যান্য সময়ে পোস্টাল ব্যালটে সংশ্লিষ্ট নির্বাচনি আসনের প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীদের প্রতীকগুলো থাকলেও এবার ইসির জাতীয় নির্বাচনের তফসিলভুক্ত সব প্রতীক যুক্ত করেই পোস্টাল ব্যালট তৈরি করা হবে।

জানা গেছে, প্রাথমিকভাবে ১০ লাখ পোস্টাল ব্যালট ছাপানোর চিন্তা ইসির থাকলেও এই সংখ্যা কমিয়ে ৫ লাখ করা হচ্ছে। ভোট দানের নিবন্ধনে প্রবাসী ভোটারদের প্রত্যাশিত মাত্রায় সাড়া না পাওয়ায় এ সংখ্যা কমানোর কথা ভাবছে ইসি। বর্তমানে প্রবাসীদের নিবন্ধন প্রক্রিয়া চলমান। আগামী ১৮ ডিসেম্বর পর্যন্ত নিবন্ধন করা যাবে।

নির্বাচন কমিশন সচিবালয়ের ব্যবস্থাপনা শাখা থেকে তফসিলের একটি খসড়া করা হয়েছে বলে জানা গেছে। খসড়া সূত্রে জানা যায়, ১১ ডিসেম্বর তফসিল ঘোষণা, মনোনয়নপত্র জমা দেওয়ার সময় ২৫ ডিসেম্বর, মনোনয়ন যাচাই-বাছাই ২৬ থেকে ৩০ ডিসেম্বর; আপিল ৩১ ডিসেম্বর থেকে ৪ জানুয়ারি, আপিল নিষ্পত্তি ৫ থেকে ১০ জানুয়ারি, প্রার্থিতা প্রত্যাহার ১১-১২ জানুয়ারি এবং প্রার্থীদের মধ্যে প্রতীক বরাদ্দ করা হবে ১৩ জানুয়ারি। আর ভোট হবে ৮ ফেব্রুয়ারি। অবশ্য, প্রতীক বরাদ্দ থেকে ভোট গ্রহণের সময় আরো কিছুটা কমতে পারে। কারণ ১৩ জানুয়ারি প্রতীক বরাদ্দ হলেও ওইদিন থেকে প্রার্থীরা আনুষ্ঠানিক প্রচারে যেতে পারবেন না। নির্বাচনি আচরণবিধি অনুযায়ী ভোট গ্রহণের তিন সপ্তাহ আগে কোনো প্রচারে প্রার্থীরা অংশ নিতে পারবেন না। আগামী রোববার অনুষ্ঠেয় কমিশন সভায় সার্বিক বিষয়ে সিদ্ধান্ত হবে বলে নির্বাচন কমিশনের সিনিয়র সচিব জানিয়েছেন।

নির্বাচন কমিশনের নির্ভরযোগ্য একজন কর্মকর্তা আমার দেশকে জানান, সুষ্ঠু ভোট আয়োজনের জন্য বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে সংলাপ করে ইসি। এই সংলাপে বিভাগীয় কমিশনার ও ডিসিদের পাশাপাশি ইসির কর্মকর্তাদের রিটার্নিং কর্মকর্তা নিয়োগের সুপারিশ আসে। এর পরিপ্রেক্ষিতে ঢাকার আঞ্চলিক কর্মকর্তা, চট্টগ্রাম, ফরিদপুর, কুমিল্লা, বরিশাল, খুলনাসহ কয়েকটি অঞ্চলের আঞ্চলিক নির্বাচন কর্মকর্তাদের মধ্য থেকে (পরীক্ষামূলক বা প্রতীকী) দু-একজনকে রিটার্নিং কর্মকর্তা করার চিন্তা রয়েছে ইসির, যা রোববার কমিশন সভায় চূড়ান্ত হতে পারে।

ইসির সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো জানায়, আগামী নির্বাচনে ১২ কোটি ৭৬ লাখ ৯৫ হাজার ১৮৩ জন ভোটার ভোট দেবেন। এসব ভোটারের জন্য ৪২ হাজার ৭৬৬টি ভোটকেন্দ্রে এবং ২ লাখ ৪৫ হাজার ১৯৫টি ভোটকক্ষ স্থাপন করেছে ইসি।

সিইসির ভাষণে যা থাকতে পারে

ইসির দায়িত্বশীল সূত্র মতে, মুক্তিযুদ্ধ থেকে ২০২৪-এর জুলাই যোদ্ধাদের অবদানের কথা সিইসির ভাষণে উঠে আসতে পারে। লিখিত এ ভাষণে আরো থাকতে পারে, নির্বাচনের গুরুত্ব এবং জনগণের ক্ষমতা সম্পর্কে।

ভাষণের মাধ্যমে ভোটার, রাজনৈতিক দল, নির্বাচনি কর্মকর্তা, আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী এবং দেশবাসীর কাছে সহযোগিতা চাইতে পারেন সিইসি। এছাড়া তিনি নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও অংশগ্রহণমূলক করতে সব প্রার্থী ও রাজনৈতিক দলকে আচরণবিধি মেনে চলার আহ্বান জানাতে পারেন। নির্বাচনি কর্মকর্তা-কর্মচারীদের আইন ও বিধি মোতাবেক সততা এবং নিষ্ঠার সঙ্গে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানাতে পারেন তিনি।

ভাষণে সিইসি সংসদ নির্বাচন ও গণভোটে উৎসাহ-উদ্দীপনা নিয়ে ভোটকেন্দ্রে আসার জন্য ভোটারদের প্রতি আহ্বান জানাতে পারেন।

পেঁয়াজের কেজিতে বাড়ল ৩০ টাকা, উদ্যোগ নেই আমদানির

আতপ চালে সুগন্ধি মিশিয়ে পোলাওয়ের নামে বিক্রি

ভারতীয় গোয়েন্দা নিয়ে হত্যার পরিকল্পনা তাপসের অফিসে

সক্রিয় হচ্ছে আলোচিত কয়েকটি ‘কিংস পার্টি’

ভারত ছেড়ে এবার নিরাপদ আশ্রয়ের খোঁজে কামাল

ভোটকেন্দ্র ও কক্ষের নিরাপত্তা সুরক্ষায় ইসির ১৫ চ্যালেঞ্জ

বাংলাদেশ নিয়ে এখন আশাবাদী ৮০% নাগরিক

সিন্ডিকেট এবার ধরাশায়ী, ভারত সীমান্তে পচছে বিপুল পেঁয়াজ

আওয়ামী প্রধান বিচারপতি ওবায়দুলের যত অপকর্ম

জুলাই সনদের নোট অব ডিসেন্টের ভবিষ্যৎ কী