হোম > আমার দেশ স্পেশাল

পাচারের টাকায় ভারতে বসে বাংলাদেশবিরোধী প্রচার

৩৫০০ কোটি টাকা মেরে বহাল তবিয়তে পিকে হালদার

বিশেষ প্রতিনিধি, কলকাতা

বাংলাদেশ থেকে ব্যাংক জালিয়াতির মাধ্যমে বিশাল অর্থ পাচার করা প্রশান্ত কুমার হালদার ওরফে পিকে হালদার সম্প্রতি ভারতের আদালত থেকে জামিন পেয়েছেন। বাংলাদেশ থেকে নিয়ে আসা টাকায় কলকাতায় আস্তানা গেড়েছেন। তবে পাচারের সেই টাকায় এবার বাংলাদেশবিরোধী প্রচারে নেমেছেন তিনি। বিনিয়োগ করেছেন সেখানকার মিডিয়াতেও। আওয়ামী লীগের প্রভাবশালী নেতারাও এর সঙ্গে জড়িত বলে খবর পাওয়া গেছে।

একটি সূত্র জানাচ্ছে, প্রায় এক হাজার ৮০০ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছে বাংলাদেশবিরোধী খবর ছড়ানো ও আওয়ামী সিমপ্যাথি তৈরির জন্য। এভাবে কলকাতাতে বসেই বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রের নীলনকশা বাস্তবায়ন করে চলেছেন পিকে হালদার ও পতিত আওয়ামী সরকারের দোসররা।

কলকাতার নিউ টাউনে থাকা আওয়ামী নেতারা ফ্ল্যাটের ভেতরে থাকলেও তারা ড. ইউনূস সরকারের বিরুদ্ধে মিথ্যা প্রচারে কলকাঠি নাড়ছেন বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। মাঝেমধ্যে আওয়ামী লীগ নেতাদের কলকাতার ইকো পার্ক, সিসি২, নিউটাউন কফি হাউসেও দেখা যাচ্ছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানা গেছে।

২০২২ সালের মে মাসে রাজারহাটের একটি বিলাসবহুল হোটেল থেকেই পিকে হালদারকে গ্রেপ্তার করেছিল ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এনফোর্সমেন্ট ডিরেক্টরেট। পরে গত ২৪ ডিসেম্বর কলকাতার প্রেসিডেন্সি সংশোধনাগার থেকে জামিন পান তিনি। তবে জেল থেকে বেরিয়ে তিনি সাংবাদিকদের প্রশ্নের কোনো উত্তর দেননি।

পিকে হালদার একজন বাংলাদেশি দাগি আসামি। তিন হাজার ৫০০ কোটি টাকার জালিয়াতি করেছেন তিনি। শিবশঙ্কর নামে উত্তর ২৪ পরগনার অশোকনগরে বিপুল সম্পত্তি, প্রাসাদোপম বাড়ি করেছেন তিনি। ভারতের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা ইডির বিশেষ কোর্ট তাকে জামিন দেয়। এই বিশেষ আদালতের বিচারক ছিলেন প্রশান্ত মুখার্জি। বাংলাদেশ থেকে পালিয়ে আসা পিকে হালদারকে দেশের আদালতও দোষী সাব্যস্ত করেছে। সেই নথি কলকাতার আদালতে জমা হয়নি বলেই নাকি তাকে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।

আওয়ামী লীগ সরকার তাকে দেশে ফেরাতে উদ্যোগ নেয়নি তেমনভাবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের সামনে যেতে চেয়েছিলেন হালদার। কিন্তু পিকে হালদারকে বাংলাদেশে ফেরায়নি তৎকালীন হাসিনা সরকার। হাটে হাঁড়ি ভেঙে দেওয়ার ভয়ে আওয়ামী লীগ সরকার তাকে দেশে ফেরাতে চায়নি বলেও মনে করেন অনেকে।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ভারতে ২২টি বাড়ি রয়েছে প্রশান্ত কুমার হালদারের। আওয়ামী আমলে হাসিনার নেতা-মন্ত্রীরা সহযোগিতা না করলে সীমান্তের এপারে এটা করা ছিল কার্যত অসম্ভব। আওয়ামী গ্যাং জানত, একদিন না একদিন তাদের স্থান নিতে হবে কলকাতায়। তাই আগে থেকেই পিকে হালদারকে তারা প্রস্তুত করে রেখেছিলেন বলেও ধারণা করছেন অনেকে।

এদিকে শেখ হাসিনা ইস্যুতে দুই পড়শি দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে শীতল সম্পর্ক বিরাজ করছে। এমন পরিস্থিতিতে পিকে হালদারের মতো একজন দাগি আসামিকে কেন জামিন দেওয়া হলো—সেটা নিয়েও ভারতের নাগরিকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া রয়েছে।

ভারতীয় গোয়েন্দা সূত্রের খবর বলছে, পাচার করে আনা টাকায় কলকাতায় বসে বাংলাদেশবিরোধী যড়যন্ত্র করছেন পিকে হালদার। আওয়ামীঘনিষ্ঠ এখানকার লোকদের সঙ্গেও তার ওঠাবসা রয়েছে। এছাড়া কলকাতায় পালিয়ে নিউটাউন রাজারহাটে আশ্রয় নেওয়া আওয়ামী লীগ নেতাদের সঙ্গে তার যোগাযোগ রয়েছে বলে দাবি করছে গোয়েন্দা সূত্র। পিকে হালদারের সঙ্গে সঙ্গে তার সহচর স্বপন মিস্ত্রি ও উত্তম মিস্ত্রিও ছাড়া পেয়েছেন। তারাও আছেন বাংলাদেশবিরোধী এই চক্রে।

প্রসঙ্গত, বাংলাদেশের দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) পিকে হালদার ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে মোট ৩৪টি মামলা করেছিল। এসব মামলায় তাদের বিরুদ্ধে কয়েক হাজার কোটি টাকা আত্মসাৎ ও পাচারের অভিযোগ আনা হয়। ঢাকার একটি ব্যাংক ও অপর একটি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক পিকে হালদারের বিরুদ্ধে প্রায় সাড়ে ছয় হাজার কোটি টাকা অস্বাভাবিক লেনদেনের অভিযোগ তোলার পর দীর্ঘদিন ধরেই তিনি পলাতক ছিলেন।

ইডির দাবি, পিকে হালদার ভারতে শিবশংকর হালদার নামে করা পরিচয়পত্র ব্যবহার করে পশ্চিমবঙ্গ সরকারের রেশন কার্ড, ভারতের ভোটার পরিচয়পত্র, আয়কর দপ্তরের পরিচয়পত্র (প্যান), আধার কার্ড তৈরি করেন। একইসঙ্গে এসব কার্ড ব্যবহার করে তিনি পশ্চিমবঙ্গসহ বিভিন্ন অঞ্চলে বেশকিছু ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান খোলেন। এসব কাগজপত্র ব্যবহার করেই প্রায় দুই ডজন বিলাসবহুল বাড়ি করেন তিনি। এছাড়া বিভিন্ন স্থানে বিপুল পরিমাণ জমিজমা কিনেছেন। বিশাল অট্টালিকার মতো একেকটি বাড়িও রয়েছে তার। এসব বাড়িতে থাকতেন পিকে হালদার, তার আত্মীয় ও সহযোগীরা।

এমবি

কৌশলগত পাঁচ সুবিধা অর্জন করতে চেয়েছিল ভারত

ওয়াজ মাহফিলে নিয়ন্ত্রণ চায় নির্বাচন কমিশন

ভারতীয় সামরিক হস্তক্ষেপ হলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হতো

২০ ডিসেম্বরের মধ্যেই আসন সমঝোতা

হাদির হত্যাচেষ্টা নিয়েও রাজনীতি

বিএমইটি সিন্ডিকেটে অসহায় প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়

ভারত ও আ.লীগের গুপ্ত হামলার পরিকল্পনা ফাঁস

গুলিবর্ষণকারী শনাক্ত, আরো হামলার ছক

প্রার্থীদের নিরাপত্তা নিয়ে বাড়ছে উদ্বেগ

ভারতের হুমকির বাস্তবায়নে ওসমান হাদিকে গুলি