হোম > সারা দেশ > চট্টগ্রাম

সিএনজিতেই থেমে গেল ঈদের আনন্দ

একটা সিগন্যাল মানলেই বাঁচত আয়েশা

জমির উদ্দিন, চট্টগ্রাম

চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজের অন্ধকারে, ট্রেনের লাল বাতির পাশে দাঁড়িয়ে এক বাবা কাঁধে তুলে নিয়েছেন তার নিথর শিশুকন্যাকে। চারপাশে হাহাকার, চিৎকার-কিন্তু বাবার মুখে কেবল একটাই বাক্য, 'আল্লাহ আকবর… আল্লাহর জিম্মায় আমার মেয়ে!' শিশুটির ছোট্ট শরীর, আধভাঙা জামা, থেমে যাওয়া নিশ্বাস, সব মিলিয়ে যেন পুরো এলাকাকে স্তব্ধ করে দিয়েছে।

ঈদের আগে শহরে আসছিল এই পরিবার, ছোট আয়েশার মুখে ছিল খুশির হাসি। কিন্তু ট্রেনের ধাক্কায় সেই আনন্দ মুহূর্তেই রূপ নেয় শোক আর কান্নায়। ভিড়ের মাঝখানে বাবার বুকচেরা আহাজারি-সেটাই যেন বলে দিচ্ছে, রেলের গাফিলতি আর অসাবধানতায় কী ভয়ানক মূল্য দিতে হয়েছে তাদের। এক পলক তাকিয়ে থাকা শত মানুষ, কেউ কিছু বলতে পারে না-শুধু চোখের পানি ফেলতে পারে আয়েশার জন্য।

বৃহস্পতিবার রাত ১০টার দিকে বোয়ালখালী থেকে চট্টগ্রাম শহরে ঈদ করতে আসছিলেন সাজ্জাদুন নূর ও জুবাইদা ফেরদৌস ইসরা দম্পতি। সঙ্গে ছিল তাদের দুই বছরের একমাত্র ওই কন্যাশিশু আয়েশা। কিন্তু চট্টগ্রামের কালুরঘাট ব্রিজ পার হওয়ার আগেই সবকিছু ওলটপালট হয়ে যায় তাদের।

রাত ১০টা ১৫ মিনিট পর্যটক এক্সপ্রেস ট্রেনটি ব্রিজে উঠে পড়ে। সেসময় একটি সিএনজি অটোরিকশায় থাকা আয়েশা ও তার বাবা-মায়ের ওপর উঠে যায় ট্রেনটি। প্রচণ্ড ধাক্কায় অটোরিকশাটি দুমড়ে-মুচড়ে যায়। সেখানেই মাথায় আঘাত পেয়ে নিথর হয়ে পড়ে আয়েশা। ওই ঘটনায় আরও দুজন নিহত হন।

ঘটনাস্থলেই শিশুটির মৃত্যু হয়। পরে স্থানীয়দের সহায়তায় বাবা-মা শিশুটিকে নিয়ে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ছুটে যান।

হাসপাতালের বারান্দায় দাঁড়িয়ে আয়েশার বাবা সাজ্জাদুন নূর বিলাপ করছিলেন-আমার মেয়ে তো কিছুই বুঝত না। আল্লাহর জিম্মায় রেখে যাচ্ছি। আমার আয়েশা! তুমি কোথায় গেলি?

তার স্ত্রী জুবাইদা ফেরদৌসও ছিলেন দিশেহারা। কান্না থামছিল না। কয়েকবার অজ্ঞান হয়ে পড়েন।

পরিবারটির আত্মীয় ওয়াহিদ বলেন, ঈদের আগের রাতে আয়েশার নতুন জামা দেখিয়ে ওর মা খুশিতে কাঁদছিলেন। আজ সেই মায়ের মুখে শুধু শোক। কিছু বলার ভাষা নেই।

সাজ্জাদের বাড়ি বোয়ালখালীর মুন্সিপাড়া এলাকায়। পরিবারটি ঈদ করতে চট্টগ্রাম শহরে যাচ্ছিল।

স্থানীয়রা জানায়, ব্রিজের মুখে যানজট ছিল। এ অবস্থায় গেটম্যান সিগন্যাল দিলেও ট্রেন চালক তা মানেননি। ট্রেনটি প্রায় পাঁচটি যানবাহনকে ধাক্কা দেয় ও ১৫ হাত দূরে ঠেলে নিয়ে যায়। এই পাঁচটির মধ্যে ছিল আয়েশাদের সিএনজি অটোরিকশাটিও।

একটা সিগন্যাল মানলেই বাঁচত আয়েশা

স্থানীয় গেটম্যান, প্রত্যক্ষদর্শী ও রেল কর্মকর্তাদের মতে, ব্রিজটি ‘ডেড স্টেপেজ’ অর্থাৎ যেখানে ট্রেনের বাধ্যতামূলকভাবে থামার কথা। কিন্তু চালক সেই নিয়ম মানেননি। গেটম্যান লাল পতাকা উড়ালেও ট্রেন থামেনি।

স্টেশন মাস্টার মো. নেজাম উদ্দিন বলেন, ব্রিজে যানজট দেখে গার্ড রেড সিগন্যাল দেয়। কিন্তু ট্রেন চালক সিগন্যাল অমান্য করে এগিয়ে যান।

ঘটনার সময় ট্রেনটিতে থাকা যাত্রীদের অনেকে আতঙ্কে ছিলেন। কেউ কেউ ট্রেন থামার পর জানালা দিয়ে দেখেন সামনে কী ভয়াবহ ঘটনা ঘটেছে।

সারা হাসপাতালজুড়ে গুঞ্জন 'ঈদের আগের রাত, সবাই পরিবার নিয়ে ঘরে ফিরছিল। সেই রাতে এক শিশু বিদায় নিল।'

চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের এক চিকিৎসক বলেন, শিশুটিকে মৃত অবস্থায় আনা হয়। মাথায় গুরুতর আঘাত ছিল। সঙ্গে থাকা বাবা-মা মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন।

এদিকে কালুরঘাট ফায়ার স্টেশন থেকে জানানো হয়েছে, তারা ঘটনাস্থলে গিয়ে অন্তত তিনজনের মরদেহ উদ্ধার করেন।

খালেদা জিয়ার সুস্থতার জন্য বিভিন্ন স্থানে দোয়া মাহফিল

সিলেট রেড ক্রিসেন্ট সোসাইটির ভাইস প্রেসিডেন্ট সেলিম, সেক্রেটারি মাহবুব

শেরপুরে ১ লাখ ৫৭ হাজার জাল টাকাসহ গ্রেপ্তার ৩

জামায়াত ক্ষমতায় গেলে সকলের নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠিত হবে

দ্রুত দিনাজপুর মেডিকেল কলেজে নতুন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হবে: স্বাস্থ্যের ডিজি

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফেনীতে আমার দেশ পাঠক মেলার উদ্যোগে দোয়া

লালমনিরহাটে গ্রাম আদালত বিষয়ে কর্মশালা

ভুল অপারেশনে মৃত্যুর অভিযোগে মামলা নিতে পুলিশের গড়িমসি

মেহেরপুরে ১০ স্বর্ণের বার উদ্ধার, ভারতীয়সহ আটক ২

‘খালেদা জিয়াকে দেশের প্রয়োজনে হায়াত বাড়িয়ে দাও’