পর্যটন ও পরিবেশ মন্ত্রণালয়ের নিষেধাজ্ঞার ১০ মাস পর দেশের একমাত্র প্রবাল দ্বীপ সেন্টমার্টিনে অবশেষে রাতযাপনের সুযোগ পাচ্ছেন পর্যটকরা। আজ সোমবার চারটি জাহাজ কক্সবাজার থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে যাত্রার অনুমতি পেয়েছে। আগামী ৩১ জানুয়ারি পর্যন্ত এই অনুমতি বহাল থাকবে।
সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, জেলা প্রশাসনের অনুমোদনক্রমে প্রতিদিন সকাল ৭টায় উত্তর নুনিয়াছড়া জেটিঘাট থেকে সেন্টমার্টিনের উদ্দেশে জাহাজগুলো ছেড়ে যাবে। তবে, পর্যটকদের রাতযাপনের অনুমতি থাকলেও পর্যটকবাহী জাহাজগুলো একই দিন বেলা ৩টায় সেন্টমার্টিন থেকে ফিরতি যাত্রা করবে। সেক্ষেত্রে পর্যটকরা পরেরদিন বেলা ৩টায় ফিরতে পারবেন।
কর্তৃপক্ষ আরো জানায়, প্রতিদিন সর্বোচ্চ দুই হাজার পর্যটক সেন্টমার্টিনে ভ্রমণ ও রাতযাপন করতে পারবেন। তবে, দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষায় পর্যটকদের সরকার প্রদত্ত বিধিনিষেধ ও নির্দেশনা কঠোরভাবে মানতে হবে।
জাহাজ পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠানগুলো জানিয়েছে, প্রথম দিনের যাত্রার জন্য এরই মধ্যে দেড় হাজারের বেশি অগ্রিম টিকিট বিক্রি হয়ে গেছে।
এর আগে, দীর্ঘ ৯ মাসের নিষেধাজ্ঞার পর গত ১ নভেম্বর সীমিত পরিসরে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের অনুমতি দেয় সরকার। কিন্তু, রাতযাপনের অনুমতি না থাকায় গত এক মাসে কোনো পর্যটকবাহী জাহাজ দ্বীপটিতে যাত্রা করেনি। এছাড়া কক্সবাজার-সেন্টমার্টিন রুটের পাশাপাশি টেকনাফ-সেন্টমার্টিন সমুদ্রপথও বছর খানেক সময় ধরে বন্ধ ছিল।
কক্সবাজার জেলা প্রশাসক আ. মান্নান বলেন, সেন্টমার্টিন দ্বীপ আমাদের জাতীয় সম্পদ। এই সম্পদ রক্ষায় দ্বীপের জীববৈচিত্র্য রক্ষা ও টেকসই পর্যটনে সহায়তার জন্য পর্যটকদের সহযোগিতা করতে হবে।
জেলা প্রশাসন কর্তৃপক্ষ জানায়, ভ্রমণকারীদের বাংলাদেশ ট্যুরিজম বোর্ড অনুমোদিত পোর্টালের মাধ্যমে অনলাইনে টিকিট কিনতে হবে। সেখানে সেন্টমার্টিনের ভ্রমণ পাস ও কিউআর কোড থাকবে। কিউআর কোডবিহীন টিকিট অবৈধ হিসেবে বিবেচিত হবে।
এছাড়া সেন্টমার্টিনে রাতযাপন করতে হলে জীববৈচিত্র্য রক্ষায় সরকার ঘোষিত ১২ দফা নির্দেশনা পর্যটকদের কঠোরভাবে অনুসরণ করতে হবে। দ্বীপের পরিবেশগত ভারসাম্য রক্ষা করতে পর্যটকের সংখ্যা ও ভ্রমণ সময় নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হবে বলেও জানানো হয়।
এর আগে, সীমিত পরিসরে সেন্টমার্টিন ভ্রমণের অনুমতি প্রদানকালে পর্যটকদের জন্য ১২ দফা নির্দেশনা দেয় সরকার। সেগুলো হলো- রাতে সমুদ্রসৈকতে আলো জ্বালানো, শব্দ সৃষ্টি, বার বি কিউ আয়োজন, কেয়া বনাঞ্চলে প্রবেশ, কেয়া ফল সংগ্রহ বা বিক্রি এবং সামুদ্রিক প্রাণী যেমন- কচ্ছপ, পাখি, প্রবাল, কাঁকড়া, শাঁসসহ অন্যান্য প্রজাতিকে বিরক্ত করা নিষিদ্ধ।
এছাড়া মোটরসাইকেল, সি-বাইকসহ সব ধরনের মোটরচালিত যানবাহন সৈকতে নিষিদ্ধ থাকবে। পলিথিনসহ চিপসের প্যাকেট, স্ট্র, ছোট সাবান বা শ্যাম্পুর প্যাকেট, ছোট প্লাস্টিক বোতলসহ একবার ব্যবহারযোগ্য প্লাস্টিক ব্যবহারের ক্ষেত্রে পর্যটক এবং স্থানীয়দের নিরুৎসাহিত করা হয়।