সিলেটের গোলাপগঞ্জের কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে প্রায় ৪২ বছর পর আবারো ১ নং কূপ থেকে নতুন করে বিপুল পরিমাণ গ্যাস পাওয়ার সুখবর দিয়েছে পেট্রোবাংলা। মাত্র চার মাসের প্রচেষ্টায় এই সফলতা অর্জনে সক্ষম হয়েছে সিলেট গ্যাস ফিল্ড।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় সুখবর পাওয়া যায় পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে। জানানো হয়, ওয়ার্কওভার কাজ সফলভাবে সম্পন্ন হওয়ার পর কৈলাশটিলা ১ নম্বর কূপ থেকে দৈনিক ৫ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস নিশ্চিত হওয়া গেছে।
প্রকল্প পরিচালক শফিকুল ইসলাম জানান, কৈলাশটিলা-১ কূপের ওয়ার্কওভার শেষে গ্যাসের মজুদ সম্পর্কে নিশ্চিত হওয়া গেছে।
সূত্র জানায়, প্রায় চার মাস আগে কৈলাশটিলা-১ কূপে ওয়ার্কওভার শুরু করে বাপেক্স। ওয়ার্কওভারের সময় প্রায় ২২ হাজার ফুট গভীরে গ্যাসের সন্ধান পাওয়া যায়। ধারণা করা হচ্ছে, কূপটিতে প্রায় ১.৬ ট্রিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস মজুদ থাকতে পারে।কূপটিতে কিছু কাজ এখনও বাকি রয়েছে।
প্রকল্প পরিচালক জানান, এসব শেষ করে এক–দু’দিনের মধ্যেই সিলেট গ্যাস ফিল্ডস লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আনুষ্ঠানিকভাবে বিস্তারিত জানাবেন। আগামী ২ থেকে ৩ দিনের মধ্যে এই গ্যাস জাতীয় সঞ্চালন লাইনে যুক্ত হবে।
কৈলাশটিলা-১ কূপ ওয়ার্কওভার প্রকল্পের পরিচালক শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, এটি দেশের পুরনো কূপের একটি। ১৯৮৩ সালে প্রথম এই কূপ থেকে গ্যাস পাওয়া গিয়েছিল। ২০১৯ সালের পর থেকে এই কূপ থেকে গ্যাস সরবরাহ বন্ধ হয়ে যায়।
“এখন ওয়ার্কওভার সফল হওয়ার ফলে দৈনিক ৫ মিলিয়ন করে গ্যাস পাওয়া যাবে। আগামী ১০ বছর ধরে এই পরিমাণ গ্যাস মিলবে বলে আশা করা যাচ্ছে।”
পেট্রোবাংলা জানায়, গত ১২ অগাস্ট বাপেক্সের নিজস্ব রিগ বিজয়-১২ এর মাধ্যমে বন্ধ এ কূপটির ওয়ার্কওভার কাজ শুরু হয়।
১৯৬১ সালে আবিষ্কৃত কৈলাশটিলা গ্যাসক্ষেত্রে আটটি কূপ খনন করা হয়। ৮৭৮ দশমিক ৮০ বিলিয়ন প্রমাণিত মজুদের এই গ্যাসক্ষেত্র থেকে ২০২৪ সালের ৩০ জুন পর্যন্ত ৮১২ দশমিক ১৭ বিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস উত্তোলন করা হয়েছে, যা উত্তোলন-যোগ্য মজুদের ৯২ দশমিক ৪২ শতাংশ।
সূত্র আরও জানায়, সিলেট গ্যাস ফিল্ডের আওতাধীন কূপগুলোতে কয়েকটি প্রকল্পের কাজ চলছে। প্রায় ৬০০ কোটি টাকা ব্যয়ে অনুসন্ধান কূপ ও ওয়ার্কওভারের কাজ দ্রুত শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। এসব প্রকল্প থেকে আশানুরূপ গ্যাস পাওয়া গেলে দৈনিক প্রায় ২৫০ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস জাতীয় গ্রিডে সরবরাহ করা সম্ভব হবে।