সিলেটের পাঠানটুলায় অবস্থিত ‘মিনিস্টার বাড়ি’ সম্পর্কে বিভ্রান্তি ও অপপ্রচার ছড়ানো থেকে বিরত থাকার অনুরোধ জানিয়েছেন আসামের সাবেক শিক্ষামন্ত্রী আব্দুল হামিদের দুই নাতনি রফিকা হামিদ ও শফিকা হামিদ। তারা সাফকাত হামিদের মেয়ে।
রোববার সিলেট প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলন করে দুবোন এ আহবান জানান। এ সময় তাদের মা আফসানা হামিদও উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে তারা জানান, এই মিনিস্টার বাড়ি ও তৎসংলগ্ন ভূমি হেবা ও উত্তরাধিকার সূত্রে তারা দুই বোন ও তাদের মা মালিকানা পেয়েছেন। এই জমির বণ্টন হয়েছে শরিয়াহ অনুযায়ী। এখানে আইনগত ও উত্তরাধিকারগত কোন ঝামেলা নেই।
তাদের দাদা আব্দুল হামিদের ছেলে-মেয়ে ও ভাই আব্দুল লতিফের ছেলে মেয়ে ও পরবর্তী উত্তরাধিকারীরা তাদের সম্পত্তি ভোগ দখল ও বিক্রয় করছেন কোনো প্রকার সমস্যা ছাড়াই। বর্তমানে এই বাড়ি পুরাতন-জরাজীর্ণ ও বসবাসের অনুপযোগী হয়ে যাওয়ায় বসতবাড়িটি ভাঙ্গার কাজ শুরু করলে কতিপয় আত্মীয় অবৈধ সুবিধার আশায় মিডিয়া ট্রায়াল করে পত্র-পত্রিকা ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নেতিবাচক তথ্য প্রকাশ করে।
এই বাড়িটিই তাদের পরিবারের বসবাসের একমাত্র অবলম্বন ও আশ্রয়স্থল জানিয়ে বাড়িটি বর্তমানে বসবাসের অনুপযোগী ও ঝুঁকিপূর্ণ অবস্থায় থাকায় ব্যক্তিগত নিরাপত্তা নিশ্চিত করা এবং স্বাভাবিক জীবনযাত্রার জন্য এটি ভেঙ্গে দ্রুত পুনর্নির্মাণ করা অপরিহার্য।
তারা জানান, গত ২৬ অক্টোবর প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে একটা চিঠি পেয়েছেন। যেখানে তারা অনুরোধ করেছিলেন বাড়ি ভাঙ্গার কাজ ৩০ অক্টোবর পর্যন্ত সাময়িক ভাবে বন্ধ রাখার জন্য। তাদের অনুরোধকে সম্মান জানিয়ে এখন পর্যন্ত ২৮ দিন কাজ বন্ধ রেখেছেন। পরবর্তীতে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তর তাদের সাথে চিঠি মারফত যোগাযোগ করেনি। তারা তাদের কাছে চিঠি পাঠালেও প্রত্নতত্ত্ব বিভাগ থেকে কোন উত্তর পাননি বলেও জানান।
সংবাদ সম্মেলনে আরো জানান, কোন স্থাপনা বা স্থানকে প্রত্নতাত্ত্বিক নিদর্শন হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে রেকর্ড হতে হলে কিছু নির্দিষ্ট বৈশিষ্ট্য ও শর্ত পূরণ করতে হয়। যা এই স্থাপনার ক্ষেত্রে কোনোভাবেই প্রযোজ্য হয় না। সরকারও কখনো এটি ঐতিহাসিক স্থাপনা হিসেবে অধিগ্রহণ বা রেকর্ড করেনি।
উক্ত বাড়িটি এনটিক্ ও এনসিয়েন্ট হিসেবে গণ্য করারও সুযোগ নেই। প্রত্নতত্ত্ব হওয়ার জন্য মূল স্থাপত্যশৈলী ও কাঠামো অক্ষত থাকা জরুরি ও আয়ুষ্কাল সর্বনিম্ন ১০০ বছর হতে হয়। স্থাপনাটিতে প্রাচীন নির্মাণ প্রযুক্তি, অলংকরণ, খোদাই বা শিলালিপি বা অন্য নিদর্শন থাকতে হবে যা এখানে কিছুই নাই।
এই বাড়ির বিপরীতে অধিগ্রহণ করবার জন্য অফিসিয়াল কোন গেজেট বা বিজ্ঞপ্তিও প্রকাশ হয়নি। এই বাড়ি পুরাকীর্তির তালিকার মধ্যেও নেই। এটা শুধু লোভী ব্যক্তিদের জবরদখলের চেষ্টা মাত্র বলে আখ্যায়িত করেন তারা।