ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসক ও জনবল সংকটে স্বাস্থ্য সেবা ব্যাহত হচ্ছে। ৫০ শয্যা বিশিষ্ট হাসপাতাল হলেও দীর্ঘদিন ধরে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার নেই । ১১ জন ডাক্তার দিয়ে চলছে পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের চিকিৎসা।
জানা গেছে, এই হাসপাতালে অনুমোদিত কনসালট্যান্ট ও ডাক্তারসহ মোট ৩৭টি পদ থাকলেও আছে মাত্র ১১ জন। অনুমোদিত পদের মধ্যে জুনিয়র কনসালট্যান্ট (সার্জারি), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিস্ট), জুনিয়র কনসালট্যান্ট, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (শিশু), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (চর্ম-যৌন) , জুনিয়র কনসালট্যান্ট (অর্থপেডিক্স), জুনিয়র কনসালট্যান্ট ইএনটি, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (চক্ষু), জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলোজি)সহ মোট ১০ জন কনসালট্যান্টের মধ্যে কর্মরত আছেন শুধু একজন, জুনিয়র কনসালট্যান্ট (কার্ডিওলোজি), তাও আবার ডেপুটেশনে তিনদিন ঝিনাইদহ সদর হাসপাতালে কর্মরত থাকেন। শুধু বাকি দুইদিন শৈলকুপা হাসপাতালে চিকিৎসাসেবা দিয়ে থাকেন।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও প.প.কর্মকর্তা ডা. মো. রাশেদ আল মামুন আমার দেশকে বলেন, কনসালট্যান্ট (অ্যানেস্থেসিস্ট) ডাক্তার না থাকায় সিজার সম্পূর্ণ রূপে বন্ধ। ফলে গর্ভবতী মহিলারা চরম ভোগান্তির শিকার হচ্ছে। তিনি আরো বলেন, আমি নিজে এবং আমার হাসপাতালে আরো দুইজন সিজার করতে পারেন ডাক্তার আছে এবং ওটি প্রস্তুত থাকলেও অ্যানেস্থেসিস্ট ডাক্তার না থাকায় সিজার বন্ধ রয়েছে। তিনি আশা করেন আগামী বিসিএসে ডাক্তার নিয়োগ হলে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ডাক্তার আমরা পাব।
একটি পৌরসতা ও ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে গঠিত শৈলকুপা উপজেলার লোক সংখ্যা প্রায় পাঁচ লাখ। এ জনসংখ্যার স্বাস্থ্য সুরক্ষার একমাত্র নিরাপদ চিকিৎসাস্থল হওয়ার কথা ছিল এ হাসপাতালটির, অথচ ডাক্তার ও প্রয়োজনীয় জনবল সংকটের কারণে সঠিক স্বাস্থ্যসেবা দিতে পারছে না এ হাসপাতালটি । ডাক্তার না থাকায় প্রতিদিন দূরদূরান্ত থেকে আসা শত শত রোগী চিকিৎসাসেবা না পেয়ে চরম হতাশা ও অসুখ-বিসুখ নিয়ে চিকিৎসাবিহীন অথবা অনভিজ্ঞ স্বাস্থ্য সহকারীর নামমাত্র চিকিৎসা নিয়ে বাড়িতে ফিরতে হচ্ছে । এদিকে আরএমও ডা. আব্দুল্লাহ্ আল মামুন বলেন, প্রতিদিন আউটডোরে তিন থেকে সাড়ে তিনশ রোগী আমাদের দেখতে হয়। ইনডোরে ৫০টি বেড আছে। কিন্তু শতাধিক রোগী ভর্তি থাকায় অধিকাংশ রোগীকে ফ্লোরিং করতে হয়। তিনি আরো বলেন, রোগীকে আমরা প্রায় ৩০ থেকে ৪০ ভাগ ওষুধ দিতে পারি, বাকি ওষুধ রোগীকেই কিনতে হয়।
শৈলকুপা হাসপাতালে বর্তমানে কর্মরত ইউএইচএন্ডএফপিও মেডিকেল অফিসার দুইজন, সহকারী সার্জন চারজন, ডেন্টাল সার্জন একজন, এমও (হোমিও) একজন, আর এমও একজন মোট ১১ জন চিকিৎসক দ্বারা কোনো রকমে জোড়াতালি দিয়ে শৈলকুপার পাঁচ লক্ষাধিক মানুষের স্বাস্থ্যসেবা দেওয়া হচ্ছে।