হিজাব পরায় কলেজ ক্যাম্পাসে এক শিক্ষার্থীকে কটাক্ষ করার অভিযোগ উঠেছে ফেনী সরকারি কলেজের প্রাণীবিদ্যা বিভাগের বিভাগীয় প্রধান বিপ্লব কুমার শীলের বিরুদ্ধে। রোববার দুপুরে কলেজ ক্যাম্পাসে এ অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনাটি ঘটে।
এরপর ফাতিমা আইমান রুহি নামের ওই ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী নিজের সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে বিষয়টি তুলে ধরে স্ট্যাটাস দেন। এতে উল্লেখ করেন, “দুপুর একটার পরে টিউশন থেকে ফিরে প্রশাসনিক ভবনের সামনে দিয়ে হলে আসছিলাম। হঠাৎ প্রাণীবিদ্যা বিভাগের প্রধান স্যার বিপ্লব কুমার শীল একদিকে ডেকে নিয়ে আমার দিকে তাকিয়ে বললেন, ‘তোমাকে আমার চেনা চেনা মনে হচ্ছে। বাড়ি কোথায়? বাবার নাম কী? কোন বিভাগে, কোন ইয়ারে পড়ো?’ আমি বললাম, ইংরেজি বিভাগ, অনার্স সেকেন্ড ইয়ার, স্যার। তারপর স্যার বললেন, বাহ! অনার্স সেকেন্ড ইয়ারে পড়ো, আবার ইংরেজি সাহিত্যের স্টুডেন্ট… এত সুন্দরী, মিষ্টিভাষী মেয়ে তুমি নিজেকে এত অন্ধকারে ডুবিয়ে রাখলে হবে? এত আড়াল করে রাখো কেন? আমি অবাক হয়ে জিজ্ঞেস করলাম, স্যার, আপনি কী বলতে চাচ্ছেন? তিনি বললেন, না… বুঝলেই আর কী করার!
আমি জোরে বললাম, স্যার, আপনি কি আমার হিজাব নিয়ে কথা বলছেন? তিনি হঠাৎ বললেন, না! না! মানে… বলতে চাচ্ছি তুমি নিয়মিত ক্লাস করো না, কলেজে আসো না, তাই তোমাকে দেখলাম। আমি বললাম, ‘কীহ! আমি সারাদিন ক্যাম্পাসে থাকি, নিয়মিত ডিপার্টমেন্টে আছি। কলেজের সব টিচাররা আমাকে চেনেন। শুধু ডিপার্টমেন্টে নয়, আমি অডিটোরিয়ামেও নিয়মিত প্রোগ্রামে অংশগ্রহণ করি।
অবশেষে তিনি বললেন, ভেরি গুড। ভালো তো। কিন্তু সাহিত্যের স্টুডেন্ট তো এভাবে থাকে না। তারা আরও এক্সপার্ট থাকে, তাদের দেখলেই বোঝা যায়। আমি রাগান্বিত স্বরে বললাম, আপনার নাম কী স্যার?
বিপ্লব কুমার শীল, প্রাণীবিদ্যা বিভাগ। বললাম ঠিক আছে স্যার, আপনি যা বলতে চাচ্ছেন, সেটা আমি ঠিকই বুঝেছি। এটা বলেই আমি চলে আসছি। তিনি হালকা স্বরে বললেন, এই তুমি রাগ…। আর মুহূর্তের মধ্যে চলে গেলেন। কারণ সেখানে কলেজের বিভিন্ন বিভাগের ছেলে-মেয়েরা ছিলেন, যদি আমার আওয়াজ তাদের কানে পৌঁছাতো পরিস্থিতি হয়তো উল্টো হত। হিজাবফোবিয়া আর কত?
একজন শিক্ষক কি একজন শিক্ষার্থীর সৌন্দর্য নিয়ে কথা বলার অধিকার রাখে? বোরকা বা হিজাব দেখলেই কি এদের হৃদপিণ্ডে আঘাত লাগে?"
এ বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত শিক্ষক বিপ্লব কুমার শীলের ব্যবহৃত মুঠোফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
কলেজের অধ্যক্ষ মো. এনামুল হক খোন্দকারের নিকট বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, ঘটনাটি শুনেছি। তবে, এখনও কোনো অভিযোগ পাইনি।